somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ট্যাকা দেন, দুবাই যামু-২: রেমিট্যান্সের হিসাব নিকাশ

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ট্যাকা দেন, দুবাই যামু-১: স্বপ্নের দেশে যাওয়া

বিশ্বব্যাংকের হিসাবে বর্তমানে পৃথিবীর ২১৫ মিলিয়ন লোক জন্মভূমিতে থাকে না। তবে, তারা উদ্বাস্তুও নয় সে অর্খে। ওরা অভিবাসী। আমেরিকা, রাশিয়া ফেডারেশন, জার্মানি, সৌদি আরব আর কানাডা হলো অভিবাসীদের পছন্দের দেশ। তবে, জনসংখ্যার অনুপাতে অভিবাসী নির্ভর দেশ হলো – কাতার (৮৭%), মোনাকো (৭২%), আরব আমিরাত (৭০%) এবং কুয়েত (৬৯%)।
২০১০ সালে বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৪৪০ বিলিয়ন ডলার এর মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলো পেয়েছে ৩২৫ বিলিয়ন। যারা পেয়েছে তাদের মধ্যে শীর্ষে হল ভারত, চীন, মেক্সিকো, ফিলিপাইন এবং ফ্রান্স। আউটওয়ার্ড রেমিট্যান্সের শীর্ষ দেশগুলো হল আমেরিকা, সৌদি আরব, সুজারল্যান্ড ও রাশিয়া।
বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির নানান চড়াই-উৎরাই, মন্দাভাব থাকা স্বত্তেও বিশ্বব্যাংকের হিসাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে বৈকি কমবেনা। তাদের হিসাবে এই বাড়ার হার এই বছরে মানে ২০১২ সালে প্রায় ৭.৩%, ২০১৩ সালে হবে ৭.৯% এবং ২০১৪ সালে সেটা দাড়াবে ৮.৪%-এ। এর মানে হচ্ছে ২০১৪ সাল নাগাদ বাৎসরিক রেমিট্যান্সের পরিমাণ হবে ৫১৫ বিলিয়ন ডলার!
সাম্প্রতিককালে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম আরো বেড়েছে। এখন এটা প্রায় ১০০ ডলার। তারমানে ওরা আরো বড়লোক হবে। তবে, গালফ কোঅপারেশভুক্ত দেশগুলো কিন্তু এখন আর বোকা নাই। তারা তাদের নিজেদের লোকদের এপ্লয় করতে চাচ্ছে। তাদেরকে শিক্ষিত এবং দক্ষ করার জন্য চেষ্টা করছে। ফলে, এই দেশগুলোতে নানান ধরণের হিসাব-নিকাশ হচ্ছে এখন অভিবাসীকে কেন্দ্র করে।
আশপাশের দেশগুলোর পরিস্থিতি দেখা যাক। প্রতিবেশী ভারত হলো বিশ্বের সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স প্রাপ্তির দেশ। প্রতিবছর সেটা বাড়ছে। ২০১১ সালে ছিল ৫৮ বিলিয়ন। মজার বিষয় হচ্ছে ২০১১ সালে আরব দেশগুলো থেকে তাদের রেমিট্যান্স বেড়েছে।
ফিলিপাইন- ২০১১ সালে ২৩ বিলিয়ন ডলার কামিয়েছে। ২০১১ সালে ওদের প্রবৃদ্ধ হলো ৭%। মধ্যপ্রাচ্য ছাড়া ওরা আমাদের প্রতিদ্বন্দী হংকং, সিঙ্গাপুরেও।
পাকিস্তান- ১২ বিলিয়ন ২০১১ সালে। ২০১১ সালের গ্রোথ হচ্ছে ৩১%!!! পাকিস্তান সরকারের একটি রেমিট্যান্স ইনিশিয়েটিভ আছে যা প্রবাসী পাকিস্তানীদের ফরম্যাল চ্যানেলে টাকা পাঠাতে উতসাহিত করে।

সৌদিসরকারের নিটাকাত আইন আছে। এর মানে হলো কোন দেশ থেকে ২০% লোক এক কোম্পানিতে নেওয়া যায় না। কিন্তু হাউসকীপারের বেলায় এটি প্রযোজ্য নয়। সৌদি আরবে হাউস কীপারদের মধ্যে ফিলিপিনো আর শ্রীলংকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।
বিশ্বব্যাংকের হিসাবে অভিবাসী প্রতি রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ –

ফিলিপাইন ------------------------ ৫,৩৭৯ ডলার
ভারত ----------------------------- ৫,১০৫ ডলার
ভিয়েতনাম ------------------------ ৪,০৪২ ডলার
পাকিস্তান -------------------------- ২,৫৬৪ ডলার
বাংলাদেশ-------------------------- ২,২২৮ ডলার

বোঝায় যাচ্ছে যে, আমাদের অভিবাসীদের মধ্যে দক্ষ লোকের সংখ্যা কম। আমরা কমমজুরীর কাজগুলো করছি। গতকাল প্রথম আলোতে আমার লেখা পড়ে মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান আমাকে ফোনে জানিয়েছেন যে, সৌদি আরবে উনি অনেক বাঙ্গালি অবিবাসীকে দেখেছেন যারা বাংলাদেশী টাকায় মাত্র ৩-৫০০০ টাকা বেতন পান! এই সামান্য কয়টি টাকার জন্য কত পরিশ্রম তারা করে এবং কতো টাকা খরচ করে গিয়েছেন তার খবর কে জানে!
মাস কয়েক আগে সিঙ্গাপুর গিয়ে আমার একটা অভিজ্ঞতা হলো। সেখানকার সবচেয়ে বড় শিপবিল্ডিং কোম্পানিতে একজন বাংলাদেশী ওয়েল্ডার মাসে ৮০০ ডলার পেলে ভারতীয়রা পান ২২০০ ডলার। কারণ তাদের একটা সার্টিফিকেশন আছে যেটা আমাদের ওয়েল্ডারের নাই।
আজ পত্রিকায় দেখলাম আগামীতে বিদেশে কর্মসংষ্থানে যাওয়ার লোকের পরিমাণ ৫০০% বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে আমাদের এখন থেকে কী কী করা উচিৎ যাতে কীনা আমাদের গড় রেমিট্যান্স বাড়ানো যায়?

নেপালের মতো ছোট্ট দেশের রেমিট্যান্স ইনকাম তাদের ডিডিপির ২৪% এবং আমার ধারণা আমাদের দেশের বেলায়ও সেটি করা সম্ভব।

প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে?

উত্তর আমি জানি না। খুজে বেড়াচ্ছি। বের করে ফেলবো ইনশা আল্লাহ!


সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:০৬
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×