somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাত-পায়ে মোজা আর আপাদমস্তক ঢাকাকেই কি 'পর্দা' বলে?

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্দার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি বা শিথিলতা নয়, বরং এর সঠিক বাস্তবায়নই সময়ের দাবি। শুধু নারী নয়, মহান আল্লাহতায়ালা পুরুষের জন্যও সীমানা নির্ধারন করে দিয়েছেন এবং তা উভয়ের জন্য অবশ্য পালনীয়। এ সীমানার প্রতি শিথিলতা প্রদর্শন যেমন অন্যায় তেমনি অতিরিক্ত চাপিয়ে দেয়াও মোটেই উচিত নয়, বরং কোন কোন ক্ষেত্রে তা জুলুমের সমান। আর জালিমের উপর তো আল্লাহতায়ালার লানত বর্ষিত হতে থাকে। তারা কখনো সঠিক পথের সন্ধান পায় না।

আমি কোন আলেম বা জ্ঞানী ব্যক্তি নই। তবে একজন জ্ঞান অন্বেষণকারী হিসেবে জ্ঞানচর্চা ও জ্ঞান বিনিময়ের প্রতি আমার দুর্বলতা রয়েছে। আমার মতামতের সাথে সবাইকে একমত হতেই হবে এমনটি আমি ভাবি না। তবে সত্য ও সুন্দরকে কুৎসিত দৃষ্টিতে দেখলে কিংবা অযথা তার বিরুদ্ধাচরণ করলে আমার খুবই খারাপ লাগে। সত্যান্বেষী হিসেবে সঙ্গত কারনেই তখন আমি এর বিপক্ষে অবস্থান নিতে বাধ্য হই।

পশ্চিমা বিশ্বের জনগণ জ্ঞান-বিজ্ঞান সাধনা, বিলাসিতা ও যান্ত্রিক আরাম-আয়েশ ভোগের ক্ষেত্রে যে অনেক উন্নতি অর্জন করেছে- তা অনস্বীকার্য। তবে (পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রে) পর্দা প্রথার প্রতি লাগামহীন শিথিলতার করণে তারা নিজেদের অজান্তেই ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলেছে। ধর্ষন, ফ্রি-সেক্স কালচার এর কারণে জারজ সন্তানের হার ক্রমেই বেড়ে চলেছে। মরণব্যাধি এইডস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে। ফলে মানসিকভাবে তারা অশান্তিতে ভুগছে এবং পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতা এমন অবস্থায় পৌছেছে যে গোটা জাতি এই সংকটের হাত থেকে রেহাই পবার জন্য একেক সময় একেক পন্থা ও পথ অবলম্বন করছে। কিন্তু ঐশী বিধানকে অবজ্ঞা করার কারণে সার্বিকভাবে তারা এ সংকট সমাধানের বিষয়ে কোন কুল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছেনা। তবে খুব কম সংখ্যক হলেও তাদের মধ্যে যারা ধর্মীয় বিধি বিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তারা, ধর্মকে যারা অবজ্ঞা করে তাদের তুলনায় মানসিকভাবে অনেক শান্তিতে আছেন।

মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোতেও পশ্চিমা হাওয়া লেগেছে। আমাদের দেশ সহ এসব দেশের জনসংখ্যার প্রায় বেশীর ভাগই জন্মসূত্রে মুসলমান। কিন্তু কোরআন ও হাদিছের স্বচ্ছ জ্ঞান অর্জনের প্রতি অনিহা এবং কোন কোন ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকার করণে এ জনগোষ্ঠীর একটি অংশ ধীরে ধীরে পাশ্চাত্য কালচারের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে। তাই মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশগুলোও এ সমস্যাগুলো থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নয়। সুতরাং এই স্পর্শকাতর বিষয়টিকে অবজ্ঞা করা উচিত নয়। পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্যই মহান আল্লাহ্ সীমানা নির্ধারন করে দিয়েছেন। নারী-পুরুষের অধিকার ও পর্দার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি বা শিথিলতা নয়, বরং সঠিক বাস্তবায়নই কাম্য।

কারও পক্ষে বা বিপক্ষে না গিয়ে নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে যাদেরকে আমি অধিক অধিকার বঞ্চিত মনে করেছি, স্বাভাবিকভাবে আমার এ লেখায় তাদের কথাই বেশি এসেছে। এই সীমানার বাইরে অতিরঞ্জিত বিধি নিষেধ আরোপের কারণে নারীরা যেন নির্যাতনের স্বীকার না হন সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। কারণ অপপ্রয়োগের ফলে এ বিধানকে কঠিন ভেবে তা পালনের ক্ষেত্রে নারীদের মধ্যে অনিহা সৃষ্টি হতে পারে। এই সুযোগে কুমন্ত্রণাদাতারা ইসলামের নামে কুৎসা রটনা ও নারীদেরকে বিপথে চালানোর প্রয়াস পাবে। পাশ্চাত্যের মত শিথিলতা প্রদর্শন অথবা অতিরিক্ত কঠোরতা আরোপ, কোনটাই আমাদের কাম্য নয়। কোনরূপ বিভ্রান্তি সৃষ্টি বা পশ্চাদপদতার হাত থেকে আল্লাহতায়ালা যেন আমাদের রক্ষা করেন।

ইসলাম যেমন লাগামহীন স্বেচ্ছাচারিতা পছন্দ করে না, তেমনি পায়ে বেড়ি পড়ানোরও পক্ষপাতি নয়। বরং নারী ও পুরুষ উভয়েই যেন আল-কোরআন ও হাদিছে বর্ণিত নির্ধারিত সীমার ভেতরে থেকে ঘরে-বাইরে সর্বত্র তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ সুশৃঙ্খলভাবে ফেলতে পারে- ইসলাম প্রকৃত অর্থে সব সময় সে শিক্ষাই দেয়।

আল-কোরআনের সর্বপ্রথম বাণী বা শব্দ ‘ইকরা’, যার অর্থ ‘পড়’। মহান স্রষ্টা তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষকে সর্বপ্রথমে পড়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ মানুষ যত পড়বে তার জ্ঞান ও মনন তত স্বচ্ছ ও সমৃদ্ধ হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, আমরা (পুরুষ ও নারী উভয়েই) জ্ঞান অর্জনের জন্য খুব একটা সময় ব্যয় করতে চাইনা। বিশেষ করে ইসলামের শিক্ষার ব্যপারে তো দাড়ি, টুপি, তসবি ও সাদা পোষাকধারী ব্যক্তিদের উপর আমরা এতটাই নির্ভরশীল যে অনেক সময় তাদের যে কোন বক্তব্যকে কোরআন/হাদিছের উপরে স্থান দিতেও কুণ্ঠাবোধ করি না এবং সঠিকভাবে না জেনে প্রায়ই বিতর্কে লিপ্ত হই। এটা মোটেই কাম্য নয়। তবে ইসলামের জন্য নিঃস্বার্থভাবে নিবেদিতপ্রাণ সকল জ্ঞানতাপস আলেম, পীর-দরবেশগণের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল থেকে বলতে চাই যে, তাদের সাহচর্য অত্যন্ত জরুরী। প্রথমত নিজেকে (নারী/পুরুষ প্রত্যেককে) পড়তে হবে, জানতে হবে এবং পাশাপাশি তাঁদের সাথে মতবিনিময় করতে হবে। শুধু ইসলাম নয়, সব ধরনের শিক্ষা অর্জনের এটাই উত্তম পন্থা। সেই সাথে কলমের ব্যবহার অর্থাৎ লিখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আল-কোরআনে শুধুমাত্র অসভ্য সমাজকে সভ্য করে গড়ে তোলার বিধানই দেয়া হয়নি। বরং সভ্য সমাজের মাঝে ঘাপটি মেরে থাকা অসভ্য মানুষগুলোর হাত থেকে বাঁচার উপায়ও বলে দেয়া হয়েছে। সেই সাথে সকল সমাজে সভ্যতার মাপকাঠি নির্ধারণ করার ও শান্তি প্রতিষ্ঠার সার্বজনিন সমাধানও এতে রয়েছে। ইসলামে পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য পর্দা করা ফরজ। শুধুমাত্র হাতে-পায়ে মুজা পড়লে ও আপাদামস্তক ঢেকে রাখলেই পর্দার হক আদায হয়ে যায় না। পর্দার পরিপূর্ণ হক আদায় এবং এই বিধানের মাধ্যমে উপকৃত হতে হলে সর্বাবস্থায় অন্তর পরিশুদ্ধ রাখা চাই। যারা পর্দার ধার ধারেনা এবং যাদের অন্তরে ব্যধি রয়েছে, তদের কুদৃষ্টি ও জালাতনের হাত থেকে বাঁচার ঢাল হিসেবে পর্দার গুরুত্ব অনেক। একটি ইসলামি সমাজ ব্যবস্থায় শক্ত ও সক্ষম প্রশাসনের পাশাপাশি পর্দার সঠিক বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরী। কারন সামাজ থেকে অনাচার দূর করার ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত কার্যকর ব্যবস্থা এবং যার কোন বিকল্প নেই। আপাতত পর্দা সম্পর্কে সংক্ষেপে আমার জানা-জানি ও মতামত তুলে ধরছি। অনুগ্রহকরে পর্দার বিধান সম্পর্কিত আল-কোরআনের বাণীগুলো্ ভাল করে লক্ষ্য করবেন এবং এর সাথে আপন আপন জ্ঞান ও বিবেককেও কাজে লাগানোর অনুরোধ রইল-

আল কোরআন-
সূরা নূর (মদীনায় অবতীর্ণ)
(২৪:২৭) হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য গৃহে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না কর এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম না কর। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ।
(২৪:২৮) যদি তোমরা গৃহে কাউকে না পাও, তবে অনুমতি গ্রহণ না করা পর্যন্ত সেখানে প্রবেশ করো না। যদি তোমাদেরকে বলা হয় ফিরে যাও, তবে ফিরে যাবে। এতে তোমাদের জন্যে অনেক পবিত্রতা আছে এবং তোমরা যা কর, আল্লাহ তা ভালোভাবে জানেন।
(২৪:২৯) যে গৃহে কেউ বাস করে না, তাতে তোমাদের কোন সামগ্রী/পুঁজি/গৃহস্থালী থাকলে এমন গৃহে প্রবেশ করাতে তোমাদের কোন পাপ নেই এবং আল্লাহ জানেন তোমরা যা প্রকাশ কর এবং যা গোপন কর।

আলাপ-পরিচয় না থাকলে হঠাৎ করে কোন অপরিচিত মানুষের গৃহে ঢুকে পড়লে সেই গৃহের বাসিন্দাদের প্রাইভেসি নষ্ট হতে পারে। (২৪:২৭) তাই সালাম ও পরিচয় পর্ব শেষে তাদের অনুমতি নিয়ে গৃহে প্রবেশের শিক্ষা দেয়া হয়েছে। সেই মূহুর্তে যদি গৃহে প্রবেশের অনুমতি না পাওয়া যায়, (২৪:২৮) তাহলে জোর করে প্রবেশের চেষ্টা না করে আপাতত ফিরে যাওয়াই ভদ্রতার পরিচায়ক। তবে কোন গৃহে যদি কেউ বাস না করে (২৪:২৯) এবং সেখানে কারো কোন প্রয়োজনীয় পুঁজি/গৃহস্থালী/সামগ্রী থাকে, তবে সেই গৃহে প্রবেশ করায় কোন দোষ নেই। এগুলো সামাজিক পর্দার বিভিন্ন পর্যায়, যা সমাজের শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে।

আল কোরআন-
সূরা নূর (মদীনায় অবতীর্ণ)
(২৪:৩০) মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জা-স্থানের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।
(২৪:৩১) ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জা-স্থানের হেফাযত করে। তারা যেন যা আপাত প্রতীয়মান হয়, তা ছাড়া ('জীনাতাহুন্না') তাদের দেহের গঠনগত বিশেষ সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো কাছে তাদের দেহের গঠনগত বিশেষ সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে, তারা যেন গোপন করে রাখা বা ঢেকে রাখা দেহের গঠনগত বিশেষ সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।

এই আয়াতে 'জিনাত' শব্দটি স্ত্রী-বাচক বিশেষ্য পদ (genitive feminine noun)। রং-বেরঙের সুন্দর ও শালীন পোষাক কিংবা অলঙ্কারাদিকে বোঝানোর জন্য এটি প্রযোজ্য নয়। বরং 'জীনাতাহুন্না' শব্দটি শুধুমাত্র নারীদের দেহের গঠনগত বিশেষ সৌন্দর্যকে বোঝাবার জন্যই ব্যবহৃত হয়েছে। কারন রং-বেরঙের সুন্দর পোষাক ও অলঙ্কারাদি পড়ে নারীরাই তো সাজবে এবং এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে বেহায়াপনা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এই 'জীনাত' অর্থাৎ নারীদের দেহের গঠনগত বিশেষ সৌন্দর্যকে কিভাবে ঢাকতে হবে বিস্তারিতভাবে সেই শিক্ষাও দেয়া হয়েছে। শুধু ঢাকলেই হবে না, ঢেকে রাখা/গোপন করে রাখা সেই বিশেষ সৌন্দর্য প্রদর্শনের জন্য জোর পদক্ষেপে বিশেষ বিশেষ অঙ্গসমূহ হেলিয়ে দুলিয়ে প্রকাশ করার চেষ্টাও যেন করা না হয় সে ব্যাপারেও সাবধান করে দেয়া হয়েছে। সুতরাং রং-বেরঙের পোষাক ও অলঙ্কার পড়লে সেটাও ঢেকে রাখতে হবে- এমন কোন নির্দেশ এখানে দেয়া হয়নি। বরং মূলত এখানে আম জনতার সামনে নারীদের দেহের গঠনগত বিশেষ সৌন্দর্য যেন প্রদর্শন করা না হয় সেজন্য ঢিলেঢালা পোষাক পরিধান করার সাথে সাথে শালীনভাবে চলাফেরা করার প্রতিই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সূরা নূর (মদীনায় অবতীর্ণ)
(২৪:৫৮) হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের যুদ্ধবন্দীনি/দাস-দাসীরা ('মা-মালাকাত-আইমানুকুম'- ডান হাতের অধিকারভূক্ত) এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়নি তারা যেন তিন সময়ে তোমাদের কাছে অনুমতি গ্রহণ করে, ফজরের নামাযের পূর্বে, দুপুরে যখন তোমরা বস্ত্র শিথিল কর এবং এশার নামাযের পর। এই তিন সময় তোমাদের গোপনীয়তা অবলম্বনের সময়। এ সময়ের পর তোমাদের ও তাদের জন্যে কোন দোষ নেই। তোমাদের একে অপরের কাছে তো যাতায়াত করতেই হয়, এমনি ভাবে আল্লাহ তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ বিবৃত করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
(২৪:৫৯) তোমাদের সন্তান-সন্ততিরা যখন বায়োপ্রাপ্ত হয়, তারাও যেন তাদের পূর্ববর্তীদের ন্যায় অনুমতি চায়। এমনিভাবে আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ তোমাদের কাছে বর্ণনা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
(২৪:৬১) অন্ধের জন্যে দোষ নেই, খঞ্জের (খোঁড়া/অসম্পূর্ণ) জন্যে দোষ নেই, রোগীর জন্যে দোষ নেই, এবং তোমাদের জন্যেও আহার করায় দোষ নেই তোমাদের নিজেদের গৃহে অথবা তোমাদের পিতাদের গৃহে অথবা তোমাদের মাতাদের গৃহে অথবা তোমাদের ভ্রাতাদের গৃহে অথবা তোমাদের ভগিণীদের গৃহে অথবা তোমাদের পিতৃব্যদের গৃহে অথবা তোমাদের ফুফুদের গৃহে অথবা তোমাদের মামাদের গৃহে অথবা তোমাদের খালাদের গৃহে অথবা সেই গৃহে, যার চাবি আছে তোমাদের হাতে অথবা তোমাদের বন্ধুদের গৃহে; তোমরা একত্রে আহার কর অথবা পৃথকভবে আহার কর, তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই। তবে তোমরা যখন গৃহে প্রবেশ কর, তখন তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম বলবে। এটা আল্লাহর কাছ থেকে কল্যাণময় ও পবিত্র দোয়া। এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্যে আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ননা করেন, যাতে তোমরা বুঝে নাও।

(২৪:৫৮) নং আয়াতে প্রথমত পর্দা রক্ষার ক্ষেত্রে দাস-দাসীদের পাশাপাশি অপ্রাপ্ত বয়স্কদের অনুমতি গ্রহণের বিষয়টিও এসেছে। ফজরের নামাজের পূর্বে অর্থাৎ রাতে শোবার পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত নারী-পুরুষ উভয়েই রাতের হালকা কাপড় পড়ে ঘুমিয়ে থাকে। তাছাড়া স্বামী-স্ত্রীর মাঝে নিবিড় সম্পর্কের সময়ও এটি, তেমনি দুপুরে কাজ কর্ম সেরেও অনেকে বিশ্রাম গ্রহণের উদ্দেশে বস্ত্র শিথিল করে অর্থাৎ শরীর থেকে অতিরিক্ত কাপড় খুলে রাখতে পারে। একই ভাবে এশার নামাজের পর বলাতে রাতের কোন অংশ থেকে অনুমতি নেবার সময়সীমা শুরু হবে- মূলত সেটাই নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। (এ সময়ের পর তোমাদের ও তাদের জন্যে কোন দোষ নেই। তোমাদের একে অপরের কাছে তো যাতায়াত করতেই হয়) - এই অংশে মূলত সেই তিন সময় ছাড়া অন্য সময়ে অনুমতি ব্যতিত দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্মের জন্য স্বাভাবিক যাতায়াত করা যে দোষের নয় অর্থাৎ দাস-দাসীদের পাশাপাশি অপ্রাপ্ত বয়স্কদেরও যে অনুমতি গ্রহণের প্রয়োজন নেই- মূলত সেটাই বোঝানো হয়েছে। (২৪:৫৯) নং আয়াতে অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান-সন্ততিরা বায়োপ্রাপ্ত হলে অনুমতি গ্রহনের শিক্ষা দেবার প্রতি তাগিদ দেয়া হয়েছে। (২৪:৬১) নং আয়াতে পরিবারের সকলে একসাথে খাদ্য গ্রহণ করার বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিজ পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়দের সাথে আহার করার ক্ষেত্রে কোন বাধা না রেখে মূলত সামাজিক সুসম্পর্ক সৃষ্টির প্রতিই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোনরূপ কুসংস্কার বা হীন মনোভাবের কারনে সেই সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ থেকে যেন অন্ধ, খঞ্জ ও রুগ্ন ব্যক্তিরাও বাদ না পড়েন সেদিকেও বিশেষ দৃষ্টি দেবার ইংগিত দেয়া হয়েছে। অবস্থা ভেদে একসাথে বা একাকী আহার করায় দোষের কিছু নেই, এখানে সেটাই বলা হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় যে, কোন পরিবারে কর্তা ব্যক্তিরা না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করার রেওয়াজ চালু করা হয়। এতে কোন কোন সময় অযথা হয়রানি বা দীর্ঘ সময় অভুক্ত থাকায় অনেকের কষ্ট হতে পারে। বিশেষ করে এদের মধ্যে রুগ্ন ব্যক্তি থাকলে তাদের শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। তাই পরিবেশ পরিস্থিতির কারনে একটি নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষার পর একাকী আহার করায় দোষের কিছু নেই, এখানে সেটাই ব্যক্ত করে জীবনকে সহজভাবে গ্রহন করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

আল-কোরআনের নির্দেশাবলী পরস্পর সম্পর্ক যুক্ত। তাই কোন বিষয় সম্পর্কে সঠিক নির্দেশ বুঝতে হলে সেই বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত অন্য নির্দেশকেও জানা জরুরী। সঙ্গত কারনেই পর্দা সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হলে (০৪:২২, ২৩) নং আয়াতটি লক্ষ্য করতে হবে-

সূরা নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ)
(৪:২২) যে নারীকে তোমাদের পিতা-পিতামহ বিবাহ করেছে তোমরা তাদের বিবাহ করো না। কিন্তু যা বিগত হয়ে গেছে। এটা অশ্লীল, গজবের কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ।
(৪:২৩) তোমাদের (বিবাহের) জন্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তোমাদের মা, তোমাদের মেয়ে, তোমাদের বোন, তোমাদের ফুফু, তোমাদের খালা, ভাইয়ের মেয়ে; বোনের মেয়ে, তোমাদের সেই মায়েরা যারা তোমাদেরকে স্তন্যপান করিয়েছে, তোমাদের দুধ-বোন, তোমাদের স্ত্রীদের মা, তোমরা যাদের সাথে সহবাস করেছ সেই স্ত্রীদের কন্যা- যারা তোমাদের লালন-পালনে আছে। যদি তাদের সাথে সহবাস না করে থাক, তবে এ বিবাহে তোমাদের কোন গোনাহ নেই। তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রী এবং দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা; কিন্তু যা অতীত হয়ে গেছে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।

(০৪:২২) নং আয়াতে স্পষ্টভাবে বিয়ে সম্পর্কে বক্তব্য শুরু করা হয়েছে। সুতরাং পরবর্তী (০৪:২৩) নং আয়াতে হারাম বলতে যাদেরকে বিয়ে করা নিষিদ্ধ সে সম্পর্কে বলা হয়েছে। এখানে মূলত কাকে বিয়ে করা যাবে বা যাবে না সে সম্পর্কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সূরা আ'রাফ (মক্কায় অবতীর্ণ)
(০৭:২৬) অর্থ- হে বনী-আদম আমি তোমাদের জন্যে পোশাক অবর্তীণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবতীর্ণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেযগারীর/ধর্মপরায়ণতার পোশাক, এটি সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর কুদরতের অন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।
সূরা আল বাক্বারাহ ( মদীনায় অবতীর্ণ )
(০২:২২৩) তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদের কাছে গমন করতে পার। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।
সূরা আল আহযাব ( মদীনায় অবতীর্ণ )
(৩৩:৫৯) হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে ও কন্যাগণকে এবং বিশ্বাসীদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।

("জিলাবি'বু" শব্দটির অর্থ- মেয়েদের লম্বা পোষাক, ঢিলাঢালা পোষাক, চাদর- ১৬০ পৃষ্ঠা- "কোরআনের অভিধান"- মুনির উদ্দীন আহমদ।)

মানুষের মধ্যে অনেকের চাওয়া পাওয়া এমনই যে সে নিজেকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ না করলেও উন্মুক্ত করে প্রদর্শন করতে চায়। অনেকে তো লজ্জা-শরমের ধারই ধারেনা। অথচ আল্লাহতায়ালা মুসলিম পুরুষ ও নারীদের জন্য এ ধরনের কোন রূপ বেহায়াপনাকে হারাম করে দিয়েছেন। আবার শুধু নারীই নয়, পুরুষদের মধ্যেও অনেকে অযথা এমন ভাবে চলাফেরা করে যে অনেক ক্ষেত্রে তাদের গোপন অঙ্গ প্রদর্শনের সামিল হয়ে পড়ে। যেমন পশ্চিমাদেশ, এমনকি আজকাল আমাদের দেশেও যুবকেরা এমন সব টাইট-ফিটিংস জামা-কাপড় পরিধান করছে যে, মনে হয় তারা তাদের গোপন অঙ্গের স্থানগুলোকে হাইলাইট করছে। একে তো টাইট, তার উপর আবার নাভির নিচে, মনে হয় যেন কোন রকমে কোমরে আটকে আছে!! খুলে যায় কিনা এ ভেবে লজ্জাই লাগে। কিন্তু ওদের যেন তাতে কোন ভ্রুক্ষেপই নেই! এ ধরনের কু-রুচিপূর্ণ চালচলন যে সীমালংঘনের পর্যায়ে পড়ে- তা হয়ত তারা জানেই না। একজন প্রকৃত মুসলমানের যে এভাবে চলা ঠিক নয়, তা মহান সষ্টা অনেক আগেই আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। তাই বলে আবার ভাববেন না যে, আমি লুজ-ফিটিংস প্যান্ট-সার্ট পরিধানের ক্ষেত্রেও বিরোধিতা করছি।

আমরা জানি যে, সেই জাহেলি যুগের রীতি অনুসারে উলঙ্গ হয়ে উন্মুক্ত আকাশের নীচে সবার সামনে কাবাঘর তাওয়াফ করাটা কোন ব্যপার ছিলনা এবং বেহায়াপনা তাদের মজ্জাগত কালচারে পরিণত হয়েছিল। বহুদিনের সেই নির্লজ্জ বেহায়াপনা থেকে মুসলিমরা যেন সরে আসে, তার প্রথম পদক্ষেপ স্বরূপ (০৭:২৬) নং আয়াতে এই নির্দেশ দেয়া হলো যে, মাঠে-ঘাটে, ক্ষেতে- খামারে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনের সময় পুরুষ ও নারীরা যেন পরিবেশ পরিস্থিতি অনুসারে ভদ্রভাবে কাপড় পড়ে তাদের শরীরের লজ্জাস্থান ঢেকেঢুকে রাখার ব্যবস্থা করে। পোষাকের মধ্যে পরহেজগারী/ধর্মপরায়ণতার পোষাককে উত্তম বলা হয়েছে।

এরপর বেশ কিছু সময়ের ব্যবধানে তারই রেশ ধরে (২৪:৩০) ও (২৪:৩১) নং আয়াতে পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রে একই ভাষায় বক্তব্য দেয়ার পর নারীদের পর্দা সম্পর্কে বিষদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, পর্দার বিধানের প্রাথমিক ধাপ সম্পর্কে প্রথমত (২৪:৩০) বিশ্বাসী পুরুষদেরকে অবহিত করা হয়েছে। কারন কোন সমাজে পুরুষরা যদি সংযত হয়ে চলা শুরু করে তাহলে সেই প্রভাব নারীদের উপরেও পড়ে। এভাবে একটি জাহেলি সমাজকে ধীরে ধীরে পর্দা সম্পর্কে সচেতন ও আইন প্রণয়নের মাধমে সেই বিধানটিকে কার্যকর করার ধরাটি অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য এবং ফলপ্রসূ পদক্ষেপ বলেই আমি বিশ্বাস করি। যা শুধু সে সময়ের জন্য নয়, বরং সব সময়ের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। পুরুষ এবং নারী উভয়কেই দৃষ্টি নত রাখতে বলা হয়েছে। কারন সরাসরি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলে তাতে যেমন নিজের ব্যক্তিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে, তেমনি পুরুষ বা নারী যার দিকেই তাকিয়ে থাকা হোক না কেন এটি যে খুবই অস্বস্থিকর ব্যাপার তা বিবেক সম্পন্ন মানুষ মাত্রই বুঝতে পারার কথা। মানুষ সামাজিক জীব হিসেবে শালীন ভাবে মেলামেশা, কথাবার্তার সময় পুরুষ-নারী উভয়ের দিকে চোখ পরতেই পারে। কিন্তু এই চোখে চোখ রাখাটা যেন মাত্রা না ছাড়ায় অর্থাৎ শালীনতার পর্যায়ে থাকে সেই জন্য পরস্পরের প্রতি একনাগারে না তাকিয়ে থেকে দৃষ্টি অবনত রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া রাস্তা ঘাটে অশালীন কিছু থাকতেই পারে। সেক্ষেত্রে দৃষ্টি অবনত/সংযত করলেই তো তার কু-প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে লজ্জাস্থানের হেফাজত করা অর্থাৎ ঢেকে রাথাটাও খুবই জরুরী। কিন্তু এমন কোন স্থানে যেতে হলো যে, সেখানকার মানুষেরা লজ্জাস্থান ঢাকার প্রতি যত্নশীল নয়। এ ক্ষেত্রে দৃষ্টি অবনত করার অর্থাৎ সেদিকে তাকিয়ে না থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এই আয়াতগুলোর ধরাবাহিকতা ও বক্তব্য থেকে এটাও বোঝা যায় যে, পর্দার বিধান কার্যকর করার ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারী উভয়কেই সচেতন হতে হবে, তবে পুরুষদেরকেই অগ্রনী ভুমিকা পালন করতে হবে।

সকল অবিশ্বাসী এবং বিশ্বাসীদের মধ্যে যাদের সাথে বিবাহ বৈধ, সেই সকল নারী-পুরুষের মাঝে পর্দা করা ফরজ। তবে বৃদ্ধা ও বিশ্বাসীদের মধ্যে নিকট আত্মীয়তা সূত্রে যাদের সাথে বিবাহ বৈধ নয়, তাদের বেলায় কিছুটা শিথিলতা রয়েছে। পুরুষের জন্য দেহের কতটুকু অংশ ঢাকতে হবে এবং নারীর জন্য কখন কতটুকু অংশ কিভাবে ঢাকতে হবে তা আমারা আল-কোরআন ও সহী হাদিছের আলোকে অতি সহজেই বুঝে নিতে পারি। শিথিলতা প্রদর্শন বা অতিরিক্ত আরোপ না করে এই নির্ধারিত সীমানা মেনে চলাই ইসলামের দাবি। মহান স্রষ্টা সৃষ্টিগতভাবেই নারীদেরকে গঠনগত বিশেষ সৌন্দর্য (জিনাত) দান করেছেন এবং তাদের নিজেদের স্বার্থেই তা ঢেকে রাখতে বলেছেন। তবে নারীদের জন্য অতিরিক্ত হিসেবে হাত মোজা ও পা-মোজা পড়া এবং মুখমন্ডল ঢেকে রাখার ব্যাপারে আমি একমত নই।

কেউ যদি একচোখ ঢেকে উদ্ভট সাজতে চায় বা স্বেচ্ছায় আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে চায় এবং সব সময় ঘরে বসে থাকতে চায়- তবে সেটা তার অতিশয় পরহেজগার মনোভাব কিংবা নিজস্ব চিন্তাধারা হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় যে, কেউ কেউ হঠাৎ কোন বিপদ-আপদে পড়ে বা অতীত জীবনের স্বেচ্ছাচারীতার কারনে নিজের উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে পার্থিব জীবন থেকে পালিয়ে বাঁচতে চান। এক সময়ে ইহকালের অতিরিক্ত মাতামাতির সাথে তাল শামলাতে না পেরে তারা যেমন খেই হারিযে ফেলেন, তেমনি আবার পরকালীন অনন্ত শান্তি প্রাপ্তির নেশায় পড়ে জীবনকে সংকুচিত করে রাখেন। আদর্শগত ও আত্মিক উন্নয়নের আগেই না বুঝে বাহ্যিক পরিবর্তনকে এতটাই প্রাধান্য দিয়ে বসেন যে, বলতে গেলে তারা তখন সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবন যাপন করাকেই ধর্মের মূল বিষয় হিসেবে ভাবতে শুরু করেন। অন্যের স্বাভাবিক চিন্তা-চেতনা ও জীবনধারনের পদ্ধতিকে তারা ইসলামহীন জীবন ভেবে কটাক্ষ করতে কিংবা অবলীলায় দূরে ঠেলে দিতেও কুণ্ঠিত হন না। কিন্তু তাদের বোঝা উচিত যে, আল্লাহতায়ালা পৃথিবীর সব মানুষকে একই রকম মন-মানসিকতা দিয়ে প্রেরণ করেননি। প্রত্যেকের ক্ষেত্রে কিছু না কিছু ভিন্নতা আছেই। আর এই সৃষ্টি বৈচিত্রের কথা স্মরণ রেখেই বিধাতা মহান আল্লাহ্ তাঁর রাসূলের (সাঃ) মাধ্যমে নারী, পুরুষ উভয়ের জন্য সর্বকালেই গ্রহণযোগ্য ও অত্যন্ত বাস্তবসম্মত বিধান নির্ধারন করে দিয়েছেন। যা মানুষের সামনে সঠিকভাবে পেশ করে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্যকে তুলে ধরাই বাস্তবতার দাবি।

পরহেজগারী/ধর্মপরায়ণতার পোষাক (০৭:২৬) কেমন হবে তা জানতে হলে হাদিছের আশ্রয় গ্রহণ করা জরুরী। তবে নারীদের পর্দা সম্পর্কে যেহেতু দুটি মতামত রয়েছে, তাই আপন বিবেক ও অভিরুচি অনুসারে এর মধ্যে থেকে যে কোন একটি বেছে নেয়ার অবকাশ রয়েছে। আমি প্রতিটি ক্ষেত্রেই মধ্যপন্থা অবলম্বন করাকেই বেছে নিয়েছি। তাই আমি এই মতের সাথে একমত পোষন করি যে, সব সময়ের জন্যই এমন পোষাক পড়া উচিত নয় যাতে নারীদের/পুরুষদের দেহের আকর্ষনীয় অঙ্গসমূহ প্রকাশ হয়ে পড়ে। তাই সাবার সামনেই [বিশেষ মূহুর্তে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে (০২:২২৩) নং আয়াত অনুসারে শীথিলতা রয়েছে] ঢিলেঢালা শালীন পোষাক পড়ে যাওয়াই ধর্মপরায়ণতার পরিচায়ক। সেই সাথে নারীদের ক্ষেত্রে (২৪:৩১) মাথার ওড়না দিয়ে গলা ও বুক ঢেকে রাখতে হবে। যাদের সাথে বিয়ে (৪:২৩) বৈধ নয়, তাদের সামনে অতিরিক্ত হিসেবে ঘরের মধ্যে চাদর না জড়ালে দোষের কিছু নেই। আর যে সব পুরুষের সাথে বিয়ে বৈধ, তাদের সামনে বা বাহিরে যাবার সময় গায়ে (৩৩:৫৯) চাদর জড়িয়ে তা মাথার উপর টেনে নিতে হবে। (২৪:৩১) জাক-জামকের সাথে অতিরিক্ত সেজেগুজে ও নিজের গোপন অঙ্গগুলো প্রদর্শন করার মতলবে চলাফেরা করাও বৈধ নয় অর্থাৎ গুনাহ। অযথা একাকী রাস্তাঘাটে ঘোরাফেরা করা ও যাদের মধ্যে বিয়ে বৈধ তাদের সাথে (একজন পুরুষ ও একজন নারী একাকি) নির্জনে কথা বলা বা সময় কাটানো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

বৃদ্ধাদের ক্ষেত্রে কিছু শীথিলতা থাকলেও সাবধানতা অবলম্বনই উত্তম বলা হয়েছে-
(২৪:৬০) অর্থ- বৃদ্ধা নারী, যারা বিবাহের আশা রাখে না, যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না কোরে তাদের বহির্বাস খুলে রাখে, তাদের জন্যে দোষ নেই, তবে এ থেকে বিরত থাকাই তাদের জন্যে উত্তম। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

প্রায়ই একটি হাদিছের রেফারেন্স টেনে নারীদের ক্ষেত্রে নিকাব পরিধান করার ব্যাপারে জোর দাবি জানানো হয়ে থাকে-
হাদিছটি এরূপঃ (একদা হযরত উম্মে সালামাহ ও হযরত উম্মে মাইমূনাহ নবী সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে বসে থাকা অবস্থায় হযরত ইবনে উম্মে মাকতুম আসলেন। নবী (সাঃ) উভয় স্ত্রীকে বললেন, “তার থেকে পর্দা করো”। স্ত্রীরা বললেনঃ “হে আল্লাহর রসূল, তিনি কি অন্ধ নন? তিনি তো আমাদের দেখতে পাচ্ছেন না, চিনতেও পাচ্ছেন না।” রসুল (সাঃ) বললেনঃ “তোমরা দুজনও কি অন্ধ? তোমরা কি তাকে দেখতে পাচ্ছো না?”)

এর উত্তর দেয়ার আগে আল-কোরআনের কয়েকটি আয়াত উল্লেখ করতে চাই-
সূরা আল আহযাব (মদীনায় অবতীর্ণ)
(৩৩:৩০) অর্থ- হে নবী পত্নীগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকাশ্য অশ্লীল কাজ করলে তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে; আর এটা আল্লাহর জন্য অত্যন্ত সহজ
(৩৩:৩১) অর্থ- তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে এবং সৎকর্ম করবে, আমি তাকে দুবার পুরস্কার দেব এবং তার জন্য আমি সম্মান জনক রিযিক প্রস্তুত করে রেখেছি।
(৩৩:৩২) অর্থ- হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও; যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কথা বলার সময় কোমলতা অবলম্বন করবে না, এর ফলে যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে সে তোমার ব্যাপারে প্রলুব্ধ হয়ে পড়বে, তবে তোমরা কথাবার্তা বলবে সঙ্গতভাবে।
(৩৩:৩৩) অর্থ- তোমরা ঘরে অবস্থান করবে, জাহেলিয়াতের যুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না, নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে; হে নবী পরিবার! আল্লাহ তো এসবের মাধ্যমে তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে চান।

এই (৩৩:৩০ - ৩৩) নং আয়াতগুলোর নির্দেশ রাসূলের (সাঃ) স্ত্রীদের জন্য যেভাবে অবশ্যপালনীয় আওতার মধ্যে পড়ে, অন্যদের ক্ষেত্রে সেভাবে অবশ্যপালনীয় নয় বলেই মনে হয়। কারণ অন্য মুমিন নারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধান রাসূলের (সাঃ) স্ত্রীদের থেকে যে কিছুটা আলাদা ছিল, তা আল-কোরআনের অন্যান্য আয়াতগুলো থেকে সহজেই বুঝে নেয়া যায়।

এবার আরেকটি হাদিছের প্রতি লক্ষ্য করি-
(৭ হিজরী সনে একদল হাবশী পুরুষ মসজিদে নববীর চত্বরে একটি সামরিক খেলার আয়োজন করলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে হযরত আয়েশাকে এ খেলা দেখালেন।)

এই হাদিছ দুটির বক্তব্য ও ইংগিত থেকে বোঝা যায় যে, এখানে নারীর দৃষ্টি সংযত রাখার ব্যপারে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সুতরাং 'পরপুরুষকে একদম দেখাই যাবে না বা পরপুরুষও কোন নারীর মুখ একদম দেখতে পারবেই না'- এর থেকে এমনটি ভেবে নিয়ে অযথা বাড়াবাড়ি করা মোটেই ঠিক নয়। তবে খুব কাছাকাছি অবস্থানের সময় নারী ও পুরুষ উভয়েই যেন একে অপরের প্রতি একদৃস্টিতে তাকিযে না থাকে, বরং দৃষ্টি নামিয়ে ফেলার মাধ্যমে চোখের/দৃষ্টির পর্দা করার বিষয়ে সচেতন থাকে- সেই ইংগিতই এই হাদিছ দুটি থেকে বুঝে নেয়া যায়।

নারীর মুখমন্ডল ঢাকার ব্যাপারে মনুষ্য উদ্ভাবিত মতবাদের সাথে আল-কোরআনে স্রষ্টা প্রদত্ত পর্দার বিধানের কোন সামঞ্জস্য নেই। কারন প্রায়ই দেখা যায় যে, এমন অনেক নারী আছেন যাদের মুখের চেহারা সুন্দর নয়। বরং অনেক পুরুষের চেহারা সেসব নারীদের তুলনায় অনেক সুন্দর। তাহলে কি সুন্দর মুখ ওয়ালা পুরুষ এবং চেহারা সুন্দর নয় এরূপ নারীদের ক্ষেত্রে বিধানটি পাল্টে দিতে হবে? না, কখনই না। আল্লাহতায়ালার বিধান সার্বজনিন। মুখমন্ডল যেমনই হোক না কেন, প্রায় সকল নারীদের দেহে আকর্ষণ করার মত বিশেষ গঠন দান করা হয়েছে। তাই সেই গঠনগত বিশেষ সৌন্দর্যকে কিভাবে ঢেকে রাখলে নিজের ও সমাজের জন্য মঙ্গজনক হবে সেই সুস্পষ্ট বিধানও স্বয়ং স্রষ্টাই জানিয়ে দিয়েছেন। জীবন পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট স্বাভাবিক কাযকর্ম ও আপন পরিচয় গোপন করে কেউ যেন অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার সুযোগ না পায় সেই কারনেই নারী ও পুরুষ উভয়ের মুখমন্ডল খোলা রাখার যে বিধান দেয়া হয়েছে তা সর্বযুগের জন্য সর্বোত্তম হিসেবে বিবেচিত হয়। কোন নারী যদি মুখমন্ডল না ঢাকতে চান সেক্ষেত্রে তাকে যেমন জোর করা যাবে না। তেমনি কেউ যদি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মুখমন্ডল ঢেকেও রাখতে চান, তিনি নারী বা পুরুষ যেই হোন না কেন বিশেষ ক্ষেত্রে আপন পরিচয় জানাবার প্রয়োজনে তার নেকাব খুলতে তিনি বাধ্য থাকবেন।

সৃষ্টিগত বৈচিত্রের কারণেই সর্বজ্ঞ মহান আল্লাহ্ কিছু ক্ষেত্রে পুরুষকে নারীর উপর কিছুটা কর্তৃত্ব/প্রাধান্য দান করেছেন। সেই সাথে পুরুষদের উপর সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সম্পাদনের বিষয়ে দায়িত্বও চাপানো হয়েছে অনেক বেশী। অপরদিকে পরিবারকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করা ও সন্তানদের যোগ্য মানুষ তথা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ব্যপারে নারী অর্থাৎ একজন মায়ের ভূমিকার কোন বিকল্প নেই। এককথায় একটি সুস্থ ও কর্মক্ষম জাতি গঠনে নারীর ভূমিকা ক্ষেত্র বিশেষে বেশি বৈ কম নয়। কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষে নারীর উপর কিছুটা প্রাধান্যের অজুহাতে পুরুষেরা যদি নারীদের জন্য আল্লাহর নির্ধারিত বিধানের কিছুটা কম বা বেশী করার মাধ্যমে তাদের অধিকার হরণের চেষ্টা করে এবং অযাচিতভাবে অতিরিক্ত কিছু চাপিয়ে দেয়, তবে অবশ্যই তারা (পুরুষেরা) জালিম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হবে। এই জুলুমের জন্য একালেও যেমন তাদের বিচার ও সাজা হতে পারে, তেমনি পরকালীন শাস্তি থেকেও রেহাই পাবে না। তেমনি নারীরাও যদি আল-কোরআন ও হাদিছের সুস্পষ্ট নির্দেশনা দ্বারা নির্ধারিত সীমা অহেতুক অবজ্ঞা করে অর্থাৎ অহঙ্কার বশতঃ মেনে না চলে এবং বেপর্দা হয়ে চলাফেরা করে, তবে তারাও হবে পথভ্রষ্ট ও ইহকাল ও পরকালে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।

অতীতের কাছ থেকে শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে আল-কোরআন এবং এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সহী হাদিছ গুলোর জ্ঞানগর্ভ বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে সঠিক দিকনির্দেশনা গ্রহন কোরে আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যাবার শপথ নিতে হবে। তাহলে বর্তমান ও ভবিষ্যতে নারী ও পুরুষের সম্মিলনে গঠিত সমাজ বিভ্রান্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে। প্রকৃত অর্থে ধর্মভীরু ও সমাজ সচেতন হিসেবে নিজেদের জীবনকে গড়ে তুলতে পারবেন। তাদের ন্যায্য অধিকার, মূল্যবান দায়িত্ব ও কর্ম বুঝে নিতে ও পালন করতে সক্ষম হবেন। এই সচেতনতা অর্জনের মাধ্যমে গোটা মুসলিম জাতি তাদের হারানো গৌরব ফিরে পাবে এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় যথেষ্ট অবদান রাখতে পারবে, ইনশাল্লাহ্।

আসুন এবার এই গানটি শুনি-
hijab- by Sami Yusuf with lyrics
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৩৪
৫৭টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×