somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বন্ধু তুমি-৫

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্টুডেন্ট পড়ানো শেষ করে গেলাম ছোটবেলার বান্ধবীর বাসায়।যেয়ে দেখি সে তার বান্ধবীর সাথে নোট করা নিয়ে ব্যস্ত।সামনেই পরীক্ষা। অনেকদিন বাদে দেখা তাই নোট করা বাদ দিয়ে আড্ডায় বসে পড়ল।আড্ডা দিতে দিতে কখন যে একঘন্টা পার হয়ে গেল টেরই পেলাম না।ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় ফিরলাম।পড়তে ইচ্ছে করছিল না।তাই ফেসবুক নিয়ে বসলাম।আগে ফেসবুকে লগইন করে ইনবক্স চেক করতাম।এখন আর করা হয় না।কারণ তেমন চ্যাটই হয় না।তবুও আজ নতুন মেসেজ দেখে চেক করলাম।রুদ্রর মেসেজ।অনেকদিন পর।সে রাগ করেছে আমার সাথে।করুক রাগ।বারবার বলেছি আমার আশায় থাকতে না।তবুও সে আশা করে আছে যদিও আমি কোনো আশাই দেইনি।ভার্চুয়ালি পরিচয় আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে।সেই বন্ধু রীতিমতো উঠে পড়ে লেগেছিল আমাদের একটা সম্পর্ক তৈরি করার জন্য।আমার কোনো ইচ্ছে না থাকায় সে রণে ভঙ্গ দিল।কিন্তু মাঝখান থেকে রুদ্র হঠাৎ একদিন প্রপোজ করে বসল।এ ও কি সম্ভব? না দেখে ভালোবাসা যায়?রুদ্র দেখা করতে চাচ্ছে। আমার কোনো ইচ্ছাই নাই।গত দুই বছর ধরে বলার পরও তার ভালোবাসা মনে হচ্ছে দিন দিন বাড়ছে।ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই অস্বস্তির।কাউকে কষ্ট দিতে আমার ভালো লাগে না।কিন্তু সবাইকে কি ভালোবাসা যায়?কিন্তু এটা নিজের ক্ষেত্রে মানতে পারি না।শুভ্র ঠিকই বলে।"যাকে চাও তাকে পাবা না,বলে গেছে নায়িকা শাবানা" শুভ্রর কথা মনে পড়তেই হাসি পেল। কিন্তু কিছুটা রাগও হল।আজ সারাদিন তার কোনো খোঁজ নেই।নানার বাড়ি যেয়ে ভুলে গেছে।তাকে নাকি সেখানে জামাইআদর করা হচ্ছে। বাহ্,কি মজা!!!
শুভ্রর কথা বলেই যাচ্ছি। কিন্তু পরিচয়টা জানানো হয়নি।আমরা একসাথে এক ইউনিভার্সিটিতে একই সাবজেক্টে পড়ি।অথচ ক্লাশে কথা বলা তো দূরের কথা কেউ কারো দিকে তাকাই কিনা সন্দেহ আছে।হঠাৎ কোনো দরকারে কথা বললেও আমরা দুজনে ভালো করেই জানি সবাই আমাদের দেখছে।এই ব্যাপারটাই শুভ্রর সহ্য হয় না।আমি ছিলাম শুভ্রর পরীক্ষার আগের রাতের বন্ধু।কারণ সে পরীক্ষার আগের রাত বারোটায় আমাকে কল দিয়ে জেনে নেয় কি পরীক্ষা, কি কি আছে,কি পড়তে হবে।শুভ্রর সাথে কথা বলার সময়ই সে বলে দিয়েছিল, "হুট করে আবার আমার প্রেমে পইড়ো না।আমি কিন্তু বিয়েশাদি করতে পারব না।মেয়েমানুষ আমি দেখতে পারি না।কিন্তু তোমার ব্যাপার আলাদা।তুমি না থাকলে আমি পরীক্ষায় ফেইল মারতাম।তোমারে আমি জীবনেও ভুলব না এটা আবার ভেবো না।ভুলে যাব।যেদিন চাকরি পাব আর পুষ্পিতারে পাব সেদিন তুমি কে সেটাও চিনব না।" শুভ্র খুব স্পষ্টবাদী। যা বলার সব বলে দেয়।তাই ওর কথায় রাগও হয় আবার ককষ্টও হয়।ভাবতে ভাবতে আবার কল দিলাম।রিসিভ করতেই,"ওগো তিলি,তুমি তো দুইশো বছর বাঁচবা।তোমার কথা ভাবছিলাম।"
"হুম যখন তোমার কেউ ছিল না তখন ছিলাম আমি।এখন তোমার সব হয়েছে পর হলাম আমি।জামাইআদর পেয়ে ভুলে গেসো।"
"তুমি এই কথা বলতে পারলা?তোমারে আমি ভুলতে পারি?"
"হুম পারো।পুষ্পিতারে পাওয়ার পর।"
"সমস্যা কি?ততদিন পর্যন্ত তুমি না হয় প্রক্সি দাও।আমি যেমন তোমার জামাইয়ের প্রক্সি দিচ্ছি। "
খানিকটা রাগ হলো,"মোটেও না।আমি কারো প্রক্সি দিচ্ছি না।তুমিও না।"
"তাইলে আমরা কি করছি?সমাজসেবা?"
"শুভ্র,রাখছি।"বলেই লাইনটা কেটে দিলাম।
খুব কান্না আসছিল।এমন করে কেউ বলে?কান্নাটা থামাতে পারছিলাম না।কিন্তু কাঁদতেও পারছিলাম না।নিজের ঘর নেই বলে শান্তিমতো কান্নাও করা যায় না।এক্ষেত্রে ওয়াশরুমই ভরসা।ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলাম শুভ্রর কল।রিসিভ করতেই,"রাখলা কেন?"
"বাবা আসছে।"
"গলার কি হইসে?"
"ঠান্ডা লাগসে।"
"বাহ্,দশমিনিটে ঠান্ডা লেগে গেলো? আমাকে মিথ্যা বলো না।"
"সত্যি।"
"আমি তোমাকে হাড়ে হাড়ে চিনি।আর তোমাকে না বলসি নাম ধরে ডাকবা না?নাম ধরে ডাকলেই মনে হয় তুমি ভীষণ কষ্টে আছো কঠিন কিছু বলবে।আর সেটা শুনলেই আমার কষ্ট শুরু হয়।"
"তুমি কি জানো যে আমি খুব সুন্দর করে মানুষের নাম ধরে ডাকতে পারি?"
"না আমার দরকার নাই।আমি মরে গেলেও তুমি আমারে নাম ধরে ডাকবে না।বুঝছো?আর কান্নাকাটি বন্ধ করো।কি যে করো না তুমি? কান্নাকাটি করে গলার বারোটা বাজাও।"
"হুম।কবে আসবা?"
"আসব।ওগো,তোমারে দেখার জন্য আমার কইলজা তো ফাইট্টা যাচ্ছে।কতোদিন তোমারে দেখি না। "
কথাটা শুনে হেসে দিলাম।
"এইতো এবার ঠিক আছে।এখন তাইলে রাখি।"
"আচ্ছা। "
শুভ্র মানুষটাই এমন মন খারাপ করে দিবে আবার মন ভালোও করে দিবে।তবুও কেন যে রাগায়???
(চলবে)
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×