somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাজী মেহেদী হাসান
আমি বাই ব্লাড বাংলাদেশি। কারো মাস্তানি ভালো লাগে না, কিন্তু সহ্য করি। সবসময় ভাবি: আহা, সবাইকে যদি মুক্ত আকাশে ছেড়ে দিতে পারতাম। আপাতত যুক্তরাষ্ট্রে বসে অনর্থক একটা বিষয় নিয়ে পিএইচডি করছি।

ভুবনেশ্বর (ভারত)-ভ্রমণ পর্ব

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ভুবনেশ্বর শহর

পুরি ভ্রমনের ফাকে আমরা ভুবনেশ্বর ঘুরে এসেছিলাম। একটা দিন কাটিয়েছিলাম ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মিশেল শহরে। ওড়িশ্যা রাজ্যের রাজধানী ভুবনেশ্বর। দক্ষিণ ভারতের প্রবেশদার বলা হয় এই শহরকে।
পুরি থেকে ভুবনেশ্বরের দূরত্ব ৭৮ কিলোমিটার। এক্সপ্রেস ট্রেনে যেতে সময় লাগে পৌনে দুই ঘন্টা। ভাড়া ২৫ রুপি। লোকাল ট্রেনে সময় লাগে আড়াই ঘন্টা। ভাড়া ১৫ রুপি। আমরা গিয়েছিলাম এক্সপ্রেস ট্রেনে। ফিরতে হয়েছিল লোকালে করে।



বেলা এগারোটার মধ্যেই আমরা ভুবনেশ্বর স্টেশনে পৌছালাম। স্টেশন থেকে বের হতেই বাম পাশে মোটর সাইকেল স্ট্যান্ড। হাজার হাজার বাইক রাখা সেখানে। জানলাম প্রতিদিন প্রায় লাখখানেক মানুষ ভুবনেশ্বর থেকে ৩০ কিলোমিটার দুরের কটক যাতায়াত করে।

কটক ওড়িশ্যার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। একে বাণিজ্যিক রাজধানীও বলা হয়। শতশত শিল্প কারখানা ও বানিজ্যিক অফিস, ব্যাংক বিমা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে শহরে। ভুবনেশ্বর মুলত রাজধানী। সরকারি অফিস, আদালত আর আবাসিক শহর। প্রতিদিন লোকজন ১০ টাকা ভাড়া ভাড়া দিয়ে কটক যায়। অফিসগামীদের অনেকেই সকালে বাইক রেখে যায় রেল স্টেশনে, বিকেলে ফিরে বাইক নিয়ে যায়। বাইক রাখার দিন প্রতি ভাড়া ৫ রুপি করে।

১৯৪৭ এর আগে ভুবনেশ্বর কেবল মন্দিরের জন্য বিখ্যাত ছিল। পরে একে রাজ্য রাজধানী ঘোষণা করা হয় এবং পরিকল্পিত শহর তৈরি করা হয়। এজন্য শহরটি বেশ ছিমছাম। শহরের প্রধান কেন্দ্র রেলস্টেশন। পাশেই বাসস্ট্যান্ড। ভারতের বেশিরভাগ শহর রেল কেন্দ্রিক যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে বাসস্ট্যান্ড গুলোও স্টেশনের পাশে।


ভুবনেশ্বর স্টেশনের পাশে হাজার হাজার বাইক

আমরা যাবো নন্দন কানন। স্টেশন থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ব্রিটিশ আমলের চিড়িয়াখানা। আমরা দুশো রুপিতে অটো ভাড়া করলাম। স্টেশন এলাকা পার হলেও বিধানসভা ভবন। তখন অধিবেশন চলছিল। তাই এলাকায় বেশ কড়াকড়ি। এরপর মূখ্যমন্ত্রীর ভবন ও হাইকোর্ট। আমরা সব পেরিয়ে শহরে ঢুকলাম। সাজানো-গোছানো শহর। এই শহরে জনবসতি তুলতামুলক কম। ১৪০ বর্গকিলোমিটারের শহরে সাড়ে আট লাখ লোকের বাস।

নন্দন কাননে পৌছে টিকিট কাটার পালা। ভারতীয়দের জন্য ১০ টাকা। বিদেশি ২০০ টাকা। দো টিকিট দিজিয়ে বলে ২০ রুপিতে দুটো টিকিট কাটলাম। বিশাল এলাকা নিয়ে নন্দন কানন। তবে মনে হলো যত্ন কম। পছন্দ হলো না। তবে ডাইনোসরের বিশাল ভাস্কর্যটি দেখার মতো।



নন্দন কানন দেখা শেষে ক্ষুধা নিবৃতির জন্য একটা হোটেলে ঢুকলাম। হোটেলে থালি হিসেবে খাবার পাওয়া যায়। থালি হচ্ছে স্টিলের বড় ট্রে। সেখানে কয়েকটি চেম্বারে ভাত, রুটি, তরিতরকারি থাকে। ভাতের একটি থালি নিলাম। কিন্তু তরকারি রান্না বড়ই অখাদ্য। পেটও ভরল না, টাকাও জলে গেল। পরে পাউরুটি কলা খেলাম। এরপর বাসে করে রেলস্টেশনে ফেরার পালা।

ফেরার পথে চোখে পড়ল কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি। অচ্ছুত সামন্ত নামের একজন আদিবাসী এই বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেখানে গরীব আদিবাসীদের বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা আছে। তবে ওড়িশ্যার অনেক লোকই তা জানেনা। এক রিক্সাওলার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তার সন্তানদের কলিঙ্গ ইনস্টিটিউটে দেয়নি কেন। তারা জানেনা। অচ্ছুত সামন্ত নিজে অতি দরিদ্র অশিক্ষিত পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। সময় না থাকায় ইনস্টিউটের ভেতরে ঢোকার ইচ্ছেটা দমিয়ে রাখলাম।


ওড়িশ্যা বিধানসভা ভবন

ঘন্টা দুয়েক ভুবনেশ্বর শহরের প্রধান সড়ক জনপথ রোড়ে ঘোরাঘুরি করলাম। প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য একটি পাবলিক টয়লেটে ঢুকলাম। বড়ই পরিচ্ছন্ন। আহা! এরকম টয়লেট যদি আমাদের দেশের শহরগুলোতে থাকতো।

সাধারণ আরো কিছু তথ্য জানিয়ে রাখি, কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বর, পুরি ও হায়দ্রাবাদ এক্সপ্রেসে করে ভুবনেশ্বর যাওয়া যায়। আট/নয় ঘন্টার যাত্রা। ভাড়া সাড়ে চারশ টাকার মতো। ছয়শ থেকে দু'হাজার রুপিতে মাঝারি মানের হোটেলে থাকা যায়। ওড়িশ্যার খাবার বলতে ইডলি, দোসা, চাপাতি থালি, আলুর দম, চাটনি ইত্যাদি।

ভুবনেশ্বর শহরে ঘুরতে ভালই লেগেছে। তবে বাঙালী জিহ্বায় কোন খাবারে স্বাদ পাইনি

আরো জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:১৭
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×