somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অফিস যাত্রা ( সম্পূর্ণ সত্য ঘটনা অবলম্বনে এ স্টোরি পম গানা-মিচন ইমপচিবল) :(( B-) ;) :)

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সকাল সোয়া ৮টার সময় অফিস থেকে কল। ডে-অফ এর দিনও অফিসের কল দেখেতো বুঝে গিয়েছি, কিছু একটা গণ্ডগোল নিশ্চয়ই হয়েছে। আসলেও তাই। কলিগের মামা মারা গিয়েছে। ডেস্কে আর কেউ আসে নাই। অফিস জিজ্ঞেস করল, আসা যায় কি-না। এমন অবস্থার কথা বললে মানা করাটা আমার অধিকার জানলেও বলা যায় না। অগত্যা রাজি হলাম। শর্ত হল আমি ২টার পর আর অফিস করবো না। এরপর আমার কাজ আছে। শুধু ৫ ঘণ্টার জন্য যাচ্ছি।

বাসা থেকে বের হতে গিয়ে দেখি মানিব্যাগে কোন টাকা নেই। শুধু ১৪ টাকা আছে। ক্যাশ তোলা নেই। মা-ও নেই বাসায়, বোনকে নিয়ে কোচিংয়ে গেছে। না হলে টাকা চেয়ে রাখতাম। শেষমেষ নিচে দারোয়ান এর কাছ থেকে ১০০ টাকা নিলাম ও বেরিয়ে পড়লাম।

১৪ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছালাম। ভাড়া দিলাম কাঁটায়-কাঁটায় ১৪ টাকা। হাতে রইলো ১০০। বাসের টিকেট কাটতে কাউন্টারে গেলাম। ১০০ টাকার নোট দেখে ফিরিয়ে দিল। ভাবলাম সকাল সকাল, তাই ভাংতি নাই। একটা হোটেলে ঢুকলাম একটা মিনারেল ওয়াটার কিনে টাকা ভাঙাতে। নোটটা বাড়াতেই কাউন্টারে বলল নোটটা নাকি জাল। আমিতো অবাক! আলোতে ধরে দেখি আসলেই তাই!

মেজাজ ততক্ষণে সপ্তমে নয়, অষ্টমে। কাঁচা ঘুম আর তপ্ত বেরসিক সূর্যকে সঙ্গী করে কয়েকটি রাস্তা পেরিয়ে সোনালি ব্যাংকের একটা এটিএম বুথ পেলাম। আমার কার্ড আইএফআইসি’র হলেও প্রায় সব ব্যাংকেই কাজ করে। যেহেতু শুক্রবার তাই ব্যাংকের দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করলাম বুথটা আবার ব্যাংকের ভেতরে কি-না। সেক্ষেত্রে তো বন্ধ থাকবে। দারোয়ান জানালো বুথ খোলাই আছে। ঢুকলাম। দু’টো মেশিনই নষ্ট।

বুঝে গেলাম দিনটা কেমন যাবে। আমিও ততক্ষণে নিয়তিরে কোর্টে বল ঠেলে দিয়েছি। যা ব্যাটা! ফাঁকা মাঠে কত গোল দিবি দে! আরো কিছুদূর হেঁটে ঢুকলাম আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের একটা বুথে। এবার বুথ ঠিক আছে, কিন্তু মেশিনের বাটন ঠিক নাই! একেকটা বাটন চাপলে ২০ সেকেন্ড পর আওয়াজ হয়ে প্রেস হওয়ার সংকেত দেখায়। এ কারণে ২ বার পিনকোড ভুল করলাম। দু’বারই Cancel দিয়ে কার্ড বের করে আবারও ঢুকাতে হল। তৃতীয় প্রচেষ্টায় টাকা বেরোলো। ততক্ষণে এটিএম এর দারোয়ান আমাকে নিশ্চয়ই গাড়ল ভাবছিলো।

টাকা তুললাম। সকাল সকাল হাতে ১০০০ টাকা, কিন্তু ৫০০ টাকার অতিশয় কচি দু’টি নোটের সহয়তায়। সেই নোট নিয়ে বাস কাউন্টারে যাওয়া যাবে না, ১০০ টাকাই ভাংতি পাওয়া যায়নি, ৫০০’র তো প্রশ্নই আসে না। আর এত সকালে কোন মহানুভবের দেখাও পাব না যে আমাকে ভাংতিটা দিয়ে উপকার করবে। অতঃপর কি আর করা, যে অফিসই আমার করারই কথা না তা করতে বাধ্য হয়ে আমাকে ১২০ টাকা ভাড়ায় সিএনজিতে উঠতে হল - এই আশায় যে সিএনজি চালকদের কাছে বড় নোটের সন্ধান পাওয়া যায়।

ওঠার পর চালককে জিজ্ঞেস করলাম ৫শ’র ভাংতি আছে কি-না। সে বলল, তার কাছে ৪০০ টাকা আছে, আমার কাছে ২০ টাকা হবে কি-না। জানালাম নেই। অতঃপর অফিসে কল করে আরেক কলিগকে দিয়ে অফিসের সামনের চায়ের দোকানে (দোকানদারের নাম লাদেন) ২০ টাকা বরাদ্দ করালাম। চায়ের দোকানে নেমে লুঙ্গি ঝুলিয়ে মোচওয়ালা পান চিবুতে থাকা ‍ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করলাম, “আপনিই কি লাদেন?” মাথা নেড়ে জানালেন, হ্যাঁ তিনিই লাদেন। টাকাটা বের করে দিলেন। পৃথিবীতে আর কেউ লাদেনের দেখা পেয়ে এত আনন্দিত হয়েছে কি-না জানিনা।

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৪০
৫৭টি মন্তব্য ৫২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×