somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গ্রিক মিথ: মহাশূণ্য থেকে বৈচিত্রময় পৃথিবীর উত্থান।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



নিক্স নামের এক পাখি বাস করতো মহাশূণ্যে। তার কালো ডানা প্রতিনিধিত্ব করতো মহাশূণ্যের সীমাহীন অন্ধকারকে। কিন্তু তার ডিমের রং ছিল সোনালী। পাখিটি ভাবতো একদিন এই অসীম শুন্যতা থাকবে না যখন তার এই ডিম ফুটে বাচ্চা বের হবে, যে জ্বালবে আলো। অসীম শুন্যতার মাঝে সৃষ্টি করবে নান্দনিক সব বিস্ময়। একদিন তার অপেক্ষার অবসান হয় ডিম ফেটে জন্ম নেয় এরোস, ভালোবাসার দেবতা। ডিমের পরিত্যক্ত খোসাটি উড়তে শুরু করে মহাশূণ্যে, হঠাৎ থেমে ডিমের খোসা চিরদিনের জন্য স্থীর হয়ে যায়। ভালোবাসার দেবতা স্থীর ডিমের খোসাটির নাম দিল আকাশ আর অবস্থানের নাম দিল পৃথিবী। অসীম সময় ধরে পৃথীবি শূন্যে মিশে ছিল দেবতার অশির্বাদের অপেক্ষায়। পৃথিবী দেবতার আশির্বাদ পুষ্ট হয়ে প্রকাশলাভের পর আকাশের প্রেমে পড়ে যায়। তারপর জন্ম নিল অনেক সন্তান, নাতিপুতি।

কোন কিছুই সমন্তরাল যেতে পারে না, যাই নি সৃষ্টির আদিকালও, সন্তানদের মধ্যে চরম বদমাশ ছিল ক্রোনাস, মহাবিশ্বের প্রথম খলচরিত্র। কৌশলে তার বাবা আকাশকে খোঁজা করে দিয়ে সে দেবতাদের রাজা বনে যায়। জবরদস্তি করে বিয়ে করে সুন্দরী বোন রিয়াকে কিন্তু ঝামেলা বাধল রিয়ার গর্ভের অনিন্দ্য সুন্দর আর সুঠমদেহী সন্তানদের নিয়ে। ক্রেনাসের মনে জাগতে থাকে সীমাহীন ক্ষমতার ইচ্ছা। সে অনন্তকাল ধরেই থাকতে চাই একক অধিপতি তার সব ভাইয়েরাও এখন সাবই তার অনুগত কিন্তু তার ঔরস জাতরা যদি তাকে না মানে, সন্তানদের অনিন্দ্য সৌন্দর্য্য তাকে আতঙ্কিত করে তুলতো। ঠিক করলো তার কোন সন্তানকেই সে বাচতে দেবে না, খেয়ে ফেলবে নিজেই। মায়ের মন তা মানতে চায় না কিন্তু জন্ম দেওয়ার পরে সন্তানকে তুলে দিতে হতো স্বামীর খাদ্য হিসেবে। রিয়া একদিন ঘুরে দাড়ালো। সর্বশেষ জন্ম নেয়া সন্তানের পরিবর্তে সে কম্বলে মোড়ানো এক টুকরা পাথর তুলে দিলো স্বামীর হাতে। নির্বোধ ক্রেনাস তাই পেটে পুরে সন্তষ্ট হলো। রিয়া সন্তানের নাম রাখলো জিউস। জিউস বড় হয়ে তার ভাই বোনদের দানব পিতার হাত থেকে রক্ষা করতে শুরু করলো। একদিন পিতাকে হত্যা করে তার বোন হিরাকে বিয়ে করে সূখে বসবাস করতে লাগলো। তাদের ঘরে এলো প্রমিথিউস আর ইপিমেথিউস। জিউস সবাইকে নিয়ে মহাবিশ্ব সাজানোর কাজে মনোযোগ দিলো, আকাশের চারপাশ সাজালো অসংখ্য গ্রহ আর নক্ষত্র দিয়ে, পৃথিবীতে বিচিত্র সব প্রাণী ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দিল দুই ছেলেকে।



পৃথিবীকে সাজানোর দায়িক্ত পেয়ে প্রমিথিউস সৃষ্টি করলো মানুষ, যা ঠিক দেখতে দেবতাদের মতো। এপিমিথিউস সৃষ্টি করলো বাকি সব প্রানী। একদিন তাদের দু ভাইয়ের সৃষ্টি করার ক্ষমতা শেষ হয়ে গেল ফলে প্রমিথিউস তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষকে কিভাবে কোন কিছু উপহার দিবে তা খুজে পেল না। সকাল হতেই তার মাথায় এক বুদ্ধি খেলা করলো সুর্য্য থেকে অল্প আগুন চুরি করে এনে দিলো মানুষকে, তার প্রিয় সৃষ্টিকে। এর জন্য প্রমিথিউসকে চরম মূল্য দিতে হয়। করন আগুন ছিল শুধুমাত্র দেবতাদের ব্যবহারের জন্য, মানুষকে তা দিয়ে ঘোরতর অন্যায় করেছে প্রমিথিউস। জিউসের নির্দেশে তাকে পাহাড়ের সাথে বেধে রাখা হলো অনন্ত কাল ধরে শকুন এসে তার লিভার ঠুকরে ঠুকরে খায়। সেই থেকে মানুষ আগুনের সাহায্যে এগিয়ে যায় সভ্যতার দিকে।

* গ্রীক মিথ এর উপর নিয়মিত লেখা চলবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:২৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×