সময়টা ১৯৮৭ সাল। রিলায়েন্স বিশ্বকাপ ক্রিকেট সেমিফাইনাল। স্থানঃ গাদ্দাফী স্টেডিয়াম , লাহোর পাকিস্তান।
স্বাগতিক পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ২৬৭ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া। লাখ লাখ পাকিস্তানি সমর্থকের হৃদয় ভেঙ্গে দিয়ে ১৮ রানের পরাজয় মেনে নেয় ইমরান খাঁনের দল।ভক্তদের কান্নায় পুরো স্টেডিয়ামের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।কিন্তু হঠাৎ একটি ঘোষণা স্টেডিয়ামে থাকা ভক্তদের কান্না গগনবিদারী আকুতিতে পরিণত হয় । ঘোষণাটি ছিল ক্রিকেট দুনিয়া থেকে পাকিস্তান ক্রিকেটের প্রাণভোমরা ইমরান খাঁনের বিদায়ের সিদ্ধান্ত।পিনপিতন নীরব স্টেডিয়ামের গ্যালারী থেকে ভেসে আসে একটি আকূতি ''কাভি আল বিদা না কহ না''
একসময় সেই আকূতি পাকিস্তানের সীমানা ছাড়িয়ে সারা ক্রিকেট দুনিয়া ছড়িয়ে পড়ে। ভক্তদের আবগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ক্রিকেটে ফিরে আসেন ইমরান। তারপরতো ইতিহাস । সে আলাপে নাই বা গেলাম। শুধু এইটুকু বলে ক্ষান্ত দেবো। একটি ভঙুর দল নিয়ে বিশ্বকাপ উপহার দেন ইমরান।
আজ বিশ্ব ফুটবলের মহান শিল্পী লিওনেল মেসি'র আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায়ের ঘোষণা শুনে বার বার মনে পড়ছে সেই লাইনটি
''কাভি আল বিদা না কহ না'' মেসি'র এই ঘোষণা বর্তমান ফুটবল বিশ্বের জন্যে বিরাট আঘাত। কারণ মেসি শুধুই একজন মাত্র বড় মাপের ফুটবলারই নন, তিনি হচ্ছেন একজন বিশাল হৃদয়ের মানুষ। এতটা বিণয়ী, এতটা অহংকার বিবর্জিত সেলিব্রেটি খেলোয়াড় এই গ্রহে আর একটিও আছে কিনা সন্দেহ আছে।মেসি'র উদার মানসিকতা একটি উদাহরণ দিলেই পরিস্কার হবে। বর্তমান বার্সেলোনা দলের অবিসংবাদিত প্লেমেকার যেভাবে ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার ও কলাম্বিয়ান সুপারস্টার সুয়ারেজকে যেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তা এককথায় অভাবনীয়। মেসি এখানে পেশদারি সীমাবদ্ধতাকে নির্দ্বিধায় অতিক্রম করেছেন।
সেই অসম্ভব মেধাবী খেলোয়াড়টি খালি হাতে ফুটবল থেকে বিদায় নেয়া এককথায় পুরো ফুটবল ইতিহাসের জন্যে বড় ধরনের অপূর্ণতা।একজন ডাই-হার্ট ব্রাজিলিয়ান সমর্থক হিসেবে সেই প্রত্যাশা আমি নিজেও করি না।
তাই ফুটবলকে পরিপূর্ণতার দেয়ার প্রয়োজনেও সুন্দর ফুটবলের পূজারী এই মহান শৈল্পিক ফুটবলার তাঁর আবেগপ্রসূত অবসরের সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসবেন বলে বিশ্বাস করি।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ২:১৪