somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডাক্তার দেখাইবার পূর্বে

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জলিল সাহেব বয়স ৪৬, পেশায় চাকুরিজীবি। হঠাৎ শরীর খারাপ করে তাঁর, অফিস মিস হয়। ফলে শরণাপন্ন হন শহরের নামকরা ডাক্তারের। ডাক্তার ঔষধ লিখে দেন, কিন্তু কাজ হয় না। শরীর ভালো হয় না। ভেঙ্গে পড়েন তিনি। সহকর্মী ও বন্ধুদের পরামর্শে ডাক্তার পরিবর্তন করেন। আবারো সিরিয়াল নেয়ার ঝামেলা, আবারো নতুন ঔষধ। কিন্তু সপ্তাহ যায়, শরীর ভালো হয় না। পরিবার ও স্বজনদের কপালে পড়ে চিন্তার ছাপ, রোগীও হতাশ। কেউ বলছেন দেশের ডাক্তার ভালো না, দেশের বাইরে নিয়ে যাও, কেউ বলছেন ঔষধের গুনাগুন ঠিক নেই, তাই কাজ করছেনা। কিন্তু সমস্যা আসলে কোথায় কেউই নিশ্চিতভাবে তা বলতে পারছেন না।

এরকম সমস্যায় আমরা প্রায়ই পড়ি। এক কথায় খুবই অসহায় অবস্থা। আগেই বলে রাখি রোগীর আরোগ্য হওয়া সম্পূর্ণ নির্ভর করে সঠিক রোগ নির্ণয়ের উপর। একমাত্র রোগীই সঠিক রোগ নির্ণয়ে ভূমিকা পালন করতে পারে। সঠিক রোগ নির্ণয়ে যেসব বিষয় ভূমিকা পালন করে তা হচ্ছে রোগীর বয়স, রোগের লক্ষণ, পূর্ববর্তী রোগের ইতিহাস ইত্যাদি।

অনেক সময় দেখা যায় রোগী ডাক্তারের কাছে নিজের প্রকৃত বয়স লুকানোর চেষ্টা করেন। এটা জানা খুবই জরুরী যে, বয়সের উপর ঔষধের মাত্রা এবং গ্রহনের সময়কাল দুটোই নির্ভর করে। আবার রোগের ধরন, মাত্রা ও ঝুঁকি কতটুকু তাও বয়সের উপর নির্ভর করে। তাই অন্তত ডাক্তারের কাছে নিজের সঠিক বয়স বলার অভ্যাস করা উচিত। মনে রাখা জরুরী যে, বয়স লুকালে ক্ষতি রোগীরই। এতে ডাক্তারের রোগ নির্ণয়ে সমস্যা হয়, এছাড়া রোগ নির্ণয় করা গেলেও সঠিক মাত্রার ঔষধ দেয়া সম্ভব হয় না।

দ্বিতীয় যে সমস্যাটা দেখা যায় তা আরো গুরুতর, রোগী ডাক্তারকে তার সমস্যার কথা ভালোভাবে বলতে পারেন না। অনেক রোগী আছেন দেখা যায় ডাক্তারের কাছ থেকে ফিরে ক্লেইম করেন যে, অনেক কিছু বলার ছিল, কিন্তু ডাক্তারকে দেখে অথবা তাড়াহুড়ায় ভুলে গেছেন বলতে। আবার অনেকেই বলেন ডাক্তার যা যা জিজ্ঞেস করেছেন তার সঠিক উত্তর তারা তাৎক্ষনিক দিতে পারেন নাই। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায় রোগী হয়ত ডাক্তারকে দেখে ঘাবড়ে যান বা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে করতে হঠাৎ চেম্বারে ঢুকে হ্যাঁ-না একটা জবাব দিয়ে আসেন। এসকল ক্ষেত্রে রোগী ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পূর্বে কিছু প্রস্তুতি নিয়ে যাওয়া ভালো। প্রথমত, রোগের লক্ষণগুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা যেমন, যদি কোন ব্যাথার জন্য ডাক্তার দেখান, তবে এটা নিশ্চিত হওয়া দরকার যে, ব্যাথা নির্দিষ্ট কোন অঙ্গে হচ্ছে, ঐ অঙ্গ ছাড়া অন্য কোন অঙ্গে ব্যাথা আছে কিনা, ব্যাথার প্রকোপ কেমন, সহনীয় নাকি অসহনীয়, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য আছে কিনা, মাথা ব্যাথা হলে ঠিক কোন পাশে ব্যাথা হয়, রোদের উপস্থিতি বা ইলেক্ট্রিক কোন বস্তু থেকে বিচ্ছুরিত আলোয় ব্যাথার অনুভূতি কেমন বা প্রকোপ কেমন ইত্যাদি। রোগী জানেন তার কি কি সমস্যা, কিন্তু ডাক্তারের কাছে পুরোপুরি বলতে না পারলে খুব ভালো হয় যদি রোগী তার সমস্যাগুলো কোথাও লিখে রাখে এবং পরবর্তীতে চিরকুটটি ডাক্তারের হাতে দেয়।

এছাড়া রোগ নির্ণয়ে ডাক্তার ঐ রোগ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন করে থাকেন। মনোযোগ দিয়ে শোনা উচিত ডাক্তার কি জানতে চাচ্ছেন, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেক সময় ডাক্তার কিছু কিছু ঔষধ প্রেসক্রাইবের পূর্বে কোন গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খাচ্ছেন কিনা জিজ্ঞেস করে থাকে। মনে রাখা উচিত যে, ডাক্তার জিজ্ঞেস করুক বা না করুক কোন গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খেলে তা ডাক্তারকে অবশ্যই জানানো উচিত। নাহয় গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ ডাবল খেয়ে ফেলার ঝুঁকি থাকে।
ডাক্তার দেখানোর সময় রোগীর কোন আগের টেস্ট রিপোর্ট বা প্রেসক্রিপশন থাকলে অবশ্যই তা সাথে করে নিয়ে যেতে হবে। ভালো হয় যদি রোগী তার আগে দেখানো সব ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন এবং টেস্ট রিপোর্টসমূহ একত্রে কোন ফাইলে জমা রাখেন।

আরেকটা কথা ডাক্তার জিজ্ঞেস করুক বা না-করুক, আপনার পূর্বে নির্ণীত কোন গুরুতর রোগ যেমন, হার্টের সমস্যা, জন্ডিস, রক্তশূন্যতা, হাঁপানী, লিভারের সমস্যা, ডায়াবেটিস, কিডনী-জনীত সমস্যা, আর্থরাইটিস ইত্যাদি থাকলে জানিয়ে দিন। কারণ কিছু কিছু রোগ ঔষধের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। এই প্রভাব ভালোও হতে পারে, খারাপও হতে পারে, বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে খারাপই হয়। আবার কোন অপারেশনের ইতিহাস থাকলে তাও ডাক্তারকে জানানো জরুরী। একইভাবে বর্তমানে রোগী কি কি ঔষধ সেবন করছেন (এমনকি হোমিওপ্যাথিক বা হার্বাল ঔষধ হলেও) তা ডাক্তারকে জানানো আবশ্যক।

সঠিক রোগ নির্ণয়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল টেস্ট। রোগের ধরণ অনুযায়ী ডাক্তার বিভিন্ন টেস্ট রেকোমেন্ড করে থাকেন, যাতে নিশ্চিত রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে সঠিক চিকিৎসা করা যায়। অনেক রোগী এতে বিরক্ত বোধ করেন। অবশ্য এর পেছনে যথেষ্ট কারনও আছে। টেস্টসমূহ বেশ ব্যয়বহুল, একই টেস্ট বার বার দেয়া হয় এবং টেস্টগুলোর জন্যে একাধিকবার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হয়।

রোগীকে এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়েছে কিনা তা ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞেস করে নেয়া উচিত, এবং এন্টিবায়োটিক সাসেপ্টিবিলিটি টেস্টের প্রয়োজন আছে কিনা তাও ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেয়া যেতে পারে। কেননা, ইনফেকশন সারাতে ঠিক কোন এন্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত তা কেবল এন্টিবায়োটিক সাসেপ্টিবিলিটি টেস্টেই বের হয়ে আসে। এছাড়াও, কোনো এন্টিবায়োটিকের প্রতি হাইপার-সেন্সিটিভিটি থাকলে তাও ডাক্তারকে জানানো উচিত।
ডাক্তার দেখানো হয়ে গেল, ডাক্তার ঔষধও দিলেন। কিন্তু এতেই শেষ নয়! সঠিক সময় ও সঠিক নিয়মে ঔষধ খেতে হবে। তিন বেলা মানে আট ঘন্টা পরপর, চার বেলা মানে ছয় ঘন্টা পরপর এবং দুই বেলা মানে বারো ঘন্টা পরপর বুঝায়। এভাবে সময় গুনে গুনে ঔষধ খেতে হবে কারন ঔষধ সেবণের পর তা রক্তের মাধ্যমে একটা নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট অঙ্গে পৌছে কাজ করে, আবার একটা নির্দিষ্ট সময় পর তা শরীর থেকে বের হয়ে যায়। তাই ঔষধটির কার্যকারিতা বা চক্র ঠিক রাখতে পরবর্তী ঔষধটি ঐ নির্দিষ্ট সময়েই খেতে হবে। আবার এমনও আছে রোগীকে সাত দিনের ঔষধ দেয়া হলেও চার দিন খাওয়ার পর রোগী সুস্থ অনুভব করতে থাকলে ঔষধ খাওয়া ছেড়ে দেন। এতে রোগী পরবর্তীতে আবারও অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং পরবর্তীতে ঐ একই অসুখ সারাতে দ্বিগুণ খরচ বা কষ্ট করতে হয়।

অনেক সময় ডাক্তার এক মাস বা দুই মাস এর ঔষধ দিয়ে বলেন এক মাস পরে আবার সাক্ষাত করতে। বেশীরভাগ রোগীই ঐ এক মাস পর আবারও ডাক্তারের কাছে যাওয়ার গুরুত্ব বুঝতে পারে না। কিন্তু অনেক সময় রোগীর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার প্রয়োজন পরে, অবস্থার উন্নতি বা অবনতির উপর নির্ভর করে ঔষধ ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা। দ্বিতীয়বার ডাক্তারের সাথে সাক্ষাতের সময় অবশ্যই পূর্বের কাগজপত্রগুলো (যেমন, প্রেসক্রিপশন, টেস্ট রিপোর্ট ইত্যাদি) সঙ্গে আনতে হবে। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ঔষধ খাওয়ার পর রোগী কেমন অনুভব করছেন, কোন সমস্যা আছে কিনা তা ডাক্তারকে খুলে বলতে হবে।
জলিল সাহেব বয়স ৪৬, পেশায় চাকুরিজীবি। হঠাৎ শরীর খারাপ করে তাঁর, অফিস মিস হয়। ফলে শরণাপন্ন হন শহরের নামকরা ডাক্তারের। ডাক্তার ঔষধ লিখে দেন, কিন্তু কাজ হয় না। শরীর ভালো হয় না। ভেঙ্গে পড়েন তিনি। সহকর্মী ও বন্ধুদের পরামর্শে ডাক্তার পরিবর্তন করেন। আবারো সিরিয়াল নেয়ার ঝামেলা, আবারো নতুন ঔষধ। কিন্তু সপ্তাহ যায়, শরীর ভালো হয় না। পরিবার ও স্বজনদের কপালে পড়ে চিন্তার ছাপ, রোগীও হতাশ। কেউ বলছেন দেশের ডাক্তার ভালো না, দেশের বাইরে নিয়ে যাও, কেউ বলছেন ঔষধের গুনাগুন ঠিক নেই, তাই কাজ করছেনা। কিন্তু সমস্যা আসলে কোথায় কেউই নিশ্চিতভাবে তা বলতে পারছেন না।

এরকম সমস্যায় আমরা প্রায়ই পড়ি। এক কথায় খুবই অসহায় অবস্থা। আগেই বলে রাখি রোগীর আরোগ্য হওয়া সম্পূর্ণ নির্ভর করে সঠিক রোগ নির্ণয়ের উপর। একমাত্র রোগীই সঠিক রোগ নির্ণয়ে ভূমিকা পালন করতে পারে। সঠিক রোগ নির্ণয়ে যেসব বিষয় ভূমিকা পালন করে তা হচ্ছে রোগীর বয়স, রোগের লক্ষণ, পূর্ববর্তী রোগের ইতিহাস ইত্যাদি।

অনেক সময় দেখা যায় রোগী ডাক্তারের কাছে নিজের প্রকৃত বয়স লুকানোর চেষ্টা করেন। এটা জানা খুবই জরুরী যে, বয়সের উপর ঔষধের মাত্রা এবং গ্রহনের সময়কাল দুটোই নির্ভর করে। আবার রোগের ধরন, মাত্রা ও ঝুঁকি কতটুকু তাও বয়সের উপর নির্ভর করে। তাই অন্তত ডাক্তারের কাছে নিজের সঠিক বয়স বলার অভ্যাস করা উচিত। মনে রাখা জরুরী যে, বয়স লুকালে ক্ষতি রোগীরই। এতে ডাক্তারের রোগ নির্ণয়ে সমস্যা হয়, এছাড়া রোগ নির্ণয় করা গেলেও সঠিক মাত্রার ঔষধ দেয়া সম্ভব হয় না।

দ্বিতীয় যে সমস্যাটা দেখা যায় তা আরো গুরুতর, রোগী ডাক্তারকে তার সমস্যার কথা ভালোভাবে বলতে পারেন না। অনেক রোগী আছেন দেখা যায় ডাক্তারের কাছ থেকে ফিরে ক্লেইম করেন যে, অনেক কিছু বলার ছিল, কিন্তু ডাক্তারকে দেখে অথবা তাড়াহুড়ায় ভুলে গেছেন বলতে। আবার অনেকেই বলেন ডাক্তার যা যা জিজ্ঞেস করেছেন তার সঠিক উত্তর তারা তাৎক্ষনিক দিতে পারেন নাই। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায় রোগী হয়ত ডাক্তারকে দেখে ঘাবড়ে যান বা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে করতে হঠাৎ চেম্বারে ঢুকে হ্যাঁ-না একটা জবাব দিয়ে আসেন। এসকল ক্ষেত্রে রোগী ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পূর্বে কিছু প্রস্তুতি নিয়ে যাওয়া ভালো। প্রথমত, রোগের লক্ষণগুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা যেমন, যদি কোন ব্যাথার জন্য ডাক্তার দেখান, তবে এটা নিশ্চিত হওয়া দরকার যে, ব্যাথা নির্দিষ্ট কোন অঙ্গে হচ্ছে, ঐ অঙ্গ ছাড়া অন্য কোন অঙ্গে ব্যাথা আছে কিনা, ব্যাথার প্রকোপ কেমন, সহনীয় নাকি অসহনীয়, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য আছে কিনা, মাথা ব্যাথা হলে ঠিক কোন পাশে ব্যাথা হয়, রোদের উপস্থিতি বা ইলেক্ট্রিক কোন বস্তু থেকে বিচ্ছুরিত আলোয় ব্যাথার অনুভূতি কেমন বা প্রকোপ কেমন ইত্যাদি। রোগী জানেন তার কি কি সমস্যা, কিন্তু ডাক্তারের কাছে পুরোপুরি বলতে না পারলে খুব ভালো হয় যদি রোগী তার সমস্যাগুলো কোথাও লিখে রাখে এবং পরবর্তীতে চিরকুটটি ডাক্তারের হাতে দেয়।

এছাড়া রোগ নির্ণয়ে ডাক্তার ঐ রোগ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন করে থাকেন। মনোযোগ দিয়ে শোনা উচিত ডাক্তার কি জানতে চাচ্ছেন, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেক সময় ডাক্তার কিছু কিছু ঔষধ প্রেসক্রাইবের পূর্বে কোন গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খাচ্ছেন কিনা জিজ্ঞেস করে থাকে। মনে রাখা উচিত যে, ডাক্তার জিজ্ঞেস করুক বা না করুক কোন গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খেলে তা ডাক্তারকে অবশ্যই জানানো উচিত। নাহয় গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ ডাবল খেয়ে ফেলার ঝুঁকি থাকে।
ডাক্তার দেখানোর সময় রোগীর কোন আগের টেস্ট রিপোর্ট বা প্রেসক্রিপশন থাকলে অবশ্যই তা সাথে করে নিয়ে যেতে হবে। ভালো হয় যদি রোগী তার আগে দেখানো সব ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন এবং টেস্ট রিপোর্টসমূহ একত্রে কোন ফাইলে জমা রাখেন।

আরেকটা কথা ডাক্তার জিজ্ঞেস করুক বা না-করুক, আপনার পূর্বে নির্ণীত কোন গুরুতর রোগ যেমন, হার্টের সমস্যা, জন্ডিস, রক্তশূন্যতা, হাঁপানী, লিভারের সমস্যা, ডায়াবেটিস, কিডনী-জনীত সমস্যা, আর্থরাইটিস ইত্যাদি থাকলে জানিয়ে দিন। কারণ কিছু কিছু রোগ ঔষধের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। এই প্রভাব ভালোও হতে পারে, খারাপও হতে পারে, বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে খারাপই হয়। আবার কোন অপারেশনের ইতিহাস থাকলে তাও ডাক্তারকে জানানো জরুরী। একইভাবে বর্তমানে রোগী কি কি ঔষধ সেবন করছেন (এমনকি হোমিওপ্যাথিক বা হার্বাল ঔষধ হলেও) তা ডাক্তারকে জানানো আবশ্যক।

সঠিক রোগ নির্ণয়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল টেস্ট। রোগের ধরণ অনুযায়ী ডাক্তার বিভিন্ন টেস্ট রেকোমেন্ড করে থাকেন, যাতে নিশ্চিত রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে সঠিক চিকিৎসা করা যায়। অনেক রোগী এতে বিরক্ত বোধ করেন। অবশ্য এর পেছনে যথেষ্ট কারনও আছে। টেস্টসমূহ বেশ ব্যয়বহুল, একই টেস্ট বার বার দেয়া হয় এবং টেস্টগুলোর জন্যে একাধিকবার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হয়।

রোগীকে এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়েছে কিনা তা ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞেস করে নেয়া উচিত, এবং এন্টিবায়োটিক সাসেপ্টিবিলিটি টেস্টের প্রয়োজন আছে কিনা তাও ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেয়া যেতে পারে। কেননা, ইনফেকশন সারাতে ঠিক কোন এন্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত তা কেবল এন্টিবায়োটিক সাসেপ্টিবিলিটি টেস্টেই বের হয়ে আসে। এছাড়াও, কোনো এন্টিবায়োটিকের প্রতি হাইপার-সেন্সিটিভিটি থাকলে তাও ডাক্তারকে জানানো উচিত।
ডাক্তার দেখানো হয়ে গেল, ডাক্তার ঔষধও দিলেন। কিন্তু এতেই শেষ নয়! সঠিক সময় ও সঠিক নিয়মে ঔষধ খেতে হবে। তিন বেলা মানে আট ঘন্টা পরপর, চার বেলা মানে ছয় ঘন্টা পরপর এবং দুই বেলা মানে বারো ঘন্টা পরপর বুঝায়। এভাবে সময় গুনে গুনে ঔষধ খেতে হবে কারন ঔষধ সেবণের পর তা রক্তের মাধ্যমে একটা নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট অঙ্গে পৌছে কাজ করে, আবার একটা নির্দিষ্ট সময় পর তা শরীর থেকে বের হয়ে যায়। তাই ঔষধটির কার্যকারিতা বা চক্র ঠিক রাখতে পরবর্তী ঔষধটি ঐ নির্দিষ্ট সময়েই খেতে হবে। আবার এমনও আছে রোগীকে সাত দিনের ঔষধ দেয়া হলেও চার দিন খাওয়ার পর রোগী সুস্থ অনুভব করতে থাকলে ঔষধ খাওয়া ছেড়ে দেন। এতে রোগী পরবর্তীতে আবারও অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং পরবর্তীতে ঐ একই অসুখ সারাতে দ্বিগুণ খরচ বা কষ্ট করতে হয়।

অনেক সময় ডাক্তার এক মাস বা দুই মাস এর ঔষধ দিয়ে বলেন এক মাস পরে আবার সাক্ষাত করতে। বেশীরভাগ রোগীই ঐ এক মাস পর আবারও ডাক্তারের কাছে যাওয়ার গুরুত্ব বুঝতে পারে না। কিন্তু অনেক সময় রোগীর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার প্রয়োজন পরে, অবস্থার উন্নতি বা অবনতির উপর নির্ভর করে ঔষধ ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা। দ্বিতীয়বার ডাক্তারের সাথে সাক্ষাতের সময় অবশ্যই পূর্বের কাগজপত্রগুলো (যেমন, প্রেসক্রিপশন, টেস্ট রিপোর্ট ইত্যাদি) সঙ্গে আনতে হবে। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ঔষধ খাওয়ার পর রোগী কেমন অনুভব করছেন, কোন সমস্যা আছে কিনা তা ডাক্তারকে খুলে বলতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×