somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মৌমাছি—বিস্ময়কর এক ভেক্টর গণিতবিদ !

২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তৈলাক্ত বাঁশের বানর
“আপুর বইয়ে একটা অঙ্ক দেখলাম, বাবা—তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে উপরে উঠছে এক বানর। বানরটি এক মিনিটে ৩ মিটার উঠে, আবার পরের মিনিটেই পিছলে ১ মিটার নেমে যায়। বানররা কি এরকম করে, বাবা? আর এ অঙ্ক করেই বা কী কাজ হবে?” এক অপরাহ্নে, পারিবারিক চায়ের আসরে, আমার ছোট মেয়ে ফারিনের প্রশ্ন।

প্রশ্ন শুনে মুচকি হাসেন মেয়েদের মা। মেয়ের চুল নেড়ে দিতে দিতে আমি বলি, “তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে উঠার মতো বাঁদরামী বানররা হয়তো কখনো করবে না। অঙ্কটি যারা তৈরি করেছেন, তারা বাস্তব জীবনের সাথে মিল রেখে একে তৈরি করতে পারতেন। তবে কোনো গণিতই অর্থহীন নয়, কারণ গণিত চিন্তার জগতকে প্রসারিত করে। যেকোনো বিষয়কে সুশৃঙ্খল সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে পারে গণিত, ফলে তা বুঝতে সহজ হয়। আর গণিতের সবচেয়ে বড় উপকারটি হলো, এটি তোমার মনে মায়া মমতা সৃষ্টি করবে।”

“গণিত কিভাবে মমতা সৃষ্টি করে, বাবা?” বড় মেয়ে জেরিনের প্রশ্ন।
“তুমি যখন চারপাশে উড়ে যাওয়া পাখি, খাবারের খোঁজে বেরিয়ে পড়া পিঁপড়া, কিংবা মধুর সন্ধান পাওয়া মৌমাছির দিকে তাকাও, মনে হতে পারে এগুলো নিতান্ত সাধারণ প্রাণীর সহজ সরল ঘটনা। কিন্তু তুমি যদি শোনো প্রাণীগুলি কতই না চমৎকার অথচ জটিল গাণিতিক নিয়ম মেনে চলে, খুব অবাক হবে। এই যে মৌমাছি, তাকে খুব উঁচু মাপের একজন গণিতবিদই বলা চলে—একথা যখন শুনবে, উপলব্ধি করবে মোটেও তুচ্ছ নয় সে, মানুষের কাছে রয়েছে তার সম্মানের দাবী। আর তখন, মৌমাছির প্রতি তোমার গড়ে উঠবে বিস্ময়মাখা এক মমতা।”
“মৌমাছি গণিত জানে!” হা হয়ে যায় ফারিনের মুখ।
“হ্যাঁ, বলছি তাহলে, শোনো। তার আগে স্থানাংকবিদ্যা (Coordinate System) নামে গণিতের একটি শাখার ব্যাপারে হালকা ধারণা থাকতে হবে তোমাদের।” আমি দ্রুত একটি ছবি এঁকে তুলে ধরি মেয়েদের সামনে।

লালমাটিয়ার বাড়ি

“মনে করো, এটি ঢাকার লালমাটিয়া এলাকা, যা A, B, C,... বিভিন্ন ব্লকে বিভক্ত। প্রতিটি ব্লকে আবার রয়েছে 1, 2, 3, ... করে বিভিন্ন বাড়ির নম্বর। এখন বলো, কেউ হাসপাতালটিকে কিভাবে খুঁজে পাবে?”
“তাকে E-ব্লকের 2-নম্বর বাড়িতে যেতে হবে।” জেরিন দ্রুত উত্তর দেয়।
“আর মসজিদটি হলো A-ব্লকের 5-নম্বর বাড়ি।” বোনের কথা শেষ হতে না হতে ফারিনও চিৎকার দিয়ে উঠে।
“হ্যাঁ, ঠিক বলেছ। কত সুন্দর ব্যবস্থা, দেখ। যেকোনো বাড়িতে যেতে হলে, তোমার শুধু দুটি জিনিস জানতে হবে: ব্লক নম্বর আর বাড়ির নম্বর। কেউ যদি বলে, ছবির বহুতল শপিং কমপ্লেক্সের ঠিকানা কী, তাহলে আরো সংক্ষেপে (D, 4) বললেই হবে। সাথে সাথে সবাই বুঝে যাবে, এটি D-ব্লকের 4-নম্বর বাড়ি।”
“কিন্তু লালমাটিয়া এলাকায় কি সত্যি সত্যি এভাবে বাড়ির নম্বর আছে! তাহলে মানুষ বাড়ি খুঁজে খুঁজে হয়রান হয়ে যায় কেন?”
“না, আমাদের দেশে এভাবে বাড়ির নম্বর দেয়া হয় না। যারা নগরের পরিকল্পনা করেন, তারা যদি ভালো গণিতও জানেন, গণিতকে ভালোবাসেন না। আর এ কারণে, আমাদের চারপাশে এত বিশৃঙ্খলা।

এখন দেখো—নীচের গাছ, রাস্তা, দালান বিশিষ্ট কোণার জায়গাটি, যেখান থেকে লালমাটিয়া এলাকা শুরু হয়েছে, তাকে আমরা বলি মূলবিন্দু (Origin)। মূলবিন্দু থেকে লালমাটিয়ার যেকোনো জায়গাকে দুটি মাত্র প্রতীক দ্বারা আমরা প্রকাশ করতে পারি। এভাবে সংক্ষেপে, সুশৃঙ্খলভাবে কোনো জায়গার অবস্থান নির্দেশ করার পদ্ধতিকেই বলা হয় স্থানাঙ্ক ব্যবস্থা। যদিও নগর পরিকল্পনায় এর প্রচলন ছিল বেশ বহু আগে থেকেই, গণিতে একে প্রথম প্রকাশ করেন মহান দার্শনিক বিজ্ঞানী রেনে ডেকার্তে (René Descartes)।”

ডেকার্তে'র মাছি
জনশ্রুতি আছে, তীব্র এক গরমের দিনে, বিছানায় শুয়ে ছাদের দিকে তাকিয়ে ছিলেন অসুস্থ ডেকার্তে—ক্লান্ত এক মাছি ছাদে ইতঃস্তত ঘোরাঘুরি করছে।
খুব মজা পেলেন ডেকার্টে, মনে মনে ভাবলেন, “বেচারা মাছিটি জানেও না, সে তার চলার পথে বিভিন্ন জ্যামিতিক আকার ফুটিয়ে তুলছে।” খানিক পর মনে হলো, “ইসস, যদি কোনোভাবে মাছিটির বক্রপথের বিন্দুগুলিকে চিহ্নিত করে তাদের অবস্থান মাপা যেত, তাহলে হয়তো তার চলার পথটিকেও গাণিতিকভাবে প্রকাশ করা যেত।”

এক সময় হঠাৎ তিনি উপলব্ধি করলেন, আরে বিন্দুগুলোর অবস্থান তো খুব সহজেই মনে রাখা যায়! বিক্ষিপ্তভাবে ছাদের চার কোণা থেকে মাছির অবস্থান চিন্তা না করে, শুধু এক কোণা থেকে হিসেব করলেই তো হয়। এক কোণা থেকে বেরিয়ে যাওয়া, দেয়ালের দুই সংস্পর্শ লাইন থেকে দূরত্ব পরিমাপ করাই যথেষ্ট। তার মানে মাছিটি এক লাইন থেকে 3 ফুট, আরেক লাইন থেকে 4 ফুট দূরে হলে, মাছির অবস্থানকে সংক্ষেপে (3, 4) বললেই হবে। এভাবে মাছিটি কখনো (1, 1), (2, 1.5), (3, 3) এরূপ বিভিন্ন জায়গায় অব্স্থান করতে পারে। খাতায় দেয়ালের কোণা, লাইন এঁকে দেখালে ডেকার্তের মাছিটি দেখাবে:



ডেকার্তের নামানুসারে এর নাম কার্তেসীয় স্থানাংক ব্যবস্থা (Cartesian Coordinate System)। আয়তাকার বলে, একে আয়তিক স্থানাংক ব্যবস্থা (Rectangular Coordinate System)ও বলা হয়।

কার্তেসীয় ব্যবস্থায় কোনো বিন্দুর অবস্থান জানতে তুমি আনুভূমিক ও উলম্ব অক্ষ বরাবর দুটি দূরত্ব বের কর। পোলার স্থানাংক ব্যবস্থা (Polar Coordinate System) নামে আরেকটি স্থানাংক ব্যবস্থা আছে, যেখানে মূলবিন্দু থেকে কাঙ্ক্ষিত বিন্দুর সরাসরি দূরত্ব এবং সেটি কত কোণে আছে জানলেই চলবে। যেমন ধর, কার্তেসীয় স্থানাংক ব্যবস্থায় একটি বিন্দু (3, 4), অর্থাৎ বিন্দুটি মূলবিন্দু থেকে 3-ঘর ডানে, তারপর 4-ঘর উপরে অবস্থিত। পোলার স্থানাংকে সেটি মূলবিন্দু থেকে r দূরত্বে এবং অনুভূমিকের সাথে α কোণে হলে,



পীথাগোরাসের সূত্র প্রয়োগ করে পাও,
r^2 = 3^2 + 4^2
=> r^2 = 9 + 16
=> r^2 = 25
=> r = ±5
দূরত্ব যেহেতু ধনাত্মক, r = 5.

আর ত্রিকোণমিতির ট্যানজেন্ট সূত্র থেকে পাও,
tanα = 4/3
=> tanα = 1.33...
এখন ক্যালকুলেটরের সাহায্যে পাও, α = 53.1 ডিগ্রি (প্রায়)। অথবা চাঁদার সাহায্যেও কোণটি মাপতে পার।

সুতরাং কার্তেসীয়ে (3, 4) যে কথা, পোলারে (5, 53.1ডিগ্রি) একই কথা। এর মানে হলো, অনুভূমিকভাবে 3 ঘর, তারপর উলম্বভাবে 4 ঘর গিয়ে তুমি যেখানে পৌঁছবে, অনুভূমিকের সাথে প্রায় 53.1 ডিগ্রি কোণে 5 ঘর গেলে সেই একই বিন্দুতে পৌঁছবে। এভাবে কোণ আর দূরত্ব জানলেও তুমি যেকোনো জায়গা বের করে ফেলতে পার। এবার তাহলে আসি, আমাদের বিস্ময়কর গণিতবিদ মৌমাছির কথায়।

ভেক্টর গণিতজ্ঞ মৌমাছি
প্রতিদিন সকালে বেরিয়ে পড়ে অনুসন্ধানী (scout) মৌমাছি, উড়ে বেড়ায় এক ফুল থেকে আরেক ফুলে, যতক্ষণ না পর্যন্ত চমৎকার মানসম্পন্ন মধুর খোঁজ পায়। কাঙ্ক্ষিত ফুলের সন্ধান পাওয়ার পর আনন্দে আত্মহারা হয়ে সে ফিরে আসে মৌচাকে, অন্যদেরকে জানায় তার আবিষ্কারের কথা। প্রথমে সে বয়ে আনা মকরন্দটি (nectar) তাকে গোল হয়ে ঘিরে ধরা কর্মী মৌমাছিদের মুখের কাছে নিয়ে নিয়ে স্বাদ দেয়, এতে তারা বুঝতে পারে মধুর গুণাগুণ। মধুর গুণের ব্যাপারে অন্যদের আস্থা জন্মানোর পর, মধুর উৎসের সন্ধান দেয় সে, অদ্ভুত এক উপায়ে, যা দেখে অন্যরা (recruit) উৎসের দিকে তাদের অভিযান শুরু করে।

কোন পথে উৎসটি বিদ্যমান এটি জানানোর জন্য স্পন্দন নৃত্য (Waggle Dance) নামে এক ধরণের নাচ শুরু করে স্কাউট মৌমাছিটি। এতে মৌচাকের একটি স্থান থেকে শুরু করে, প্রথমে শরীর কাঁপিয়ে কাঁপিয়ে নির্দিষ্ট দিকে সোজা একটু দূরত্ব অতিক্রম করে সে, তারপর অর্ধবৃত্তাকার পথে সূচনা বিন্দুতে ফিরে আসে, আবার সোজা পথে শরীর কাঁপিয়ে কাঁপিয়ে পূর্বের দূরত্ব অতিক্রম করে, এবং অবশেষে বিপরীত দিক থেকে অর্ধবৃত্তাকার পথে ফিরে আসে—এভাবে বাংলা ৪-এর মত দেখতে বর্তনীপথ তৈরি করে। সঙ্গীদেরকে কয়েকবার সে এভাবে বর্তনী তৈরি করে দেখায়।



মধুর উৎসের দিক
বর্তনীর সোজা পথটুকুর দিক থেকে মধুর উৎসের দিকের সন্ধান পাওয়া যায়।



যেমন, উপরের ছবির প্রথম মৌমাছিটির খাবারের উৎস সূর্যের দিকে, তাই সে মৌচাকে আসার পর তার নাচের সোজা পথটি হবে মৌচাকের নীচ থেকে খাড়া উপরের দিকে। খাড়া উপরের দিক মানে সূর্যের দিক।

দ্বিতীয় মৌমাছিটির খাবারের উৎস হলো মৌচাক থেকে যেদিকে সূর্য, তার সাথে ৯০ ডিগ্রি কোণে ডান দিকে। তাই মৌচাকে আসার পর এর নাচের সোজা পথটিও খাড়া উপরের দিকের সাথে ৯০ ডিগ্রি কোণে ডান দিকে হবে।

অন্যদিকে তৃতীয় মৌমাছিটির খাবারের উৎস হলো, যেদিকে সূর্য, তার সাথে ১৩৫ ডিগ্রি কোণে বাম দিকে। তাই এর নাচের সোজা পথটি হবে খাড়া উপরের দিকের সাথে ১৩৫ ডিগ্রি কোণে বাম দিকে।


"তার মানে সংবাদবাহক মৌমাছি প্রথমে সূর্যের দিকটি দেখে, তারপর তার সাথে খাবারের উৎস কত ডিগ্রি কোণে, কোন দিকে আনত তা হিসেব করে। এবং মৌচাকে আসার পর, খাড়া উপরের দিকটিকে সূর্যের দিক ধরে নিয়ে, কোণটিকে সেভাবে ডানে বা বামে সমন্বয় করে অন্যদের দেখায়। অন্যরা তখন প্রথমে সূর্যকে দেখে সেভাবে খাবারের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে।" জেরিন বলে।
"হ্যাঁ।" স্মিত হেসে সায় দেই আমি।

মধুর উৎসের দূরত্ব
“তার মানে ফুলটি কোন দিকে আছে এটি বোঝা গেল, কিন্তু কত দূরত্বে আছে এটি কীভাবে বুঝবে?” জেরিনের প্রশ্ন।
“এটিও মজার। যদি ফুলটি দূরে হয়, তাহলে সোজা পথটি অতিক্রম করার সময় মৌমাছিটি বেশি সময় নিবে, কাছে হলে কম সময়। সোজা পথের সময় দেখে অন্যরা হিসেব করে নেয় কত দূরে খাবারের উৎস। একটি বিশেষ প্রজাতির মৌমাছির উপর গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০০ মিটার দূরত্বের জন্য স্পন্দন নৃত্যের সময় ৭৫ মিলিসেকেণ্ড করে বেড়ে যায়। অন্য প্রজাতির ক্ষেত্রে ফলাফলটি ভিন্ন হতে পারে। তবে যেকোনো প্রজাতির ক্ষেত্রে দূরত্বের সাথে সময়ের সর্বদাই একটি সুনির্দিষ্ট সরলরৈখিক সম্পর্ক (linear relationship) বিদ্যমান। নিচে তোমাদেরকে এশীয় এবং ইউরোপীয় দুটি মৌমাছি প্রজাতির ক্ষেত্রে দূরত্ব বনাম স্পন্দন নৃত্যের স্থায়িত্বকাল-এর সম্পর্ক দেখাচ্ছি ”


1. এশীয় মৌমাছি Apis cerana cerana-এর দূরত্ব (x)বনাম সময় (y) রেখাঃ y=154+3.40x
2. ইউরোপীয় মৌমাছি Apis mellifera ligustica-এর দূরত্ব (x)বনাম সময় (y) রেখাঃ y=165+1.92x
Su et el.

“আচ্ছা, বাবা, সূর্য তো সব সময় এক জায়গায় থাকে না। যদি মৌমাছিটির আসতে দেরী হয়, তখন তার নাচ দেখে অন্যরা বের হয়ে গেলে তারা দিক ভুল করে ফেলবে না?”

মেয়ের প্রশ্নে চমৎকৃত হই। “হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছ। প্রতি ৪ মিনিটে সূর্য ১ ডিগ্রি করে পশ্চিম দিকে সরতে থাকে। যদি অনুসন্ধানী (scout) মৌমাছিটির মৌচাকে আসতে বেশ সময় লাগে কিংবা মৌচাকে আসার অনেক পরে নাচ দেখায়, সূর্যের দিক পরিবর্তনের সাথে তার নৃত্য কোণটিও সেভাবে সমন্বয় করে নেয় সে, ফলে কোনো সমস্যা হয় না। এ এক অদ্ভুত ক্ষমতা। এটি না ঘটলে পরবর্তী মৌমাছিদের (recruit) অনেকেই মারা যেত, কারণ ভুল পথে চলে যাবার কারণে বাসা থেকে যে খাবার নিয়ে তারা বের হতো, তা শেষ হয়ে যেত, এবং খাবারের কোনো উৎস খুঁজে না পাওয়ায় ক্লান্তিতে আর ফিরে আসতে পারত না। কিন্তু এরকম কখনো হয় না।”
“সত্যিই খুব অদ্ভুত তো! কিন্তু যদি আসার পথে মেঘে সূর্য ঢেকে যায়, তাহলে কি করবে?”
“অতিবেগুনি রশ্মি (ultraviolet rays) কাজে লাগিয়ে, মৌমাছি অন্ধকারেও সূর্যের অবস্থান বুঝতে পারে, মামণি।”

আমি চুপ করে তাকিয়ে থাকলাম মেয়েদের দিকে। গণিত নিয়ে আলোচনার শেষের দিকে তাদের চোখের সেই চিরায়ত মুগ্ধ বিস্ময়।
“এর পর মৌমাছি দেখলে,” আমি ধীরে ধীরে বলি, “নিশ্চয়ই গভীরভাবে স্মরণ করবে তাদের গাণিতিক গুণের কথা, উপহাস ভরে উড়িয়ে দেবে না নিছক ক্ষুদ্র প্রাণী বলে। জগতে সবারই নিজের মত করে রয়েছে জ্ঞান, এ উপলব্ধি যখনই আসবে তোমার, তা শ্রদ্ধা জাগাবে জগতের অপার রহস্যের প্রতি, সৃষ্টি করবে সহনশীলতা আর সৃষ্টিজগতের প্রতি মমতা। এবং অবশ্যই সে সময় তোমার কৃতজ্ঞতা জানাবে মহান সেই গণিতবিদের প্রতি যিনি মৌমাছির ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে স্থাপন করে দিয়েছেন বিস্ময়কর এই জ্ঞান।”
[সংক্ষেপিত সংকলিত]

__________________________________
তোমার প্রভু প্রত্যাদেশ দিলেন মৌমাছিকে "নিবাস গড়ে তোল তোমরা পাহাড়ে এবং বৃক্ষে, এবং সেসব স্থাপনায় যা নির্মাণ করে মানুষ। অতঃপর খাও ফলসমূহ থেকে এবং গমন কর প্রভুর নির্ধারিত পথ ধরে, যা সুগম করা হয়েছে তোমাদের অনুসরণের জন্য।"
এদের উদর হতে নির্গত হয় এক পানীয়, বিচিত্র তার বর্ণ, যাতে রয়েছে মানুষের রোগমুক্তি। নিঃসন্দেহে চিন্তাশীলদের জন্য এতে রয়েছে নিশ্চিত নিদর্শন।
—আল কুরআন, সুরা আন-নহল: ৬৮-৬৯
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ২:৫১
১০৭টি মন্তব্য ১০৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×