somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাম ডার্ক-ম্যাটার না রেখে বরং ইন্‌ফারেন্‌শ্ল-ম্যাটার (Inferential matter) রাখা উচিত

২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১০:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জনৈক মন্তব্যকারীর মন্তব্য- আপনার প্রতিমন্তব্য পড়ে আবারো হতাশ হলাম। ডার্ক ম্যাটার সম্পর্কে আপনার ধারণা খুবই কম। আপনি বাংলায় এর আক্ষরিক অনুবাদ করে সমস্যা তৈরী করেছেন। ডার্ক ম্যাটারের বাংলা করা যায়, অদৃশ্য বস্তু, অন্ধকার বা কৃষ্ণ বস্তু নয়। অন্ধকার হচ্ছে আলোর অভাব বা আলো সম্পুর্ণ শোষিত হওয়া। এর সাথে ডার্ক-ম্যাটারের কোন সম্পর্ক নেই। ডার্ক ম্যাটার হচ্ছে আলোক কনিকা নিরপেক্ষ। তাই একে দেখা যায় না। মহাবিশ্বে যেখানে দৃশ্য বস্তু ৪ ভাগ, সেখানে ডার্ক ম্যাটার ২৩ ভাগ আর ডার্ক এ্যানার্জি হচ্ছে ৭৩ ভাগ। আপনার কথা মতো তাহলে কোরান ভুল, তাই না? কারণ কোরানে আলোর কথা অন্ধকারের চেয়ে বেশি বলা হয়েছে। পরম করুনাময় আল্লাহ আপনাকে সুবুদ্ধি দান করুক।

জনৈক মন্তব্যকারীর মন্তব্যের জবাবে বলছি-
ভাই, পদার্থবিদ্যায় আমার জ্ঞান কম- তা আমি অবশ্যই স্বীকার করি। তবে এ বিদ্যায় যে আপনার বেশ আগ্রহ আছে তা জানতে পেরে খুব ভাল লাগলো। পরম করুণাময়ের নিকটে আপনি আমার জন্য যে দোয়া করেছেন তার জন্য ধন্যবাদ জানাই। সর্বজ্ঞ মহান আল্লাহতায়ালার কাছে দোয়া করি - তিনি যেন আল-কোরআন ও জ্ঞান-বিজ্ঞান সাধনার জন্য আপনার হৃদয়কে আরও উন্মুক্ত ও প্রসারিত করে দেন। ভাই আপনার বক্তব্য ও বিশ্বাসের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে আমি আমার বিশ্বাস ও চিন্তা-চেতনাকে প্রকাশ করতে চাই। আশাকরি এরপর আপনার এবং আমার বিশ্বাসের পথটি একই সরল রেখায় মিলিত হবে।

জ্ঞানগর্ভ কিতাব আল-কোরআনে আল্লাহতায়ালা অসংখ্য বৈজ্ঞানিক ঐশী তথ্যের উল্লেখ করেছেন। আল্লাহতায়ালা মানুষকে যে সীমাবদ্ধ জ্ঞানদান করেছেন তার যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে জ্ঞানী মানুষেরা যেন এইসব তথ্য সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক চিন্তা ভাবনা ও গবেষণার মধ্য দিয়ে মহাজ্ঞানী আল্লাহর অসীম জ্ঞানের কথা উপলব্ধি করার সাথে সাথে প্রকৃত সত্যের সন্ধান লাভ করতে পারে সেজন্য বার বার তাগিদ দেয়া হয়েছে। সেই সাথে বিবেকবান মানুষেরা যেন মানবকল্যাণে ব্রতী হওয়ার পাশাপাশি সবসময় এক আল্লাহর কাছে মাথানত করে এবং তাঁর মহত্ব ও করুণার কথা স্মরণ করে। পবিত্র কোরআনে এমন কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য নেই যা ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে কিছুদিন পূর্বেও মানুষ যে সমস্ত তথ্য সম্পর্কে বিভ্রান্তিতে ছিল, জ্ঞান সাধনার ফলে তার অনেকটাই আজ সত্যের আলোতে উদ্ভাসিত হয়েছে। তবে এখনও এমন কিছু তথ্য রয়েছে, যার প্রকৃত অর্থ অনুধাবনের জন্য আরও উন্নততর চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণার যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে। এভাবেই পবিত্র কোরআনে উল্লেখিত বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তথ্যাদি যুগ যুগ ধরে মানুষকে সঠিকভাবে জ্ঞানবিজ্ঞান সাধনার প্রতি উৎসাহিত করে আসছে। এই চলার পথে ভুল-ত্রুটি হতে পারে। যখনই সেই ভুল বুঝে আসবে, তৎক্ষণাৎ তা মেনে নিয়ে অকপটে স্বীকার করতে হবে। যদি ভুল হয়ে যায় এই আশঙ্কায় হাত গুটিয়ে বসে থাকলে পরাজয়ের গ্লানি থেকে মুক্তি পাওয়া বড্ড কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ যারা নিজেরা নিজেদের ভাগ্য বা অবস্থার উন্নয়নের জন্য চেষ্টা-সাধনা করে না, মহান আল্লাহতায়ালা তাদের ভাগ্যের বা অবস্থার পরিবর্তন ঘটান না। এই চেষ্টা অবশ্যই দলবদ্ধভাবে চালিয়ে যেতে হবে। তবে যার যতটুকু ক্ষমতা সেই অনুযায়ী সে তার নিজস্ব পরিসরেও সাধনা চালিয়ে যাবে। আল-কোরআনের প্রতিটি বাণীরই গুরুত্ব অপরিসীম এবং ক্ষেত্র বিশেষে সেগুলোর প্রয়োজনীয়তা সঠিকভাবে অনুধাবন করা যায়। বিংশ শতাব্দি বিজ্ঞানের যুগ। প্রায় ১৪৫০ বছর পূর্বেই মহান স্রষ্টা তাঁর বিজ্ঞানময় গ্রন্থে এমন সব অকাট্য বৈজ্ঞানিক তথ্যের অবতারণা করেছেন যেগুলোর মর্ম ধীরে ধীরে উপলব্ধি করা সম্ভব হচ্ছে। সর্বজ্ঞ আল্লাহতায়ালা ভাল করেই জানতেন যে, এমন এক সময় আসবে যখন অবিশ্বাসীরা বিজ্ঞানের নামে মিথ্যে মতবাদ ও ত্বত্ত্বের ছলনায় সরল মানুষদেরকে ধোঁকা দিয়ে ঈমান নষ্টের খেলায় মেতে উঠবে। আর তখন তাঁর ঈমানদার বান্দারা তাঁরই প্রদত্ত ঐশী-দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে বৈজ্ঞানিক সত্য তথ্যগুলো এমনভাবে উপস্থাপন করবেন যে, অবিশ্বাসীদের দ্বারা আবিষ্কৃত তথ্যগুলো বুমেরাং হয়ে তাদেরই মনগড়া মতবাদকে মিথ্যা প্রমাণিত করবে। আল্লাহতায়ালা এভাবে সত্যকে প্রকাশিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত করেন এবং ঈমানদার বান্দাদের চেষ্টা ও সাধনাকে বিজয় দান করেন। স্থান, কাল ও পাত্রভেদে কোন মতবাদ বা তত্ত্বকে হয়ত সেই নির্দিষ্ট কাল বা স্থান বা সীমাবদ্ধ কোন মানবগোষ্ঠীর জন্য লাভজনক বা সঠিক বলে মনে হতে পারে। কিন্তু আল-কোরআনের মাপকাঠিতে যদি তা সার্বজনীন ও সঠিক হিসেবে বিবেচিত না হয় তবে সাময়িকভাবে যত লাভজনক ও আকর্ষণীয়ই মনে হোক না কেন, তাতে ঈমানদারগণের কিছুই যায় আসে না এবং তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। সুতরাং রাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, বিজ্ঞান, শিক্ষানীতি ইত্যাদি সবগুলো ক্ষেত্রেই আধুনিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। সেইসাথে আল-কোরআনকে সত্যের মাপকাঠি হিসেবে ধরে নিয়ে ঈমান বিনষ্টকারী অকল্যাণকর সকল মতবাদ ও তত্ত্বের খারাপ দিকগুলো সর্বসাধারনের মাঝে তুলে ধরতে হবে এবং ঈমানী জজবা পয়দাকারি বক্তব্যগুলোকে সমুন্নত রাখতে হবে। এর ফলে বিশ্বাসীগণের বিশ্বাস হবে সুদৃঢ়। হয়তো বা কোন অবিশ্বাসীর হৃদয় ঈমানের আলোয় হতে পারে আলোকিত। সবই সর্বদ্রষ্টা আল্লাহতায়ালার ইশারা মাত্র।

মানুষ মাত্রই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়, সুতরাং আমার এই চিন্তা-ভাবনার মাঝে অক্ষমতা হেতু অনিচ্ছাকৃত ভুল-ভ্রান্তি ঘটে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। তাই দয়াময় আল্লাহতায়ালার কাছে সব সময় এই প্রার্থণা জানাই, তিনি যেন তার এই অধম বান্দাকে সর্বপ্রকার অনিচ্ছাকৃত ভুল-ভ্রান্তির জন্য ক্ষমা করেন।

এবার আসল প্রসঙ্গে আসা যাক। প্রথমেই বলে রাখি, আমি যে সমস্ত ডার্ক-ম্যাটার বা ডার্ক-এনার্জিকে আঁধার জগতের শক্তি হিসেবে উল্লেখ করতে চেয়েছি, সেগুলো প্রকৃত অর্থে আপনার বর্ণিত তথাকথিত ডার্ক-ম্যাটার বা ডার্ক-এনার্জি নয়। তাই এর পূর্বে এগুলো সম্পর্কে বর্ণনা দেয়ার প্রয়োজন বোধ করিনি। আমি প্রকৃত অর্থে ডার্ক-ম্যাটার বলতে মহাবিশ্বের সেই সমস্ত পদার্থ কণিকা বা বস্তুনিচয়কে বোঝাতে চেয়েছি যেগুলো কসমিক হরাইজন (cosmic horizon) এর সীমাকে অতিক্রম করেছে বা করবে এবং যাদের লাইন-অফ-সাইট ভেলোসিটি (Line-of-sight velocity) আলোর গতি অপেক্ষা অধিক হওয়ায় সেগুলো প্রকৃত অর্থে আর কখনই আলোর জগতের বস্তু বা শক্তি হিসেবে দৃষ্টিগোচর বা বোধগম্য হবেনা। চিরকাল আঁধারেই থেকে যাবে।

এটা তো ঠিক যে, আপনার বা আমার অর্থাৎ মানুষের কাছে যা খালি চোখে (বিশেষ চশমা ছাড়া) ঘুট ঘুটে অন্ধকার - তা কিন্তু বাদুর কিংবা কুকুর, বিড়াল ইত্যাদির কাছে সেই পরিমাণে অন্ধকার নয়। অর্থাৎ যে পরিমাণ আলোর অভাবে আমরা অন্ধকার বোধ করছি, সেই একই পরিমাণ আলোর অভাব সত্ত্বেও বাদুর কিংবা কুকুর, বিড়াল স্বাচ্ছন্দে ঘুরছে ফিরছে। সবই আলোক তরঙ্গের খেলা। এ মহাবিশ্বের সর্বত্রই আলোর সমাহার। প্রকৃত অর্থে এই আলোক-সর্বস্ব মহাবিশ্বের কোথাও একচ্ছত্র আঁধার নেই। এই তো কিছুদিন পূর্বেও দৃশ্যমান জগতের সীমানা সূর্য, চন্দ্র, কয়েকটি গ্রহ, উপগ্রহ ও রাতের আকাশে জ্বলে থাকা আমাদের ছায়াপথের তারকাগুলোর বেষ্টনীর মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছিল। কিন্তু আলোক শক্তিকে কাজে লাগানোর ফলে বর্তমানে এই দৃশ্যমান আলোকিত জগতের সীমানা এতটাই বিস্তৃত হয়েছে যে তা সে যুগের মানুষেরা হয়ত কল্পণাই করতে পারত না। অর্থাৎ আগে যা অন্ধকার জগত ভাবা হত, এখন তা আলোর জগতে পরিণত হয়েছে।

সামপ্রতিক তথ্য অনুসারে ডার্ক-এনার্জি হলো (Hypothetical form of energy) উপপ্রমেয়মূলক অর্থাৎ যুক্তিতর্ক বা ব্যাখ্যার সূচনা বিন্দু রূপে উপস্থাপিত ভাব বা প্রস্তাবমূলক শক্তি। মহাবিশ্বের (Mass energy) বস্তুপিন্ড বা পদার্থের ভর থেকে উৎপন্ন সমুদয় শক্তির ৭৩% বা ৭৪% এই ডার্ক-এনার্জি থেকে এবং বাকি ২৩% বা ২২% ডার্ক-ম্যাটার এবং ৪%স্বাভাবিক বা সাধারণ পদার্থ থেকে আসে বলে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। কুইন্‌টেসন্স (Quintessence) এবং (Cosmological constant) কসমোলজিকাল কন্সটেন্ট- এই দুটি মডেল অর্থাৎ আদর্শ বা আদল অনুসারে ডার্ক-এনার্জির অবশ্যই (Negative pressure) ঋণাত্মক বা নেতিবাচক চাপ থাকা উচিত। কারণ মহাবিশ্বের প্রসারণ যে ক্রমান্বয়ে দ্রুততর হচ্ছে (expansion of the universe is accelerating) তা ব্যাখ্যা করার জন্য এরূপ শক্তিশালী ঋণাত্মক চাপ থাকা প্রয়োজন।

বিজ্ঞানের ভাষায় ডার্ক-ম্যাটার বলতে বিদ্যুৎ নিরপেক্ষ (Electrically neutral) অর্থাৎ (meaning they have no charge) যাদের মধ্যে বিদ্যুৎ শক্তি সঞ্চালিত হয়না এরূপ পদার্থ কণিকাকে বোঝান হয়েছে। এগুলো আলোর সাথে ক্রিয়া করেনা বিধায় এখন পর্যন্ত দৃষ্টিগোচর হয়নি। গ্যালাক্সিগুলোর ঘূর্ণনের উপর এগুলোর বিশেষ ধরণের ক্রিয়া বা প্রভাব আছে বলে ধারনা করা হয়। এগুলো গ্যালাক্সি ও গ্যালাক্সিগুচ্ছের ভিতরে এবং চতুর্দিকে ঘনীভূত অবস্থায় থাকে। ধীর গতিসম্পন্ন হওয়ায় মহাকর্ষীয় আকর্ষণের প্রভাব থেকে এরা মুক্ত নয়।

কণাবাদী বলবিদ্যার তথ্য অনুসারে (In Standard Model of particle physics) ১২টি ফারমিয়নিক মৌল কণিকাসমূহের (Fundamental fermionic particles) সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ১২টি ফারমিয়নিক মৌল বিপরীত কণিকাসমূহের (Fundamental fermionic antiparticles) বিদ্যমান হওয়ার ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। এই মহাবিশ্বে বস্তু-জগতের সমান্তরালে যে প্রতিবস্তু-জগৎ সৃষ্টি হয়ে চলেছে সে বিষয়েও বিজ্ঞানীরা অভিমত ব্যক্ত করেছে। আমরা জানি যে, বস্তু ও প্রতি-বস্তু একই সাথে অবস্থান করতে পারেনা। পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে এরা বিনাশ প্রাপ্ত হয়- থাকে শুধু শক্তিটা। যেহেতু একসাথে পাশাপাশি অবস্থান করতে পারেনা, তাই (-১) ইলেকট্রিক চার্জ বহনকারী কণিকা দ্বারা গঠিত বস্তু-জগৎ এবং (+১) ইলেকট্রিক চার্জ বহনকারী বিপরীত-কণিকা দ্বারা গঠিত প্রতিবস্তু-জগতের মাঝে সম্ভবত এমন কোন আড়াল বা সীমানা বা প্রতিবন্ধক রয়েছে যা বিদ্যুৎ নিরপেক্ষ উপাদান দ্বারা গঠিত হওয়ায় কণিকা বা বিপরীত কণিকার সঙ্গে কোন ক্রিয়া করেনা। সেই সাথে বস্তু ও প্রতিবস্তু জগতকে একে অপরের কাছ থেকে পৃথক কোরে রাখার কাজেও এরা নিয়োজিত। এই দেয়াল বা সীমানা সম্ভবত তথাকথিত এই ডার্ক-ম্যাটার দ্বারা গঠিত হয়েছে। কণিকা, বিপরীত-কণিকা ও ডার্ক-ম্যাটার কোনটিই আলোর চেয়ে অধিক গতিসম্পন্ন নয়। সুতরাং ডার্ক-ম্যাটার প্রকৃত অর্থে আঁধার জগতের বাসিন্দা নয়। আর এই ডার্ক-ম্যাটার আমাদের এই আলোকিত বস্তু-জগতের মধ্যকার এক বিশেষ ধরনের উপাদান দিয়ে গঠিত বলেই গ্যালাক্সিগুলোর ঘূর্ণন গতির উপর এদের প্রভাব বা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দেখে আপাতত এদের অস্তিত্ব অনুমান করা সম্ভব হচ্ছে। তাই আমি মনে করি এগুলোর নাম ডার্ক-ম্যাটার না রেখে বরং ইন্‌ফারেন্‌শ্ল-ম্যাটার (Inferential matter) রাখা উচিত। ইলেকট্রিকালী নিউট্রাল আর্থাৎ বিদ্যুৎ নিরপেক্ষ হওয়ায় এগুলো থেকে গতানুগতিক পদ্ধতিতে আলোর প্রতিফলন ঘটানো সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে গতানুগতিক মহাকাশ দর্শনযন্ত্রের মাধ্যমে ডার্ক-ম্যাটার অধ্যুষিত জগত দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। আশাকরি ভবিষ্যতে আরও উন্নততর প্রযুক্তির মাধ্যমে আলোক-শক্তিকে কাজে লাগানোর মধ্য দিয়ে এর মীমাংসা হয়ে যাবে।

কৃষ্ণগহ্বরগুলো যেহেতু তাদের প্রচন্ডতম আকর্ষণ ক্ষমতার আওতার মধ্যে আসা আশে পাশের গ্রহ, নক্ষত্রগুলো সহ বস্তু জগতের সকল কিছুকে গ্রাস করছে এবং বিপরীত কণিকা উৎসর্জনের মাধ্যমে আমাদের অন্তরালে তথাকথিত শিশু-মহাবিশ্ব বা প্রতিবস্তুজগৎ গড়ে তুলছে। সুতরা বিপরীত-কণিকা দ্বারা গঠিত প্রতিবস্তু জগতের আকার বস্তু-জগতের আকার অপেক্ষা বৃহত্তর হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর এ কারণেই প্রতিবস্তু জগতের শক্তিও বেশী হবে। এই প্রতিবস্তু জগতের শক্তিকে আমি তথাকথিত ডার্ক-এনার্জি অর্থাৎ ইন্‌ফারেন্‌শ্ল-এনার্জি (Inferential energy) হিসেবে আখ্যায়িত করতে চাই, যা তথাকথিত ডার্ক-ম্যাটার অর্থাৎ ইন্‌ফারেন্‌শ্ল-ম্যাটার (Inferential matter) দ্বারা গঠিত সীমার বা দেয়ালের আড়ালে থেকে (বহির্দেশ থেকে) কম শক্তিসম্পন্ন বস্তু-জগতকে ক্রমান্বয়ে আকর্ষণ করে চলেছে। ফলে দুই জগতের আকর্ষণ শক্তির পার্থক্য (Inferential energy - Gravitational force) থেকে যে ঋণাত্মক বা নেতিবাচক চাপের উদ্ভব হচ্ছে তার কারণেই আমাদের এই বস্তু-জগৎ সহ ইন্‌ফারেন্‌শ্ল-ম্যাটার দ্বারা গঠিত সীমানা বা বেষ্টনীও ক্রমান্বয়ে প্রসারিত হয়ে চলেছে।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে, তাহলে প্রকৃত অর্থে যেখানে কোন আলো নেই সেরূপ আঁধার জগতের উপাদান অর্থাৎ ডার্ক-ম্যাটার কি?

বৈজ্ঞানিক তথ্যের আলোকে বলা যায় যে, বস্তু-জগতের মধ্য থেকে যেগুলো আলোর চেয়ে অধিক গতিবেগ প্রাপ্ত হয় (that galaxies outside the local supercluster will move beyond the cosmic horizon: they will no longer be visible, because their line-of-sight velocity becomes greater than the speed of light) সেগুলোই প্রকৃত অর্থে আঁধার জগতের উপাদানে আর্থাৎ ডার্ক-ম্যাটারে পরিণত হয়। লাইন-অফ-সাইট ভেলোসিটি অতিক্রম করায় দৃষ্টিসীমা থেকে এরা চিরকালের জন্য হারিয়ে যায়।








সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১২ রাত ১২:০১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×