প্রতি বছরের ন্যায় গত রাতে অর্থাৎ ২০ই ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা থেকেই পুরোদমে শহীদ মিনার বানানো সহ বিবিধ কাজে ব্যস্ত হয়ে যাই ! বাসায় ফিরি প্রায় ভোর রাতে ! বিছানাটা একটু ভালো করে ঝেড়ে ঝুরে নেই যাতে পুরোনো ধুলো বালিগুলো ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটায় ! ফজরের আজান কানের তালা খুলতে পারেনি কিন্তু আম্মু নামাজ শেষে এসে দরজায় টাকাটাকি, ঘুম অল্প ভাঙলো, ভাবলাম এতো তাড়াতাড়ি আজ দুপুর হয়ে গেলো !!! ওপাশের রুমে বাবার কোরআন তেলাওয়াতের আওয়াজ পেয়ে একটু আগের ভাবনাটা থামাতে না থামাতেই আম্মার কণ্ঠে নামাজ পড়ার আদেশটা দরজা দেয়াল টপকে কানে পৌঁছে গেলো; পাশাপাশি বাবার ব্যঙ্গ বিদ্রুপের বাণী যদিও ঘুমের কারণে পুরোটা তখন আন্দাজ করতে পারিনি ! আবার ঘুমিয়ে গেলাম, নামাজ পড়া আর হয়নি ! আবার দরজায় টাক পড়লো এমন জোরে যে এবার না উঠে পারলাম না ! অতঃপর উঠলাম, দরজা খুললাম, মায়ের হাতে একটা চিনামাটির বাটি দেখলাম, পায়েসের ঘ্রান পেলাম, হঠাৎ পায়েসের আয়োজন ? আম্মুর মৃদু হাসিটা দেখে অচিন্তনীয় ভাবনার কোনে জমা হলো "ওহ আজ তো ২১'শে ফেব্রুয়ারী এই অধমের জন্মদিনও" !
সংসারে আমাদের তিন ভাই-বোনের জন্মদিনটা মা এভাবেই পায়েস দিয়ে উদযাপন করে এসেছেন ! কোনোদিন কেক কাটিনি ! এ জন্য কোনো কষ্টও নাই ! লজ্জাও নাই !! জন্মদিনে একটাই গিফট পেয়েছিলাম ! অনেক বছর আগে এক বান্ধবী একটা কফি মগ গিফট করেছিল !
বাবার ডায়রিতে আমার জন্ম তারিখটা লেখা ছিল এভাবে, আন্টির রাখা প্রিয় নাম:........, তারিখ: ২১শে ফেব্রুয়ারি, ৮ই ফাল্গুন, ৯ই রমজান, সোমবার,সময়: সন্ধ্যা ৭:২০ মিনিট !
জন্মদিনে পায়েসে ফুঁ দিয়ে মোমবাতি নিভাই আর পায়েসকেই কেক মনে করে খাই !তবে জন্মদিনের চেয়ে মাতৃভাষা দিবসটাকেই বেশি মনে রাখি !
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৪৮