somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইয়াহু চরিতঃ দৈত্যরাজের অজ্ঞতা

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্রডডিংনাগ দেশের মানুষ গুলো দৈত্যাকৃতির। মানুষ যত লম্বা হয় তার বিচারশক্তিও সেই অনুপোতে কমতে থাকে। তাদের শিক্ষানীতি ত্রুটিযুক্ত।ওদের শুধু শেখানো হয় নীতিজ্ঞান, ইতিহাস কাব্য ও গণিত। দৈত্যদের রাজা একদিকে যেমন জ্ঞানী আবার তার অজ্ঞানতাও সীমাহীন। রাজার উত্তম কুটনীতিক হওয়া উচিত তা তিনি মানতে রাজী নন। রাষ্ট্রকে অনেক বিষয় গোপন রাখতে হয় তাও তিনি মানতে নারাজ। তাঁর ধারণা- রাষ্ট্রের কোন গোপনতা রক্ষার দরকার নাই, সবকিছু তাৎক্ষনিক সমাধান করে ফেলাই ভাল । তার জন্য কিছু সাধারণ জ্ঞান, কিছু বিচার বুদ্ধি, কিছু উদারতা থাকাই যথেষ্ট। তবে বিচারবুদ্ধি ও বিবেচনা অবশ্যই থাকারদরকার। আর দরকার সাহস। এসব গুণ থাকেলই সুশাসক হওয়া যায়, এই হল দৈত্যরাজের ধারণা। মানব চরিত্র বুঝার জন্য কোনো রাজনৈতিক জ্ঞানের প্রয়োজন হয়না । এ হেন অজ্ঞ মহারাজা ইংল্যান্ডের সুশাসন পদ্ধতি ও বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে একগাদা অর্বাচীন প্রশ্ন রাখলেন ছোট্ট গ্রিলড্রিগ অর্থাৎ গালিভারের কাছে। তাঁর প্রশ্ন এবং মূল্যায়ন পাঠকদের সামনে তুলে ধরছি।
হাউস অব লর্ডসঃ
অভিজাত পরিবারের যুবকদের দেহমনের বিকাশের জন্য কি করা হয় ? যদি কোন অভিজাত পরিবার নির্বংশ হয়ে যায় তবে উচ্চ সভায় তার স্থান কিভাবে পূরণ করা হয় ? যাদের লর্ড উপাধি দেয়া হয় তাদের কি কি গুণ থাকা দরকার? কখনও কোনও রাজা বা রাজবংশের কারও মন জয় করার জন্য কিংবা বিশেষ কোন উদ্দেশ্যে কোনও মহিলাকে বা কোনও মন্ত্রী বা বিরুদ্ধ দলের নেতাকে কিংবা নিজ দলের সংগঠন মজবুত করার জন্য অর্থ ব্যবহার করা হয় কি না ? লর্ড বংশের সন্তান বা স্বয়ং লর্ড দেশের আইন বা সম্পত্তি ও সম্পদ বিলি ব্যবস্থা সম্পর্কে কতটা অভিজ্ঞ বা সচেতন? তাঁরা নীচ প্রবৃত্তি বা হিংষা ঘুষ ইত্যাদি দ্বারা কতটা প্রভাবিত ?
হাউস অব কমন্সঃ
নির্বাচিত হবার জন্য কি যোগ্যতা থাকা দরকার বা বিশেষ কৌশল অবলম্বন করা হয় কি না ? কোন নীতিহীন অথচ অর্থশালী প্রার্থী প্রচুর অর্থ ছড়িয়ে ভোটদাতাদের প্রভাবিত করতে পারে কি না ? এবং এর দ্বারা যোগ্য ও সৎ প্রার্থীকে পরাজিত করতে পারে কি না ? সংগতিপন্ন না হয়েও প্রচুর অর্থ ব্যায় করে ( যে জন্য একটা পরিবার ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।) অথবা অন্য কোন উপায়ে মানুষ সংসদ সদস্য হবার জন্য এত ব্যগ্র কেন ? কি উদ্দেশ্য ? অথচ নির্বাচিত হলে তারা বেতন বা পেনশন পায় না!
বিচার ব্যবস্থাঃ একটা মামলা চলতে কতদিন লাগে ? কি রকম খরচ হয় ? সুবিচার সম্পর্কে সন্দেহ থেকে যায় কি না ? মিথ্যা মামলা সাজানো হলে আইনজীবিদের ভূমিকা কি ? রাজনীতি ও ধর্ম সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি কি ভাবে হয় ? এ ধরণের মামলায় নিয়োজিত আইনজীবিদের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ধর্ম সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান আছে কি না ? বিচারকদের ভূমিকা কি ? যদি ধরে নেয়া যায় তারা যথেষ্ট জ্ঞানী তথাপি তাঁরা প্রভাবিত হন কি না ? বিচারকরা কি সচ্ছল না অভাবী? তাঁরা তাদের সুচিন্তিত রায়দানের জন্য বা অন্য কোন কারণে কি পুরস্কৃত হন ? কর্মত্যাগ করে বা অবসর নিয়ে তারা জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হন কি না ?
দৈত্য মহারাজের মূল্যায়নঃ অজ্ঞতা, চরিত্রহীনতা ও আনুসঙ্গিক নির্গূণ না থাকলে বিধায়ক হওয়া যায় না। চতুর ব্যক্তিরা আইনের অপব্যাখ্যা করে সৎ ব্যক্তিদের ঠকায়। আইন ও বিধান এমন ভাষায় লিখা যে তার অনেক রকম ব্যাখ্যা করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা যায়।ফলে দুনীতি ঘটার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ধার্মিক ব্যক্তিরা সৎপথে থেকে আদর্শ জীবন যাপনের জন্য, পণ্ডিতেরা তাঁদের জ্ঞান ও বিদ্যার জন্য , সৈনিকেরা সাহস ও শৌর্যের জন্য, বিচারকরা তাঁদের নিষ্ঠার জন্য, বিধায়করা দেশপ্রেম ও তাঁদের সৎকাজের জন্য সরকারের কাছ থেকে কতখানি উৎসাহ পায় বা তাদের নিজ নিজ বৃত্তিতে উন্নতির জন্য তারা কি করেন ?
[ এ তো গেল ইংল্যাণ্ড সম্পর্কে দৈত্যরাজের অবমূল্যায়ন। আমাদের সম্পর্কে মহারাজের প্রশ্ন বা মূল্যায়ন কেমন হতে পারে ? আসুন পাঠক, মনে করি আমি নিজেই গালিভার।চোখ বন্ধ করে প্রশ্ন করি নিজেকে ।]
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:২১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×