somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নয়নাভিরাম মেঘ পাহাড়ের দেশ সাজেক ভ্যালি।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

থানচি, তিন্দু ও বড় পাথর ভ্রমনের নানা কথা ভেবে প্রায় নিঃশব্দে ফিরছিলাম ঢাকার পথে। চট্টগাম এসে টিম লিডারের হটাৎ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন সাজেক যাবে। কি আর করা আবার সাজেকের পথে যাত্রা। সাজেক ভ্যালি ভৌগলিক অবস্থান রাঙামাটিতে হলেও যাতায়াতের সহজ পথ খাগড়াছড়ি দিয়ে। দিঘীনালা থেকে সড়ক পথে সাজেকের দূরত্ব দু’তিন ঘন্টার। সকালে মাইক্রোবাস নিয়ে রওনা হলাম পাহাড়ের পথ ধরে। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে পাহাড়ি বাজারের পাশ দিয়ে চলে গেছে কাচালং নদী। রাস্তার দুপাশের বিচ্ছিন্ন পাহাড়ি ঘর। বাঘাইহাট বাজারের পর গঙ্গারাম মুখ। দুপাশ থেকে বয়ে আসা দুটি নদী এক হয়েছে এখানে। পাহাড়ের বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া সর্পিল নদী চলে গেছে দূরের পথ ধরে।

মুক্ত আকাশের নিচে বিশাল সমৃদ্ধ বনভূমির সন্ধান কেবল সাজেক ভ্যালির পথে। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে জুম চাষ, কয়েক রকমের জুম চাষে ভরপুর পাহাড়। রাস্তাগুলো এতো সরু ও উচু নীচু যে গাড়ী উপরে উঠা খুবই কষ্টকর। তাছাড়া রাস্তার দুইপাশ এতো ঘন কাশবন যে বিপরিত দিক আসা গাড়ীর অস্থিত্ব বুঝাই যায় না। প্রতি পদে পদে এক্সিডেন্ট এর ভয়ে মন আরোষ্ট হয়ে থাকে।

মাচালং বাজার থেকে সাজেকের পথের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। বন্ধুর পথ দুপাশেই আকাশচুম্বী পাহাড়ের বুকে উদ্ধত শিখর তুলে দাঁড়িয়ে আছে বৃক্ষরাজি। দীর্ঘজীবি বৃক্ষের দেখা মেলে এই পথে, মাঝে মাঝে বিচ্ছিন্ন বসতি। এই সব বসতির ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা আপনাকে দু হাত তুলে টাটা বাই বাই দিয়ে স্বাগত জানাবে। ভুলে গেলে চলবে না যে সব পর্যটক সাজেক ভ্রমনে যায় তারা ঐ সকল বাচ্চাদের জন্য প্রচুর চকলেট ও খাবার সামগ্রী নিয়ে যায়। আর এ জন্যই ছোট ছোট বাচ্চারা রাস্তায় পর্যটকদের টাটা বাই বাই দেয়ার জন্য দাড়িয়ে থাকে।

দূরের পাহাড়ে মেঘের গড়াগড়ি দেখতে না দেখতেই আমরা পৌঁছে যাই সেই মেঘের রাজ্যে। এক সময় উঁচু পথের সমাপ্তি হয়, পা রাখি রুইলুই পাড়ায়। এটা সাজেক উপত্যকার মূল কেন্দ্র।
রুইলুই পাড়ায় লুসাই, পাংখোয়া, ত্রিপুরা— জনগোষ্ঠীর বসবাস। পাড়ার সবগুলো বাড়ির রং লাল–সবুজ।
রুইলুই পাড়ার নিচ থেকে প্রধান উপত্যকার অংশ শুরু।

এখানে পাহাড়ের গায়ে হেলান দিয়ে আকাশ ঘুমায়, পাহাড়ের বন্ধনহীন মিলন দেখা যায়। কোথাও কোথাও তুলার মতো দলছুট মেঘের স্তুপ ভেসে বেড়ায় পাহাড়ের চূড়ায়, যেন স্বপ্নরাজ্য। রুই রুই পাড়ার শেষ প্রান্তে হেলিপ্যাড। তার পাশেই পাহাড়ের কোলজুড়ে নির্মাণ করা হচ্ছে অবকাশ কেন্দ্র। এখানে বসলে মিজোরামের পাহাড়গুলো চোখের সামনে উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে অন্যরকম এক রূপ নিয়ে। সাজেক পাহাড় আর ভারতের পাহাড়ের মাঝখানে বিশাল এক উপত্যকাঞ্চল। এটাকে মেঘপুরীর উপত্যকাও বলা যেতে পারে। বর্ষাকালে এখানে থাকে মেঘমালার অবাধ বিচরণ। পাহাড়ের প্রশস্ত বুক, আদিবাসীদের ঘর-বসতি ও নির্জন প্রকৃতির সঙ্গে দারুণ এক সখ্য আছে ভাসমান মেঘপুঞ্জের। সাজেক ভ্যালি পরির্দশনের পর আমরা আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। সেই গতানুগতিক জীবনধারায়, একঘেয়ে কর্মক্ষেত্রে। মাঝে থেকে চার দিন কেটে গেলো এক অদ্ভুত এক প্রকৃতির সান্নিধ্য, যা চিরদিন শ্মৃতির পাতায় অম্লান হয়ে থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৩২
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×