somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রেহানি জাবেরী ন্যায় বিচার পায়নি।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিজ্ঞান অথবা যেকোনো শাস্ত্রের রয়েছে সার্বজনীন রুপ ভাষার দিক দিয়ে রয়েছে স্বতন্ত্রতা;আইনস্টাইনের কাল দীর্ঘায়নের সমিকরনটি আমেরিকায় পড়ানো হয় ইংরেজিতে আর বাংলাদেশে পড়ানো হয় বাংলায় উভয় ক্ষেত্রে হিসেব কিন্তু একই আর এটাই হচ্ছে সার্বজনীনতা;
আইন ও একটা বিজ্ঞান,এর ও রয়েছে সার্বিজনিন রুপ বিভিন্ন ধরনের মতবাদের উপরই প্রতিষ্টিত হয়েছে এ বিজ্ঞান।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হয়তো বিভিন্ন ধরনের দন্ডবিধি অথবা বিভিন্ন ধরনের আইন রয়েছে তবে এটা কখনোই জুরিস্প্রুডেন্স এর সাথে অসামন্জস্যপূর্ণ নয়।
যদি হয় তবে সেটা আইন নয় আইনের নামে বর্বরতা।

রেহানি জাবেরি vs স্টেট;
মারাত্মক সমালোচিত একটা আদালতের রায়,সাত বছর কারাগারে থাকার পর গতো শনিবার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেছে তেহরানের একটি কারাগার।
ইরানের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সাবেক একজন কর্মকর্তাকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত রেহানি;আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে বলেছে ধর্ষণের চেষ্টারত ঐ ব্যাক্তির হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে যেয়ে সে ঐ ব্যাক্তির উপর ছুরিকাঘাত করেছে,সে এটাও বলেছে ঐ ঘরে আরও কেউ একজন ছিলো যে হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে। কিন্তু এর কোনো তদন্ত করা হয়নি।

মৃত্যু দন্ড দিতে হলে অপরাধীর প্রকৃতি,বয়স,চরিত্র,পরিস্থিতি,বিদ্বেষ মূলক মনোভাব,শত্রুতামূলক মনোভাব এই সব কিছুই বিবেচনায় আনতে হয়।
এই সব গুলোই সুপ্রতিষ্ঠিত নিতী।
এর ব্যাতিক্রম হলে স্পষ্টভাবে প্রতিয়মান হয় বিচারক উনার বিচারিক দৃষ্টি দিয়ে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন না।

যুগান্তকারী একটা মামলা R vs Dudeley[(1984)14 QBGD 273]
তিনজন মানুষ সমুদ্রে একটা নৌকায় ৭ দিন ভেসে ছিলো ক্ষুদার তাড়নায় তারা প্রায় মারা যাচ্ছিলো শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই দুইজন মিলে একজনকে মেরে ফেলে মাংস খেতে আরম্ভ করেছিলো;আদালত মামলার রায়ে এদের দুই জনকে অভিযুক্ত করেছিলো ঠিকই তবে বিচারক নিজে রাজাকে অনুরোধ করেছিলেন ওদের ক্ষমা করে দেয়ার জন্য এবং রাজাও ক্ষমা করে দিয়েছিলেন।
রোমান আইনে একটা জনপ্রিয় মতবাদ আছে jus necessity অর্থাৎ প্রয়োজন আইন মানেনা; আমাদের দেশেও এরকম বিধান আছে কেউ নিজেকে রক্ষা করার নিমিত্তে যদি আরেকজনকে হত্যা করে ফেলে তবে সেটা খুন নয় অপরাধমূলক নরহত্যা হতে পারে।

ব্যাক্তিগত আত্নরক্ষার অধিকার প্রয়োগ কালে কৃত কোনো কিছুই অপরাধ নয়। দন্ডবিধি ৯৬

জাবেরী এই কাজটাই করেছিলো কিন্তু রেহাই পায়নি।
সারা বিশ্বের মানবাধিকার সংঘটন গুলো অনেক অনুরোধ অনুনয় করেছিলো ওদের,মৃত্যুদন্ড কার্যকর না করার জন্য;তবুও ওরা করেছে।!

আসলে মূল ব্যাপারটা হচ্ছে নৈতিকতা;এটা বলা হয়ে থাকে"আইন ও নৈতিকতা এক না হলেও পাশাপাশি এবং সমান্তরালে চলে"
ন্যায় বিচার কখনোই প্রতিষ্টা পেতে পারেনা নৈতিকতা ছাড়া।

প্রসিকিউশন চাইলে যা ইচ্ছা তাই করতে পারে;একজন নির্দোষ কে দোষী সাব্যস্ত করা প্রসিকিউশনের জন্য কঠিন কিছু না যদি সে ধরেই নেয় বিচার যাই হউক তাল গাছ আমার।

ট্রায়ালে বিচারকের একটা শব্দের ব্যাবহার দেখে আঁতকে উঠলাম!
যখন বলা হয়েছিলো জাবেরী ছোটবেলা থেকেই ভিন্নরকম,সে একটা মশাও মারতো না, আরসোলা দের চটিপেঠা না করে শোর ধরে বাইরে ফেলে দিতো।
বিচারক তখন বলেছিলেন সে নাকি ছোটবেলা থেকেই পুরুষালি স্বভাবের!কী হাস্যকর!!!
বিচারিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে এটাও ভাবা যেতো#জীবের প্রতি মেয়েটার মায়া মমতা অপরিসীম আর তাই সে এগুলোকে হত্যা না কিরে শোর ধরে বাইরে ফেলে দিতো।
জাবেরী ন্যায় বিচার পায়নি তবে মানবতার নজীর স্থাপন করে গিয়েছে।
দান করে গিয়েছে তার দেহ,বলে গিয়েছে আমি মাটির সাথে মিশে যেতে চাইনা আমার দেহটা যেন অন্য আরেকজনের উপকারে আসে এবং যার উপকারে আসবে সে যেন আমার নামও না জানতে পারে।

মৃত্যুকে সে বলেছে নিয়তির বিধান একটু অনুতপ্ত হয়নি তাই।

আক্ষেপ করেই বলেছে বিচারের সাথে অর্থ ও সামর্থ্যর ব্যাপারটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
সৃষ্টি কর্তার এজলাসে সে অভিযোগ জানাবে একদিন, সেদিন সে অভিযুক্ত করবে সেই বিচারক,পুলিশ ও আইনজীবীদের যাদের কারনে সে সুবিচার পায়নি।

পুনশ্চঃ এটা নিতান্তই সাধারণ লেখা মাত্র;এগুলো অর্থহীন তবে যদি একটু বোধ শক্তি সৃষ্টি হয় কারও ভেতরে তাহলে এরকম রেহানি জাবেরিদের মতো অসহায় মানুষ গুলো একটু হলেও উপকৃত হতে পারে কোনো একদিন।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×