আজও একটি ১৬ই ডিসেম্বরের নিস্তব্ধ ভোর।
৪৫ টি বছর কেটে গেছে, অনেক কান্না থেমে গেছে ,অনেক ইতিহাস বদলে গেছে ,এখন আর এই বাংলায় ভাতের অভাবে আমার ভাইয়ের জীর্ন দেহ কাকে খায় না।
এখন তো আর পাকিস্থানী বড় বাবুর ঐ কুমতলবের লোভাতুর চোখ আমার ছোট্ট অবুঝ বোনের দিকে চায় না।
আজও একটি ১৬ই ডিসেম্বরের নিস্তব্ধ ভোর।
১৫ ই আগস্ট চলে গেল , সৈর শাষকের পতন হল,বারুদের আগুনে জ্বলে যাওয়া মাঠে আবার সোনালী ফসল হল, এখন তো আর উচ্চ শিক্ষিত মেধাবী যুবক গ্রামের অফিসের কেরানী হয় না।
সভ্যতা সংষ্কৃতি ,মাতৃ ভাষার মধুর ডাকে বাক স্বাধীনতা রুদ্ধ রয় না।
১/১১ চলে গেল , ইসলাম ধর্ম বিক্রির পায়তারা হল, স্কুলে যাওয়া অবুঝ শিশু পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হল, আবার একটি শান্ত সকালে সোনা ঝরা রোদে ত্যাগী নেতার দাফন হল।
শুধু হল না বাঙ্গালীর আবেগ ,বাঙ্গালীর দাবীর শক্ত কফিনটির অথৈই সাগরে জলান্জলি।
আজও একটি ১৬ ই ডিসেম্বরের নিস্তব্ধ ভোর।
একটি শহরে অনেকগুলো গাড়ি, সারি সারি বাড়ি,একটি গ্রাম অনেকগুলো খামার সারি সারি ক্ষেত ।
খুজে পায় না হারায়ে গেছে অনেক গুলো লাশ ,কাটা গলা আর হাত পা গুলো।
দেখা যায় না শুকায়ে গেছে রক্তের বন্যা,বিধবা মা আর অবুঝ সন্তানের চোখের কান্না।
সব ধংশ স্তুপ কারা জানি কবে সরায়ে ফেলেছে।
আজও একটি ১৬ ই ডিসেম্বরের নিস্তব্ধ ভোর।
রয়ে গেছে আজও কিছু কুলাঙ্গার আর কাপুরুষের মনে পাকিস্থানের ছাপ,তাদের কাছে ঘাতক সেনা আর ধর্ষক পাকিস্থানিই নিষ্পাপ।
আজও একটি ১৬ ই ডিসেম্বরের নিস্তব্ধ ভোর।
আজ কোথাও হতাশা নেই,নেই তো পুড়া ঘরের কালো ছাই,অথবা ঘর ছেড়ে পালান অসহায় কিছু শরনার্থী আর ঘরে ফিরে এসে হারান বাবার পুরানো ছবি নিয়ে অর্তনাদ আহাজারির রব।
একটুও নাই মুক্ত বাংলায় কান্না চোখে বিজয়ের হাসি মুখে অনেক মানুষের দিশেহারা নির্বাক ছুটাছুটি।
আজও একটি ১৬ ই ডিসেম্বরের নিস্তব্ধ ভোর।
আজও লড়াই চলে অন্তরে অন্তরে এই স্বাধীন বাংলায়।
ভুলে গেছে সবাই কেউ মনে রাখেনি সেই দিন গুলি।
আজও একটি ১৬ ই ডিসেম্বরের নিস্তব্ধ ভোর।
এখনও ফজরের আজান হচ্ছে ..একটু পরই সকাল হবে শুধু বদলে গেছি আমরা ভুলে গেছি সেদিনের কথা।