আল্লাহ/রাছুল বলেন:
১। ক. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ/আল্লাহু আহাদ= একাকার উপাস্য ব্যতীত (খণ্ডিত) উপাস্য নেই।(সুত্র: ৩৭: ৩৫; ২: ১৬৩, ২৫৫; ৩: ১৮; ৪৭: ১৯ এবং ইখলাস)। অর্থাত লা শরিক কলেমা।
খ. আল হামদু লীল্লাহী রাব্বিল আলআমীন= যাবতীয় প্রশংসা/সন্মান-গুণগান একমাত্র বিশ্ব চরাচরের প্রভূর জন্য। (সুত্র: ১: ১; ৬: ১৬২)
গ. ক্বুল-সাকুরুন= বল! আমি এর বিনিময় তোমাদের কাছ থেকে প্রেম-ভালোবাসা ও আদর্শ ব্যবহার ব্যতীত (না অর্থ, না প্রশংসা, না সন্মান, না সুপারিশ) অন্য কিছুই চাই না (সুত্র: ৪২: ২৩)।
ঘ. মা কানা- তাদ্রুছুন= কোন ব্যক্তিকে আল্লাহ কেতাব, হেকমত ও নুবুয়ত দান করার পর সে মানুষকে বলবে, ‘আল্লাহর পরিবর্তে আমার এবাদত (যে কোন ধরণের) কর!’ অবশ্যই নয়! বরং সে বলবে, ‘তোমরা আল্লার এবাদত করো; যেহেতু তোমরা সকলে কেতাব শিখ এবং শিখাও (তথ্যসুত্র: ৩: ৭৯)।
ঙ. কুল!-আলামীন= স্বীকার কর! আমার ছালাত-প্রার্থনা, আমার ইবাদত-কর্ম, আমার জীবন, আমার মরণ জগতসমূহের প্রতিপালক একমাত্র আল্লাহরই জন্য (৬: ১৬২)।
সুতরাং মানুষ সে যেইই হোক না কেন! পরস্পর ভালোবেসে পেট-পিঠের সমস্বার্থে ভদ্র, নম্র, আদর্শ ব্যবহার করবে; মানুষ কেহ কারো প্রভু-গোলাম নয়।
পক্ষান্তরে বোখারীগং বলেন:
১ ক. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাছুলুল্লাহ ছাল্লেল্লাহু আলাইহে অ ছাল্লাম। অর্থ আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো আল্লাহ নেই মোহাম্মদ আল্লাহর রাছুল (সুতরাং) তাকে শান্তি দেয়া হোক। (তথ্য: বোখারী [আজিজুল হক] ১ম খ. ১২ প্রকাশ, পৃ; ২৮, হা নং ৭)।
খ. আল্লাহ (এসডব্লিউটি/সো. আ. ও তালা)
অর্থাত উপরোক্ত কোরানের লা-শরিকী নাম/কলেমায় শরিয়ত ক্ষমার অযোগ্য শরিক যুক্ত করেছে।
আল্লাহর উপর শরিয়তীদের আরো অদ্ভুত শরিকী/খন্ডিত ঈমান:
গ. আল্লাহ দুনিয়ায় থাকেন্না; তবে তার জ্ঞান দুনিয়ায় বসবাস করেন/ঘিরে আছেন (তথ্য: কাংগাল মুরশিদ)।
ঘ. আল্লাহ ৭ম আসমানের উর্দ্ধের উর্দ্ধে মটকীর মত বরই বাগানের (ছিদ্রাতুল মুন্তাহা) পাশে বসবাস করেন, একদা সে বাড়ীতে রাছুলকে দাওয়াতে (মেরাজ) নিয়ে মদ, মধু ও (গরু/উটের) দুধ দিয়ে আপ্যায়ণ করান। মতান্তরে তারো উর্দ্ধের সাগরের উর্দ্ধে ৮টি পাঠার পিঠে আল্লাহর আরশ; বছরে ২/১ বার (শবে বরাত,শবে কদর) ১ম আসমানে এসে চীত্কার করে রাতভর ছোয়াব ফেরী করত: সূর্য উঠার আগেই বসতবাড়ীতে ফেরত্ যান। (তথ্য: হাদিছ)
২. ক. মুহাম্মদ [সা:/আ:]
খ. -যে ব্যক্তি নবির প্রতি ১বার প্রশংসাবাণী (দোয়া/দরূদ) পাঠ করে আল্লাহর তার প্রতি ৭০টি রহমত দান করেন, ফেরেস্তাগণ ৭০বার পাপ ক্ষমার সুপারিশ করেন (তথ্য: বোখারী, ৫ম. খ. পৃ: ১৭, ১৮ [আজিজুল হক] সুত্র: মেশকাত, পৃ: ৭৮৭)।
গ.-হে রাছুল! কি পরিমাণ সময় আপনার প্রশংসাবাণী (দূরূদ)পড়বো? হযরত বললেন, ‘নিজ ইচ্ছামত কর।‘ –এক চতুরাংশ সময়?-তিনি বল্লেন, ‘তারো বেশি;-অর্ধেক সময়?-আরো বেশি;-দুই তৃতীয়াংশ সময়?- আরো আরো বেশী;-সম্পূর্ণ সময়? তিনি বল্লেন, ‘তা করলে তোমার যাবতিয় চিন্তা-ভাবনা ও গুণা মাফ করার ব্যবস্থা করা হবে (তথ্য: বোখারী [আ. হক] ৫ম খ. পৃ: ১৮; সুত্র: তিরমিজী)।
ঘ. বিশেষ এক জাতের ফেরেস্তা নিয়োগ করা আছে যারা বিশ্বাব্যপী ঘোরা-ফেরা করে, কেহ ছালাম/শান্তি পাঠ/পাঠালেই তত্ক্ষণাত আমার (রাছুলের) দরবারে পৌছিয়ে দেয় (তথ্য: বোখারী [আ. হক] ৫ম খ. পৃ: ১৮; সুত্র: নাসায়ী)
ঙ. নামাজ/প্রার্থনার সংগে রাছুলের প্রতি ছালাম যুক্ত/শরিক না করলে কোন নামাজই (দোয়াই) কবুল হয় না (তথ্য: বোখারী [আ. হক] পৃ: ১৮; সুত্র: তিরমিজী)।
মন্তব্য:
১. ‘আল্লাহ’ এমন একাকার অর্থবোধক শব্দ যা সৃষ্টির যাবতিয় নামের সর্বনাম বা পূর্ণ-পরিপূর্ণ নাম; উহাতে কোন খুত্, দুর্বলতা বা অভাব-অনটন নেই; সুতরাং শব্দটির ঘাটতি পুরণে আরো উন্নত বা সন্মানিত করার জন্য দুনিয়ায় তদোন্নত ১টি শব্দও সৃষ্ট নেই বলেই উহাকে ‘এছমে আজম’ লা-শরিক বলা হয়। অথচ শরিয়ত ঐ ডিগ্রীগুলি আল্লাহ/রাছুলকে উপহার দিয়ে ধন্য করেছে!
২. মুহাম্মদসহ সকল নবি-রাছুলই কারো দোয়া-দুরুদ, সুপারিশ ছাড়াই অতীত, ভূত-ভবিষ্যত ক্ষমা (দ্র: ৪৮: ১-৩), সর্বোচ্য ছালাম [মোকামে মাহমুদা] (দ্র: ১৭: ৭৯) শান্তিপ্রাপ্ত নবি হয়ে গেছেন; দুনিয়ার জন্য তিনি নিজেই রহমত (রহমতুল্লীল আলামীন); তাছাড়া তিনি আর নেই; সুতরাং তার পক্ষে এখন কোন প্রকারের তদবির/সুপারিশ চরম বর্বরতা (কুফরী), বেয়াদবী এবং ধৃষ্ঠতা বৈ অন্য কিছু নয়!
রাছুল এমন কি পাপ করেছিলেন? বা অভাব আছে যা ক্ষমা/পুরণের জন্য দেড় বিলিয়ণ বিভ্রান্ত শিয়া-ছুন্নী-কাদিয়ানীদের কালাকাল যাবত তায়-তদবীর বা সুপারিশ করতে হয়!
৩. যাবতীয় প্রশংসা-গুণগান, সম্মান কিছু আল্লাহর এবং বাকিসব রাছুল-নবি এমনকি স্ব স্ব নেতা-নেতী, পীর ইমাম-আলেম সমাজ যবর দখল করেছে। আর তাই বলেই একক বাপ, একই জন্মের পেট-পিঠের সমাধিকারী কেহ বিশ তলায় আর কেহ গাছ তলায় বাস করতে বাধ্য করেছে।
৪. উল্লিখিত কোরানের ঘোষনার বিপরীতে শরিয়ত স্বয়ং রাছুল ও আলেম সমাজসহ সমগ্র মুছলিম জাতিকে অর্থ ও সন্মানে শিরিক-মুশরিক করে সমাজময় অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার, ব্যভিচারী ভোগ-বিলাসে অশান্তি (অনইছলাম) বলবত্ করেছে।
৫. মন্তব্যের উপরে বর্ণিত উভয় দলের সত্য-মিথ্যার স্পষ্ঠ সাক্ষি-প্রমান দেয়ার পরেও কেহ যদি বলে যে, সমগ্র শরিয়তের ঈমান-আকিদার উপর একলা ম জ বাসার আঘাত হেনে অপরাধ করেছে! তবে তার শাস্তিই হোক!
বিনীত।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ ভোর ৬:৫৫