somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

'তোমাকে আর কথা বলতে দেয়া হবে না'!

০৫ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কিছু ব্লগারের আচরন বিস্ময়াভিভূত করে। সম্প্রতি একজন ব্লগারকে দেখা গেছে, ইসলামের ইতিহাস বিকৃত করে ফালতু মিথ্যে তথ্যের সন্নিবেশ ঘটিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সাম্প্রতিক, সউদি বাদশাহ পুত্র মুহাম্মাদ বিন সালমান ডঃ তামাদের বিনতে ইউসুফ আল রাম্মাহ নামের জনৈক সৌদি মহিলাকে সেদেশের শ্রম মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেয়ার ঘটনা তুলে ধরা হয় সে পোস্টে। 'ধান ভানতে শিবের গীত' গাওয়ার মত করে অজ্ঞের মত তিনি সেখানে উদ্ভট কিছু কথা বলেছেন। তিনি সেখানে খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত আলী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে চিত্রিত করেছেন উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহার সৎ পিতা হিসেবে। তিনি তার পোস্টে একথাও উল্লেখ করেছেন, উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা না কি আলী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর সাথে সংঘটিত যুদ্ধের পর আমৃত্যু মদিনায় বন্দী জীবন যাপন করেছেন।

হায়রে মূর্খতা! কোথায় যে তুমি লুকিয়ে থাকো! কোথায় কার উপরে কখন যে অাবার ভর করে বসো! ইসলামের ইতিহাসের ক খ যাদের জানা নেই এমন অজ্ঞদের কে বলেছে যে, তুমি ইতিহাস লেখ! বলি, বাছা, ইসলামের ইতিহাস যেহেতু তুমি জান না, তোমার শ্রীদেবী নিয়ে পরে থাকাই তো ভাল মানায়!

ভদ্রলোকের 'ধান ভানতে শিবের গীত' গাইতে গিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নামোল্লেখের প্রয়োজন দেখা দেয় তার উল্লেখিত সেই পোস্টটিতে। তিনি কৌশলে মহানবীর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নামোল্লেখ থেকে বিরত থেকে নিতান্ত অবজ্ঞাভরে শুধু 'নবীর', নবীর' বলে মুসলিমদের হৃদয়ে খোঁচা দিতে চেষ্টা করেছেন। শুধু এটুকুতেই তার ছ্যাবলামী সীমিত থাকেনি, বরং মূর্খতার চূড়ান্ত পরিচয় দিয়ে মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি সাধারন সম্মান প্রকাশের ভব্যতা দেখাতেও তিনি কার্পন্য প্রদর্শন করেছেন। মুসলিম বলতে সকলেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নামের শেষে দরুদ ও সালাম পাঠ করলেও তিনি গর্ব অহংকার বশত: হয়তো তা করতে ব্রতি হননি। শুধু এতেও তিনি থেমে থাকেননি, তিনি মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহান সাহাবী এবং স্ত্রীগনকেও নিতান্ত তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যভরে তার সেই পোস্টে উপস্থাপন করেছেন।

এরপরে এসবে আপত্তি জানিয়ে যখন কয়েকজন ব্লগার তার সেই পোস্টে কমেন্ট করে প্রতিবাদ করলেন, তিনি তাদের গালিগালাজ করলেন। একপর্যায়ে দেখা গেল, বিরুদ্ধ মতের প্রত্যেকের মন্তব্য তিনি তার সেই পোস্ট থেকে মুছে দিলেন। তার সে পোস্টে আমি সাধারন শিষ্টাচার রক্ষার বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষন করলে তিনি আমাকে 'ধর্মব্যবসায়ী', 'রাজাকার', 'তুই' ইত্যাদি ন্যাক্কারজনক ভাষায় আক্রমন করেন, যা দেখে রীতিমত আশ্চর্য্য এবং হতচকিত হই। ভেবে পাই না, এমন হাই ভোল্টেজের পরমত অসহিষ্ণু প্রতিক্রিয়াশীলগুলো ব্লগের মত মুক্ত মঞ্চে কেন আসে? যাদের সামান্য একটুতেই মাথা গরম হয়ে ওঠে, সমালোচনা বলতে কারও কোনও কথাই সহ্য হয় না, মতের বিপরীতে কিছু চিন্তার অতিত, এসব কূপমন্ডুকদের ব্লগে লিখতে বলে কে?

বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত আচমকা তার গালি শুনে যারপর নাই আহত বোধ করি। নিতান্ত কষ্টে ধৈর্য্যধারন করে থাকি। তার দেয়া গালির জবাবে ক্ষমা চেয়ে আরেকটি মন্তব্য করি তার পোস্টে। তিনি সেই মন্তব্যটিতে প্রত্যুত্তর করা থেকে বিরত থাকেন। এরও পরে তার সেই পোস্টটিতে ইসলামের ইতিহাস বিকৃতির কিছু নমুনা তুলে ধরে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে তার দৃষ্টি আকর্ষন করি। তিনি দীর্ঘ সে মন্তব্যের জবাব দেন 'তোমাকে আর কথা বলতে দেয়া হবে না' বলে। আহারে, কী অসাধারন উদারতা রে বাবা! তোমার মত এমন মহাত্মনের পদচুম্বন করতে ইচ্ছে করে! এই না হলে মুক্তমনা!

পরবর্তীতে তার মতের বিপরীতে যতজন ব্লগারের যতগুলো মন্তব্য সেই পোস্টটিতে ছিল, পাইকারিভাবে সব তিনি মুছে দেন। আমাকে তার ব্লগে কমেন্ট ব্যান করেন। মাঝে মাঝে ভাবি, বাস্তব জীবনে এমনতো কোন আচরন কারও সাথে করিনি, করি না- যে কারনে ব্লগে ভদ্র ভাষায় কথা বললেও 'তুই' সম্বোধন শুনতে হবে। বারবার শুধু মনের কোনে প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছিল, সত্যিকারের রাজাকার কে? আমি, না কি- অন্যায়ভাবে অন্যদের গালিগালাজ প্রদানকারী ব্যক্তি?

মন্তব্য মুছে দেয়া কোন ভদ্রলোকের কাজ নয়। মূর্খের মত গালি-গালাজ করাও ভাল লোকের কাজ কখনও নয়।

এদের ভাবসাব দেখে হাসি চেপে রাখতে পারছি না। মাথা যাদের এতই গরম, অন্যের কোন কথা শুনলেই যাদের পিত্তি জ্বলে ওঠে, তাদের তো আগে থেকেই সাবধানতা বজায় রেখে চলা উচিত। ধর্মীয় বিষযাদি নিয়ে খোঁচা দেয়ার আগে একথা এগুলোর মনে কেন জাগ্রত হয় না যে, খোঁচা দিলে খোঁচা খেতে হয়? ইট মারলে পাটকেল খাওয়ার কথাও কি এরা জানে না?

আমাদের ধারনা, এই শ্রেনির হাই ভোল্টেজের পরমত অসহিষ্ণু মাথা গরম লোকদের সামুর মত মুক্ত মঞ্চে নাক ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়ানোর চেয়ে বিরান মরুভূমির বালুর ঢিবিতে উটপাখির মত মাথা ঠুকে পড়ে থাকাই বরং এদের জন্য ভাল মানায়। কারন, এরা যে পরমত অসহিষ্ণু! ক্ষ্যাপা প্রতিক্রিয়াশীল ধর্মবিদ্ধেষী!

বাগাড়ম্বর সর্বস্ব এই জাতের প্রানীগন হম্বি তম্বিতেও কম যান না। ৮০ টা না কি ১০০ খানা দেশের লোকের সাথে তিনি নাকি ক্লাশ করেছেন! তো, এদের কাছে বিনীতভাবে জানতে ইচ্ছে করে, এত দেশের মানুষের সাথে চলাফেরা করে তাদের কাছ থেকে কী শিখলেন? কী অর্জন করলেন? শুধুই অভদ্রতা?

সবিনয়ে বলতে ইচ্ছে করে, এক জীবনে ন্যূনতম কার্টেসি আর ভদ্রতা শিখতে পারলেন না! এই অথর্ব-ব্যর্থ জীবনের মূল্যটা কী?

এদের জন্য নিরন্তর শুভকামনা। শুভবুদ্ধির উদয় হোক এদের।

সর্বশেষ: তিনি তার সেই পোস্টটিতে এডিট করেছেন, খলিফাতুল মুসলিমীন হযরত আলী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহার সৎ পিতা ছিলেন, উদ্ভট এই তথ্যটি তার পোস্টে এখন আর নেই।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৩২
২৭টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×