somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুদখোরদের সামাজিকভাবে বয়কট ও জানাজা প্রসঙ্গে-

৩০ শে জুলাই, ২০১১ রাত ১১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যদি এই প্রস্তাব রাখা হয়-
যারা সুদখোর, (গ্রামাঞ্চলে প্রচলিত মহাজনী সুদখুরির সাথে যারা যুক্ত) তাদের ছেলে-মেয়ের সাথে নিজেদের ছেলে-মেয়ের বিয়ে না দেওয়া এবং তাদের মৃত্যুর পর জানাযা না পড়ানোও উত্তম প্রতিষেধকের কাজ হতে পারে।

ইসলাম ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার পক্ষে। সেই লক্ষ্যে সকল প্রকার অন্যায়, জুলুম, অনাচার এবং অমানবিক ও অশ্লীল আচরণের বিরুদ্ধে ইসলামের নীতি অত্যন্ত কঠিন। বিশেষ করে মানুষের জন্য ক্ষতিকর যা কিছু, প্রকৃত ইসলামি সমাজ ব্যবস্থায় তার কোন ঠাঁই নেই। এ কারনেই সুদখুরির হাত থেকে সমাজকে রক্ষার জন্য এ ধরনের পদক্ষেপের সাথে মুসলিম হিসেবে এক কথায় সহমত পোষণ করা চাই। সেই সাথে সঠিক উপায় বাতলে দেবার পাশাপাশি বিকল্প ব্যবস্থাও প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

এখনো যারা আগের কালের মহাজনী সুদখোরদের মত মানুষকে শোষণ করছে, তাদের সাথে সু-সম্পর্ক না রাখাই শ্রেয়। তবে ঢালাও ভাবে সবাইকে মহাজনী সুদখোরদের মত ভেবে নেয়াটা বোধ হয় ঠিক হবে না। বিশেষ করে বর্তমানে অনেক চাকরিজীবী আছেন যারা বৃদ্ধ বয়সে তাদের পেনশনের পাওনা টাকাটা সরকারী সঞ্চয়পত্র পেনশন স্কিমে খাটিয়ে দিন গুজরান করছেন। চাঁদাবাজ, ঠকবাজ, নিরাপত্তাহীনতার অভাব ইত্যাদি নানাবিধ কারনে তারা এমন ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা, তাদের ছেলে-মেয়ের সাথে নিজেদের ছেলে-মেয়ের বিয়ে না দেওয়া এবং তাদের জানাযা না পড়ার বিষয়টি কতটা যুক্তিযুক্ত তা ভাববার বিষয় বৈকি।

বর্তমানে সেই সব অসহায় মানুষের মধ্যে যারা নিরুপায় হয়ে তাদের কষ্ট করে উপার্জিত অর্থ/সম্পদ খোয়া যাবার ভয়ে বাধ্য হয়ে সরকারের বেধে দেয়া সিস্টেমে খাটাচ্ছেন এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মুনাফা গ্রহণ করছেন, তারা প্রকৃত অর্থে আল-কোরআনে বর্ণিত সেই সব রক্তচোষা সুদখোরদের মত কি?

বিষ মিশ্রিত পানি পান করলে যে মৃত্যু অনিবার্য তা মোটামুটি সবাই জানে। কিন্তু সুদ মিশ্রিত টাকা বা সম্পদ ব্যবহার করলে বিষ মিশ্রিত পানি পানের মত তৎক্ষণাৎ মৃত্যুর আশংকা নেই। প্রকৃত অর্থে আল-কোরআনে যে ধরনের সুদখুরি করতে নিষেধ করা হয়েছে তা বিষ মিশ্রিত পানি পানের চেয়েও মারাত্মক অপরাধ। কারণ যারা এর সাথে জড়িত থাকে তারা এমনই হীন মানসিকতা সম্পন্ন ও স্বার্থপর হয়ে যায় যে অপরের ক্ষতি করে নিজের আখের গোছানোই তাদের মূল উদ্দেশ্য থাকে। অসহায় গরীব মানুষই তাদের মূল টার্গেট। সে কারনেই মহাজনী সুদ প্রথার সজ্ঞাটাও এত সহজ হবার কথা নয়। মূলত এক্ষেত্রে গরীব মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগে তাদের ওপর কোনরূপ জুলুম করা হচ্ছে কিনা সেটা অবশ্যই ক্ষতিয়ে দেখতে হবে। চক্রবৃদ্ধি হারে অসহায় মানুষকে সুদ দিতে বাধ্য করা ও তা গ্রহণ করার সাথে বিষ মিশ্রিত পানি পানের কম-বেশি সামঞ্জস্য থাকতে পারে। কিন্তু এর সাথে বর্তমানে সঞ্চয়পত্র স্কিমের মুনাফা গ্রহণের বিষয়টিকে একই পাল্লায় মাপা ঠিক হবে কিনা তা ভেবে দেখা দরকার।

সূরা আল বাকারা (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০২:২৭৫) অর্থ- যারা সুদ খায়, তারা দাঁড়াতে সক্ষম হবেনা, তার দাঁড়ানো হবে ঐ ব্যক্তির মত, যাকে শয়তান আসর করে মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছে। এটা এ কারণ, যেহেতু তারা বলে, ব্যবসা-বাণিজ্য তো সুদেরই মত! অথচ আল্লাহতায়ালা ব্যবসা বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার একান্তই আল্লাহতায়ালার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু যারা পুণরায় (সুদ প্রথায়) ফিরে আসবে, তারাই জাহান্নামী হবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।
(০২:২৭৬) আল্লাহ তা’আলা সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দান খয়রাতকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ পছন্দ করেন না কোন অবিশ্বাসী পাপীকে।
(০২:২৭৭) নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে, সৎকাজ করেছে, নামায প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং যাকাত দান করেছে, তাদের জন্যে তাদের পুরষ্কার তাদের পালনকর্তার কছে রয়েছে। তাদের কোন শঙ্কা নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না।


মানবতা বিমুখ মানুষ কখনোই স্রষ্টার সান্নিধ্য পেতে পারে না (০২:২৭৬)। তাই মহান আল্লাহতায়ালা সর্বদা দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেন। সম্পদ ও সুপরামর্শ দিয়ে তাদের সহযোগীতা করার নির্দেশ দেন। আপন সম্পদ থেকে (০২:২৭৭) যাকাত ও ফিতরা প্রদান করা মুসলিমদের জন্য অবশ্য পালনীয় কর্তব্য। এছাড়াও সহায় সম্বলহীন মানুষকে সাদকা বা দান করলে মহান স্রষ্টা সন্তুষ্ট হন। কারন এই ধরনের জনহিতকর কাজের মাধ্যমে মানুষের হৃদয় প্রশস্ত হয় এবং অন্তরাত্মা শান্তি পায়।

সূরা আল ইমরান (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৩:১৩০) হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খাবে না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো।
সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৪:১৬১) আর এ কারণে যে, তারা সুদ গ্রহণ করত, অথচ এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল এবং এ কারণে যে, তারা অপরের সম্পদ ভোগ করতো অন্যায় ভাবে। বস্তুত; আমি কাফেরদের জন্য তৈরী করে রেখেছি বেদনাদায়ক আযাব।

মহান স্রষ্টা মানুষকে প্রতিনিধি হিসেবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। অথচ অসহায় মানুষকে সাহায্য করা তো দূরে থাক, পক্ষান্তরে মহাজনী সুদখোরেরা দরিদ্র মানুষের দুর্বলতাকে পুঁজি করে তাদেরকে ঠকানোর কু-মতলবে টাকা ধার দিয়ে থাকে। তারা চড়া হারে সুদ ধার্য করে এবং (০৩:১৩০) চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ গ্রহণের পাঁয়তারা করে। এক্ষেত্রে যারা টাকা ধার নিচ্ছে সেই গরীব মানুষগুলো মহাজনদের হাতে একপ্রকার জিম্মি হয়ে যায় এবং তাদের স্বার্থকে উপেক্ষা করে চুক্তিনামা করা হয়। মহাজনেরা এমন শর্ত আরোপ করে যে ঋণ গ্রহীতা ফলশ্রুতিতে আরও ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এমনকি কখনো কখনো দেখা যায় (০৪:১৬১) মহাজনরা তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়। আল-কোরআনে এই ধরনের সুদখুরি বর্জন করার জন্য বিশ্বাসীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যারা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ গ্রহণ করে তারা কখনো বিশ্বাসী হতে পারে না। এরূপ অমানবিক কাজে জড়িত থাকার অপরাধে সেই অবিশ্বাসীদের জন্য চরম সাজার দুঃসংবাদ দেয়া হয়েছে।

সূরা আল বাকারা (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০২:২৭৮) হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক।
(০২:২৭৯) অতঃপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমরা নিজের মূলধন পেয়ে যাবে। তোমরা কারও প্রতি অত্যাচার করো না এবং কেউ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করবে না।
(০২:২৮০) যদি খাতক অভাবগ্রস্ত হয়, তবে তাকে সচ্ছলতা আসা পর্যন্ত সময় দেয়া উচিত। আর যদি ক্ষমা করে দাও, তবে তা খুবই উত্তম যদি তোমরা উপলব্ধি কর।


'Loans, Payment of Loans, Freezing of Property, Bankruptcy' of Sahih Bukhari
606: Narrated 'Abdullah bin Ka'b bin Malik Al-Ansari from Ka'b bin Malik: That 'Abdullah bin Abi Hadrad Al-Aslami owed him some debt. Ka'b met him and caught hold of him and they started talking and their voices grew loudest. The Prophet passed by them and addressed Ka'b, pointing out to him to reduce the debt to one half. So, Ka'b got one half of the debt and exempted the debtor from the other half.

ইসলামি সমাজ প্রতিষ্ঠা হলে সেখানে (০২:২৭৮) এইরূপ সুদখুরি চালিয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই, বরং যারা বর্জন করবে না তাদের সাথে (০২:২৭৯) যুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সুদি কারবারের সাথে জড়িত মহাজনদের তওবা করে এ পথ থেকে ফিরে আসারও সুযোগ রয়েছে। (০২:২৭৯) যদি তারা গরীব মানুষকে ঠকানোর এই পথ পরিহার করে তাহলে ইসলামি সরকারের পক্ষ থেকে তাদের আসল অর্থ বা সম্পদ ফেরত দেবার ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে। (০২:২৮০) তবে ঋণ গ্রহীতা/খাতক অভাবগ্রস্ত হলে সচ্ছলতা না আসা পর্যন্ত সময় দিতে হবে। তারা যদি সত্যিই খুব অসহায় হন তাহলে আলোচনার ভিত্তিতে (606) অর্ধেক পরিমাণ পর্যন্ত ক্ষমা করে দেয়া বা সেই ঋণের বোঝা থেকে নিষ্কৃতি দেয়াই উত্তম।

সূরা আল বাকারা (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০২:২৮২) হে মুমিনগণ! যখন তোমরা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে ঋণের আদান-প্রদান কর, তখন তা লিপিবদ্ধ করে নাও এবং তোমাদের মধ্যে কোন লেখক ন্যায়সঙ্গতভাবে তা লিখে দেবে; লেখক লিখতে অস্বীকার করবে না। আল্লাহ তাকে যেমন শিক্ষা দিয়েছেন, তার উচিত তা লিখে দেয়া। এবং *ঋন গ্রহীতা যেন লেখার শর্ত/বিষয় বলে দেয়* এবং সে (লেখক) যেন স্বীয় পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে এবং লেখার মধ্যে বিন্দুমাত্রও বেশ কম না করে। অতঃপর ঋণগ্রহীতা যদি নির্বোধ হয় কিংবা দুর্বল হয় অথবা নিজে লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে অক্ষম হয়, তবে তার অভিভাবক ন্যায়সঙ্গতভাবে তা লেখাবে। দুজন সাক্ষী কর, তোমাদের পুরুষদের মধ্যে থেকে। যদি দুজন পুরুষ না হয়, তবে একজন পুরুষ ও দুজন মহিলা। ঐ সাক্ষীদের মধ্য থেকে যাদেরকে তোমরা পছন্দ কর যাতে একজন যদি ভুলে যায়, তবে একজন অন্যজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। যখন ডাকা হয়, তখন সাক্ষীদের অস্বীকার করা উচিত নয়। তোমরা এটা লিখতে অলসতা কোরনা, তা ছোট হোক কিংবা বড়, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। এ লিপিবদ্ধ করণ আল্লাহর কাছে সুবিচারকে অধিক কায়েম রাখে, সাক্ষ্যকে অধিক সুসংহত রাখে এবং তোমাদের সন্দেহে পতিত না হওয়ার পক্ষে অধিক উপযুক্ত। কিন্তু যদি কারবার নগদ হয়, পরস্পর হাতে হাতে আদান-প্রদান কর, তবে তা না লিখলে তোমাদের প্রতি কোন অভিযোগ নেই। তোমরা ক্রয়-বিক্রয়ের সময় সাক্ষী রাখ। কোন লেখক ও সাক্ষীকে ক্ষতিগ্রস্ত করো না। যদি তোমরা এরূপ কর, তবে তা তোমাদের পক্ষে পাপের বিষয়। আল্লাহকে ভয় কর তিনি তোমাদের শিক্ষা দেন। আল্লাহ সব কিছু জানেন।

'Loans, Payment of Loans, Freezing of Property, Bankruptcy' of Sahih Bukhari
578: Narrated Abu Huraira: The Prophet owed a camel of a certain age to a man who came to demand it back. The Prophet ordered his companions to give him. They looked for a camel of the same age but found nothing but a camel one year older. The Prophet told them to give it to him. The man said, "You have paid me in full, and may Allah pay you in full." The Prophet said, "The best amongst you is he who pays his debts in the most handsome manner."

579: Narrated Jabir bin Abdullah: I went to the Prophet while he was in the Mosque. (Mis'ar thinks, that Jabir went in the forenoon.) After the Prophet told me to pray two Rakat, he repayed me the debt he owed me and gave me an extra amount.

আমি যাদের কথা বলেছি তারা যে মহাজনী সুদ-খোরদের মত না সেটা পরিষ্কার। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি অবস্থার স্বীকার। এক্ষেত্রে খোদ রাষ্ট্রের সরকারই হচ্ছে গ্রহীতা এবং যাদের জমানো অর্থ বা সম্পদ রয়েছে তারা হলেন দাতা। সরকারের পক্ষ থেকে দেশের সার্বিক অবস্থা অনুসারে নির্দিষ্ট খাতে অর্থ/সম্পদ খাটানোর জন্য জনগণের সামনে প্রস্তাব রাখা হচ্ছে এবং আগ্রহী দাতাদের কাছ থেকে সরকার সেগুলো গ্রহণ করছেন। সরকার যে শুধু টাকা বা সম্পদ গচ্ছিত রাখছেন তাই নয়, বরং কিভাবে খাটানো হবে এবং কি হারে মুনাফা দিলে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না সেটাও (০২:২৮২) তারাই নির্ধারন করছেন এবং শর্ত মাফিক উভয় পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে চুক্তিনামা লিখে রাখা হচ্ছে। (578) ও (579) প্রয়োজনে মুনাফার হারও গ্রহীতাই (সরকার) নিয়ন্ত্রণ করছেন। এর ফলে সেই টাকা অলসভাবে পড়ে না থেকে একদিকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগছে এবং অপরদিকে যারা সরকারের বেধে দেয়া শর্তে রাজি হয়ে টাকা খাটাচ্ছেন তারাও লাভবান হচ্ছেন। ইসলামী সরকারের অধীনে এই ব্যবস্থাটিই হয়ত আরও ইসলাম সম্মত উপায়ে মুসলিমদের আশা আকাঙ্খা মাফিক প্রয়োগ করা সম্ভব হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না ইসলামি সরকার পরিচালিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কায়েম করা সম্ভব হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত বর্তমান (সরকার পরিচালিত মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র) ব্যবস্থা পুরোপুরি বর্জন করা সম্ভব না হলে রাহমানুর রহীম আল্লাহতায়ালা নিশ্চয় মাফ করবেন। তবে কারো সামনে ইসলামের বিধানসম্মত অন্য কোন উপায় খোলা থাকলে যত বেশি সম্ভব সেই বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করাই শ্রেয়। সব চেয়ে বড় কথা হলো, অর্থনেতিক কর্মকান্ড জীবন পরিচালনার প্রতিটি স্তরের সাথে সম্পৃক্ত এবং এ বিষয়ে বেশ কিছু অগ্রগতি হলেও এখনো পর্যন্ত অনেক ক্ষেত্রেই যে আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে সেই বাস্তবতাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। তাই শুধুমাত্র কঠোর মনোভাব পোষণ করে ভুক্তভোগী মানুষকে আরও ভোগান্তির মধ্যে ফেলে দূরে ঠেলে দেয়া ঠিক হবেনা। বরং সকল প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেই দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে চিন্তা-ভাবনা ও পরিকল্পনা করতে হবে এবং মজলুম মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে আল-কোরআনের বিধান বাস্তবায়নের জন্য অবশ্যই সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আমার এ বক্তব্যে অনিচ্ছাকৃত কোন ভুল হয়ে গেলে মহান আল্লাহতায়ালা যেন আমায় ক্ষমা করেন।

যদি প্রশ্ন করেন-
কোরানে বর্ণিত সুদ আর বর্তমান ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় প্রচলিত সুদের মধ্যে কি কোনো পার্থক্য আছে?

আমার জবাব-
প্রথমেই বলে রাখি, আমি বর্তমান ব্যাংকিং ব্যবস্থার পক্ষে যেমন নই, তেমনি এই সিস্টেমের সবই খারাপ ভাবি না-
আল-কোরআনে বর্ণিত সুদের বিষয় আমি তুলে ধরেছি-
বর্তমান ব্যাংকিং ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারনা থাকলে কোরানে বর্ণিত সুদের সাথে তার পার্থক্য আছে কি নেই, কিংবা থাকলে কতখানি তা নিশ্চয় বুঝতে পারার কথা-
সামঞ্জস্য বা পার্থক্য যতটুকুই থাক না কেন, বর্তমান এই ব্যবস্থার হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যে খুব দুরহ তা অস্বীকার করার উপায় আছে কি?
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:১৬
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×