somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিস্মৃত এক ফটোগ্রাফারের গল্প

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিশোর পারেখ (১৯৩০-১৯৮২) একজন ভারতীয় ফটোগ্রাফার। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্বের নানা দেশের নামী-দামী পত্র-পত্রিকার সাংবাদিক ও ফটো সাংবাদিক অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এদের মধ্যে পারেখ ছিলেন ব্যতিক্রম যিনি কোন অ্যাসাইনমেন্ট ছাড়াই স্বেচ্ছায় বাংলাদেশে এসে মুক্তিযুদ্ধের ছবি তুলেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কিশোর যখন ট্রাভেল এবং ফ্যাশন ফটোগ্রাফিতে ব্যস্ত, তখন হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসবেন। দ্রুত ৪০ রোল ফিল্ম যোগাড় করে তিনি ভারতে চলে আসেন। এক বন্ধু তাকে পৌছে দেয় বর্ডারে। জোর করে তিনি ৮ ডিসেম্বর ঢুকে পড়েন প্রেস হেলিকপ্টারে। কিশোর ১৬ তারিখ বিজয় অর্জন পর্যন্ত বাংলাদেশে ছিলেন । এরপর ফিরে গিয়ে টানা তিন দিন তিন রাত ফিল্ম ডেভেলপ করেন আর ৬৭টি সফল ফটোগ্রাফ নিয়ে বের হন। মাত্র ৮ দিনে তাঁর তোলা ৬৭টি ছবি মুক্তিযুদ্ধের এক অসামান্য দলিল হয়ে আছে। এ ছবিগুলো অবলম্বন করে পরে তিনি বাংলাদেশ : এ ব্রুটাল বার্থ নামে একটি ফটোগ্রাফি বই প্রকাশ করেন। ভারত সরকার তাঁর ছবি দেখে বইটির ২০ হাজার কপি অর্ডার দেন।

কিশোর পারেখ সম্পর্কে প্রথম জানতে পারি ব্লগার হাসান বিপুলের পোস্ট থেকে। এরপর ব্লগ ঘাটাঘাটি করে ব্লগার কিছুনা এর একটা লেখা পাই পারেখকে নিয়ে । হাসান বিপুলের কিশোর পারেখ সিরিজ থেকে সারাংশ হিসেবে আমি একটা পোস্ট দেই পরে। ব্লগার শয়তান সেখানে কমেন্ট করেন এবং জানান হাসান বিপুল ভাই চেষ্টা করছেন মুক্তিযুদ্ধের সময়কার পারেখের তোলা ছবি নিয়ে প্রকাশিত সংকলন ‌বাংলাদেশ : এ ব্রুটাল বার্থ ' তাঁর ছেলের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে দেশে পুর্নমুদ্রণ করতে। শয়তান ভাইয়ের নানার কাছেও সংকলনের একটা কপি নাকি আছে। কিশোর পারেখকে নিয়ে কৌতূহল হওয়ায় আমি নেটে অনেক ঘাটাঘাটি করেছি। খুবই দু:খজনক আন্তর্জালে কিশোর পারেখ সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য নেই। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে এই ভিনদেশী বন্ধুর অবদান অবিস্মরনীয়।
সাধারন মানুষকে কিশোর পারেখ সম্পর্কে জানাতে ব্লগার হাসান বিপুলশয়তান ভাইকে অনুরোধ করছি। শয়তান ভাইকে অনুরোধ করছি মুক্তিযুদ্ধের সময়কার পারেখের তোলা ছবি নিয়ে প্রকাশিত সংকলনটি নিয়ে ব্লগে লিখতে। সম্ভব হলে কিছূ ছবি স্ক্যান করে আমাদের দেখানোর ব্যবস্থা করতে।
আমি নেট ঘেটে এই সাতটা ছবি পেয়েছি। সম্ভবত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক পারেখের কেবল এই সাতটি ছবিই আন্তর্জালে পাওয়া যায়। কিশোর পারেখের মন্তব্য সহ মুক্তিযুদ্ধের অসামান্য এ ছবিগুলো দেখুন-


১. ...refugees became statistics but sorrow is individual, to be suffered separately…widows suffered their private grief as statesmen bargained...


২. ...the men (Mukti Bahini Guerillas) fought silently in dark rooms..


৩. ...in a street of horror in the old quarter of the city I saw Mukti Bahini Guerrillas hunting snipers...


৪. ...there were more innocent casualties. I came upon this half-naked boy lying in a pool of his own blood. An elderly man gently washed his head with water, then lifted him up - but where is safety to be found?


৫. ...Indian troops grimly round up villagers suspected to be Pakistani spies...The Jawans (soldiers) I was travelling with weren't too gentle: they had suffered casualties...


৬. ...Once 50000 people lived here. Now there were only 200...the rest have fled, leaving the dead on the street...


৭....with the guns silenced, the Generals came together to talk about the terms of peace. The Indian General was cool, confident and gracious. The defeated Pakistani clenched his jaw...


লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজী হেটে যাচ্ছেন। তার ডানে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা আর বাম পাশে মেজর হায়দার। পেছনে মুক্তিবাহিনী।


বিজয়ের চল্লিশ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ সরকার প্রায় ৫০০ ভিনদেশী বন্ধুকে সম্মাননা জানানোর পরিকল্পনা নিয়েছিলো এবং সে অনুযায়ী বন্ধুদের তালিকাও করা হয়েছিলো। দেরীতে হলেও যা ছিলো একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
কিন্তু প্রায় ৫০০ জনের এই তালিকায় ঠাঁই হয়নি কিশোর পারেখের।
আর বাংলাদেশ সরকার এবারও ভিনদেশী বন্ধুদের সম্মানিত করতে পারছেনা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি না থাকায়।


এত ঋণের বোঝা নিয়ে কাউকে বিজয়ের শুভেচ্ছা জানানোর অধিকার আমাদের আছে কিনা তা আমার জানা নেই.................
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০২
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×