somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

কুড়ানো মানিক-০১: মর্যাদা বৃদ্ধির তিন আমল, গুরুত্বপূর্ন কিছু কাজের সুন্নত

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মর্যাদা বৃদ্ধির তিন আমল

তিন প্রকারের আমলের মাধ্যমে মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে: ১. মেহমান ও দরিদ্রদের খাবার খাওয়ানো। ২. সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটানো এবং ৩. রাতে যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়ে, তখন নামাজে মশগুল হয়ে যাওয়া (আলমু’জামুল আওসাত্ব: ৬/৩৫১)।

মর্যাদাবৃদ্ধির প্রথম আমল, অসহায়-দরিদ্র এবং মেহমানদের খাবার খাওয়ানো

এই কাজটি করার সাথে সাথে এ ধারণাও রাখা যে, যাদেরকে আমি খাবার খাওয়াচ্ছি, তাদের প্রতি এটা আমার কোনো অনুগ্রহ নয়। বরং আল্লাহর অশেষ কৃপা ও আমার মেহমানদারী গ্রহণকারীদের অনেক বড় অনুগ্রহ হয়েছে আমার উপর। এজন্যই আমি তাদের মেহমানদারি করাতে পারছি। কেননা, তাদের আহার্য তো আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে সৃষ্টি করার পূর্বক্ষণ হতেই নির্ধারণ করে রেখেছেন। এসকল বিষয়কে স্মরণ রেখে যারা অন্যকে খাবার খাওয়াবে, আল্লাহ তাআ'লা তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে দিবেন।

রসূলে মাকবুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন প্রকারের লোক বড় সৌভাগ্যবান হয়ে থাকে এবং আল্লাহর দরবারে তাদেরকে সীমাহীন প্রতিদানে ধন্য করা হবে:

১. কোন মুমিন বান্দা অপর মুমিনকে পিপাসাকাতর অবস্থায় পানীয় পান করাবে, কেয়ামত দিবসে আল্লাহ তাআ'লা তাকে এমন বিশেষ মানের উত্তম পানীয় পান করাবেন, যার প্রতিটা পানপাত্র সিলমোহরকৃত থাকবে।

২. কোন মুমিন অপর মুমিনকে ক্ষুধাকাতর অবস্থায় খাবার খাওয়ালে কেয়ামত দিবসে আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের বিভিন্ন প্রকারের তুলনাহীন ফলমূল খাওয়াবেন।

৩. কোন মুমিন অপর অভাবী- বস্ত্রহীন মুমিনের বস্ত্র- আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করলে আল্লাহ তাআ'লা তাকে জান্নাতের দামী আচ্ছাদনে ধন্য করবেন।

এ হাদিস থেকে প্রতিয়মান হয়, অন্যের খাদ্যাহার্যের ব্যবস্থা করার অনেক ফযিলত রয়েছে এবং এমন ব্যক্তির জন্য শুভ সংবাদের ঘোষনাও রয়েছে।

মর্যাদাবৃদ্ধির দ্বিতীয় আমল, সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটানো

রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘সালামের ব্যাপক প্রসার করতে থাকো। এতে তোমাদের পারস্পরিক মেলবন্ধন তৈরি হবে।’

রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পারস্পরিক ঐক্য-সম্প্রীতি, ভালোবাসাকে ঈমানের শর্তরূপে নির্ধারণ করেছেন। এছাড়াও সালামের মাধ্যমে পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধিই পেয়ে থাকে। সুতরাং সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটানো উচিৎ।

রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জান্নাতে প্রবেশের জন্য ঈমান থাকা শর্ত। আর পূর্ণাঙ্গ মুমিন হওয়ার জন্য পারস্পরিক জোগসাজেশ-ভালোবাসা ও সৌজন্যবোধ থাকা আবশ্যক। যদি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা-সৌজন্যতা না থাকে, তাহলে তোমরা কখনোই পূর্ণাঙ্গ মুমিন হতে পারবে না।’

অত:পর তিনি বলেন, 'পারস্পরিক শত্রুতা-অহংবোধ ও বিদ্বেষ দূর করার সবচে কার্যকরী মাধ্যম হলো, ‘তোমরা সালামের ব্যাপক প্রচার-প্রসার ঘটাও। কেননা, সালাম উল্লেখিত মন্দস্বভাবগুলো দূর করার ক্ষেত্রে সবচে' উপকারী মাধ্যম। একইসঙ্গে পারস্পরিক ভালোবাসা-প্রীতির বন্ধন জুড়ে দেওয়ারও পরিক্ষিত আমল।’

মর্যাদাবৃদ্ধির তৃতীয় আমল, রাতের শেষাংশে তাহাজ্জুদে দাড়িয়ে কোরআন তিলাওয়াত করা

যখন সবাই সুখতন্দ্রায় ডুবে থাকে তখন রাতের শেষাংশে তাহাজ্জুদে দাড়িয়ে কোরআন তিলাওয়াত করা। রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা অনেক পছন্দ করে থাকেন: ১. যে ব্যক্তি রাতের শেষাংশে তাহাজ্জুদ ও নফল নামাজে দাঁড়িয়ে কোরআন হতে তিলাওয়াত করে; যখন সবাই ঘুমে বিভোর থাকে, ২. যে ব্যক্তি কোন লড়াইয়ের ময়দানে দৃঢ়ভাবে লড়াই করতে থাকে; যখন তার অন্যান্য সাথীবৃন্দ পরাজয় বরণ করে রনাঙ্গন ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং ৩. যে ব্যক্তি এমন গোপনে-চুপিসারে দান-সদকা করে, তার বাঁ-হাতও টের পায়না যে, তার ডানহাতে সে কী দান করেছে।'

গুরুত্বপূর্ন কিছু কাজের সুন্নত

মুমিনের প্রতিটি কাজ নিয়ম মাফিক হওয়া জরুরি এবং অবশ্যই তা সুন্নত অনুযায়ী শুরু করা আবশ্যক। আসুন জেনে নেই কিছু গুরুত্বপূর্ন কাজের সুন্নাহ মাফিক দুআ, যেগুলো আমরা প্রায়ই করে থাকি।

১. ভালো কোন কিছু খাওয়া বা পান করার সময়, কোন কিছু লেখা বা পড়ার সময়, কোন কাজ শুরু করার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু করা । -(বুখারীঃ ৫৩৭৬)

২. ভালো কিছু খাওয়া বা পান করা শেষে, কোন শুভ সংবাদ শোনার পরে, কেউ 'কেমন আছো' জিজ্ঞেস করলে- তার জবাবে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা । -(ইবনে মাজাহঃ ৩৮০৫)

৩. কারো হাঁচি আসলে ‘আলহামদু লিল্লাহী ‘আলা কুল্লী হা-ল’ বলা । -(আত তিরমিযীঃ ২৭৪১)

৪. কোন হাঁচিদাতা ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলেছেন এমনটা শুনলে- ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা। -(বুখারীঃ ৬২২৪)

৫. আল্লাহ তা’আলার শ্রেষ্ঠত্ব, মহত্ব বা বড়ত্বের কোন কৃতিত্ব দেখলে কিংবা শুনলে ‘আল্লাহু আকবর’ বলা। স্বাভাবিকের মধ্যে কোন ব্যতিক্রম দেখলে কিংবা আশ্চর্য ধরণের কোন কথা শুনলে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা। -(বুখারীঃ ৬২১৮)

৬. ভালো যে কোন কিছু বেশি বা ব্যতিক্রম দেখলে ‘মা-শা আল্লাহ’ বলা। -(মুসলিমঃ ৩৫০৮)

৭. ভবিষ্যতে কোন কিছু করবে বললে ‘ইনশাআল্লাহ’ বলা । -(আল কাহাফঃ ২৩-২৪)

৮. কোন বাজে কথা শুনলে কিংবা আল্লাহর আজাব ও গজবের কথা শুনলে বা মনে পড়লে ‘না’উজুবিল্লাহ’ বলা। -(বুখারীঃ ৬৩৬২)

৯. কোন বিপদের কথা শুনলে কিংবা কোন খারাপ বা অশুভ সংবাদ শুনলে, কোন কিছু হারিয়ে গেলে, কোন কিছু চুরি হয়ে গেলে, কোন কষ্ট পেলে ‘ইন্না লিল্লাহ’ বলা। –(মুসলিমঃ ২১২৬)

১০. কথা প্রসঙ্গে কোন গুনাহর কথা বলে ফেললে, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বলা । -(সূরা মুহাম্মদঃ ১৯)

১১. উপরে উঠার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলা এবং নিচে নামার সময় ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা। -(বুখারীঃ ২৯৯৩)

১২. নিশ্চিতভাবে না জেনে কোন বিষয়ে কিছু বললে, কথা শেষে ‘ওয়াল্লাহু আলাম’ বলা। -(বুখারীঃ ৫৫৭০)

১৩. কেউ কিছু দিলে কিংবা কারো মাধ্যমে কোন কাজ হলে তার বদলে ‘জাযাকাল্লাহু খাইরান’ বলা। -(বুখারীঃ ৩৩৬)

১৪. কোন কিছু জবেহ করার সময় ‘বিসমিল্লাহী ওয়া আল্লাহু আকবর’ বলা। -(মুসলিমঃ ৫০৮৮)

১৫. কোন বিজয় লাভ করলে কিংবা বিজয় লাভের আশায় শ্লোগান দিলে ‘আল্লাহু আকবর’ বলা । -(বুখারীঃ ৬১০)

আল্লাহ পাক আমাদের আলোচিত বিষয়গুলোর মর্ম অনুধাবন করে এর উপর আমল করার তাওফিক দান করুন।

২য় পর্বের লিঙ্ক-
কুড়ানো মানিক-০২: অশ্লীলতা ও পর্নোগ্রাফি থেকে মুক্ত থাকার দোয়া, জীবনের সব চাহিদা পূরণের বিশেষ দোয়া, যে তাসবিহ পাঠে নেকি লাভ ও গোনাহ মাফ হয়, যে জিকিরে অন্তর্জগত খুলে যায় এবং পিতামাতা-সন্তান ও নিজের জন্য সবসময় যে দোয়া আবশ্যক
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:৩০
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×