এশিয়া মহাদেশের ভারত উপমহাদেশে সুপরিচিত ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা জমিদারবাড়ি (রাজবাড়ি) সংস্কার হওয়ায় পর্যটকদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে । বিশাল আকারের পুকুর বিষ্ণু সাগর, প্রাচীন স্থাপনা যুগল মন্দির, চাঁন খার মসজিদ, বিবির ঘর, ঘূর্ণায়মান নাট্য মঞ্চ, সাত ঘাটের পুকুর, জলটং, রসুলপুর বনসহ অসংখ্য দর্শনীয় স্পট দেখে ঐতিহ্যবাহী মন্ডার স্বাদ নিয়ে যাচ্ছেন পর্যটকরা । জানা যায় , সতেরশ’ দশকের মাঝামাঝি সময়ে নির্মাণ করা হয় মুক্তাগাছার জমিদার বাড়ি । ১৮শ’ দশকে ভূমিকম্পে বাড়িটি ভেঙ্গে পড়লে লন্ডন আর ভারত থেকে সুদক্ষ কারিগর এনে ভূমিকম্প সহিষ্ণু করে পূণ:নির্মাণ করা হয় জমিদারবাড়ি । ১৯৪৭ সালের পর মুক্তাগাছার জমিদারদের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীকৃষ্ণ আচার্য চৌধুরীর ১৬ জন বংশধরের প্রায় সবাই চলে যান ভারতে । পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে তাদের নির্মিত ১৬ টি বাড়ি । ক্রমান্বয়ে এই বাড়িগুলিতে ( রাজবাড়ি ব্যাতিত) গড়ে তোলা হয় শহীদ স্মৃতি সরকারী কলেজ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ক্যাম্প, সাব রেজিস্ট্রি অফিস, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, নবারুণ বিদ্যানিকেতনসহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান । জমিদারদের কয়েকটি বাড়ি এখনও বেদখল করে অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস করে আসছেন অনেকেই।
বর্তমান সরকার পর্যটনের অপার সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতœতত্ত্ব বিভাগের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে চলতি বছরের ফেব্র“য়ারিতে জমিদারবাড়ি সংস্কারের কার্যক্রম হাতে নেয় । সংস্কারের ফলে ফিরে আসতে থাকে বাড়িটির আগের চেহারা। গত জুনে সংস্কার কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও সুনিপূণভাবে বাড়িটি আগের চেহারা ফিরিয়ে আনতে আরও সময় প্রয়োজন বলে জানান, সংশ্লিষ্ট সুদক্ষ শ্রমিকরা । প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সংস্কার কাজের সময় বৃদ্ধি করে চালিয়ে যাচ্ছেন কাজ । জানা যায় , একসময় নিন্মাঞ্চল ছিল মুক্তাগাছা শহর । জমিদাররা বসতি স্থাপনের আগে জমিদার বিষ্ণু আচার্য চৌধুরীর নামে বিশাল পুকুর (দিঘী )কেটে শহরকে উঁচু করেন । এরপর দীর্ঘ আড়াইশ’ বছর ধরে বন্যামুক্ত হয় মুক্তাগাছা ।
মুক্তাগাছায় জমিদারগণ অবস্থানকালে বহু স্থাপনা সৃষ্টি করেন। রোপন করেন বিরল প্রজাতির গাছ পালা। জমিদারগণ আজ নেই রেখে গেছেন তাদের স্মৃতি মূল্যবান বহু স্থাপনা । আজ যা পর্যটন সমৃদ্ধ। ময়মনসিংহ – টাঙ্গাইল সড়কের মুক্তাগাছার রসুলপুর বনে বিশাল বিশাল শাল গজারি গাছ আর লাল মাটিতে আনারস বাগান দেখলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। দেশীয় এসমস্ত গাছের ফাঁকে সূর্যের আলো অনিন্দ্য সুন্দর দৃশ্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে । জমিদারদের অত্যাচার থেকে পরিত্রাণ পেতে এই বনে গড়ে তোলা হয় বিদ্রোহী ফকির সণ্যাসী বাহিনীর কার্যক্রম । খাজুলিয়া এলাকায় বিবির ঘর নামের বাড়ি বানিয়ে তাদের দাবী আদায়ে অনেক জমিদারকে অপহরণ করে রাখে বিদ্রোহীরা । ঐতিহাসিক বিবির ঘর আজ পর্যটন কেন্দ্র । পর্যটনকেন্দ্রগুলি পরিদর্শন শেষে প্রসিদ্ধ মন্ডার স্বাদ ফিরিয়ে দেয় ক্লান্তি । আজ থেকে ২শ’ বছর আগে গোপাল পাল এই মণ্ডা তৈরি করেন । স্বপ্নে এক সাধু তাকে এই মণ্ডা তৈরির কলাকৌশল শেখান । দুধ দিয়ে তৈরি এই মন্ডা বর্তমানে প্রতিটি ২০ টাকা হিসাবে বিক্রি করা হয় । মুক্তাগাছা ব্যাতিত দেশের আর কেথাও এই মন্ডা পাওয়া যায় না । মণ্ডা বিক্রেতা গোপাল পালের বংশধররা জানান, এবছর পর্যটকের সংখ্যা বেশী তাই মণ্ডা বিক্রি বেড়েছে । জমিদার বাড়ি সংস্কারের ফলে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী ।see more
http://muktagachanewsbd.wordpress.comhttp://muktagachanewsbd.wordpress.com
আলোচিত ব্লগ
বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।
১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন
৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন
১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।