বাংলাদেশ শব্দটি যেই মুহুর্তে উচ্চারণ করা হবে ঠিক সেই মুহুর্তে বাংলার মানুষের জননেতা মানুষের নেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নাম অগ্রে প্রতিষ্ঠা পাবে।আমাদের ইতিহাসের দুর্বলতার জন্য এই মহান নেতা ক্ষমতাশালী নেতাদের দাপটে আজ স্বৃতিহীন হবার জোগাড়।আমি মহাত্না গান্ধীর স্বৃতি কেন্দ্রে কয়েকবার গিয়েছি।আমি বোঝার চেষ্টা করেছি তাকে তার কর্মকে।জেনেছি।অনেক কিছু বুঝেছি।আমার মনে প্রথম প্রশ্ন ছিলো মহাত্মা গান্ধীকে ভারতের বাপুজি বলা হয় কেনো?আমার বন্ধুদের কাছেও এই বিষয় নিয়ে কথা বলেছি।তাদের মধ্যে কয়েক ধরনের মত আছে।তাদের অনেকে মনে করে থাকে গান্ধীকে কোন ভাবে এই দেশের পিতা হিসাবে মানার কারন নাই। আমি জানতে চাইলাম এটার কারন কি?সে আমাকে বল্লো গান্ধীর জন্য পাকিস্তান হয়েছে।অন্য আরেকজন মনে করে গান্ধী না জন্মালে এই উপমহাদেশ কখনই বৃটিষদের হাত থেকে রক্ষা পেতো না।
গান্ধী ভারতে এবং বিশ্ব জুড়ে মহাত্মা (মহান আত্মা) এবং বাপু (বাবা) নামে পরিচিত। ভারত সরকারীভাবে তাঁর সম্মানার্থে তাকে ভারতের জাতির জনক হিসেবে ঘোষণা করেছে । ২রা অক্টোবর তাঁর জন্মদিন ভারতে গান্ধী জয়ন্তী হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। ২০০৭ সালের ১৫ই জুন জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ২রা অক্টোবর-কে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে ঘোষণা করা। জাতিসংঘের সকল সদস্য দেশ এ দিবস পালনে সম্মতি জ্ঞাপন করে।
গান্ধী ক্ষমতামুখী ছিলেন না।নেহেরু নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুকে হটিয়ে কংগ্রেসের সভাপতির পদ দখল করে।অন্য দিকে গান্ধির অহিংস আন্দোলনের বিপরীতে নেতাজী সসস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নেন।অনেকে মনে করেন গান্ধীর অহিংসতার জন্য বৃটিশরা এই অঞ্চল থেকে হটে যায়নি বরং সুভাষের শিখিয়ে দেয়া সংগ্রামের পথ ধরে ভারতের স্বাধীনতা এসেছে।কিন্তু আবার অন্যদিক থেকে দেখলে দেখা যাবে গান্ধীর রাজনৈতিক অভিভাবকত্ব তাকে ভারতের জনক হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।তিনি ক্ষমতা লোভী ছিলেন না।অন্যদিকে বাংলাদেশের ইতিহাস ভিন্ন রকম।বাংলাদেশের ইতিহাসে নিয়মিত পরিবর্তন হয়েছে।একটি দেশ তার প্রকৃত অভিভাবক খুজে পেলো না।মাওলানা ভাসানী বাংলাদেশের প্রথম স্বাধিনতা ঘোষনা করেছিলেন।স্বাধীনতা সংগ্রামকে তিলে তিলে চুড়ান্ত ফলাফলের দিকে নিয়ে গেছেন।বাংলাদেশের সকল আন্দোলন সংগ্রামের জনক হিসাবে কাজ করেছেন।আসাম আন্দোলন থেকে কাগমারি সম্মেলন,ভাষা আন্দোলন,স্বাধীকার আন্দোলন,বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন,ফারাক্কা লংমার্চ সহ সকল আন্দোলন সংগ্রামের জনক হিসাবে কাজ করেছেন।তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা।তার প্রতিষ্ঠিত দল থেকে শামছুল হক,শেখ মুজি্ব,তাজউদ্দিন,নজরুল ইসলাম,প্রমুখের মত নেতা তৈরি হয়েছে।তার দলীয় প্রতিক নৌকা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিক।অন্যদিকে ধানের শীষও মাওলানার দলীয় প্রতিক ছিলো।তিনি স্ব ইচ্ছায় জিয়াউর রহমানের হাতে এই প্রতিক উপহার দেন।বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আপোষহীন ভাবে তিনি সামনের দিকে এগিয়ে গেছেন।তার আন্দোলনের মাঝ পথে শেখ মুজিব নানাভাবে পাকিস্তান শাসকদের এজেন্ট হিসাবে কাজ করে তাকে চুড়ান্ত অর্জন থেকে নিবৃত করে।অন্যদিকে মুজিব নিজের হাতে এদেশের নেতৃত্ব তুলে নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের সরকারি ক্ষমতা নেবার চেষ্ঠা করেছে।মাওলানা বহুবার তাকে সাবধান করেছে।তিনি একটি জনসভায় বলেছিলেন,মুজিব তুমি স্বাধীনতার আন্দলনের ঘোষনা না দিলে এদেশের মানূষ তোমাকে ক্ষমা করবে না।ইতিহাস কতটা নির্দয় এই শেখ মুজিব তার পাকিস্তানের বন্ধুদের হাতে ধরা দিলেন তবুও এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষনা দিলেন না।পাকিস্তানের ক্ষমতা লাভের আশায় তিনি অপেক্ষায় বসে ছিলেন।অন্যদিকে মাওলানাকে নানাভাবে পর্যুদস্ত করে এদেশের স্বাধীনতাকে সময়ের হিসাবে ফেলে দিলেন।ঠিক সেই সময়ে ইতিহাসের নায়ক হিসাবে জিয়াউর রহমানে উপস্থিতি বাংলাদেশ শব্দটি,বাংলাদেশ দেশটি চির জীবনের জন্য সংজ্ঞায়িত হলো।এদেশেরস্বাধীনতার সংগ্রামের ইতিহাসকে আওয়ামী লিগে নানা ভাবে ধংশ করবার চেষ্ঠা করছে।মাওলানা ভাসানীর নাম মুছে ফেলার জন্য নানাভাবে চেষ্ঠা করছে।আমি এটাও শুনেছি জাতীয় আর্কাইভ,চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদপতর থেকে নানা ফুটেজ এবং ডকুমেণ্ট নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।যেমন শেখ মুজিব নিজেই জিয়াউর রহমানে স্বাধীনতার ঘোষনা নিজের হাতে মুছে দিয়ে গেছেন,যাতে করে শেখ মুজিবের কোন দুর্বল দিক ভবিষতে বের হয়ে না আসে।বাংলাদেশ আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা হিসাবে মুজিবকে ভাবার কোন কারন নাই।তিনি বাংলাদেশের কিছু সংখ্যক জনগনের নেতা।এটাকে আমরা কোন ভাবেই অস্বিকার করতে পারবো না।কিন্তু অন্যদিকে মাওলানা ভাসানি সকল পক্ষের নেতা হিসাবে এখনো আছেন।সেটা আওয়ামী লীগ হোক,বি এন পি হোক বা বাম পন্থী সংগঠন গুলো হোক না কেনো।একটি জাতির জন্য এমন নেতা পাওয়া যাবে না।মাওলানা ভাসানি হতে পারে সকল ঐক্যের প্রতিক।তাকে ঘিরে বা তাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ধারা এখনো আবর্তিত হয়ে থাকে।এদেশের জাতির জনক বা বাংলাদেশের জনক বা স্বাধীনতার জনক বিষয়ে যে যাই বলুক না কেনো এই ক্ষেত্রে শেখ মুজিবের না অনেকটা পেছনে পড়ে থাকে।সেখানে যে নামটি উঠে আসে সেটা মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।মহাত্মা গান্ধী কখনও রাষ্ট্র ক্ষমতা চান নি।নেহেরুকে তিনি বানিয়েছিলেন প্রধান মন্ত্রী।মাওলানাও পাওয়ার পলিটিক্স করেন নি।পাওয়ার পলিটিশিয়ানরা ,ক্ষমতা লোভী হয়ে কেও জাতির পিতা হতে পারে না।সে ক্ষেত্রে মাওলানা ভাসানী উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের নাম।
মাওলানা ভাসানির সংগ্রামের ইতিহাসের দিকে যদি তাকায় তাহলে দেখব একজন জনদরদি মানুষের প্রতিকৃতি।তার সাথে তুলনা চলে মাহাত্মা গান্ধী,মেন্দেলা, মাও সে তং, হো চি মি্, ইয়াসির আরাফাত, ভ্লাদিমির লেনিন, ফিদেল কাস্ট্রো প্রমুখের সাথে ।তিনি শুধু বাংলাদেশের নেতা নন তিনি পৃথিবীর প্রতিটি মেহেনতি,বঞ্ছিত মানুষের নেতা।
তিনি অনেক আগে থেকে বাঙ্গালিদের রক্ষা নেতা হিসাবে জনগনের মনে স্থান করে নিয়েছেন।১৯৪৫-৪৬ সালে আসাম জুড়ে বাঙালিদের বিরুদ্ধে "বাঙ্গাল খেদাও" আন্দোলন শুরু হলে ব্যাপক দাঙ্গা দেখা দেয়। এসময় বাঙালিদের রক্ষার জন্য ভাসানী বারপেটা, গৌহাটি সহ আসামের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বেড়ান। পাকিস্তান আন্দোলনে অংশ নিয়ে ১৯৪৭ সালে আসামে গ্রফতার হন। ১৯৪৮-এ মুক্তি পান। এরপর তিনি টাঙ্গাইলের সন্তোষে ফিরে আসেন।১৯৪৮ সালের প্রথম দিকে তিনি বঙ্গীয় মুসলিম লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পূর্ববঙ্গ ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৭ মার্চ ব্যবস্থাপক সভার কার্যাবলি বাংলায় পরিচালনা করার জন্য স্পিকারের কাছে দাবি জানান এবং এই দাবি নিয়ে পীড়াপীড়ি করেন। ১৯ মার্চ বাজেট বক্তৃতায় অংশ নিয়ে বলেন, যেসব কর কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ববঙ্গ প্রদেশ থেকে সংগ্রহ করে তার শতকরা ৭৫% প্রদেশকে দিতে হবে। এখানে উলেস্নখ যে, ব্রিটিশ আমলে বঙ্গপ্রদেশ জুটেক্স ও সেলসট্যাক্স রাজস্ব হিসেবে আদায় করত এবং এই করের ভাগ কেন্দ্রীয় সরকারকে দিতে হতো না। পাকিস্তান সৃষ্টির পর কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ববঙ্গ সরকারের হাত থেকে এই কর ছিনিয়ে নিয়ে নিজেরাই আদায় করতে থাকে যার ফলে পূর্ববঙ্গ সরকার আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো এই সময় পূর্ববঙ্গ সরকারের বার্ষিক বাজেট ছিল মাত্র ৩৬ কোটি টাকা। যাই হোক, মুসলিম লীগ দলের সদস্য হয়েও সরকারের সমালোচনা করায় মুসলিম লীগের ৰমতাসীন সদস্যরা মওলানা ভাসানীর ওপর অখুশী হয় এবং তার নির্বাচনে ত্রুটি ছিল এই অজুহাত দেখিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করে এবং মওলানা ভাসানীকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকে।
কাগমারী সম্মেলনে১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। ৮ ফেব্রুয়ারি ডক্টর কাজী মোতাহার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি আরম্ভ হয়।এই সভায় মওলানা ভাসানীও বক্তৃতা করেন। বক্তৃতায় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে তিনি বলেন, পূর্ববাংলা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শাসকদের দ্বারা শোষিত হতে থাকলে পূর্ববঙ্গবাসী তাদের সালামু ওআলায়কুম জানাতে বাধ্য হবে।এছাড়া কাগমারী সম্মেলনে ভাসানী পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি বাতিলের দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রী সোহ্রাওয়ার্দী সেই দাবি প্রত্যাখান করলে ১৮ মার্চ আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেন। একই বছর ২৫ জুলাই তার নেতৃত্বে ঢাকার রূপমহল সিনেমা হলে 'ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি' (ন্যাপ) গঠিত হয়। ন্যাপ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভাসানী প্রকাশ্যে বামপন্থী রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন এবং এর পর থেকে সবসময় বাম ধারার রাজনীতিএর সাথেই সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ১৯৫৭-র ৭ অক্টোবর দেশে সামরিক শাসন জারি হলে আইয়ুব খান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে সকল রাজনৈতিক দলের কর্মকান্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১২ অক্টোবর মাওলানা ভাসানীকে কুমুদিনী হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকায় ৪ বছর ১০ মাস কারারুদ্ধ থাকেন।
বাংলাদেশ আন্দোলনের চুড়ান্ত পর্বে মুজিব এই জাতিকে নানা ভাবে বিভ্রান্ত করে।মাওলানা ভাসানী তাকে অনেক বার সতর্ক করেছে এই ব্যপারে।
“...মহান নেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী গতকাল শুক্রবার ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত এক বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে সার্বভৌম পূর্ব পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মরণপণ সংগ্রামের দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা করিয়াছেন। এই জনসভায় ভাষণ দানকালে তিনি জনগণকে সকল ভীরুতা-জড়তা ত্যাগ করে উক্ত সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।
মাওলানা ভাসানী বলেন, ‘সার্বভৌম পূর্ব পাকিস্তানের এই দাবী আইনসঙ্গত- এই সংগ্রামও আইনসঙ্গত। এটি নিছক হুমকির বা চাপ সৃষ্টির আন্দোলন নয়; স্বাধীন সার্বভৌম পূর্ব পাকিস্তানের এই সংগ্রামের প্রতি এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার শান্তিকামী ও মুক্তিকামী জনগণের পূর্ণ নৈতিক সমর্থন থাকবে।’
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সংগ্রাম জীবন-মরণের সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানের ১৪ লক্ষ মানুষ সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ দিয়েছে। আমাদের সংগ্রামের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ করা হলে আরও ১৫/২০ লাখ লোক জীবন দিয়ে হয় অভীষ্ট সিদ্ধ করবে, না হয় মৃত্যু বরণ করবো।’
মওলানা বলেন, ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান বন্ধ করার জন্য কোন সৈন্য দেওয়া হয় নাই। স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান বললে যদি সৈন্য নিয়োগ করা হয়, তাহলে বিরাট ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে।’
ইতিহাসের নজীরবিহীন প্রাকৃতিক ধ্বংসলীলায় বিধ্বস্ত পূর্ব বাংলায় লক্ষ লক্ষ মৃতদেহের উপরে দাঁড়িয়ে যারা নির্বচনী প্রচারণার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে চলেছে তাদের সম্পর্ক-এ মওলানা ভাসানী বলেন, ‘তাঁদের ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে চাই না, তারা নিজেরোই বলুন যে তারা জনতার শত্রু না মিত্র।’
‘পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা সংগ্রামে’ শরিক হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নব্বই বছরের বৃদ্ধ জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বলেন, ‘মুজিব, তুমি স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান সংগ্রামে যোগ দাও। যদি আমেরিকা ও ইয়াহিয়ার স্বার্থ-এ কাজ কর তাহলে আওয়ামী লীগের কবর ’৭০ সালে অনিবার্য।
এই প্রসঙ্গে মওলানা ভাসানী আরও বলেন, ‘যারা বলে নির্বাচনে শতকরা একশটি আসনে জয়ী হয়ে প্রমাণ করবে জনতা তাদের পেছনে রয়েছে তাদের সঙ্গে আমাদের মতের মিল নেই। দক্ষিণ ভিয়েতনামে দেশপ্রেমিক গেরিলারা যখন লড়াই করেছে তখনও সংগ্রামের মুখে নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু তার দ্বারা একথা প্রমাণ হয়নি যে নির্বাচনে বিজয়ীরা জনগণের বন্ধু। বরং তারা সাম্রাজ্যবাদ ও স্বৈরাচারের তল্পীবাহক।’
মওলানা ভাসানী বলেন, ‘শুধু শ্লোগানে সংগ্রাম হয় না। হয় মরে যাব, নয়তো সার্বভৌমত্ব পাব এই কি আপনারা চান? বিবেকের কাছে জিজ্ঞেস করুন। যদি কোরবানী দিতে প্রস্তুত থাকেন তবে হাত তুলুন।’
জনতা মুহুমূহু শ্লোগানের সাথে হাত তোলেন। মওলানা ভাসানী তখন নিজেই শ্লোগান দেন, নারায়ে 'তকবীর-আল্লাহু আকবর’ ‘স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান-জিন্দাবাদ’। সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ লক্ষ কণ্ঠ থেকে তাদের প্রিয় নেতার শ্লোগান প্রতিধ্বনি ভেসে আসে।...’।"
সূত্র: বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধ, দলিলপত্র দ্বিতীয় খন্ড (এই অংশটুকু আলী মাহমেদের গবেষণা সঙ্কলন থেকে নেয়া)
মাওলানা ভাসানী বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের জনক।এখানে কোন প্রকার হীনমন্যতার ঞ্জায়গা নাই।তাকে সম্মান জানালে এই জাতি অনেক বড় হবে।যদি এদেশে জাতির জনক হিসাবে কেও স্বীকৃতি পায় তবে মাওলানা ভাসানীকে সবার অগ্রে রাখা হবে যৌক্তিক দাবি।তার মৃত্য বার্ষিকের দিনে আমাদের তার জীবন নিয়ে আরো চর্চার জন্য শপথ নেয়া প্রয়োজন।
আবু জুবায়ের

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



