somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গ্লানিময় দিনের এক পশলা বৃষ্টির আনন্দ

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই গল্প এই ভালোবেসে বন্ধুদের প্রিয় বই গুলি ছুয়ে দেয়া(ট্যাগ করা ) কাছের প্রিয় বন্ধুর আত্মার খুব কাছে যাওয়া ,নতুন কিছু সাহিত্য আস্বাদন , বেশ কিছু দিন আগে থেকে ...
সেই মুহূর্ত গুলিতে ব্যাক্তিগত জীবনের চলন্ত ট্রেন এর গতি সামলানোতে ব্যস্ত ভীষণ আমি ,আমার সেই অগোছালো বিবর্ণ পাতা ঝরার সময়ে ও পাগলাটে বন্ধু রা আমাকে ছুঁয়ে দিতে ভুলে যায়নি । এদের সবার পড়ার অভিজ্ঞতা ভান্ডার ,লেখার স্মৃতি জাগানিয়া সুর নিমেষে সবাই কে কাছে টেনে নেয় ,সহজিয়া ভালোলাগা র আবেশ সবাই কে ছুয়ে যায় । বন্ধুদের লেখার অনুরণন আমাকে স্পর্শ করে গেলো ।আমিও লিখতে বসে গেলাম নিজের পছন্দের ,সময় কে পাল্টে দেয়া বলি, মনের জানালা খুলে দেয়ার চাবি বলি ,আমার ভাল থাকার মন্ত্র বলি , সুখ পাঠ্য বই ই বলি , যে নামেই ডাকি তাদের নিয়ে ।
ভাবনার জগতের সুনসান দীঘিতে প্রথম ঢিল অবশ্যই বড়দের মুখের রুপকথা র গল্প , অনেক দিন সংগ্রহে রাখা এর পরের প্রথম প্রিয় বই এর নাম
* " চয়নিকা " ছোট বেলায় আমাদের পাঠ্য বই ছিল এর প্রতিটি লেখা ছিল মন ছোয়া , " # মাহমুদ মিয়া বেকার / তাই বলে কি স্বাদ নাই তার বিশ্ব ঘুড়ে দেখার /
# মেজাজ ছিল তিরিক্ষি তার / মাথায় ছিল চুলের বাহা
# ভাল্লাগেনা কিচ্ছু তার / করেই আছে মুখটি ভার / অনেক সাধের চেস্টা তে জানল সবাই শেষ টা তে / এর রোগ সারে পরলে পাতে চক বাজারের গোস্ত রুটি
সব চাইতে প্রিয় প্রিয় লেখাটার কথা লিখতে ভুলেই গেলাম এই চয়নিকা বই এর জা ছিল এক্কেবারে সেই সময়ের মনের কথা ।

** আম্মা বলেন পড় রে সোনা আব্বা বলেন মন দে
পাঠে আমার মন বসে না কাঁঠাল চাপা র গন্ধে ...
আমার কেবল ইচ্ছা করে পাখীর মত উড়তে
নানা রঙের ফুলের উপর ... ঘুড়তে ।

আহা শৈশব ফুলে ফুলে ঊরে বেড়ানোর দিন ।


** দ্বিতীয় বই না বলে লেখা বলা ভালো যা মনের আয়নায় আজ ও একই ভাবে প্রতিফলিত হয় সেটা হচ্ছে পল্লী কবি জসীম উদ্দিনের লেখা " নিমন্ত্রণ "
তুমি যাবে ভাই – যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়,
গাছের ছায়ায় লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়;
তুমি যদি যাও – দেখিবে সেখানে মটর লতার সনে,
সীম আর সীম – হাত বাড়াইলে মুঠি ভরে সেই খানে।
তুমি যদি যাও সে – সব কুড়ায়ে
নাড়ার আগুনে পোড়ায়ে পোড়ায়ে,
খাব আর যত গেঁয়ো – চাষীদের ডাকিয়া নিমন্ত্রণে,
হাসিয়া হাসিয়া মুঠি মুঠি তাহা বিলাইব দুইজনে।
কাউরে দেব না ,তুমি যদি চাও
আচ্ছা না হয় দিয়ে দেব তাও
কি অসম্ভব মমতা মাখা কবিতা ,বড় আপা আমাদের সব ভাই বোনদের কে এই কবিতা শুনিয়েছিলেন ।
এখাণে প্রসঙ্গ ক্রমে একটি কথা উল্লেখ করি বড় তিন ভাই বোন থাকাতে ওদের প্রতি নতুন বছরের বাংলা বই এর সব গল্প পড়ে ফেলতাম , বাংলা ব্যাকারন এর রচনা নৌকা ভ্রমন , বট গাছের আত্ম কাহিনী ,এগুলি সব সব ...
হরলাল রায়ের ব্যাকারন বই এর অসমাপ্ত গল্পের সমাপ্তি করন পড়তাম তখন কিছুই বুঝতাম না অবশ্য ।
*** এর পরের বই নজরুলের শিশু সাহিত্য গুলো ।
এ এক অন্য জগত
# লিচু চোঁরর কানমলা
‪#‎কাঠ‬ বিড়ালী র হৃদয় হীনতা
‪#‎সকাল‬ বেলার পাখী হবার প্রেরনা
‪#‎সাত‬ ভাই চম্পার দুঃখ ।
‪#‎এত‬ বড় রঙ যাদু
** রবীন্দ্র নাথ কেও চিনেছিলাম পাশা পাশি বজ্রেশরের লুচি দোলানো আর ক্যাস্টর ওয়েল এ কিন্তু লোটর দলের স্কুল পালানো নজরুল যেভাবে শৈশবের হাঁসি কান্নায় মিশে আছে রবি বাবু ততটা পারেনি ।
বুদ্ধদেব বসুর সোকানুর সন্ধান ও পেয়েছি
‪#‎কোথায়‬ চলেছ , এদিকে এস না দুটো কথা শোন দেখি
এই নাও এই চকচকে দুই নতুন রুপোর সিকি
সোকানুর কাছে আর আনি আছে তোমাকে দেব গো তাও
দয়া করে মাঝি মোরে সোকানুরে নৌকায় তুলে নাও ।
‪#‎পৈঁঠায়‬ বসে গরম ভাত আর টাটকা ইলিশ ভাঁজা সোকানুরে তুই আকাশের রাণী আমি পদ্মার রাজা
আর একটা প্রিয় বই ছিল নাম ভুলে গেছি , কাঠের পুতুল বা অন্য কিছু হবে " গল্প টা এমন ছিল মিথ্যে বললে নাক লম্বা হয়ে যায় "।
**** আমার কৈশোরের কান্না মিশে আছে হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসনের কুৎসিত হাঁসের ছানার সাথে
***** আর ছোট জলকন্যার ভালোবাসার ঢেউয়ের ফেনায়
****** সেবা প্রকাশনীর রকিব হাসানের 'তিন গোয়েন্দার কিশোর পাশার কথা না বললে একটা অধ্যায় বাদ পরে যায় ।জিনিয়াস হবার সুপ্ত বাসনা তখন থেকেই জা আজো পূরণ হয় নি grin emoticon
বড় ভাই বোনেরা তখন ওয়েস্টার্ন সিরিজ , মাসুদ রানা তে নিমগ্ন
যথেষ্ট বিনয়ের সাথে শ্রদ্ধা সহ বলতে চাই ইহা আমার কাপের চা নহে
চেস্টা করেছি ,কিন্তু অল কোয়ায়েট অন দ্যা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট ধরনের দুই একটা ছাড়া কোনটাই শেষ তক শেষ করে উঠতে পারি নাই ।
এর পর আসে আমার জীবনের সবচাইতে স্বর্গীয় সময় " আলোকিত মানুষ হবার কারিগরের সাথে পরিচয় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া কর্মসূচিতে অংশ গ্রহন করে ।
বড্ড সুন্দর আর পাখীর পাখায় ভর করে উড়ে চলা দিন ছিল , প্রথম প্রথম সপ্তাহে একটা পেতাম এর পর দুইটা , পরের বছর থেকে সংগঠক হিসেবে যোগ দিয়ে তো লাইব্রেরী ই আমার ।
হাজারো বই এর ভিড়ে
******* ক্রীত দাসের হাঁসি - শওকত ওসমান
*******ঝিন্দের বন্দী - শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের
******** পিতা পুত্র- ভেরা পানোভা Vera Federovna Panova.
******** মা- মাক্সিম গোর্কি
********* নিবেদিতা রিসার্চ ল্যাবরেটরি - শঙ্কর
********** প্রাইড এন্ড প্রেজুডিস -
********* পথের পাঁচালী বিভুতি ভূষণ
********** দত্তা - শরত চন্দ্র
****** সোজন বাদিয়ার ঘাট - জসীম উদ্দিন
ততদিনে বন্ধুরা হুমায়ুন , ইমদাদুল হক মিলনে ডুবেছে কিছু আমিও পড়ে ফেলেছি কিন্তু ধাক্কা খাইনি
*********** আয়না ঘড় এবং
************ তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রণে আমাকে হুমায়ূন ভক্ত করে ।
************ জীবন কৃষ্ণ মেমোরিয়াল স্কুল
রবীন্দ্রনাথে আশ্রয় খুঁজি
************* সঞ্চয়িতা নিয়ে জীবনে প্রথম বই মেলায় মেজ বোনের কাছে থেকে জন্মদিনের উপহার পেয়ে
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন পড়ুয়া আমি কে পূর্ণতা দেয়
সমরেশ , শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় , সুনীল, শরদিন্দু কত শত লেখকে ডুবি । অসংখ্য বই কত শত নামের লেখক
************** মানব জমিন -শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
**************** পার্থিব -শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
***************** পূর্ব পশ্চিম- সুনীল
********ছবির দেশে কবিতার দেশে - সুনীল
****************কড়ি দিয়ে কিনলাম - বিমল মিত্র
আবুল হাসান , হেলাল হাফিজ , রুদ্র , সুকান্ত , নিরমলেন্দু গুণ এদের কিছু নির্বাচিত কবিতার বই
আমার জীবনের গুরুত্ব পূর্ণ বাকে সত্য হয়ে ধরা দিয়েছে ।
**ঝিনুক নীরবে সহ
ঝিনুক নীরবে সহো
ঝিনুক নীরবে সহো, ঝিনুক নীরবে সহে যাও,
ভিতরে বিষের বালি, মুখ বুজে মুক্তা ফলাও!
** গিয়ে থাকলে আমার গেছে কার তাতে কি
আমি না হয় ভালোবেসে ভুল করেছি ।
** ভালোবাসা যাকে খায় তার সব টুকু খায় ।
গুণ এর হুলিয়া কবিতার
" আমি যখন বাড়িতে পৌঁছুলুম তখন দুপুর "
এক অন্য জগতে নিয়ে যায় ।
******** আন্না করেনিনা -তলস্তয় পড়তে শুরু করি বিয়ের পর আন্নার ব্যক্তিত্ব আমাকে প্রতি পদে মুগ্ধ করে , আন্নার বিপর্যস্ত জীবনের করুন পরিণতি অনেকটাই আচ করতে পারছিলাম ।
বই শেষ করে ছেলে সেরিওঝার খুব দ্রুত নিজেকে সামলানোর চেষ্টার যে ভয়ংকর বর্ণনা তা আমাকে অনেক দিন তাড়া করছে আর ছোট্ট মেয়ে টার মা কে চিনবার আগেই মাতৃহারা হবার ভয়নক পরিনতির জন্য আবার আন্না কেই আমি দোষী করেছি ।
রয়ে গেল বাকী অনেক আসলেই থেকে যায় স্মৃতি নির্ভর লেখা প্রকাশের পর মনে হয় আরো কিছু লিখি
ভ্রমণ কাহিনী আমার সবসময় প্রিয় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া প্রতিযোগিতায় পেয়েছিলাম পালামৌ রয়ে গেছে প্রিয় হয়ে ।
অনেক দিন হয় নতুন বই এর গন্ধ নেই না ই- বুক আর ব্লগের ভিড়ে বিছানায় শুয়ে পাশের জানালা পা তুলে দিয়ে সারাদিন বই পড়ার অখন্ড অবসরের স্মৃতি আমার অনেক গ্লানিময় দিনের এক পশলা বৃষ্টির আনন্দ ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০১
৫৬টি মন্তব্য ৫৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×