somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মি. বিকেল
আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

ভার্চুয়াল লাইফ(ফেসবুক)

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :






“ফেসবুক ঠিক যেমন করে আমাদের দূরের বন্ধুদের/পরিচিতদের কাছে এনে দিচ্ছে ঠিক তেমনি দূরত্ব তৈরি করছে বাস্তবতার সাথে।”
- উক্তিটি একজন ঢাবিয়ানের।

ফেসবুক সাধারণত মানা হয় ব্যক্তিগত প্রমোশনের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে।এখানে আপনি নিজেকে বেশ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন।বলতে গেলে নিজেকে পারফেক্ট রুপে উপস্থাপন করতে পারবেন।বাস্তব জীবনে এত সময় থাকে না নিজের শব্দচয়নের ব্যাপারে সতর্ক থাকার।কিন্তু এখানে সময় নিয়ে আপনি একদম সঠিক বিষয়টি উপস্থাপন করতে পারবেন ঠিক যেমনটি করে আপনি চান।এখানে যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি অসুবিধাও রয়েছে।এখানে আছে ফ্রিডম অব স্পিচ।আবার একজন ফেসবুকখোর ফেসবুকিং করতে করতে ভুলে যায় যে, তার পাশে একজন মানুষ আছে কথা বলার জন্য।সুতরাং একদিকে যেমন আমাদের কল্পনার পৃথিবী তৈরি, বড় হচ্ছে হচ্ছে আবার অন্যদিকে দেয়াল তৈরি হচ্ছে বাস্তবতার সাথে।

ব্যক্তিগত জীবনে ঋত্বিক রোশান না হতে পেরেছেন তো কি হয়েছে! বিভিন্ন আপ্লিকেশন/সফটওয়্যারের মাধ্যমে আপনাকে সে সুযোগটাও করে দিচ্ছে বর্তমানের টেকনোলজি।এজন্যই ফেসবুকের আপনার প্রেমিকা ক্যাটরিনা কাইফ কে বাস্তব জীবনে জরিনার মত দেখে বড়সড় শক্ খেয়ে অনেকেরই আধমরা হয়ে পরে থাকার ঘটনাও ঘটছে অহরহ।একটু অন্যভাবে চিন্তা করুন, ফেসবুক কিন্তু আবার ব্যক্তিবিশেষের মতামতের একটা বিশাল বড় জায়গা করে দিচ্ছে অন্যদিকে ফেসবুক আবার সেই ব্যক্তিটিকেই উপরে তুলে দিচ্ছে যার সোশ্যাল স্ট্যাটাস বেশি।মানে দিনশেষে রাজার ছেলে রাজা এবং প্রজার ছেলে প্রজা-ই থেকে যাচ্ছে।যার চেক ইন ফরেইন কান্ট্রিতে, বড় বড় শহরে, বড় বড় রেস্তোরাঁয়, বড় বড় ইভেন্টে তার প্রোফাইল/আইডিতে লাইক কমেন্টস্ এবং ফলোয়ারও বেড়ে যাচ্ছে ঠিক সেই অনুযায়ী।এখানে আপনি যেমন খুঁজে পাবেন বড় বড় মানুষদের খুব সহজে ঠিক তেমনি কিছু অদ্ভূত মানুষ আপনার আইডিতে প্রবেশ করে আপনার মাথাটা খেতে পারে।


এবার আসা যাক, আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গে।আজকাল অধিকাংশ প্রেম হচ্ছে সোশ্যাল ওয়ার্ল্ডে তথা ফেসবুকে।মেয়েদের ইনবক্স কখনো কি ঘেঁটে দেখেছেন? ম্যাসেজে জর্জরিত সদ্য ফেসবুকের বাসিন্দা ভাবে আমি কাকে এক্সেপ্ট করবো? কার সাথে কথা বাড়াবো? অনেক সময় সে মেয়েটা বেছে নেয় “এ টু জেড” ফর্মূলা।গণহারে ম্যাসেজ পাচ্ছেন আর সময় পেলে সবাইকে একই কথা বলে বেড়াচ্ছেন।একটা সম্পর্কের জায়গায় একই সাথে সম্পর্ক করছে ডজন খানেক।কারণ এতগুলো সম্পর্ক মেইনটেইন করাও খুব সহজ ফেসবুকে।কিন্তু ছেলেদের আইডিতে সবসময় এমনটা নাও ঘটতে পারে।তাদের হাতে অপশন কম থাকায় তারাও ডজন খানেক না হলেও গণ্ডাখানেক তো করছে।আমি জানি আপনি এখন একটা প্রশ্ন করার জন্য উঠেপড়ে লাগবেন যে, তাহলে বাকি মেয়েরা কাদের হাতে? উত্তরটা খুব সহজ।বাকিগুলো নির্দিষ্ট কিছু ছেলেদের হাতে।হয়তো মেয়েরা ভাবছে আমরা জিতে গেছি, হয়তো ছেলেরা ভাবছে ফেসবুকে ডিনার করতে পয়সাও লাগছেনা।কিন্তু দিনশেষে ঠকছে উভয় দলই।বাড়ছে নোংরামী।আজ ব্রেক-আপ হলে আগামীকাল অন্য কারো সাথে “ইন এ্যা রিলেশনশীপ” দেয়া হয়ে যায়।এভাবে কতবার যে এই স্ট্যাটাস পরিবর্তন হতে থাকে তার হিসেব নেই।কিন্তু আমরা নীচে নামছি ফর শিউর।কারণ, চ্যাট সেক্সে বা ফোন সেক্সে আমরা যা বলি তা আর কতজনকে বলবো? ফলে হারিয়ে যাচ্ছে ভালোবাসার সত্যিকার স্বাদও।যে শব্দ শুনলে লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে আসতো এখন সে শব্দ শুনলে খুব বেশি পরিচিত এবং একঘেয়েমী লাগে।ফলে একরকম নাটক আমরা ঘটতে দিচ্ছি এবং ফেঁসে যাচ্ছি এই নেভার ইন্ডিং লুপে।কিন্তু আবার এই ফেসবুক না থাকলে অনেক সুন্দর সুন্দর সম্পর্ক আজ হতে দেখতাম না।সত্যিকার মানুষকে ফেসবুকে খুঁজে পেয়েছেন এমন ঘটনাও বিরল নয়।এজন্যই হয়তো ফেসবুক ডেটিং অপশন খুলতে যাচ্ছে।


এবার আসা যাক আইডি নিয়ে কিছু গল্পকথা।গার্লফ্রেন্ড তার বয়ফ্রেন্ডকে ফেসবুক পাসওয়ার্ডও আজকাল দিয়ে রাখে।এবং বয়ফ্রেন্ডও তার পাসওয়ার্ড দেয় তার গার্লফ্রেন্ডকে।কি লয়্যালটি মাইরি!
কিন্তু এতে করে ব্যক্তিস্বাধীনতা যে কতখানি হরণ হচ্ছে সেদিকে কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই কারো।কারণ ঐ একটা মানুষ ছাড়াও প্রতিদিন আপনাকে অনেক মানুষদের সাথে ডিল করতে হয়।এখন কে কি বললো আপনাকে তা ঘরে বসে দেখবেন আপনার গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ড।বাহ্! এ যেনো জনম জনমের সেই ভালোবাসার ইতিকথা।তবে এতে সম্পর্ক জটিলতায় রুপ নিচ্ছে।আবার আমাদের মধ্যে কেউ কেউ শর্ট-টেম্পায়ারড্।বন্ধুর সাথে একটু ঝামেলা হয়েছে কি না হয়েছে তাকে সোজা ব্লকলিস্টে দিতে আমরা একটুও সময় নেই না।পরে কেউ কেউ আবার ক্ষমা চেয়ে নেয় আর কারো কারো বন্ধুত্বটা আর আগের ট্রাকে ফিরে আসে না।একদম হারিয়ে যায় পাঁচ বছর কি দশ বছরের মিষ্টি বন্ধুত্বটা।পরে আফসোস আর দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কোনো রাস্তা থাকে না।


“একসময় যার সাথে ফেসবুকে চ্যাটিং না করে দিন কাটত না কিন্তু আজ সে ব্লকলিস্টের সবার উপরে।”
- উক্তিতে একজন ফেসবুকবাসী


এই উক্তি দিয়েই আমি এই লেখালেখিটা শেষ করতে যাচ্ছি।যাইহোক, আপনি আমার ফেসবুক বন্ধু তালিকায় রয়েছেন তো? কারণ, আজকাল মানা হয় ফেসবুকে যে নেই, সে বাস্তব জীবনেও নেই।আর আমরা স্বপ্নকে বেশি পছন্দ করি, কারণ স্বপ্নগুলো মিথ্যে।
ভালো থাকুক ফেসবুক, বেঁচে থাকুক আজীবন।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:২৭
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×