somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মিজানুর রহমান মিলন
আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

স্বাধীনতা প্রশ্নে স্কটল্যান্ডের ’গণভোট’-নিঃসন্দেহে বিশ্ব ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক।

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অবশেষে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে স্কটল্যান্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘নাগরিক’ পরম প্রতীক্ষিত স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ’না’ ভোট দিল ! আমি সতর্কতার সাথে সংখ্যাগরিষ্ঠ ’স্কটিশ’ শব্দটি ব্যাবহার করলাম না, আমার সাথে কেউ দ্বিমত পোষণ করতেই পারেণ তবে আমার কেন জানি মনে হচ্ছে স্কটিশদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ স্বাধীনতার পক্ষে । দেখুন, স্বাধীনতার পক্ষে ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৯৮৯ জন স্কট ভোট দিয়েছেন আর স্বাধীনতার জন্য দরকার ছিল ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৮২৮টি ভোট। অপরদিকে ’না’ ভোট পড়েছে ২০ লাখ ১,৯২৬টি। আমার মনে হল-স্বটল্যান্ডের যারা অভিবাসী বিশেষ করে ইউরোপ, আমেরিকা ও আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশগুলি থেকে অভিবাসী যারা স্কটল্যান্ডের নাগরিক সুবিধা পাচ্ছেন মূলত তাদের ভোটের কারণেই স্কটিশরা স্বাধীনতা পাইনি ! শুধু অভিবাসী নয় অভিজাত স্কটিশরাও স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে । অভিবাসী ও অভিজাত স্কটিশ স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার মূল কারণ ছিল অর্থনৈতিক এছাড়া আর কিছুই নয়। তবে দরিদ্র শ্রেণীর স্কটিশরা স্বাধীনতার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিল। অভিজাত স্কটিশ ও অভিবাসীগণ মূলত অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তা থেকেই আপাতত যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতা প্রাপ্তিকে তাদের জন্য সুবিধাজনক মনে করেনি। ইউরোপ, আমেরিকার প্রচার মাধ্যমের ভূমিকাও অন্যতম ছিল যা তরুণ স্কটিশদের প্রভাবিত করার জন্য যথেষ্ট ছিল। স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার পক্ষে সবচেয়ে বড় প্রভাবকটি ছিল ইউরোপিয় ইউনিয়ন। ইউরোপিয় ইউনিয়ন বলেই দিয়েছে, স্কটল্যান্ড স্বাধীন হলে স্কটল্যান্ডকে অন্তত ৮ বছরের মধ্যে ইউরোপিয় ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ নেই ! বিশ্বের একমাত্র শক্তিশালী অর্থনৈতিক জোটের এ হুমকি নি:সন্দেহে স্কটল্যান্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকদের কপালে ভাজের চিহ্ন ফেলে দিয়েছিল । এছাড়াও ব্রিটেন থেকে অধিকতর অর্থনৈতিক সুবিধা ও ক্ষমতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও অন্যতম নিয়ামক ছিল।

যাইহোক, প্রশ্ন হলোঃ গণভোটে ’না’ জয়যুক্ত হয়েছে -এই ফলাফলই কি চুড়ান্ত সমাধান ? আমার মনে হয় এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্য বড় ধরনের এক অভ্যন্তরীণ সংকটের মধ্যে প্রবেশ করল যদিও আপাতত সাময়িক স্বস্তি দিয়েছে ও হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, কিন্তু স্কটিশদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি যুক্তরাজ্যকে দীর্ঘ মেয়াদে কোনো স্বস্তি দিবে না কারণ স্কটল্যান্ডের মতই উত্তর আয়ারল্যান্ড ও ওয়েলসবাসীরাও একই সুযোগ সুবিধা ও ক্ষমতার দাবি করবে যা সামাল দেওয়ার অখন্ড যুক্তরাজ্যের জন্য কঠিনই হবে। তবে স্কটল্যান্ডের এ গণভোটই শেষ নয়-সামনে স্বাধীনতার দাবি আরো জোরালো হবে নি:সন্দেহে। ৪৫% মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্খা দমিয়ে রাখা কতদিনের জন্য সম্ভব হবে তা চিন্তার বিষয় বটে! শুধু স্কটল্যান্ড নয় নিকট ভবিষ্যতে বিশ্ব থেকে আমেরিকা ও ইউরোপের অধিপত্য খর্ব হলেই ইউরোপ, আমেরিকার নানান জাতিগোষ্ঠী স্বাধীনতার সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়বে-ছোট ছোট রাস্ট্রে বিভক্ত হয়ে যাবে ইউরোপ, আমেরিকার বৃহৎ ও বহু জাতি ভিত্তিক রাস্ট্রগুলো! অবশ্য স্কটল্যান্ড স্বাধীনতা পেলে নি:সন্দেহে বিশ্ব ইতিহাসে ও রাজনীতিতে তা অন্যতম একটি মাইলফলক হিসাবে থাকত তারপরেও এ গণভোটের তাৎপর্য ও অর্জন নেহাতই কম নয় ! স্বাধীনতার দাবির মত সংকটের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান বিশ্ব ইতিহাসে অনন্য নজির হিসাবে থাকবে এ ’গণভোট’। বিশ্বের নানা প্রান্তের স্বাধীনতাকামীদের স্বাধীনতার দাবিতে গণভোটরে দাবি জোরালো করবে এ গণভোট । ইতোমধ্যেই পাকিস্থানের স্বাধীনতাকামী বেলুচ সম্প্রদায় স্কটল্যান্ডের অনুকরণে গণভোট অনুষ্ঠানের দাবি করেছেন! অদূর ভবিষ্যতে বহু জাতি ভিত্তিক রাস্ট্র ভারতেও একই দাবি উত্থাপিত হবে-কাশ্মিরে তো অনেক আগেই এ দাবি উত্থাপিত হয়েছে। চীনের জিনজিয়াং, তিব্বত, রাশিয়ার চেচনিয়া, ফিলিপাইনের মিন্দানাও, ইউক্রেনের রুশভাষা্ভাসী অঞ্চলগুলিসহ বিশ্বের নানা প্রান্তের স্বাধীনতাকামীদের জন্য স্কটল্যান্ডের গণভোট নি:সন্দেহে একটি মাইলফলক। আর কোনো সহিংসতা নয় স্বাধীনতার জন্য ’গণভোট’-এ দাবি জোরালো ও ধ্বনিত হোক বিশ্বের সর্বত্র !
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×