somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাল্যবিবাহের নামে যৌন হয়রানি কিংবা স্ত্রী-নির্যাতন করা কি কোন ধর্মীয় রীতি হতে পারে?

২৫ শে জুন, ২০১১ দুপুর ১২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





তাহানী, রজনী, সুনীল, নজুদ, জারকা এবং আমাদের রুমানা- এই নামগুলোর সাথে ভিন্ন ভিন্ন জাতি, ধর্ম ও স্থান-কালের সম্পর্ক কিংবা পরিচিতি ফুটে উঠলেও তাদের নিয়তি যেন একই সূত্রে গাঁথা। তাদের অমানবিক অবস্থার কথা মনে হলেই যে ধরনের আন্ধা-রীতি বা দুর্গতির চিত্র ফুটে ওঠে, প্রকৃত অর্থে তার সাথে ধর্মের কি আদৌ কোন সম্পর্ক থাকতে পারে? মানবতা রক্ষার স্বার্থে এবং ধর্মান্ধতা দূর করার জন্য এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার অবশ্যই প্রয়োজন আছে। ধর্মের নামে স্বার্থবাদী প্রতারণা কিংবা অতিরঞ্জিত আরোপ করলে অথবা ধর্মীয় স্পষ্ট বিধানকে উপেক্ষা করলেও যে শান্তির পরিবর্তে জীবনে অশান্তি ছাড়া আর কিছুই জোটে না, এমনকি বিপর্যয় নেমে আসতে পারে- এই ঘটনাগুলো থেকে পরোক্ষভাবে সে শিক্ষাই মেলে।

এ পৃথিবীর কোন স্থানের মানুষ ধর্ম মানুক বা না মানুক, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে সর্বকালেই এবং সর্বস্থানেই জাগ্রত বিবেক ও আইনের সুষ্ঠ প্রয়োগের বিকল্প নেই । কোন অন্যায় ও অত্যাচারের কারনে মানবতা যখন হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ে তখন কঠোর হাতে আইন প্রয়োগ করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। আপাত দৃষ্টিতে দোষীকে সাজা দেবার আইনটি যতই কঠোর মনে হোক না কেন তা অমানবিক মনে করাটা যেমন অযৌক্তিক, তেমনি অমানবিক কর্মকে ধর্ম কিংবা মানবতার গান গেয়ে প্রশ্রয় দেয়াটাও ভন্ডামী ছাড়া আর কিছুই নয়। কোন অমানবিক কর্মকে আইনের মারপ্যাচে প্রতিষ্ঠা করার অপচেষ্টা করা হলে যেমন তাকে আন্ধা-কানুন বা কালা-কানুন বলা যেতে পারে। তেমনি ধর্মের নামে নিষ্পাপ মানুষকে নিষ্পেষিত করার যে কোন রীতিকে অধর্মই বলতে হবে। ধর্মীয় বিধান হোক কিংবা ধর্ম-নিরপেক্ষ আইন হোক- তার অবস্থান সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে হলে মানবতা রক্ষা পাবার সম্ভাবনাই বেশি থাকে এবং এটাই স্বাভাবিক। ধর্মের সাথে সরাসরি স্রষ্টার নিগূঢ় সম্পর্ক বিদ্যমান, আর স্রষ্টা সর্বদা ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও মানবতা রক্ষার পক্ষে মানুষের জন্যই ধর্মের অবতারণা করেছেন। সুতরাং ধর্মের নামে মানবতা বিবর্জিত যে কোন রীতির সাথে স্রষ্টা প্রদত্ত খাঁটি ধর্মের কোন সম্পর্কই থাকতে পারেনা। যদি সমাজে ধর্মের নামে এরূপ কোন রীতি চালু থকে, তবে সেটিকে স্বার্থবাদী মানুষের রচিত কুসংস্কার অর্থাৎ অধর্মই বলতে হবে।

মানুষের মন বৈচিত্রময়। কথায় বলেনা- "যার মনে যারে লাগে ভাল"। বয়সের বড় ব্যবধান সত্বেও যদি কোন নারী বা পুরুষ একে অপরকে পছন্দ করে এবং বিয়ে করে সুখি হতে চায় বা পারে, তাতে তো কারও কোন আপত্তি থাকার কথা না। আপত্তির প্রশ্ন আসে তখনই, যখন বিকারগ্রস্ত যৌন বাসনা মেটানোর জন্য বালিকাবিবাহ করাকে ধর্মীয় রীতি বানিয়ে পুণ্য অর্জনের ঢেকুর তোলার পায়তারা করা হয়। অনেক সময়ই দেখা যায় পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি ও গোত্রের সমাজ ব্যবস্থায় বিবাহ কি জিনিস তা বোঝার মত জ্ঞান-বুদ্ধি হবার আগেই বিয়ের নামে কচি অবুঝ শিশুকে বলতে গেলে এক রকম জোর করেই কোন এক মাঝবয়সী কিংবা বৃদ্ধের গলায় ঝুলিয়ে দিতে আপনজনেরা কুন্ঠাবোধ করে না। হায়! এক্ষেত্রে কনের সম্মতি বা অসম্মতির কোন তোয়াক্কা তো করাই হয় না, বরং ধর্মের নামে পুণ্য কামাই করার নেশায় তাদের অধিকার হরণের সকল পন্থা অবলম্বন করা হয়। ধর্মান্ধ মানুষ এতটাই অন্ধ হয়ে যায যে, বিয়ের শর্ত অনুসারে সম্মতি/অসম্মতির তোয়াক্কা তো করাই হয় না, এমনকি একটা হারাম উপায় অবলম্বন করে তদের পায়ে যৌন বেড়ি পরিয়ে গুনাহের পথ বেছে নিতেও কুন্ঠিত হয়না। বরং ধর্মের নামে পুণ্য কামাই করার নেশায় তাদের অধিকার হরণের সকল পন্থা অবলম্বন করা হয়।

যেহেতু একজন মুসলিম হিসেবে আপন সমাজের এই অন্ধকার দিকটি আমাকে খুবই পীড়া দেয়। তাই অন্য কোন সমাজের রীতি সম্পর্কে বলার আগে আমার সমাজে বিরাজমান এই ভ্রান্ত রীতির রহস্য উন্মোচন করার জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। আশা করি এ সম্পর্কে অন্য ধর্মের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণও তাদের সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করবেন। মূল পোষ্টটি এখানে দেখুন-
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১১ রাত ৯:০৬
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×