স্বজন বলতে আমরা সাধারণতঃ বুঝি নিজের যে জন । আর যাকে নিজের ভাবি সেই তো আপন। এছাড়া দেখা যায় যে অনেক প্রয়োজনে নিজের ভাই বোন বা বাবা মাকে কাছে পাওয়া যায় না। সেইসব ক্ষেত্রে আত্নীয় স্বজনই এক মাত্র ভরসা। আজকের বিষয় সম্পর্কে আমার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই তবে প্রাকটিক্যাল এক্সপেরিএন্স এর উপর ভিত্তি করেই আজকের এই চেষ্টা।
আমরা যারা, আধুনিক শহুরে বউরা আছি তারা চেষ্টা করলেই শাশুড়ির অনেক আপন হতে পারবো। আশা করছি চাকুরিজীবি বঊদের জন্য আরো বেশী কাজে লাগবে এই লেখাটি।
এখন কম বেশী সব মেয়েরাই পারলার এ গিয়ে বিভিন্ন রকম সেবা নিয়ে থাকেন। আমি দেখেছি একটূ টাকা হাতে আসলে র্গামেন্টস এর মেয়েরাও যান (এখানে র্গামেন্টসের মেয়েদের সামাজিক অবস্থান নয় অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতাকে বিবেচনা করা হয়েছে) । শুধু গিয়ে সেবা নিলেই তো হবে না, জ়ীবনের সব ক্ষেত্রেই এর প্রয়োগ করতে হবে। তবেই জীবনটা সূন্দর করা সম্ভব।
এবারে চলুন শাশুড়িকে খুশি রাখার উপায় গুলো বের করি। আপনাদের মতামত লেখাটিকে আরো সমৃদ্ধ করবে আশা করছি।
১। শাশুড়ির মাথা ধরলে একটু তেল বসিয়ে দিন (পারলারের এক্সপেরিএন্স কাজে লাগান) । দেখবেন আরামে আপনাকে অনেক সংসারের গোপন কথা শেয়ার করবে। তাতে শাশুরিকে বুঝতে সুবিধা হবে।
২। বিকালের চা তাকে বানিয়ে খাওয়ান। এ্মন কিছু প্রতিদিন করেন যেটা হালকা পাতলা কাজ কিন্তূ আপনার শাশুড়ি যেন আপনার উপড় নির্ভর করে।
৩। মাঝে মাঝে শাশুড়িকে নিয়ে বাজারে যান। এই যায়গাটা শাশুরিকে চেনার ও জানার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট পন্থা। তার পছন্দ অপছন্দ বোঝা যায়।
৪। শাশুড়ির সাথে থাকতে হলে তাকে জয় করেই ছেলেকে জয় করা সম্ভব। মেয়েরা মানে বউরা চাইলেই সম্ভব। আপনি শূধু নিজের মাকে কতটুকু ভালবাসেন আর প্রয়োজনে কতটুকু ছাড় দেন সেইটুকূ ভাবূন। আপনি বাইরে থেকে এই পরিবারে এসেছেন আপনাকেই ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা রাখতে হবে।
৫। কিছু শাশুড়ি আছেন অনেক ক্যাট ক্যাট করেন। ঘরের মানুষের শুনতে শুনতে হয়ত অভ্যাস হয়ে গ্যাছে কিন্তু আপনি বাইরে থেকে এসেছেন বলে আপনার হয়ত বিরক্ত লাগছে। এইক্ষেত্রে আপনাকে একটু ধৈর্য্য ধরে থাকতে হবে। আপনি সেই দিনই ভাল বউ হবেন যেদিন আপনার শাশুড়ি তাঁর ছেলে ও মেয়ে সম্পর্কে আপনাকে বলবে, সেই দিনই আপনি শাশুড়ির কাছে আপনার চেয়েও আপন হবেন।
৬। আমার এক বড় আপা (অনাত্নীয়) আমাকে প্রায়ই বলতেন মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক দুই ধরনের এক-রক্তিয় আর দুই-আত্নীয়। রক্তের সম্পর্ককে আত্নীয় এর সাথে মিল রেখে রক্তিয় বলতেন।
বাবা, মা, ভাই, বোন, ইত্যাদি রক্তিয় সম্পর্ক আর বন্ধু বান্ধব, শশুর বাড়ির লোকজন অথবা কোনো অফিস কলিগ ইত্যাদি আত্নীয়। কারন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিজেদের রক্তের সম্পর্কের লোকজন্ দের চেয়েও আমরা সাধারনত এইসব প্রিয় মানুষদের সঙ্গে অধিক সময় কাটাই। ফলে এদের সংগে শেয়ারিং বা যে কোনো কিছুর আদান প্রদানও বেশী হয়। বরং দেখা যায় বাবা মা বা নিজের ভাই বোনদের সংগে সম্পর্ক অনেকটা ফরমাল হয়ে যায়।
অবশ্য সব পরিবারের জন্য এই কথাটি প্রযোয্য নয়। অনেক সময় দেখা যায় বিয়ের পর মেয়েরা নিজের বাবা মা বা ভাই বোনদের জন্য অনেক করে এবং অনেক সময় দেয়। অনেক সময় দেয়ার ফলে অনেক কথার শেয়ারিং হয়। সব যে প্রয়োজনীয় কথা তা নিশ্চয় করে বলা যায় না। গীবত করার মজাই আলাদা, যদি দুপক্ষ সমান ভাবে উপভোগ করে। অনেক পিতা মাতা আছেন (অবশ্য মাতারাই বেশী এগিয়ে আছেন) এগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনেন আবার আমি নিজে দেখেছি অনেক পিতা কে বলতে যে শ্বশুড় বাড়ীর কোন বদনাম আমি শুনতে রাজী না। এই ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে সেই পিতা অনেক ব্যস্ত। তার শোনার সময় নাই। সময় থাকলে হয়ত তিনিও শুনতেন।
যাইহোক, সম্পর্ক সুন্দর রাখা বা সুন্দরভাবে পরিচালিত করা সম্পূর্ন নিজের উপড় নির্ভর করে তা নিজের পরিবারেই মধ্যেই হোক অথবা শ্বশুড় বাড়ীর লোকজনদের মধ্যে।
একটা ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই যখন পরিবারের কারো টাকা পয়সা পর্যাপ্ত পরিমানে থাকে এবং সেই জন টাকার গরম অনূভব করে তখন সম্পর্ক ভাল থাকার জন্য তার বাসায় বেশী বেশী না যেয়ে বরং তাকে উপেক্ষা করাই উচিৎ। সেটা যদি সেই ব্যাক্তি টের পায় ভাল নাহলেও কোন সমস্যা নাই। আপনি তার মুখাপেক্ষি নন এটুকূ বুঝতে দিতে পারলেই হলো। আপনার নিজেরও একটা মেন্টাল স্যাটিসফেকশন থাকল যে আপনার এত নিকট আত্নিয় থাকা সত্ত্বেয় আপনার প্রয়োজনে ও অপ্রয়োজনে তাদেরকে বিরক্ত করেন নাই। শান্তিতে অন্ততঃ ঘুমাতে পারবেন।
পরিবারের সকলকে নিয়ে সবাই ভাল থাকুন আজকে বিজয় দিবসের মাসে এই শীতের দুপুরে এই শুভ কামনা রইল।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




