somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ সংবিধান বিষয়ে ফরহাদ মাজহারের সাক্ষাতকার

০২ রা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা জিনিস বুঝতে হবে, গণমানুষের ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য জালিমদের উৎখাত করার যে আন্দোলন সেটা আর কমিউনিস্ট আন্দোলন এক না। কমিউনিজম আবার ভিন্ন জিনিস। কমিউনিজম ইসলামের শুরু থেকে ছিল। এটা কাল মার্কস আবিষ্কার করেননি। কমিউনিজমের সঙ্গে ইসলামের বড় কোনো অমিল নেই। ইসলাম রক্ত মানে না, বর্ণ মানে না, গোত্র মানে না, জাতীয়তাবাদ মানে না। সুতরাং ইসলামের চেয়ে বড় সাম্যবাদী দর্শন পৃথিবীতে আর নেই। ইসলাম কেন কমিউনিজমকে ভয় পাবে? বরং নাস্তিকতা মূলত কমিউনিজমের সর্বনাশ ঘটিয়েছে। নাস্তিকরা আধ্যাত্মিক শক্তিতে বিশ্বাস করে না। রুহানি শক্তিতে বিশ্বাস করে না। আর সে জন্য সারা পৃথিবীতে নাস্তিকদের পতন হয়েছে।

লিখনী : ১৯৭২ সালে গৃহীত সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা মূলনীতি হিসেবে স্থান পেয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের আগে কোনো আন্দোলন, সংগ্রাম বা ইশতেহারে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রসঙ্গ আলোচিত হয়নি। এ ছাড়া সংবিধান প্রসঙ্গে জনগণের কোনো রায় নেয়া হয়নি। তাহলে ধর্মনিরপেক্ষতা সংবিধানে কীভাবে এলো, কেন এলো?

ফরহাদ মজহার : মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া হয়েছে ১০ এপ্রিল। এ ঘোষণায় বলা হয়, আমরা একটি সংবিধান সভা গঠন করবো। যদিও জনগণ তাদের পাকিস্তানের সংবিধান প্রণয়নে ভোট দিয়েছে, তবুও ধরে নেয়া হলো তারা বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধি। সে সময় তারা স্থির করলো ৩টি নীতির ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধ অনুষ্ঠিত হবে। তা হলোঃ এক. সাম্য, দুই. মানবিক মর্যাদা ও তিন. সামাজিক ন্যায় বিচার বা ইনসাফ। এর মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতা ছিলো না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে গেলে মূলত এ তিনটিই। কিন্তু এটাকে নস্যাৎ করে দিয়ে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির আলোকে একটা সংবিধান প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর এ সংবিধান প্রণয়নে স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণকে সুযোগ দেয়া হয়নি। পাকিস্তান সংসদের জন্য নির্বাচিতরাই বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন করেছে। তারা স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য নির্বাচিত ছিলেন না। এ ছাড়াও সংবিধান ইস্যুতে তারা দেশের মানুষের কোনো রায় নেননি। এর মাধ্যমে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের মানুষকে সংবিধান প্রণয়নের অধিকার থেকে সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে। ৪২ বছর ধরে এ বঞ্চনার ইতিহাস চলছে, জনগণ এখনও এ বঞ্চনা বয়ে বেড়াচ্ছে।
প্রকৃতভাবে এ সংবিধানকে জনগণের সংবিধান করতে হলে সরকারকে সংবিধান সভা আহ্বান করতে হবে। আর সেই সংবিধান সভাতেই ঠিক হবে জনগণ আসলে কী চায়। সেখানে উত্থাপন করা হবে যে ৩টি নীতিতে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে সেগুলো এবং জনগণকে সুযোগ দিয়ে বলতে হবে এখন তারা কী চায়। এটাই জনগণের নতুন সংবিধান প্রণয়নের একমাত্র সমাধান।
আরেকটা সমাধান হতে পারে, তা হলো জনগণ গণজাগরণের মাধ্যমে সংবিধান প্রণয়নের ক্ষমতাগ্রহণ করবে এবং তারা নতুন একটি সংবিধান প্রণয়ন করবে। আর সেটাই হবে দেশের প্রকৃত সংবিধান। এটা আগামী দিনে ঘটতে পারে।

লিখনী : বর্তমান সরকার সংবিধান সংশোধন করে মূলনীতি ও কাঠামো নির্ধারণ করেছে এবং বলেছে এই মূলনীতি ও কাঠামো পরিবর্তন করা যাবে না। যদি কেউ করে তাহলে রাষ্ট্রদ্রোহিতায় অভিযুক্ত হিসেবে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- হতে পারে...

ফরহাদ মজহার : আমি এটা দেখেছি এবং আশ্চর্য হয়েছি। পৃথিবীতে এমন বহু মূলনীতি হয়েছে। পাকিস্তানও মূলনীতি করেছিলো। সেই মূলনীতিটি কি টিকেছে? টেকেনি। সুতরাং এই মূলনীতিও টিকবে না। এসব তো রাজনৈতিক ইস্যু। এসবের সমাধানও হতে হবে রাজনৈতিকভাবে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার বলে সংসদে বসে সংবিধান সংশোধন করে সব কিছুর সমাধান করা যাবে না। পুলিশকে দিয়ে গুলি করে সব কিছুর সমাধান করা যাবে না।
...
এখন ইসলাম নিয়ে কথা বললে, ইসলামি পোশাক-পরিচ্ছদ পড়লে রাজাকার বলা হয়। কেন? আমরা তো ঐতিহাসিককাল থেকে ধার্মিক। ধর্ম আমাদের রক্তে-মাংসে মিশে আছে। ধর্ম আমাদের ঐতিহ্য-সংস্কৃতি। আমাদের কথাবার্তায় আরবি, ফার্সি শব্দের প্রয়োগ হয়। এটা তো দোষণীয় কিছু নয়। আমরা জন্মের পর মুসলিম ঐতিহ্যে বেড়ে উঠেছি।

বিস্তারিত
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×