somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ ঐতিহাসিক রেফারেন্ডাম দিবস আসাম থেকে বাংলায় যুক্ত হয় সিলেট

০৭ ই জুলাই, ২০১০ সকাল ১১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




আজ ঐতিহাসিক আসাম রেফারেন্ডাম দিবস। ১৯৪৭ সালের ৬ ও ৭ জুলাই ঐতিহাসিক গণভোটের মাধ্যমে সিলেট অঞ্চল আসাম থেকে বাংলায় যুক্ত হয়। ওই গণভোটের অনেক পূর্ব থেকেই সিলেটকে বাংলার সাথে যুক্ত করার আন্দোলন চলে আসে। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৪৭ সালে গণভোটের আয়োজন করা হয় এবং অভিন্ন সংস্কৃতির কারণে সিলেট অঞ্চলের জনগণ আসাম ত্যাগ করে বাংলায় চলে আসে। বিভিন্ন কারণে গণভোটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বিশেষ করে ১৯৪৭ সালে ইংরেজরা ভারতবর্ষকে ২টি রাষ্ট্রে বিভক্ত করে স্বাধীনতা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিলে প্রস্তাবিত দুটি রাষ্ট্রের এলাকা ও সীমানা নিয়ে বিরাট জটিলতার সৃষ্টি হয়। দ্বিজাতি তত্তে¡র ভিত্তিতে দেশ বিভক্তির যে ফর্মুলা সেই অনুযায়ী মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলো পাকিস্তানে এবং হিন্দু অধ্যুষিত এলাকাগুলো ভারতের সাথে যুক্ত রাখার জন্য মুসলিম লীগ ও কংগ্রেস দাবি পেশ করে। মুসলিম লীগের পাকিস্তান দাবি অনুযায়ী সমগ্র আসাম, বাংলা পূর্ব পাকিস্তানে পড়ার প্রস্তাব ছিল। সমগ্র ভারতবর্ষে বেশকিছু এলাকা নিয়ে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মতিবিরোধ চলে আসলে ওই সমস্ত এলাকার সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের পছন্দমত রাষ্ট্রের অন্তর্ভূক্ত হওয়ার দাবি ন্যায় সঙ্গত বিধায় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের সম্মতিক্রমে ১৯৪৭ সালের ৩ জুন পাঞ্জাব ও বাংলার জন্য ২টি বাউন্ডারী কমিশন গঠন করেন তৎকালীন লর্ড মাউন্টব্যাটেন। সেই কমিশনের সিদ্ধান্ত ছিল সিলেট জেলার ভবিষ্যত নির্ধারণে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে এবং বাংলার জন্য গঠিত কমিশনই আসাম প্রদেশের সীমা নির্ধারণে কাজ করবে। উল্লেখ্য যে, ছিল যে, সিলেট জেলার অনুষ্ঠিতব্য গণভোটের ফলাফল যদি সিলেটকে পূর্ব বাংলার সঙ্গে একত্রিভূক্ত করার পে যায় তবে বাংলার জন্য গঠিত সীমানা কমিশন সিলেট জেলা ও তৎস¤প্রতি জেলা সমূহের সীমানা চিহ্নিত করে ওইসব এলাকার ভারত বা পাকিস্তান অন্তর্ভূক্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। গণভোটের জন্য আসামের গভর্ণর মি. এইচসি ব্লাক'কে রেফারেন্ডাম কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। রেফারেন্ডাম কমিশনার ৬ ও ৭ জুলাই সোম ও মঙ্গলবার ১৯৪৭ সালে গণভোটের তারিখ নির্ধারণ করেন। নির্বাচনী প্রচার শুরু হলে সমগ্র জেলায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। নির্বাচনী প্রচারে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে মুসলিম লীগ নেতাদের এক বিরাট দল সিলেটে আসেন। নেতাদের মধ্যে মৌলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, মৌলানা আকরাম খান, পীর বাদশা মিয়া, এইচএম ইস্পাহানি, ইউসুফ আলী চৌধুরী, আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ, ফজলুর রহমান কাদের চৌধুরী, শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখযোগ্য। সমগ্র জেলায় মুসলমানদের ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্টতা সত্তে¡ও গণভোটের ফলাফলে অনিশ্চিতা ছিল। এর কারণ আসামের মতায় ছিল কংগ্রেস। কিন্তু ৬ ও ৭ জুলাইর গণভোটে সিলেট পূর্ব বাংলার পইে জনগণ রায় প্রদান করে। সামান্য ও বিচ্ছিন্ন সহিংসতার ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই গণভোট সম্পন্ন হয়। ভোটারদের শতকরা উপস্থিতি ছিল ৭৮.৩ শতাংশ। মোট ভোট প্রয়োগ করে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৫২ জন। পূর্ব বাংলার পে ভোট দেয় ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬১৯ জন এবং আসামের পে ভোট পায় ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৮৪ জন। সেই সময় সমগ্র সিলেট জেলার লোকসংখ্যা ছিল ৩১ লাখ ১৬ হাজার ৬০২ জন। এর মধ্যে ভোটার সংখ্যা ছিল মাত্র ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৫২৩ জন। অর্থাৎ মোট জনসংখার ১৭.৫৬৫ শতাংশ। এর কারণ হল যারা জমির খাজনা বা অন্য কোন প্রকার কর প্রদান করতেন কেবল তাদেরই ভোট দেয়ার অধিকার ছিল।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১০ রাত ৮:৪৫
১০টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×