শীত ও নানাবাড়ির রোদগুলো!
লুৎফুর রহমান
বদলে গেছে সবকিছু! বদলানোর নিয়মে যেমন বদলেছে
সুনীলের বরুণার সুগন্ধি রোমাল; হারিয়েছে ছেলেবেলা,
বদলে গেলো শীত ও নানাবাড়ির রোদগুলোও।
স্কুলের ছুটিতে নানাবাড়ি গেলেও শীতের বিকেলজুড়ে
চলতো গোল্লাছুট, কানামাছি আর জামাই-বউ খেলা
শীতের বিকেলের নানাবাড়ির রোদগুলো আজো টানে আমাকে।
এখন শীত! পরদেশের রোদগুলো বড় বেরসিক,
নানাবাড়ির রোদের মতো ওরা শরীর জুড়ে সখ্যতা গড়েনা।
মনে পড়ে ছোটমামা। বড় অবেলায় চলে গেলে!
বয়সে অনেক বড় হয়েও বাড়ির পর বাড়ি পেরিয়ে
সুনাই নদীর খেয়া চড়াতে নিয়ে যেতে;
নেহাত নৌকা চড়ার কারণেই হিন্দুপাড়ার ডাক্তারবাড়ি
যাবার নাম করে কতো ঠকিয়েছি খেয়ার মাঝিকে।
খেসারত দিতে হয়েছে নানাকে বছর পরে ধান দিয়ে।
শুনেছি সুনাইও আজ তার যৌবন হারিয়েছে
বেদের মেয়ে জোছনার মতো। নানাবাড়ির রোদগুলো ও স্মৃতিরঝুলি
আজ টেলিফোনের তারের উপর মেলে দিয়েছি, সেদিন যেখানে ছিল
নবজাতকের ব্যবহৃত কাঁথার বাহার।
'চান্নিপসর রাতে মাঝগাঙে যখন নাইতে নামতো পরী'...
এমন সব কিচ্ছা আজ কই হারালো! বুকের উঠোনে বারিষার মতো
আজ ঝরে স্মৃতির দিনগুলো, নানাবাড়ির রোদগুলোর ঘ্রাণ লাগে
নাকের বারেন্দায়, নবজাতকের গতর এর মধূর ঘ্রাণের মতো
সেই সুনাইতে আজ খেয়াও নেই, বদলেছে সময়ের দাবিতে
কিন্তু আজ মৌণমিছিলের ডাক দেই নানাবাড়ির রোদগুলো
হারিয়ে যাবার প্রতিবাদে, কারণ আজো শীত এলে মনে পড়ে
নানাবাড়ির রোদগুলো, মনে পড়ে, মন পুড়ে !!