somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারী সমকামিতা: শেকড়ের সন্ধানে

১৭ ই অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৫:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বর্তমানে সারা বিশ্বে নারী-সমকামিতার হার দিনদিন বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি কয়েকটি দেশে নারী সমকামীদের মধ্যে বিয়ের বৈধতা দেয়া হয়েছে; আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বিয়ে করেছেন তার দীর্ঘদিনের লেখিকা সঙ্গীকে। আমি আজকে নারী সমকামিতার শেকড়ের দিকে আলোকপাত করার অভিপ্রায়ে এই পোস্টটি লিখছি।

নারী সমকামিতার ইংরেজি প্রতিশব্দ lesbianism, এবং নারী সমকামিদের বলা হয় lesbian. Lesbian শব্দটির উৎপত্তি হচ্ছে গ্রীক দ্বীপ lesboss থেকে। নারী সমকামিতার জন্য কেন এই শব্দটি ব্যবহার করা হয় তা নিয়ে মনে সংশয় জাগতেই পারে। এ সংশয় তাড়ানোর জন্য একটু পেছন দিকেই ফিরে যেতে হবে। আমাদের ফিরে যেতে হবে প্রাচীন গ্রীক সভ্যতায়।
খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ট শতকের প্রথম দিকে আবির্ভাব হয়েছিলো [৬১০-৫৭০] গীতিকবি সাফোর। তিনি ছিলেন লেসবসবাসিনী। তার একটি বিশেষ গুণ হল, তিনিই প্রথম গোলাপকে পুষ্পের রাণী হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং গোলাপকে নিয়ে অনেক গীতিকবিতা লিখেন। গোলাপকে নিয়ে তার লেখা একটি কালজয়ী কবিতার ইংরেজি অনুবাদ না দিয়ে পারছি নাঃ
Would jove appoint some flower to reign,
It matches beuty on the plan,
The rose (mankind will all agree)
The rose the queen of flowers shoud be…
[song of rose/translated by f.fawkes]
সাফো ছিলেন ছিলেন বিত্তবান সারকাইলাসের স্ত্রী এবং জীবন যাপনে ছিলেন অত্যন্ত অভিজাত। তাই তিনি মনে যা আসতো তাই বলতেন এবং লিখতেন।
তিনি ছিলেন সহজাত গীতিকবি এবং নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষয়ত্রী। পরিচালনা করতেন লেসবসের প্রধান শহর মিতিলিনে নিজের প্রতিষ্ঠা করা অবিবাহিত মেয়েদের বিদ্যালয় ‘থিয়াসস’, যার অর্থ হল বিশেষ শ্রেণীর ট্রেনিং আকাদেমি।
সেই সুবাদে নিত্যদিন তার দিন কাটতো কুমারি মেয়েদের সাথে, কবিতা লিখে, আবৃত্তি করে, আর নিত্য মিথষ্ক্রিয়াতে কাটতো তার দিন। প্রশিক্ষন কেন্দ্রটিতে তিনি মেয়েদের অত্যন্ত ছিমছাম এবং আকর্ষণীয় করে তুলতেন, সম্ভবত তাদের আসন্ন বিয়ের কথা ভেবে।
সাফো তার মৃত্যুর প্রায় দুশ বছর সাফার করেন তথাকথিত সমকামিতার রটনা। তৎকালীন গ্রীকসমাজ তাকে সমকামিতার অপবাদ দিয়ে তার নয়টি গ্রন্থ পুড়ে ফেলে। পরবর্তীতে এই ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারকৃত কিছু অংশ থেকেই আমরা তার সম্পর্কে জানতে পারি।
তার কবিতা গুলো বরাবরেই ছিল প্রেমকেন্দ্রিক। বলাইবাহুল্য, তার উৎস ছিল আকাদেমির ছাত্রীরা। তবে, তিনি যে সমকামি ছিলেন না তার সবচে বড় প্রমান হল তার স্বামী ছিল এবং তিনি এক কন্যা সন্তানের জননী যার নাম ছিল, ক্লিস।
এতকিছুর পরও তথাকথিত ইতিহাস লেখকরা তাকে নারী সমকামিতার জনক হিসেবে চালিয়ে দিয়ে আসছে এবং লেসবস কে তারা নারী সমকামিতার অর্থে ব্যবহার করে আসছে।
এর ফাঁকে একটি কথা না বললেই নয়; সক্রেতিস ছিলেন সাফোর অনুজ, তিনি প্রায় সাফোর ১৪০ বছর পর জন্মেছিলেন। সাফো যেমনভাবে নারীদের জন্য আকাদেমি খুলেছিলেন, তিনি খুলেছিলেন বালকদের জন্য। এবং অনেকটা সাফোর মতই বালকদের নিয়েই সময় কাটাতেন। তার মৃত্যুদণ্ডের পিছনে যুবকদের কুপথে নিয়ে যাবার অভিযোগও ছিল(তবে এই অভিযোগের সত্যতা অনেকটাই নেই, যেমনটি ঘটেছিল সাফোর ক্ষেত্রেও)। তাছাড়া গ্রীকে তৎকালীন সময়ে বালকদের অনেক বেশি চাহিদা ছিল, বিশেষ করে সুন্দর বালকদের। অই সময়ে সেখানে বালমেহন এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে, সেখানে এই বিষয়ে দেদারছে কবিতা লেখা হত, আলোচনা হত।
এখন প্রশ্ন হল, সাফো যদি আসলেই নারী সমকামিতার জনক হয়ে থাকেন পুরুষ সমকামিতার জনক কি সক্রেটিস?
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×