somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের দিনবদলের গল্প-এক

১১ ই এপ্রিল, ২০১০ সকাল ৮:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছু দিন দেশে ছিলাম না। মাত্র দশ দিন। এর মধ্যে দেখি অনেক কিছু বদলে গেছে। বাসার অদূরে যে চওড়া রাস্তাটি ছিল সেটি বদল হয়ে, তার মোটাতাজা শরীরটা কমে গিয়ে বেশ স্লীম হয়ে গেছে। কর্পোরেট দুনিয়ায় বাজারী সৌন্দর্য্যরে বিকিকিনি চলে। ওখানে স্লীম ফিগারের অনেক কদর। কিন্তুু রাস্তার সৌন্দর্যতো এ রকম সূচকে নির্ধারিত হয় না বলেই জানি। বরং এ মহানগরীর রাস্তাগুলো পর্যাপ্ত চওড়া নয় বলে আমরা আফসোস করি। যানজটে প্রতিদিন নষ্ট হয় আমাদের উৎপাদনে বিনিয়োগযোগ্য মেলা মেলা সময়। যে রাস্তাটির দিন এবং রাত বদল হয়েছে, খুব সামান্য সময়ের ব্যবধানে, সে রাস্তার দু’পাশে ছোট ছোট কাঠের চকি বসিয়ে অনেকটা স্থায়ীভাবে কাঁচা বাজার বসেছে। চকির ওপর বসা বাজার, বাজারের ক্রেতা মিলে চওড়া রাস্তার মোটা-তাজা শরীরের প্রায় অর্ধেকটাই দখলে রেখেছে। থানা-পুলিশ সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় রাস্তাটিকে কোন প্রক্রিয়ায় স্লীমিং পিল খাওয়ানো হলো তা জানার আগ্রহটা কোনভাবেই ধরে রাখতে পারলাম না বলে এক বিকেলে ক্রেতা হয়ে সে কাঁচা বাজারে যাই। দু’একটা আইটেম কিনতে কিনতে জিজ্ঞেস করি, রাস্তার ওপর দোকান বসাতে পারার রহস্য ও মাজেজা। দোকানীরা কোন প্রকার রাখঢাক না রেখেই জানান দেন। বলেন, আগামী পাঁচ বছরের জন্য তারা বন্দোবস্ত নিয়েছেন। বড় ভাই বন্দোবস্ত করে দিয়েছেন। এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এ আগামী পাঁচ বছরের হিসাব হচ্ছে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন-ক্ষণের হিসাব। আর বন্দবস্তকারী বড় ভাই হচ্ছেন সরকারী দলের স্থানীয় কোন নেতা বা নেতাগোষ্ঠী। প্রশাসন, সিটি করপোরেশন বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাস্তা দখল করে দোকান বসাতে সক্ষম সরকারী দলের স্থানীয় নেতা বা নেতাগোষ্ঠী কারা সেটি জানার আগ্রহ আর তৈরি হয় না। নিজের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই। তারপরও প্রতিদিন যখন এ রাস্তাটি পেরুতে হয়, অনেক ভীড় সামলে এগুতে হয় তখন সত্যি সত্যি টের পাই এ রাস্তা দিয়ে আমাদের পারহওয়ার দিনগুলো বদলে গেছে। দিন হয়তো কিছুটা বদল হয়েছে চকির ওপর বসা ছোট ছোট ক্ষুদে উদ্যোক্তাদেরও। যারা তরিতরকারি, কাঁচা সব্জি বিক্রি করছে প্রতিদিন। তবে কতখানি, কতটা টেকসই উপায়ে? আওয়ামীলীগ-বিএনপির ক্ষমতা আরোহনের পালবদল ও দিনপুঞ্জির অভিজ্ঞতা থেকে হলফ করে বলা যায়, যেসব দরিদ্র ক্ষুদে উদ্যোক্তারা সব্জি বিক্রি করছেন, তারা রাস্তা দখলের দৃশ্যমান চরিত্র। আসল চরিত্রগুলো আড়ালে-আবডালে। দিন অথবা সপ্তাহের কোন এক সময় তারা প্রকশ্যে আসেন। অল্প সময়ের জন্য। আমরা তাদের চিনি অথবা চিনি না। দরিদ্র সব্জি বিক্রেতার সারা দিনের পরিশ্রমে যে মুনাফা বা উৎবৃত্ত তৈরি হয় অনুমান করি, তার সিংহভাগই যায় তাদের পকেটে। বড় ভাইদের কোষাগারে। অথবা হতে পারে মূল বিনিয়োগও তাদের। সব্জি বিক্রেতারা কেবল শ্রম বিক্রি করে দিনের শেষে সামন্য মজুরি পান। যা দিয়ে কোন মতে দু'বেলা খাবার জোগাড় হয়। ফলে দারিদ্র্য সীমারেখার ওপরে উঠা বা শ্রেণী উত্তরণের মধ্য দিয়ে যে দিনবদল এর সম্ভাবনা সেটি দরিদ্র সব্জি বিক্রেতার কাছে থাকে অধরা। তারা কেবল বড় ভাইদের দিনবদলের প্রক্রিয়ায় উসিলা হয়ে থাকে। মাধ্যম হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। দিনের পর দিন। কখনো নৌকা আবার কখনও ধানের শীষের ব্যনারে। আর প্রকৃত আর্থনীতিক দিনবদলটা ঘটে কথিত বড় ভাইদের। আর দিন বদলের অংশ হিসেবে সংকূচিত হয় জনমানুষের চলার পথ, তাদের স্বপ্ন, তাদের সম্ভাবনা।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×