somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‌‌‌হ্যাপি মাহে রমজান; ক্ষুধা ও খাদ্য বিলাস শুভ হোক

২৯ শে জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রমজান মাস এসে গেল। বাঙ্গালী মুসলিমদের ‘হ্যাপী মাহে রমজান’ জানাতেও দেরি করে ফেললাম। এজন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
বেহেশত নিশ্চিত করার জন্য এ মাসে মুসলিমদের ছোটাছুটির অন্ত থাকে না। যদিও রমজানের মানে শুনি সংযম। কিন্তু মুসলিমদের দিকে তাকালে দেখা যাবে বাস্তবতা ভিন্ন। রোজা হলো সচ্ছল মুসলিমদের ক্ষুধা ও খাদ্য বিলাস। বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। যদিও কট্টোর ডানপন্থী মুসলিমরা এ কথায় গোসসা করতে পারেন, কারণ তাঁদের কাছে কোনো জবাব নেই। অন্ধ ব্যক্তিকে অন্ধ বললে যেমন তিনি রেগে যান বিষয়টা অনেকটা সেরকম। অবচেতনে হলেও তারা জানেন, কথাটা সত্য।
বিষয়টা আর একটু ন্যাংটা করে বলি, নানা কিসিমের খাদ্যখানার নিশ্চয়তা থাকার পরও অনাহারে থেকে যে বিলাসিতা করা হয় সেটাই ক্ষুধা বিলাস। আর খাদ্য বিলাস নিয়ে তো বেশি কিছু বলার নেই। ক্ষুধা লাগিয়ে ইফতারির সময় ফল-ফাকড়া থেকে শুরু করে নানা কিসিমের খাদ্যখানা প্রতিদিন ইফতারির সময় যেভাবে মাক-মাক করে সেঁটে দেওয়া হয়, তাতে খাদ্য বিলাস সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়ার আবশ্যকতা থাকে না।
কিন্তু আমরা বিষয়টাকে এভাবে দেখি না। দেখতে চাই না, কারণ ভয়। পাছে বেহেশত যদি অনিশ্চিত হয়ে যায়!
জম্পেশ ক্ষুধা লাগিয়ে সন্ধ্যায় যে খাদ্য উৎসব চলে, আহা! এর কোনো জুড়ি নেই। বেজায় সুখের একটা বিষয়। রমজানে বেশিরভাগ মুসলিমদের সময় কাটে খাদ্য বিলাসের সামগ্রী জোগাড়ে। সারা দিনের ক্ষুধার ঝাল মেটাতে প্রতিটা বাসায় দুপুর থেকে শুরু হয় ছোটাছুটি।
শুনেছি, এ মাসে বিশ্বের বাইজী বাড়ীতেও (সৌদি আরব, দুবাই) নাকি অপচয়ের বন্যা বয়ে যায়। বাইজী বাড়িতে (বিশ্বের সোনাগাছিও বলা হয়ে থাকে) অবশ্য সব সময়ই বিলাসিতা আর অপচয় ঘটে। আবার বাইজী বাড়ির পাশেই আফ্রিকার সোমালিয়ার মতো কিছু দেশের বিপুল সংখ্যক লোক দুর্ভীক্ষপীড়িত। তারা না খেয়ে থাকেন। এক দিকে চলে সৃষ্টিকর্তার নামে আয়োজন করে বিলাসিতা, আর অপর দিকে খাদ্যের জন্য হাহাকার! তাতে কি আসে যায়?
হুজুররা বলে থাকেন, রোজা থাকলে নাকি গরিবের কষ্ট বোঝা যায়। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ফালতু বাত। নিশ্চিত খাবারের বন্দোবস্ত রেখে অনাহারে থাকার বিলাসিতা গরিবেরা করে না। তাদের অনাহারে থাকার কষ্ট সম্পূর্ণ আলাদা। ক্ষুধা বিলাসের সঙ্গে দরিদ্রের এ কষ্টের কোনো তূলনাই চলে না। ঘরে কোনো খাবার নেই; কখন খাবার আসবে, তাঁরও কোনো নিশ্চয়তা নেই; আর খাবার আসলেও কতটুকু আসবে এবং তাতে আদৌ পেট ভরবে কিনা তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। হরেক রকম খাবারের নিশ্চিত বন্দোবস্ত রেখে অনাহারে থাকার সৌভাগ্য রমজান মাসে তো দুরের কথা কোনোদিনই গরিবের হয় না। চারপাশে তো গরিবের অভাব নেই। তাদের ক্ষুধা দূর না করে নিজেই ক্ষুধা নিয়ে বিলাস করা দরিদ্রদের সঙ্গে তামাশা ছাড়া আর কি?
কে যেন বলেছিলেন, ‘বেশিরভাগ হুজুরদের দাড়ি-টুপির মাঝে আমি দেখতে পাই নিকৃষ্ট লোভের ছায়া’।
মনে আছে উঠতি যৌবনে একবার মসজিদে হুজুরের হুরপরীর বর্ননা শুনে আমার সুপ্ত লিঙ্গখানি সদ্যপ্রসূত গোবৎসের ন্যায় তিড়িং করিয়া লাফাইয়া উঠেছিল। আমার মতো হয়তো অনেকেরই হয়েছিল। যাইহোক শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের লাফালাফি আমার আলোচনার মূল বিষয়বস্তু নয়। নিকৃষ্ট লোভের ছায়া শুধু হুজুরদের দাড়ি-টুপির মাঝে নয়, আমি সর্বত্রই দেখতে পাই। তবে সমাজের বেশিরভাগ লোক দেখেও দেখতে চান না। অনেকে অবচেতনে হলেও বুঝতে পারেন। কিন্তু চেতন মনে আনার সাহস ও শক্তি কোনোটিই তাঁদের নেই। আর অনেকে বুঝতেই পারেন না, কারণ তাঁরা সমাজের স্রোতের সঙ্গেই চলেন। স্রোতের বিপরীত দিক সম্পর্কে তাঁদের ধারণা নেই। সমাজের প্রতিষ্ঠিত প্রতিটি কদর্য জিনিসই আমরা দেখেও না দেখার ভান করে থাকি। কারণ, তাতে ভালো থাকা যায়। স্রোতের বিপরীতে চলতে অনেক মেহনতের দরকার হয়। স্রোতের সঙ্গে চললে ভোগ-বিলাস বাধাগ্রস্ত হয় না। তবে এর মধ্যে যদি কেউ স্রোতের বিপরীতে গিয়ে অপ্রিয় সত্য তুলে ধরেন, তাঁকে কোপানো হয়। যেমন হুমায়ূন আজাদকে কোপানো হয়েছিলো। আমাদের কট্টর ডানপন্থী মুসলিমদের জ্ঞান আবার খুবই সীমিত। তারা ‌‌'পাক সার জমিন সার বাদ'র জন্য হুমায়ূন আজাদকে কুপিয়েছেন, ‌'আমার অবিশ্বাস' গ্রন্থটির জন্য নয়। আরও অনেক কবি সাহিত্যিক রয়েছেন, যারা হুমায়ূন আজাদের চেযেও অনেক বেশি ধর্মবিরোধী কথা বলেছেন বিভিন্নভাবে। কিন্তু জ্ঞান সীমিত হওয়ার কারণে তারা সেটা ধরতে পারেন নি। হুমায়ূন আহমেদও ব্যাঙ্গাত্মক অনেক কথাই বলেছেন, কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর কট্টর ডানপন্থী ইসলামিস্টরা আহাজারি জানিয়েছেন অজ্ঞতার জন্য। তসলিমা নাসরিনের ‘লজ্জা’ নিয়ে তাঁরা আন্দোলন করেছিলেন, অথচ 'লজ্জা'তে ইসলামবিরোধী কোনো কথা নেই।
শুক্রবারের জুম্মার নামাজ বাদে অন্য ওয়াক্তগুলোতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন মহল্লার মসজিদগুলোতে খুবই অল্প সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটে। অর্থাৎ ওই অল্প সংখ্যক লোকই নিয়মিত নামাজ পড়েন। তাদের মধ্যে যদি জরিপ চালানো হয় তাহলে দেখা যাবে, তাঁদের কমপক্ষে ৯০ শতাংশ লোক বুইড়্যা এবং স্থানীয় বাড়ির মালিক। তাঁদের এক পা এরইমধ্যে কবরে গিয়ে বসে রয়েছে। এদের বেশিরভাগই অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আমলা, কর্মকর্তা বা ব্যবসায়ী। যৌবনকালে তাঁরা ঘুষসুদ খেয়েছেন সমানে, অন্যান্য আকাম-কুকামও বাদ যায় নি। মাল কামিয়া এলাকায় ঢাকায় একটি বাড়িও তুলে ফেলেছেন। দুনিয়াতে সন্তানদের ভবিষ্যত নিশ্চিত করে শেষ বয়সে তাঁরা এসেছেন পরোকালের স্বর্গ নিশ্চিত করতে।
বাকী ১০ শতাংশের ৯ শতাংশ দেখা যাবে তাঁরা ঘুষসুদ খাওয়ার সুযোগ পাননি। সুযোগের অভাবে সৎ। সুযোগ পেলে ঘুষসুদ সমানে খেতেন। ১ শতাংশ নিরেট ভাল মানুষ পাওয়া যেতে পারে। এলাকাভেদে এ হার কিছুটা কমবেশি হতে পারে।
আর হুজুরেরা তো নিয়মিত নামাজি হবেনই, কারণ ওটাই তাঁদের পেশা। জুম্মার নামাজে হুজুরদের বয়ানের একটা বিরাট অংশ থাকে মসজিদের জন্য ভিক্ষাবৃত্তি। এর মধ্যেও ব্যক্তিগত সুবিধার ব্যাপার রয়েছে। মসজিদকেন্দ্রিক হুজুরদের বসবাস। মসজিদ পাকাপোস্তা হলে এক পর্যায়ে তাঁদের থাকার ব্যবস্থাও উন্নত হয়। তাই তারা বহুকাল ধরেই ধর্মের দোহাই দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন। এতো গেল নামাজি ভণ্ডদের কথা।
আর এক শ্রেণীর ভণ্ডদের আমি দেখতে পাই, যারা নামাজ কেন ইসলামের কোনো নির্দেশই ঠিকমতো পালন করেন না, অথচ ইমান তাদের ষোলআনা। ইসলামবিরোধী কোনো কথা শুনলেই তাঁরা ফাল দিয়ে উঠেন। অথচ এই ফাল দেওয়ার কোনো অধিকারই তাদের নেই। এরা আরও স্বার্থপর, ভণ্ড এবং ক্ষতিকর জীব। কেন খারাপ?
তাহলে একটা গল্প বলি। হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই ভাই। ছোট ভাই মা-কালীর খুবই ভক্ত। নিয়মিত পূজা অর্চনা করেন। আর বড় ভাই নাস্তিক। তিনি কালী-ফালী একেবারেই ঠেঙান না।
একদিন ছোট ভাই স্বপ্ন দেখলেন, মা-কালী তাকে বলছেন, ‌'তোর বড় ভাই আমার নামে আজেবাজে কথা বলে, আমার পূজাটুজা কিছু করে না, তুই ওকে সাবধান করে দিস।' জবাবে ছোটো ভাই বললো, 'এসব কথা আমাকে বলতে বলছো কেন? তুমি সরাসরি ওকে গিয়ে বলো।' কালী তখন বললো, ‌'ওমা বলে কি, আমি ওকে নিষেধ করবো কোন মুখে? ওতো আমাকে মানেই না!'
নাস্তিকরা সৃষ্টিকর্তা মানেন না, কাজেই সৃষ্টিকর্তা তাঁদের কাছে কিছু আশাও করেন না। এ ক্ষেত্রে নাস্তিকদের কোনো ভণ্ডামি থাকে না। আর যারা সৃষ্টিকর্তাকে মেনেও তাঁর কথামতো চলেন না, তারা কি ভণ্ড নয়? এই ভণ্ডগুলোই দুনিয়ার সব সুখ নিয়ে শেষ বয়সে গিয়ে বেহেশত নিশ্চিত করার জন্য নামাজ ধরবে, হজে যাবে, নামের আগে হাজী টাইটেল লাগাবে। আর যৌবনকালে সপ্তাহের জুম্মার নামাজ বা মাসেচান্দে সৃষ্টিকর্তার দরবারে হাজিরা দিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করবে, ‘আরে আছি তোমার সঙ্গে। তয় দুনিয়ার ভোগ বিলাসও একটু করতে দাও।’
বুইড়া হয়ে যাওয়ার পর পরোকালের সুখের জন্য এরা পারমানেন্টলি সৃষ্টিকর্তার কাছে সোপর্দ করে বেহেশতোর সুখের জন্য। সব সুখই এরা চায়।
দীর্ঘর্দিন থেকে সমাজের তথাকথিত শিক্ষিত বাবা-মায়েরা চান, তাদের সন্তানেরা বিসিএস দিয়ে সরকারি আমলা হোক। কারণ তারা মানসিকভাবে দুই নাম্বার। কিন্তু ওপরে ওপরে ভদ্দরনোক। আমলা হলে ঘুষসুদ থেকে শুরু করে ক্ষমতার অপব্যবহারের ব্যপক সুযোগ রয়েছে এ দেশে। এ কারণেই প্রথম শ্রেণীর কেরানির প্রতি তাঁদের এতো লোভ। ওই চাকরিতে আহামরি কোনো বেতন দেওয়া হয় না। উপরি কামাইয়ের জন্যই ওই চাকরির প্রতি তাঁদের এতো লোভ।
বিকৃত পুঁজিবাদী সমাজের এসব দুই নম্বর ভদ্দরলোক, ঘুষখোর আমলা, পুলিশ, ধর্ম ব্যবসায়ী, দুর্তিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, কসাই ডাক্তার, শ্রমিক ঠকানো ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সবাই ঠিকমতো মাল কামিয়ে শেষ বয়সে এসে ইসলামী লেবাস ধরেছেন এবং ধরছেন। হজে যাচ্ছেন, নিয়মিত নামাজ পড়ছেন। আজীবন নিকৃষ্ট লোভের পূজা করে যাচ্ছেন। এরাই সমাজ শাসন করছেন। মসজিদ কমিটির পদেও এরাই থাকেন।
এবার আসি দেশের নামীদামি ইসলামী চিন্তাবিদদের কথায়।
২০০০ এর দশকে (সালটা মনে নেই) একবার দেশে মারাত্মক বন্যা হলো। দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ রাস্তায় আশ্রয় নিলো। বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হলো। ঠিক একই সময়ে দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ কোটি কোটি টাকা খরচ করে হজে গেল। দেশের কোনো ইসলামী চিন্তাবিদ বললেন না, এবার হজে না গিয়ে টাকাটা বন্যাদুগর্তদের দেওয়া হোক। মানুষের জন্য ধর্ম না ধর্মের জন্য মানুষ? ইসলামে কি বলে?
যতদুর জানি ইসলামে একটা কথা স্পষ্ট বলা রয়েছে, প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকলে ঈমান থাকে না। ঈমানই যদি না থাকে তাহলে হজ হয় কিভাবে? উর্বর মস্তিষ্কের ইসলামী চিন্তাবিদদের অবস্থাই যদি এই হয়, তাহলে সাধারণ মুসলিমদের অবস্থা কি সেটা অনুমান করতে খুব বেশি মেহনতের দরকার হয় না। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে প্রতিবেশীর সংজ্ঞাও নিশ্চয় পাল্টেছে। আমরা মুহুর্তের মধ্যে জানতে পারি, কোথায় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনেছে। কোথায় মানুষ না খেয়ে আছে। সমগ্র মুসলিম জাতি কি পারে না বাইজী বাড়ীর খদ্দেরদের বিলাসিতা আরও তরান্বিত না করে এক বছরের হজের টাকা সোমালিয়ার দুর্ভিক্ষপীড়িতদের দিয়ে দিতে। পারে না, কারণ তাতে হাজী টাইটেল মার যাবে। এসব মুসলিমদের আসল কথা দাড়িয়েছে, দুনিয়া এবং আখেরাত দুটোই আমার চাই। তারা ইসলামকে এমনভাবে সাজিয়েছেন, যেন দুনিয়ার ব্যক্তিগত ভোগবিলাস, নাম যশ সম্পূর্টাই অটুট থাকে। সেই সঙ্গে বেহেশতও।
আর এক ভণ্ড শ্রেণী আছেন, যারা ইনট্যাক্ট মস্তিষ্ক নিয়ে নিয়মিত তাবলীগ করে বেড়ান। যখন কেউ আপনাকে আহবান জানিয়ে বলেন, ‌'আসেন ভাই নামাজ পড়তে যাই' তখন বুঝতে হবে ওই ব্যক্তি প্রধানত নিজের সওয়াবের জন্যই আপনাকে আহবানটি জানিয়েছেন। আপনার সওয়াবটা তাঁর লক্ষ্য নয়। তাঁর নিজের লাভ যদি না থাকতো, সে আপনাকে কখনোই এই আহবান জানাতো না। ধর্মের সব নির্দেশই সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্কে বাধা।
নিয়মিত (অনিয়মিতদের কথা বলছি না) তাবলীগকারীদের বেশিরভাগেরই করার মতো তেমন কোনো কাজ নেই। এরমধ্যে কারও কারও কাজ থাকলেও তারা মানসিকভাবে অসুখী, মোটকথা দুনিয়াতে তাদের অপ্রাপ্তিই বেশী। এই অপ্রাপ্তির অভাব আখিরাতে পূরণ করতে তারা মরিয়া। ধর্ম পালন ছাড়া তাদের আর কোনো কাম নাই, সেই সঙ্গে কোনো কাজও নাই। কিন্তু ইনট্যাক্ট মস্তিষ্ক নিয়ে তাবলীগ করা যায় না। মগজ ধোলাইয়ের কাজ অতো সোজা না। দীর্ঘদিন থেকে লোভ আর ভয়ের জগতে বাস করায় এদের অনেকেই মনোবিকলনগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
একবার এক মাঠে আমরা কয়েক বন্ধু আড্ডা দিচ্ছি। প্রত্যেকের হাতে বিড়ি। এমন সময় তাবলীগের কিছু লোক আমাদের ওপর হানা দিলেন। গদবাধা একই ডায়ালোগ, ‘ভাই দুনিয়া আর কয় দিনের'....... আমি বললাম, ভাই, ধরুণ কোনো ব্যক্তির সেক্স জিনিসটাই নষ্ট, এখন সেই ব্যক্তি যদি বলে বসেন, আসুন পরনারীর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া থেকে বিরত থাকি, তাহলে কি বিষয়টা হাস্যকর হয়ে দাড়ায় না?
আমার এক বন্ধু তো বলেই বসলো, ‌'দুনিয়াতে কি আমরা বাল ছেঁড়ার জন্য এসেছি? পরোকালে তো আর দুনিয়া পাওয়া যাবে না। দুনিয়ার দাম আমাদের কাছে কম না। সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে আমাদের কোনো চাওয়া-পাওয়ার সম্পর্ক নেই।'
সৃষ্টিকর্তা যদি বলতেন, দুনিয়ার পর সব শেষ, আর কোনো হিসাব নিকাশ নেই। তারপরও তোমরা যদি আমার নির্দেশগুলো পালন করো, তবে আমি খুশি হবো। তাহলে সৃষ্টিকর্তার খুশিকে কোনোদিনই কি সমাজের চারপাশের এইসব স্বার্থপর ভণ্ডরা মূল্য দিত?
এই মুহুর্তে নচিকেতার একটি গানের কথাগুলো মনে পড়ছে। কপি পেস্ট মেরে দিলাম:

যখন, ঘনায় রাত্রি এই পাথুরে শহরে
যখন, ছড়ায় দীর্ঘশ্বাস আকাশ অঝোরে
ঠিক তখখুনি সস্তার মেকাপেতে মুখ ঢেকে লাজলজ্জার সংস্কারকে পিছে রেখে
এই সাধারণ মেয়েটাই শহরে বিলোতে প্রেম রাস্তায় এসে দাড়ায়
প্রেমহীন শহরের কদর্য লোক গুলো তার কাছে প্রেম চেয়ে দুহাত বাড়ায়

ঠিক তখ্খুনি মন্দির মসজিদ গির্জায় শুরু হয় পূজো আরাধনা
বিশ্বপ্রেমের বাকে শিক্ষিত হয় লোক আঁকে প্রেমের আলপনা
সব পাপ দিয়ে আসে মানুষ দেবস্থানে দেবতারা হাসে তুলে মাথা
মাঝ রাত্তির হলে ফিরে যায় সেই মেয়ে গড়ে রোজগার বার টাকা

সারা গায়ে কাল শীতে খিদের মাশুল
জীবন তরণী বায় হোক প্রতিকুল
মুখ চেয়ে সন্তুতি হারি চরে না
বেজন্মা গালাগালে পেটভরে না

ঠিক তখখুনি এনে দিল এক রাশ সুবাতাস সেই রোজগার বার টাকা
নেভাতে প্রেমের জ্বালা অবতার হয়ে এল সেই রোজগার বার টাকা

ঠিক তখখুনি গোণা হয় প্রণামির থালা লাভের ভাড়ার হয় পূর্ণ
দেবতাকে দিয়ে ঘুষ জমা রেখে সব পাপ মানুষ বাড়ায় তার পণ্য
সেই মেয়ে ভোর হলে শত বিদ্রুপ সয় দেবতারা দেখে তুলে মাথা
সত্যি বিলোয় প্রেম সেই মেয়ে নিঃস্বারে প্রণামি মাত্র বার টাকা

বি.দ্র. আমার মাথায় বেশকিছুদিন থেকে একটা বিষয় ঘুরপাক খাচ্ছে। সময় পেলে ভাবছি বিষয়টা নিয়ে লিখবো। লেখাটার শিরোনাম দিব ‘সৃষ্টিকর্তা কি ছোটোলোক?’
এবার আসুন দেখি, আমার অপ্রিয় সত্য কথাগুলো কাদের হজম হয়েছে; কাদের বদহজম হয়েছে এবং কারা হজম হওয়ার পরও তা জোর করে উগড়ে দিতে চাইছেন। মন্তব্যের দিকে আমরা একটু তাকাই। নাকি?
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৩০
৩৯টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×