somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুষ্টিয়া কুমারখালি কুঠিবাড়ির কুলফি বিক্রেতা । সব 'কু' মন্দ নয় ।

২৯ শে মে, ২০১০ বিকাল ৫:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একটু একটু করে বুঝতে পারছি কি করে রবীন্দ্রনাথ অপার বিস্ময়ে লিখে গেছেন গল্প কবিতা মধু রস সিক্ত কালজয়ী সব সৃষ্টি । যতবার পড়ি তাকে নতুন করে শিখছি , জানছি । এ জানার শেষ এ জনমে ফুরাবে না । এক একবার ভাবি রবীন্দ্রনাথ কি একজন ছিলেন , কেবল এক মানুষ । একজনে কি করে ধারন করা সম্ভব অনেকের মন , অনেকের কথা , অনেকের ব্যথা , অনেকের অভিজ্ঞতা । আনন্দ বেদনা চাঞ্চল্য প্রাঞ্জল সব ধারার উৎসে বসে উনি শব্দের পসরা সাজিয়েছেন ।

শিলাইদহ তাকে কোন মুগ্ধতায় বশ করেছিল সে সবার জানা ; শিলাইদহের প্রকৃতি এবং মানুষের সরলতা তাকে বার বার আকর্ষন করেছে । তাই ফিরে ফিরে এসেছেন এখানে ।

আমাদের যাওয়া ছিল সেই রবীন্দ্রনাথের সন্ধানে , তাকে পাবো বলে মনের ঘরের দুয়ার খুলে বের হয়েছি সেই কবে থেকে । ' কবে আমি বাহির হলেম তোমারি গান গেয়ে , সে আজকে নয় ' । আজকে নয় , কয়েকদিন আগে । যাবার আগে প্রস্তুতি ছিল দেখবার মত । এ শাড়ী পরি , সে শাড়ি পরি । মেয়ের সাথে আলোচনা চলে , ছোট হলেও অন্ধের যষ্টি । ভ্রমনে জর্জেট , সিল্ক ভাল জানে সে । তবু সূতী পরতে হবে পাড়ওয়ালা ওকে বোঝাই । পথে যেতে যেতে মেয়ের পাপাকে বললাম , " রবীন্দ্রনাথ যদি জানতেন তার অবর্তমানে তার সাথে দেখা করতে যাবার এহেন পরিচর্যা , না জানি আরো কি কি লিখে যেতেন ।"
শিলাইদহ কুঠিবাড়ি , স্বপ্নের বাড়ি আমাদের । সেখানে গিয়ে ছুটছি যেন আপ্রান ; রবীন্দ্রনাথ কোথায় , কিভাবে ! সে ছাড়া এক দন্ড চলে না যে ।

এত মন ছোটাছুটির ধার ধারল না এক কুলফিমলাই বিক্রেতা । ধরিয়ে দিল সবার হাতে । ঘন দুধের কুলফি হাতে নিয়ে ছেলে আমার তার মায়ের মতই দিক্ হারা । বেশ অনেকক্ষন পর দেখা দিল বিক্রেতা । আমার ছেলের হাতে যে কুলফিপাত্র ছিল ছোট মত , সেটি সে ফেরত পায় নি ।
রবীন্দ্রনাথ পড়ে রইলেন আমাদের চিন্তানদীতে ডুব মেরে । তিন ইঞ্চি সাইজের সে টিনের পাত্র দেখা দিচ্ছে না । বিক্রেতা সে লোকটির হাতে ১০ টি টাকা ধরিয়ে দিলাম । সে আরো অমন সংগ্রহ করে নেবে ।

সন্ধ্যা হয় হয় , বেরিয়ে আসছি । সেই কুলফি বিক্রেতা অপূর্ব সুন্দর হাসি মেলে দিয়ে ১০ টাকা এগিয়ে দিল । জানাল সে পেয়ে গেছে সেটি ঘাসের মধ্যে । টাকাটা তাকে দেবার ইচ্ছে ছিল । বললাম, " রাখুন আপনি , দিতে হবে না ।" ।
জবাব শুনে অবাক । হেসে বলল , " সেই টে তো আমি পেয়ে গেছি , এই টাকা দিয়ে আমি কি করবো ? "
প্রায় জোর করে দিয়ে চলে গেল চোখের আড়ালে ।
কি বলি তাকে ? টাকা দিয়ে মানুষ কি করে ? টাকার জন্য মানুষ কিনা করে ?
বড় ভাবনায় পড়ে গেলাম । মাঝে মাঝে স্বাভাবিক জ্ঞান লোপ পায় এমন পরিস্থিতে পড়লে । গাড়ী স্টার্ট দিতে বরকে বললাম , " চলে গেল লোকটা , তুমি কেন ওর সাথে আমার একটা ছবি তুলে দিলে না ?"
বর বলল মুচকি হেসে , " এইটুকু বাকী আছে ?"

চলে আসতে আসতে অনেকটা সময় সেই হাসিমাখা গ্রাম্য সরল লোকটার কথা মনে হচ্ছিল । রবীন্দ্রনাথ কেন এ শিলাইদহের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন খানিকটা হৃদয়ঙ্গম করতে পারি ।


ছবি : আমার কন্যা ,আমার প্রধান সহকারী , দ্বিতীয় অঘটন ঘটন পটিয়সীর তোলা --- বকুল তলায় যাবার পথে ।

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১০ রাত ৯:৪৯
৩৬টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×