somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভণ্ড ভণ্ড ভণ্ড (পর্ব-১)

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা সাধারনত ধার্মিক বলে আমরা চিনে থাকি মাদ্রাসা থেকে পাশ করা মাওলানাদের। কিন্তু আমাদের সমাজে মাওলানাদের পেট চলে সমাজে দুই নম্বর লোকের টাকায়। এটাই সমাজ বাস্তবতা। স্থানীয় সাংসদ বা কোনো ধনী ব্যক্তি যত দুই নম্বরই হোক, এলাকার মসজিদে যখন তিনি বড় অংকের টাকা দান করেন, হুজুরেরা তার নামে দোয়া পড়তে থাকেন। কাজেই হুজুরের কি ধার্মিক হওয়ার সুযোগ আছে??

আমাদের সমাজে দেখা যায় বাপ-মা নিয়মিত নামাজ পড়েন। কিন্তু ছেলে কিভাবে টাকা আয় করছেন তা তারা জেনেও না জানার ভান করেন। কিন্তু ছেলে নামাজে গেলে তারা গর্বে বুক ফোলান। ছেলে আমার অমুক পীরের মুরিদ!!! আহা রে!!
আমি চাকরি করে যে বেতন পাই, তা একজন বিসিএস ক্যাডারের তুলনায় বেশি। কিন্তু আমার বাপ চান আমি বিসিএস দিয়ে ফার্স্ট ক্লাস কেরানি হই। ঘুষ সুদের কথা বাদ দিলাম। বিসিএস কেরানি হলে ক্ষমতা ও ক্ষমতার সম্মান পাওয়া যায়। আর ক্ষমতা আসে ক্ষমতার অপব্যবহার থেকে। সমাজ ব্যবস্থা দুই নম্বর তাই এই ক্ষমতা। উন্নত দেশে পুলিশ কর্মকর্তার চাকুরিতে স্রেফ সম্মান ছাড়া অবৈধ কোনো ক্ষমতা নেই। যে কেও চাইলেই দেখা করতে পারে। আমার দেশে তা পারে না। যাইহোক আমার বাপ চান আমি বিসিএস ক্যাডার হই। আমার বাপ কিন্তু ধর্মীয় আচার নিষ্ঠার সহিত পালন করেন। কিন্তু তিনি মানসিকভাবে দুই নম্বর। শুধু আমার নয়, যারা লেখাটি পড়ছেন তাদের বাপেরও সাধু হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু আপনারা কখনো বিষয়টা বুঝতে পারেন না। কারন দুই নম্বর সমাজের মধ্যেই আমরা বড় হয়েছি। আমরা আসলে নিজেদের সঙ্গে নিজেরাই প্রতারণা করি। কিন্তু বুঝতে পারি না।
আমাদের অনেকেরই পরিচিত ইসলামী চিন্তাবিদ রয়েছে। তাদের প্রতি শ্রদ্ধায় আমরা পাগলপাড়া হয়ে যাই। মুদ্রার ওপিঠ দেখুন। কি দেখবেন? দেখবেন এরা ধর্ম বেঁচে খায়।
আমি শুধু একটা উদাহরণ দিব
২০০০ এর দশকে (সালটা মনে নেই) একবার দেশে মারাত্মক বন্যা হলো। দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ রাস্তায় আশ্রয় নিলো। বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হলো। ঠিক একই সময়ে দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ কোটি কোটি টাকা খরচ করে হজে গেল। দেশের কোনো ইসলামী চিন্তাবিদ বললেন না, যে এবার হজ না করে টাকাটা বন্যাদুগর্তদের দেওয়া হোক। মানুষের জন্য ধর্ম না ধর্মের জন্য মানুষ? ইসলামে কি বলে?
যতদুর জানি ইসলামে একটা কথা স্পষ্ট বলা আছে, প্রতিবেশী ক্ষুধার্ থাকলে ঈমান থাকে না। ঈমানই যদি না থাকে তাহলে হজ হয় কিভাবে?
হিসাব সোজা। আমাদের দেশের ইসলামী চিন্তাবিদ থেকে শুরু করে মাওলানাদের অনেকেই বদলি হজ করে কিছু আয় করেন। অনেক হুজুরের দেখেছি হজ এজেন্সির সাথে ব্যপক লাইন। তারা হাজী ধরে এনে কিছু আয় করেন। দেশের দুর্যোগ মুহুর্তে মানুষকে ফেলে হজে যাওয়া কোনো ধর্ম নয়। কিন্তু আমাদের দেশের মাওলানা বা ইসলামী চিন্তাবিদেরা তা বোঝেন না, পেট বাঁচানোর তাগিদে।
সিডর বা আইলার মতো দুর্যোগের পর যখন অনেক মানুষ বিপদে, তখন এক শুক্রবারে নামাজে গিয়েছি।প্রতি শুক্রবারের মতো সেদিনও ঈমাম সাব মসজিদের উন্নয়নের নামে ভিক্ষাবৃত্তি করলেন। মানুষও টাকা পয়সা দিল। আর দুর্যোগে যারা কষ্টে আছেন তাদের জন্য হুজুর শুধু দোয়া করলেন। হুজুর মসজিদের জন্য যে টাকা তুললেন সে টাকা দুর্গতদের দেওয়াটাই ছিল আসল ধর্ম। আমি আজ পর্যন্ত কোনো দুর্যোগ মুহুর্তে হুজুর বা ইসলামি চিন্তাবিদের কোনো জাগতিক ভূমিকা দেখিনি।মানবিক বিবেক বোধই নাই, এরা হলো আমাদের মূল ধর্ম পালনকারী। হুজুরদের কথা থাকে একটাই, টাকা পয়সা সব মসজিদ আর মাদ্রাসায় দাও।

কাহিনী এখানেই শেষ নয়,
ইসলাম ধর্মের সুতিকাগার সৌদি আরব এখন বিশ্বের বাইজি বাড়িতে পরিনত হয়েছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাজার কোটি ডলারের অস্ত্রচুক্তি করে। আর তাদের পাশেই ফিলিস্তিনিরা অবিরত রাম চোদন খাচ্ছে ইহুদিদের হাতে। তাদের অপর পাশেই মুসলিম দেশ সোমালিয়ায় হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে। আর সৌদি-দুবাই নামক বিশ্বের বাইজীবাড়িতে চলছে ভোগবিলাসের উৎসব। ইন্দোনেশিয়া থেকে গৃহপরিচারিকা হিসেবে মেয়েদের নিয়ে তারা ভোগ করে।

সৌদি আরব আমাদের দেশের ইসলামী দলগুলোকে অর্থ দেয় ধর্মের প্রতি দরদ থেকে নয়। এখানেও আছে রাজনীতি। সৌদির দ্বিতীয় বৃহত্তম আয় হয় হজ থেকে। ইসলামী এই ব্যবস্থা তারা রাখতে চায আয়টা যাতে কখনো হুমকির মুখে না পড়ে। ইসলামের প্রতি তাদের কেমন দরদ তা তাদের পাশের দেশগুলোর প্রতি আচারণ দেখলেই বোঝা যায়।

বাংলাদেশে পাকিস্তানে ন্যায় এতো কঠোর সব দাবি জানালো হেফাজতে ইসলামের মাওলানারা । অথচ মূল দাবিটাই তারা জানায় নি । ইসলামে নারী নেতৃত্ব সম্পূর্ণ হারাম। কোরানে রয়েছে এ কথা এবং এ নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। ব্লাসফেমী আইন ইসলামে আদৌ আছে কিনা তা নিয়েও বির্তক রয়েছে। কাজেই তাদের প্রথম দাবিই হওয়া উচিত ছিল হাসিনা ও খালেদাকে রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে হবে। এ দাবি তারা তুললোই না? ক্ষমতাকে তারা এতোটাই ভয় পায় যে, কোরানের কথা বলার সাহস রাখে না। এই না হলে খাঁটি মুসলমান!!
সমাজের সর্বত্রই শুধু ভণ্ডামি। চলবে.........
পর্ব-২
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৫
৬৪টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×