somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের ছবিহীন ছুটিগুলি --- ছোটগল্প

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ক’দিন ধরে অপর্ণার এই এক পাগলামো হয়েছে, আদর পেতে চাইলেই বলে, ‘আমার সাথে কাটাকুটি খেলো’। কাগজে বা বিছানায় নয়, ছুরি দিয়ে ওর পেটে কাটাকুটি করতে হবে। প্রথম যেদিন বলল, আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম, বুঝতে পারিনি। তারপর আছন্ন স্বরে, ঈষৎ সরু চোখে, নগ্ন দেহটাকে সাপের মতো মুচড়িয়ে যখন বলল, ‘যা-ও’, বিছানা ছেড়ে নেমে গিয়েছিলাম। জামাকাপড় পরে করপোরেশনের খানাখন্দে ভরা রাস্তায় নেমে হাঁটা ধরেছিলাম বেকারীর দিকে। একটা কেক কাটার ছুরি নিয়ে যখন বাসায় ফিরলাম, আধ ঘন্টা পেরিয়ে গেছে। অপর্ণা শুয়ে আছে আগের মতোই, অপেক্ষায়। ছুরির দিকে তাকিয়ে বলল, ‘কাটো আমাকে।’

আমি ছুরি দিয়ে অপর্ণার পেটে কাটাকুটি করি, অর্থবহ বা অর্থহীন। সরল বা বক্র রেখা, ত্রিভুজ বা আয়তক্ষেত্র – কখনো মেপে মেপে, কখনো নিজের মতো করে – কিন্তু সব অপর্ণার ইচ্ছেমতো। খামখেয়ালী আনন্দপিয়াসিনী কখনো বলে, ‘একটা বৃত্ত আঁক যার কেন্দ্র আমার কেন্দ্রে নয়’। একদিন কোত্থেকে এক জ্যামিতি বই যোগাড় করে বায়না করল, ‘একটা ত্রিভুজ আঁকো, তার প্রতি বাহুকে সমানভাবে বিভক্তকারী রেখাগুলো যেন পরস্পরকে নাভিতে ছেদ করে। তারপর নাভিকে কেন্দ্র করে ত্রিভুজের তিন বাহুকেই ছুঁয়ে যায় এমন একটি বৃত্ত আঁকো’। কোনো স্কেল নেই, কম্পাস নেই, প্লাস্টিকের ছুরি দিয়ে নাভিকূপ আর তার নিকটাঞ্চলে আঁকতে থাকি আদেশমতো। থেকে থেকে থরোথরো কেঁপে উঠে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে সারা শরীরে। অপর্ণার শীৎকারে বোবা দেয়াল চোখ খুলে কান পেতে রয়, প্রাণ আসে সাইডটেবিল-বিছানা-বালিশ-কুশন-দেয়ালঘড়িতে, বদ্ধ দরজা-জানলাগুলো যেন খুলে পড়তে চায়, আনন্দধ্বনিকে ছড়িয়ে দিতে চায় শহরের বিষন্ন দূষিত বাতাস তাড়িয়ে। দেয়ালবন্দী প্রকোপিত ঝড়ে অপর্ণা ঘেমে নেয়ে উঠে। আমার ছুরি চালনা তীক্ষ্ণ, দ্রুত হয়। তারপর ঝড় থামে, শান্ত হয়, অনেকক্ষণ বাদে চোখ খুলে অপর্ণা বলে, ‘এবার তুমি এসো’। আমি আসি তবে সে যেন কোথাও হারিয়ে যায়! প্রায়ই এই আহ্বানটুকুও আসে না, অপর্ণা পাশ ফিরে শুয়ে থাকে, ছুরিটা সাইড টেবিলে রেখে আমি বাতি নিভিয়ে দিই। ওর ক্লান্ত, তৃপ্ত, ঘুমন্ত নিঃশ্বাসের শব্দে আমার দীর্ঘশ্বাসগুলো নিরবে মিলিয়ে যায়, মিলিয়ে যাই আমি। পাঁচ ফুট ন’ ইঞ্চির আমাকে আর খুঁজে পাই না অপর্ণার আশেপাশে।

দিন দিন কেমন জানি অবুঝপনা হয়ে যাচ্ছে, নতুন নতুন পাগলাই দেখা যায় তার মধ্যে। এইতো মাস খানেক আগে অফিস থেকে ফিরে বসে আছি, রাত সাড়ে আটটা বাজে, অপর্ণার দেখা নেই। ফোনে দিলে বলল রাস্তায়। বাসায় এলো আরো পাক্কা এক ঘন্টা পর, ঘেমে ভিজে একাকার। ‘কী ব্যাপার! গাড়ির এসি কাজ করছে না?’ কাপড় ছাড়তে ছাড়তে বলল, ‘বাসে এসেছি।’ ওর ভারী ঠান্ডা উত্তরে আর কথা বাড়ালাম না। একের পর এক খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসা দেহটা দেখছি। গরমে অপর্ণা স্লিভলেস পরে, আর শাড়ী সব ঋতুতেই নাভির নিচে। আমার ভাবনায় ছেদ পড়ে, ‘পুরুষগুলো যা হয়েছে না! সব ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে, যেন পারলে আস্ত গিলে ফেলে।’ আমি অপেক্ষা করি, কথার মাঝে ঢুকে পড়া একদম পছন্দ করে না ও। ‘বাসের হেল্পার বল, বুড়ো বল, স্কুল পড়ুয়া বল – সবাই, যেকোনো ছুতোয় ছুঁয়ে দেবে। কোনো মাফ নেই। জায়গা আছে, তবু এমন ভাব করবে যেন জায়গা নেই আর সে কত চেষ্টা করছে গায়ে না লাগাতে! আজকে অনেকটা সময় স্যান্ডউইচড হয়ে ছিলাম।’ আমার দিকে চেয়ে হেসে পায়ের কাছে দলা পাকানো কাপড়গুলো তুলে নিয়ে কাচার কাপড়ের ঝুড়িতে ফেলল। তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে ঢুকলে আমার বসে থাকার টান টান ভাবটা আপনি চলে যায়। শ্বাস-প্রশ্বাসটাও সহজ হয়ে আসে। ভেজা তোয়ালে নিয়ে নিরাভরণ অপর্ণা বেরিয়ে এল বেশ তাড়াতাড়িই। আমার পাশ দিয়ে বিছানার দিকে হেঁটে যেতে যেতে বলল, ‘ছুরিটা নিয়ে এসো।’

তার ক’দিন বাদেই ভয়ানক ঘটনাটা ঘটল। অফিস থেকে ফিরে সোফায় গা এলিয়ে বসে আছি টিভি ছেড়ে। রাত ন’টার মতো বাজে। অপর্ণা ঘরে ঢুকলো হাঁপাতে হাঁপাতে। টিভি থেকে মুখ ঘুরিয়ে সোজা হয়ে বসলাম, ‘কী হয়েছে?’ ‘দু’টো ছেলে আমার পিছু নিয়েছে, বাসা পর্যন্ত চলে এসেছে।’ আমি সন্তর্পনে জানলার পর্দাটা একটু সরিয়ে সামনের রাস্তায় দেখলাম। বিশ-বাইশ বছরের দু’টো ছেলে দাঁড়িয়ে আছে, দু’জনের হাতেই সিগ্রেট, ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে কথা বলছে। অপর্ণাও এসে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে, দেখছে সেও। ‘বেশ সমর্থ, তাই না?’ আমি কিছু বললাম না। অবশ্য আমার নীরবতা নিয়ে সে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয়। ‘বাঁ দিকের ছেলেটার মাসল দেখেছো! ওর শক্তি বেশি, একেবারে তাগড়া ঘোড়া, ভাবসাবেই কেমন একটা মরদামি আছে।’ চোখে-মুখে প্রশংসা ঝরে পড়ছে তার, চাপা আনন্দের আভা ছড়িয়ে পড়েছে সমস্ত চেহারায়, দেহের ভাঁজে ভাঁজে। জানলা থেকে সরে গিয়ে বাতি নিভিয়ে আবার এসে দাঁড়ালো। ‘করেছো কী! ওরা বুঝে গেছে তুমি কোথায় থাকো।’ ‘বুঝুক, দেখতে তো পাবে না। দেখার আনন্দ শুধু আমার!’ তা সত্য, অন্ধকার ঘরের কিছুই বাইরে থেকে দেখা যাবেনা, তাছাড়া রাস্তা আর জানলার মাঝে প্রাকৃতিক পর্দা হয়ে আছে কয়েকটা গাছ। তবে আমরা ওদের দেখতে পাচ্ছি স্পষ্ট, ডাল-পাতার ফাঁক দিয়ে। দু’হাতে জানলার দু’টো শিক ধরে, পা দু’টো খানিকটা খুলে দাঁড়িয়ে অপর্ণা বলল, ‘আমায় বসনমুক্ত করো।’

শনিবার দুপুরে এক আত্মীয়ের বিয়ে থেকে ফিরছি অপর্ণাকে নিয়ে, পেটপুরে খেয়েদেয়ে। গাড়ী চালাচ্ছি আমিই। বিকেলের শুরু বলে রাস্তায় যান চলাচল কম, দু’পাশের দোকানগুলোতে ভিড় কম। হঠাৎ অপর্ণা বলল, ‘থামো।’ আমি ব্রেক কষলাম, ওর চোখ রাস্তার অপাশে কোথায় জানি আটকে গেছে। উচ্ছ্বাসের রেখাগুলো মুখজুড়ে জালের মত ছড়িয়ে গেছে। না ফিরেই এক হাতে আমার উরু খামচে ধরে বললো, ‘দেখেছো!’ ওর দৃষ্টি অনুসরণ করে দেখলাম সেলুনে চুল কাটছে একটি ছেলে, বিশ-বাইশ বছরের হবে, সুগঠিত বাহুর পেশিগুলো ফুলে আছে, নিতম্বের গঠন বুঝা যাচ্ছে লুঙ্গির উপর দিয়েই। ওর কাজ শেষ হয়ে এসেছিল, সব গুছিয়ে বড় সাদা কাপড়টা ঝেড়ে ভাঁজ করে রাখছিলো, সমস্ত শরীরে বিচিত্র বর্ণের রেখা ফুটে উঠেছিলো যা মুগ্ধ হয়ে গেলছিলো অপর্ণা। ওর চোখ সরছেইনা তরুণের দৃঢ় দেহের উপর থেকে। ‘তুমি বসো গাড়িটা সাইড করে, আমি আসছি।’ কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই নেমে যায় সে, সশব্দে দরজাটা বন্ধ করে দেয় আমার বাড়িয়ে দেয়া হাতটা থমকে দিয়ে। আমি লম্বালম্বি গাড়ির আধেকটা ফুটপাতে তুলে দিয়ে ইঞ্জিন বন্ধা করে বসে থাকি। ড্রাইভিং হুইলের উপর আলগোছে একটা হাত রেখে স্থির শূণ্য চোখে অপর্ণার চলে যাওয়া দেখি সেলুনের দিকে। ওরা দু’জন কথা বলছে। ছেলেটা একবার আমার দিকে তাকায় যেভাবে সদ্য লটারি জেতা পথেঘাটে তার অগুনতি না-জেতা প্রতিযোগীর দিকে তাকায়। আমি সেই নগন্যদের একজন হয়ে স্থাণুর মত বসে থাকি, অপর্ণা দোকানের হাতলওয়ালা চেয়ারে বসে। সে চুল কাটাচ্ছে অথচ আজকের অনুষ্ঠান উপলক্ষে কালই পারলারে গিয়ে চুল করে এসেছে। ছেলেটা তার ঘাড়ে, গলায়, কাঁধে হাত দিচ্ছে চুল কাটার বাহানায়। সোনা-রঙ্গা দেহের প্রিয় জায়গাগুলোতে ছোঁয়া পেয়ে জেগে উঠছে অপর্ণা, সাথে সেলুনের ছেলেটাও। ঝড় উঠার আগ মুহূর্তে থমকে যায় ওরা, পুরো দোকানটাকেই মনে হয় বড় ক্যানভাসে আঁকা ছবি। শব্দেরা থেমে যায়, বাতাস থমকে যায়, আকাশের প্রান্তে হালকা লালের পোঁচ লাগে, যেন এই বুঝি প্রকৃতিতে কোনো বিস্ফোরণ ঘটবে। কানে তালা লাগে, হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, দরদর করে ঘামতে থাকি, ঘুম থেকে জেগে উঠি। বিছানা-বালিশ ভিজে একাকার, বুকের ভেতর শব্দ হচ্ছে – দপদপ দপদপ। আমার বাস্তবতা-দুঃস্বপ্ন মিলেমিশে এক হয়ে যায়। আপর্ণা পাশে স্বস্তিতে ঘুমায়, আমি বুকভরা অস্বস্তি নিয়ে জেগে থাকি। ঘুম আসে না। দীর্ঘশ্বাসেরা চারপাশে ঘুরেফিরে জেগে থাকে আমার সাথে।

আজকাল আমাদের মধ্যে কথা হয়, কথোপকথন হয় না, আলোচনা হয় না। বলতে খুব উৎসাহী সে, শোনাতে গেলেই মুখ ফিরিয়ে নেয়। অথচ একটা সময় ছিল যখন আমরা রাত জেগে মিছে তর্ক করেছি, একে অপরের মন জানতে মুখিয়ে থেকেছি, কিছু বলার না থাকলে বানিয়ে বকেছি জীবন নিয়ে স্বপ্ন নিয়ে ভবিষ্যত নিয়ে। সেসব আজ ধূলোর পুরু স্তর পড়া অতীত। তাকে আশ্রয় করে ভাল থাকার ভান করাটাও দুরূহ হয়ে গেছে।

ঊষরতা আমাকে অক্ষম করে দিয়েছে। কিন্তু কেন? কেন আমাকেই বেছে নেয়া হলো ঊষরতার জন্য। কেন আমার ক্ষেত্রেই তা অক্ষমতায় রূপ নিল? এমনতর হাজারো প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খায়, উত্তর না পেয়ে পেঁচিয়ে জট তৈরি করে মাথাটাকে না বইতে পারার মত ভারী করে তোলে। আমি তাই হন্যে হয়ে উত্তর খুঁজি। এটা কি আমার নপুংসক অস্তিত্বের জন্য? রাজনৈতিক, সামাজিক, জাতীয়, বৈশ্বিক বক্তব্যহীন অবস্থানহীন অবস্থানের জন্য? নাকি নির্বিষ মাথা নাড়ানো ভদ্রাচরণের অভিশাপ এই অক্ষমতা? বা সবকিছুর মূলে কি সেই ভোগবাদিতা যার ভৃত্য হয়ে আছি আমি আজন্ম? কিংবা হতে পারে চলমান কর্পোরেট কালচারের সাইড ইফেক্ট। হতে পারে সস্তা সঙ্গীত, সিনেমা, শিল্প-সাহিত্যের পূজারী হবার প্রসাদ। বাবা-মা’র অবাধ্য হওয়া, কলেজের দিনিগুলোতে ইভটিজিং – কোনোটাকেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ফেলে দেয়া যায় না ছেলেবেলায় যৌননীপিড়ীত হবার পাপটিকে বা প্রথম যৌবনের পর্ণাসক্তিকে। সমাজ বা পরিবেশ দূষণে আমার অবদান – কীসের তিরস্কার এই বীর্যহীনতা? নাকি এটা গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র – সব ছেড়ে সব ধরে রখার প্র্য়াসের স্বর্গীয় জবাব? যুতসই উত্তর মেলে না বলে আবার প্রথম থেকে শুরু করি। অনির্ণীত সম্ভাবনাময় উত্তরের গোলক-ধাঁধাঁ থেকে মুক্তি মেলে না, অসহায় পড়ে থাকি অপর্ণার পাশে।

‘এভাবে কী কোনো লাভ হচ্ছে?’
‘কীসের লাভ? কীসে লাভ?’
‘এই যে তুমি যা করছো’
‘কী করছি?’
‘জীবনকে জটিল করার দরকার কী’
‘সোজা করার উপায় নেই’
‘ছেড়ে দাও’
‘তোমার দোষ নয় এমন কিছুর জন্য আমি তোমাকে শাস্তি দিতে পারি না’
‘এখন যা করছো শাস্তির চেয়ে কম নয়’
‘না করে থাকতে পারি না। এটা তোমাকে কষ্ট দেবার জন্য করি না, আমাদের সম্পর্কটাকে বাঁচানোর জন্য করি’
‘কোন সম্পর্ককে বাঁচাচ্ছো তুমি! বাঁচানোর মত তেমন কিছু কি অবশিষ্ট আছে?’
কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থাকে অপর্ণা। বলে, ‘কিছু কি সত্যিই বাকি নেই’
‘হয়তো আছে তবে এভাবে তা টিকবে না। সম্পর্কের অক্সিজেন দরকার, তার স্বস্তি দরকার। দম বন্ধ করে সম্পর্ক বাঁচানো যায় না’
‘আমি তো তোমার দম বন্ধ করিনি, স্বাধীনতা দিয়েছি সব করার’
‘যার কিছু করার সামর্থ্য নেই সে সবকিছু করার স্বাধীনতা দিয়ে কি করবে!’
আবারো চুপ করে থাকে অপর্ণা। সময় নিয়ে বলে, ‘কী করতে বলো আমাকে? আমার সব সাধ-আহলাদ বিসর্জন দিয়ে দেব তোমার জন্য?’
‘আমাকে ছেড়ে চলে যাও, সেটাতো পারো’
‘না পারি না’
‘কেনো?’
‘কারণ তোমাকে ভালবাসি, তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারব না। আবার শুধুমাত্র তোমাতেই বাঁচতে পারবো না। আমি জানি না কী করব বা কী করা উচিত। ক্রমশ নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছি। তোমাকে কষ্ট দিতে চাই না কিন্তু যা না করে থাকতে পারি না, তা তোমাকে কস্ট দেয়।’
‘আমার কথা শোনো অপর্ণা। এসো আমরা আলাদা হয়ে যাই। তোমার সামনে এখনো অনেক সময় আছে। তুমি আর কাউকে বিয়ে করো, সন্তান নাও, জীবনটা পরিপূর্ণ হবে। আমাকে মিস করবে না তুমি।’
‘তুমি আবারো একই ভুল করছো। কেন বুঝতে পারছো না সমস্যাটা সন্তান নয়। স্ত্রী হিসেবে স্বামীর কাছ থেকে যা পাবার তার সবটাই আমি পাই তোমার কাছে থেকে, কেবল একটা জিনিস ছাড়া – বিছানায় তৃপ্তি। এমন নয় যে শুরু থেকেই এই সমস্যা হয়েছে। আমাদের প্রথম কয়েকটা বছর ছিল স্বপ্নের মতো। যখন তুমি জানলে যে আমাকে মা বানানোর সামর্থ্য তোমার নেই, আমাকে আনন্দ দেবার ক্ষমতাটুকুও তোমার চলে গেল। বা তুমি উৎসাহ হারিয়ে ফেললে।’
‘আমি উৎসাহ হারাইনি। তুমি জানোনা কত রকমভাবে কতটা আমি তোমাকে চাই কিন্তু শরীর সাড়া দেয় না। আমি চেষ্টা করি তবু, নানানভাবে চেষ্টা করি।’
‘ব্যাপারটা চেষ্টার নয়, স্বতঃস্ফূর্ততার’
‘ডাক্তার আমি কম দেখাই নি’
‘ফল তো কিছু হচ্ছে না’
‘সেজন্যই বলছি দু’জন দু’পথে যাওয়াই ভাল’
‘আমি আমাদের প্রথম দিনগুলোর কথা ভুলতে পারি না, কত কী না করতাম আমরা! তোমাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি আমি। তুমি খুব ভাল একজন মানুষ, তোমাকে আঘাত করতে চাই না’
‘কিন্তু আঘাত আমি পাচ্ছি’
‘সন্তানের কথা বাদ দাও। ওটা ছাড়াও চলে যেতে পারে। কিন্তু শরীর? তাকে উপেক্ষা করতে পারি না। বিশ্বাস করো, অনেক চেষ্টা করি, পারি না। মন আর শরীরের দ্বন্দ্বে আমি একদম অসহায়।’
আমার শরীর ঘুমিয়ে থাকে, অপর্ণার তাই ঘুম নেই। আমি জবাব দিতে পারি না। কী বলব! কী বলার আছে! অক্ষমের বলবার তেমন কিছু থাকে না, অক্ষমের করবারও তেমন কিছুই থাকে না, চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া।



পাতায়া, থাইল্যান্ড এসেছি আমরা। অফিস থেকে দু’হপ্তার ছুটি নিয়েছি দু’জনই। পাতায়া রিজোর্ট সিটি। বুনো এই শহর বিখ্যাত তার অমার্জিত নৈশজীবনের জন্য। সমস্ত পূর্ব থাই উপকূলের নৈশপ্রমোদের হৃদস্পন্দন দক্ষিণ পাতায়ার এক কিমি দৈর্ঘ্যের মাতাল ওয়াকিং স্ট্রীট যা ইন্দ্রিয়কে বিশৃঙ্খল করে দেয়। সেটা দেখতেই বেরুলাম আমরা – একজন ইন্দ্রিয় নেশায় মত্ত আরেকজন ভেতরে ছটফট করছি। শতাধিক বার, ডজনখানেক ডিস্কো আর আশিটিরও বেশি গো গো বার রঙবেরঙের, অতিরিক্ত দামের পসরা দিয়ে সাজিয়ে তুলেছে ব্রাইট, বেপরোয়া এবং চোখ ঝলসানো ওয়াকিং স্ট্রীটকে। বারের বাইরে দাঁড়িয়ে কড়া মেকাপে সব খুঁত ঢেকে, খাটো পোষাকে শরীরের সবটুকু আকর্ষণ ডালায় তুলে হাত নেড়ে পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছে মেয়েরা।

এমন নয় যে ওয়াকিং স্ট্রীট ছাড়া পাতায়ার আর কোথাও কিছু নেই। নিজস্ব স্পন্দন আর আকর্ষণ নিয়ে আরো ছোট ছোট অনেক আনন্দ-উৎস আছে – সস্তা পানীয়ের জন্য সয় ৭ ও ৮, ক্যাবারে শো-র জন্য সেকেন্ড রোড, পাতায়াল্যান্ড ও বয়েজটাউন ভর্তি সমকামী ক্লাবে আর ৬/১ এবং ১৩/১ পরিচিত কিছু বারে জন্য যেখানে অপেক্ষা করছে বিখ্যাত থাই লেডিবয়-রা(কেটোয়ীজ)। সব রকম রাতের জন্য পাতায়ায় একটি করে সড়ক আছে। আমাদের জন্যও কি!

সয় ১৫-র হোয়াটস আপ গো গো বারে ঢুকলাম দেখবো বলে। স্টেজের লে আউটটা চমৎকার লাগলো, মিউজিকটাও লাউড নয়। অপর্ণার ভাল লাগল না বলে বেরিয়ে এলাম। সয় বিজের লিটা বারে গেলাম এর বাদে। শুনেছি খুব ডিসক্রিট আর নতুনদের জন্য ভাল। অপর্ণা এখানেও কোনোরকম আগ্রহবোধ করল না, আমরা দ্রুতই বেরিয়ে এলাম। তারপর আমরা ঘুরে বেড়ালাম সয় ৬/১ এবং ১৩/১ এ। আমি অপর্ণার হাত ধরে হাঁটছি, অপর্ণা আমার থেকে আধ-কদম সামনে। লেডিবয়রা দাঁড়িয়ে আছে দল বেঁধে। অপর্ণা এবার আমার কাঁধ বরাবর হাঁটতে লাগল।

‘এত ট্রান্স জেন্ডার! কই বাংলাদেশে তো দেখি না’
‘থাইল্যান্ডে প্রায় দুই-আড়াই লাখ ট্রান্স আছে। হয়তো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে বলে বাংলাদেশে এত মনে হয় না। এখানে ওরা গুটিকয় জায়গায় কন্সেন্ট্রেড। থাই সোসাইটি ওপেন, সেক্স ট্রেড এখানকার জিডিপির প্রায় ১ শতাংশ। যেটায় মুনাফা আছে সেটায় বেশি মানুষ আসবেই’
‘এরা তো রীতিমতো থাই মেয়েদের চেয়ে সুন্দরী’
‘অনেকের কাছেই সেরম মনে হয়’ আমরা বহুদিন বাদে নির্ভার হয়ে কথা বলছি। নির্ভার! আসলেই! কী জানি!
‘কিন্তু বুঝবো কীভাবে কোনটা লেডি, কোনটা লেডিবয়’
‘লেডিবয়রা সাধারণত লম্বা হয়, হাত-পা বড় থাকে। তারা কাস্টোমার টানার জন্য ওভারঅ্যাক্ট করে। তারা মেয়েদের চেয়ে মেয়েলি, গলার স্বর ডীপ, অনেক সময় নাকি স্বরে কথা বলে। কোনোভাবেই বুঝতে না পারলে আইডি দেখা ছাড়া উপায় নেই’
‘ভালই খোঁজখবর নিয়েছো দেখছি’
‘পুরনো অভ্যাস’
‘হুম’
‘লোকাশনও হেল্প করে। যেমন ধরো সয় ৬ এর বারগুলো মেয়তে ভর্তি আর ৬/১ ভর্তি লেডিবয়তে। এছাড়া সয় ইয়ামাতো, একশন স্ট্রীট বা ওয়াকিং স্ট্রীটের ‘দ্য ট্রি’ অংশে এদের বেশি দেখতে পাবে’
‘তা তো বুঝলাম, তুমি যা খুঁজছো তা পাবে কোথায়?’
‘ওই লেডিবয়টাকে দেখো তো’
দু’হাত ঘাড়ের উপর মাথার পেছনে তুলে মৃদু লয়ে কোমর দুলাচ্ছে। বাঁ হাতে ইঞ্চিখানেক চওড়া ব্রেসলেট চকমক করছে। ব্লীচ করা চুলের একটা অংশ সামনে নেমে এসে ঢেকে রেখেছে ডান কাঁধ আর তার নিচের কাছাকাছি অংশটা। বাম কাখতলি উম্মুক্ত, আকর্ষনীয় এবং বাহুর মতোই মসৃণ। কানের দুল, ব্রেসিয়ার, ব্রেসলেট ম্যাচ করে পরা। মুখটা গালের দিকে চাপা এবং লম্বাটে। নাক, ঠোঁট সব চমৎকার মানিয়ে সেজে আছে। কপোলে হালকা গোলাপী পোছ। ভ্রু দু’টো একটু উপরে তোলা, ভাঁজ ফেলেছে কপালে। তাকিয়ে আছে তবে দৃষ্টি আনমনা, কে জানে কী ভাবছে!

অপর্ণার মৃদু ধাক্কায় ওর দিকে ফিরলাম।
‘পছন্দ হয়?’ আমাকে জিজ্ঞেস করে
‘ভালই তো মনে হচ্ছে’
‘আরেকটু ঘুরে দেখি’
‘ওয়েট, এর সাথে একটু কথা বলে আসি’
আমি এগিয়ে গিয়ে লেডিবয়ের সাথে কথা বললাম। ওর ফোন নম্বর নিয়ে জানতে চাইলাম আজ রাতে বা কাল দুপুরে সময় হবে কিনা। বলল দু’ঘন্টা আগে ফোন করলেই হবে। ওর নম্বরে একটা ফোন দিয়ে বললাম, ‘সেভ করে রেখো – ক্লায়েন্ট’।

‘হ্যাপি এন্ডিং ম্যাসাজ নেবে’ ফিরে এসে অপর্ণাকে শুধালাম।
‘চল দেখি কী আছে, কতটা হ্যাপি করে’
সয় চাইয়াপুল, সয় হানি ঘুরে আমরা সয় বুখাও এলাম। হাতে ছোট প্ল্যাকার্ড নিয়ে মেয়েরা ঘুরছে – হ্যান্ড জব, ব্লো জব, বুম বুম।

‘কী অপশন আছে আমাদের’ অপর্ণা জানতে চাইল
‘ফুট ম্যাসাজে কোনো হ্যাপি এন্ডিং নেই, থাই ম্যাসাজে আছে তবে সম্ভাবনা কম, অয়েল ম্যাসাজে মোস্ট লাইকলি’

পুরো সড়ক চষে বেড়ালাম, মনমতো কিছু পেলাম না। যে কোন একটা কিছু হলেই চলে না, কারণ আমরা জানি আমরা কী চাই। হোটেলে ফিরে এলে অপর্ণাকে যথেষ্ট বিরক্ত মনে হলো।
‘এতক্ষণ ঘুরলাম খামোকা’
‘কিছু দেখা হল’
‘কাজের কাজ তো কিছুই হল না’
‘হবে, দুদিনও হয়নি আমরা এসেছি। একটা আইডিয়া তো পাওয়া গেলো’
‘কী আইডিয়াটা পেলাম? যে এখানে কিছুই হবে না!’
‘একটা কিছু তো হবেই। তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও, আমি দেখছি কী করা যায়’
আমি ফ্রন্ট ডেস্কে ফোন লাগালাম। বললাম ভাল কিছু ম্যাসাজ পারলারের খবর দিতে। সেগুলোর একটায় কল দিয়ে একজন পুরুষ মাস্যা চাইলাম।

আধ ঘন্টার মধ্যে রুমে হাজির সুদর্শন এক থাই তরুণ। অবাক হল অপর্ণা, ইচ্ছে করেই আমি ওকে জানাই নি। ছেলেটাকে ইংরেজিতে অপেক্ষা করতে বলে আমি অপর্ণাকে বাংলায় বললাম, ‘ম্যাসাজের জন্য রেডি হও।’
‘কোথায় পেলে?’
‘পেয়ে গেলাম। সব পাওয়া যায় কেবল ধৈর্য ধরতে হয় আর চেষ্টা করতে হয়’। আমি ছেলেটাকে বললাম, ‘সী ইজ রেডি’
সে তার পোর্টেবল ম্যাসাজ বেডটা রুমের বারান্দার কাছাকাছি জায়গায় বসালো। অপর্ণাকে বলল, ‘টেক ইয়োর ক্লোজ অফ’
অপর্ণা আমার দিকে তাকালো, আমি ইশারায় ওকে আশ্বস্ত করলাম। উপুড় হয়ে ম্যাসাজ বেডে শুলো অপর্ণা, ছেলেটা ম্যাসাজ শুরু করলো পায়ের পেছনের অংশে, তারপর পিঠে। টুকটাক কথা চলছে তাদের মধ্যে, আমি সোফায় বসে ওদের দেখছি।
‘নাম কী তোমার’
‘অপর্ণা বাড়ৈ’
‘বয়স?’
‘৩৫’
‘দেশ?’
মিনিট পনেরো পর অপর্ণাকে চিত করে শুয়ালো। ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করতে লাগলো তার পায়ের সামনের দিক, উরু এবং বুকে। অপর্ণা জেগে উঠছে, তার শরীরের বাঁকে, ভাঁজে। উঠে ছেলেটার কাছে গিয়ে বললাম কী চাই। অনেকটা নির্লিপ্ত ভঙ্গীতে সে উত্তর দিল, ‘তার জন্য তোমাকে অতিরিক্ত পয়সা দিতে হবে’
‘কত’
‘১৫০০ বাথ’
‘১০০০ দেব তোমাকে’
‘না, এর কমে হবে না’
শেষ পর্যন্ত ১৩০০ বাথে রফা হল। সাইড টেবিল থেকে গর্ভনিরোধক খাপ এনে ওর হাতে দিলাম। আমি অপর্ণার হাতটা ধরলাম কিছুক্ষণের জন্য, আমার অপর্ণার হাত। তারপর সিগ্রেটের প্যাকেট আর লাইটার নিয়ে বারান্দায় চলে গেলাম। কাচের স্লাইডিং ডোর লাগিয়ে বারান্দার রেলিঙে হেলান দিয়ে সমুদ্রকে পেছনে রেখে লম্বা টান দিতে লাগলাম। ছেলেটির জোরালো ধাক্কায় অপর্ণা উছলে উঠে, স্তনদুটো উড়ে যেতে গিয়ে আছড়ে পড়ে, আমার পেছনের সমুদ্র-ঢেউয়ের মতো। অপর্ণা মাথা ঘুরিয়ে আমাকে দেখার চেষ্টা করছে। সে কি আমাকে দেখতে পাচ্ছে নাকি ওর দৃষ্টি আটকে যাচ্ছে কাচের দেয়ালে, ঠিক যেমন সিগ্রেটের ধোঁয়াগুলো কাচে লেগে ফিরে আসছে। দুই উত্তাল প্রাণবন্তু সমুদ্রের মাঝে কোথাও প্রাণহীন ক্ষুদ্র আমি দাঁড়িয়ে থাকি নিশ্চুপ।


প্লেনের দরজায় দাঁড়াতেই একটা হলকা এসে অভিবাদন জানায় সাড়ে ছয় হারে এগিয়ে চলা অসহিষ্ণু, নীতিহীন ও বিভ্রান্ত স্বদেশে। ফেরার পর সবাই যখন ঝেঁকে ধরে আমরা বলি মুহূর্তগুলিকে আমরা মনে ধরে রেখেছি, ছবিতে নয়। অপর্ণা সবার সাথে কথা বলে হাসিমুখে, আমি চেয়ে চেয়ে দেখি। সময় পেলেই আমরা বারবার ছুটে যাই পাতায়ায়, সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে হারিয়ে থাকি হোটেলের ছোট্ট কক্ষে। ছুটির এই সময়গুলোতে আমরা ফেসবুকে কোনো স্ট্যাটাস দিই না, ইন্সটাগ্রামে কোনো ছবি শেয়ার দিই না, কারো জন্য কোনো উপহার কিনি না। অপর্ণা এখন আর অশান্ত হয় না, পাগলামো করে না, আর দুঃস্বপ্নে আসে না। আমরা আবার সুখে থাকি।

ঢাকা, মার্চ ২০১৬
ব্রিসবেন, সেপ্টেম্বর ২০১৭





সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৫৭
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×