জীবনধারনের জন্য ধর্ম পরিচয় অপরিহার্য বিষয় নয়। অপরিহার্য বিষয় তাদের জন্য যারা ধর্ম বেঁচে খায়।
বর্তমান ইহুদি জাতির ধর্মের প্রতি খুব যে দরদ আছে তা কিন্তু নয়। কিন্তু একত্র হওয়ার জন্য এবং দুনিয়াব্যাপী অনাসৃষ্টি করে নিজেরা ভালো থাকার জন্য ধর্ম পরিচয় তাদের দরকার। তাদের পরিচয় তারা ইহুদি জাতি। ধর্মকে পুঁজি করে সাম্প্রদায়িকভাবে একত্র হয়ে এরা কাজ করছে। এটাকে ধর্ম বেঁচে খাওয়াই বলে। সব সম্প্রদায় এটাই করছে। কেও শক্তিশালী কেও দুর্বল।
যে কোনো ধরনের জাতীয়তাবাদও সন্ত্রাসিমূলক ধারণা। জাতীয়তাবাদও সাম্প্রদায়িকতার মধ্যেই পড়ে। যেভাবেই হোক নিজেরা ভালো থাকাই এর উদ্দেশ্যে । সাম্প্রদায়িক চেতনার মধ্যে যে কথাটি অর্ন্তনিহিত থাকে তা হলো, ‘নিজের সম্প্রদায়ের লোকেরা ভাই ভাই, বাকীরা চুদির ভাই’।
বিশ্বের বড় বড় অশান্তির মূলে রয়েছে সাম্প্রদায়িক তথা জাতীয়তাবাদী চেতনা। সেটা ধর্ম কেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদ হোক আর অন্য জাতীয়তাবাদ হোক। অতীত ও বর্তমান তাঁর সাক্ষী। বর্তমান বা অতীতে গিয়ে ভবিষ্যতও একই সাক্ষ্যই দেবে বলে মনে হচ্ছে।
ইহুদি নিয়ন্ত্রিত যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই ধর্মকে ব্যবহার করছে সাম্রাজ্যবাদ বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে। তালেবান নামক গোষ্ঠীটি তাদেরই সৃষ্টি। মুসলিমদের জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করে তারা তা মিডিয়ায় প্রচার করে। নিজ সম্প্রদায়ের লোকজনকে বুঝিয়ে মুসলিম দেশগুলোর তেল সম্পদ দখল করার জন্য আক্রমণ বৈধ করাই এর উদ্দেশ্য । যুগ যুগ ধরে ধর্ম, জাতীয়তাবাদ তথা সাম্প্রদায়িক চেতনাকে বিক্রি করছে সাম্রাজ্যবাদীরা। এরা চায় দুনিয়াব্যাপী সাম্প্রদায়িক উন্মদনা জিইয়ে রাখতে। এতে লাভ তাদের। কারন তারা শক্তিশালী সম্প্রদায়। তারা চায় সাম্প্রদায়িকতার মাধ্যমে বঞ্চিত মানুষদের বিভক্ত রাখতে।
মাদ্রাসার এতিম ও বঞ্চিত বাচ্চাদের আমরা দেখেছি রাজনীতির কাজে ব্যবহার করতে। আধ্যাত্মিক লোভ দেখিয়ে এই বঞ্চিত বাচ্চাদেরই পাকিস্তানে ব্যবহার করা হয় আত্মঘাতী হামলার কাজে। এরাই নানাভাবে মরছে।আর এদের ব্যবহারকারী শুয়োরের বাচ্চারা আরাম আয়েশে চলছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িতে।
উপনিবেশিক আমলেও আমরা ব্রিটিশদের দেখেছি ধর্মকে তথা সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার করতে।মানুষকে বিভক্ত করার জন্য এর চেয়ে বড় কোনো অস্ত্র আর নেই। আর তা যদি হয় ধর্মভিত্তিক সম্প্রদায়।
সম্প্রদায় যতদিন থাকবে ততদিনই সাম্প্রদায়িক স্বার্থ থাকবে। আর সাম্প্রদায়িক তথা জাতীয়তবাদী চেতনাকে বিক্রি করে ফুলে ফেঁপে উঠতে থাকবে শক্তিশালী সম্প্রদায়গুলো। চলতে থাকবে নানাভাবে এবং নানা উদ্দেশ্যে এর ব্যবহার।
মানুষের মানবিক পরিচয়ই আসল পরিচয়। আর কোনো পরিচয় ‘মানুষের’ দরকার নেই। কিন্তু মানুষ কখনোই ‘মানুষ’ হয়ে উঠে নি। তাঁর পরিচয় ধর্ম, বর্ণ, গোত্র তথা জাতীয়তাবাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এ পৃথিবীর রুপ-রস, সম্পদ গণমানুষের জন্য নয়। যে সম্প্রদায়ের শক্তি আছে শুধু তাদের। মানুষকে মানুষ হয়ে উঠতে হবে । তা না হলে শক্তিশালী শুয়োরের বাচ্চারা হায়েনার মতো ছিড়ে খেতে থাকবে বঞ্চিতদের। পৃথিবীটা হোক গণমানুষের।