somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

মহাবিভীষিকাময় বিচার দিবস; দয়াময়ের করুণাই ভরসা

০৬ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
মহাবিভীষিকাময় বিচার দিবস; দয়াময়ের করুণাই ভরসা

ছবিঃ অন্তর্জাল হতে সংগৃহিত।

إِنَّ الْحَمْدُ لِلَّهِ نَحْمَدُهُ وَنَسْتَعِينُ بِهِ، وَنَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ شُرُورِ أَنْفُسِنَا وَسَيِّئَاتِ أَعْمَالِنَا مَنْ يَهْدِ اللَّهُ فَلَا مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْ فَلَا هَادِيَ لَهُ. أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ. وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ بَلَغَ الرِّسَالَةَ وَأَدَّى الْأَمَانَةَ وَنَصَحَ الْأُمَّةَ وَجَاهَدَ فِي اللَّهِ حَقَّ الْجِهَادِ حَتَّى أَتَاهُ الْيَقِينُ. صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَعَلَى آلِهِ وَصَحْبِهِ وَمَنْ تَبِعَهُمْ بِإِحْسَانٍ وَسَلَّمَ تَسْلِيمًا كَثِيرًا إِلَى يَوْمِ الدِّينِ.

أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ خَيْرَ الْحَدِيثِ كَلَامُ اللَّهِ وَخَيْرَ الْهُدَى هُدَى مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَشَرُّ الْأُمُورِ مُحَادَثَاتُهَا وَكُلُّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ وَكُلُّ ضَلَالَةٍ فِي النَّارِ অর্থাৎ, সর্বোত্তম হাদিস হল আল্লাহর বাণী, সর্বোত্তম দিকনির্দেশনা হল মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর পথনির্দেশ, আল্লাহ তাঁর উপর বারাকাহ বর্ষণ করুন এবং তাঁকে শান্তি দান করুন। আর সর্বনিকৃষ্ট বিষয় হল দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছুর উদ্ভব ঘটানো। প্রতিটি বিদআতই একটি বিভ্রান্তি এবং প্রতিটি বিভ্রান্তি জাহান্নামের পথে ধাবিত করে।

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআ'লার, যিনি আমাদেরকে তাঁর অগণিত অনুগ্রহ ও নেআমত দিয়ে পূর্ণ করেছেন। তিনি ইরশাদ করেন- وَأَسْبَغَ عَلَيْكُمْ نِعَمَهُ ظَاهِرَةً وَبَاطِنَةً অর্থাৎ, এবং তোমাদের প্রতি তাঁর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য নেয়ামতসমূহ পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। -সূরা লুকমান, আয়াত ২০

وَإِن تَعُدُّوا نِعْمَةَ اللَّهِ لَا تُحْصُوهَا ۗ إِنَّ اللَّهَ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ অর্থাৎ, যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। -সূরা আন নাহল, আয়াত ১৮

আল্লাহ তাআ'লা ইরশাদ করেন - يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ অর্থাৎ, হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর যেভাবে তাকে ভয় করা উচিত এবং মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। -সূরা আল ইমরান, আয়াত ১০২

তিনি অন্যত্র ইরশাদ করেন - يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَلْتَنظُرْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ لِغَدٍ ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ অর্থাৎ, হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত, আগামী কালের জন্যে সে কি প্রেরণ করে, তা চিন্তা করা। আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করতে থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা’আলা সে সম্পর্কে খবর রাখেন। -সূরা হাশর, আয়াত ১৮

আল্লাহর বান্দাগণ, আল্লাহ তাআ'লাকে ভয় করুন। তিনিই আমাদের আসল মালিক। আসল বন্ধু। পরম প্রিয়। আমাদের এই জীবন, সুন্দর সাজানো গোছানো নয়নাভিরাম বিশ্ব সংসার - তাঁর দয়ারই প্রকাশ মাত্র। সুতরাং, আমাদের অন্তঃপ্রাণ হওয়া উচিত তাঁরই প্রতি। তাই অচিরেই তাঁর সকাশে পুনঃপ্রত্যাবর্তনের আকাঙ্খাকে সজিব এবং সতেজ রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। প্রলম্বিত আশা-প্রত্যাশার মরিচিকা আর দীর্ঘায়ুর ফাঁদ যেন আমাদেরকে পরকালের বিষয়ে প্রতারিত করতে না পারে। কোন অবস্থাতেই এই দুনিয়াকে আখিরাতের উপর প্রাধান্য দেয়া যাবে না - কারণ, সত্যিকারার্থে এটি ক্ষণস্থায়ী এবং ধ্বংসশীল। ফিতনা এবং পরীক্ষার স্থান। পক্ষান্তরে আখিরাত অনন্তকালীন ও পুরস্কারের নিবাস। মহান আল্লাহ তাআ'লা ইরশাদ করেন- فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا قَلِيلٌ অর্থাৎ, অথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপকরণ অতি অল্প। -সূরা আত তাওবাহ, আয়াত ৩৮

আল্লাহ তাআ'লা ইরশাদ করেন - كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ۗ وَإِنَّمَا تُوَفَّوْنَ أُجُورَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۖ فَمَن زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ ۗ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا مَتَاعُ الْغُرُورِ অর্থাৎ, প্রতিটি প্রাণই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। কেয়ামতের দিনই তোমরা পরিপূর্ণ পুরষ্কার পাবে। সুতরাং যে জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করবে, চূড়ান্ত সফলতা সে-ই লাভ করবে। আর পার্থিব এই জীবন ধোঁকা প্রতারণার বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়। -সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৮৫

প্রিয় ভ্রাতৃবৃন্দ, ঈমান হচ্ছে মানব মর্যাদার উৎসমূল এবং বিশ্বাসীদেরকে প্রদত্ত আল্লাহ তাআ'লার নেআমতসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম নেআমত। সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলেছেন- يَمُنُّونَ عَلَيْكَ أَنْ أَسْلَمُوا ۖ قُل لَّا تَمُنُّوا عَلَيَّ إِسْلَامَكُم ۖ بَلِ اللَّهُ يَمُنُّ عَلَيْكُمْ أَنْ هَدَاكُمْ لِلْإِيمَانِ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ অর্থাৎ, তারা মুসলমান হয়ে আপনাকে ধন্য করেছে মনে করে। বলুন, তোমরা মুসলমান হয়ে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো না। বরং আল্লাহ ঈমানের পথে পরিচালিত করে তোমাদেরকে ধন্য করেছেন, যদি তোমরা সত্যনিষ্ঠ হয়ে থাক। -সূরা হুযুরাত, আয়াত ১৭

ঈমান আল্লাহ তাআলার আনুগত্য স্বীকার করার জন্য একটি শর্ত, মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ এবং এটি আল্লাহ তাআলার নৈকট্যলাভের সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম। শুধু তাই নয়, পার্থিব ও পারলৌকিক জীবনে পরিত্রাণ, নিরাপত্তা, সুখ, আশ্বাস, বিজয়, সাফল্য, সাহায্য এবং কামিয়াবিরও মাধ্যম হলো ঈমান। একইভাবে ঈমান আচার-আচরণ, নৈতিকতা ও মূল্যবোধেরও উৎস। এর বাস্তবতা চাল চলন, চেহারা- সুরত ও আচার-আচরণে প্রকাশ পায় এবং অন্তর ও চরিত্রে তা নিহিত থাকে।

ঈমানের হাকিকত বা বাস্তবতা হল আপনি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা, তাঁর ফেরেশতাকুল, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রসূলগণ এবং শেষ দিবসে বিশ্বাস করবেন এবং তাকদীরের প্রতি এবং তাকদীরের ভাল ও মন্দে বিশ্বাস করবেন।

প্রিয় বন্ধুগণ, ঈমানের একটি বড় ভিত্তি এবং এর গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হল শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস। শেষ দিবসের অপর নামই বিচার ও প্রতিদান দিবস। মহান আল্লাহ তাআ'লা ইরশাদ করেন- يَوْمَ يَقُومُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ অর্থাৎ, যেদিন মানুষ দন্ডায়মান হবে বিশ্ব পালনকর্তার সামনে। -সূরা মুতাফফিফীন, আয়াত ০৬

তিনি আরও ইরশাদ করেন- يَوْمَ لَا تَمْلِكُ نَفْسٌ لِّنَفْسٍ شَيْئًا ۖ وَالْأَمْرُ يَوْمَئِذٍ لِّلَّهِ অর্থাৎ, যেদিন কেউ কারও কোন উপকার করতে পারবে না এবং সেদিন সমস্ত কর্তৃত্ব হবে আল্লাহর। -সূরা ইনফিতর, আয়াত ১৯

আল্লাহর বান্দাগণ, শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস আত্ম-দায়বদ্ধতা, আত্মশুদ্ধিকরণ এবং আত্ম-নিরীক্ষণে উদ্বুদ্ধ করে এবং ক্ষণস্থায়ী এই দুনিয়াবি যিন্দেগীর উপরে অন্তহীন পরকালের প্রাধান্য ও অগ্রাধিকারকে উত্সাহিত করে। তাই মহান আল্লাহ তাআ'লার দিকে প্রস্থান করার জন্য প্রস্তুত হোন। আর তাঁর সম্মুখে অত্যাসন্ন জবাবদিহির জন্য প্রস্তুত হোন এবং পাথেয় অন্বেষন করতে থাকুন, কেননা সফর বড়ই দীর্ঘ। মহান আল্লাহ তাআ'লা ইরশাদ করেন- كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ۗ وَإِنَّمَا تُوَفَّوْنَ أُجُورَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۖ فَمَن زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ ۗ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا مَتَاعُ الْغُرُورِ অর্থাৎ, প্রত্যেক প্রাণীকে আস্বাদন করতে হবে মৃত্যু। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলা প্রাপ্ত হবে। তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, তার কার্যসিদ্ধি ঘটবে। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নয়। -সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৮৫

শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস আত্মার মধ্যে একটি মন্ত্রণা ও অনুভব অনুভূতি জাগ্রত করে যা প্রতিদান দিবসে পুরস্কার এবং হিসাবের দিকে আহ্বান করে, তাই পরকালে বিশ্বাসী ব্যক্তিমাত্রেই ভাল কাজ করতে এবং পুরষ্কার লাভ করতে ত্বরান্বিত হয় এবং দুর্ভাগ্যজনক কাজগুলো এড়িয়ে চলতে উদ্বুদ্ধ হয়। শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আত্মার মধ্যে একটি তিরস্কার পাঠায়, কারণ সে জানে যে, প্রতিটি কাজের ফলাফল তাকে অবশ্যই পেতে হবে। মহান আল্লাহ তাআ'লা ইরশাদ করেন- وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ وَلا طَائِرٍ يَطِيرُ بِجَنَاحَيْهِ إِلَّا أُمَمٌ أَمْثَالُكُمْ مَا فَرَّطْنَا فِي الْكِتَابِ مِنْ شَيْءٍ ثُمَّ إِلَى رَبِّهِمْ يُحْشَرُونَ অর্থাৎ, আর যত প্রকার প্রাণী পৃথিবীতে বিচরণশীল রয়েছে এবং যত প্রকার পাখী দু’ ডানাযোগে উড়ে বেড়ায় তারা সবাই তোমাদের মতই একেকটি শ্রেণী। আমি কোন কিছু লিখতে ছাড়িনি। অতঃপর সবাই স্বীয় প্রতিপালকের কাছে সমবেত হবে। -সূরা আল আনআম, আয়াত ৩৮

عن. أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال لَتُؤَدَّنَّ الحقوقُ إلى أهلها يوم القيامة، حتى يُقادَ للشاةِ الجَلْحاءِ من الشاة القَرْناءِ অর্থাৎ, আবু হুরাইরাহ্ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- কিয়ামতের দিন প্রত্যেক পাওনাদারকে তার পাওনা চুকিয়ে দিতে হবে। এমনকি শিং বিশিষ্ট বকরী থেকে শিং বিহীন বকরীর প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে। -সহিহ মুসলিম, ইফা প্রকাশ, হাদিস নং ৬৩৪৪

শেষ দিবসে বিশ্বাসের মাধ্যমেই পুরস্কার ও হিসাব-নিকাশের প্রতি বিশ্বাসের পরিপূর্ণতা আসে। আর পরকালে পুরষ্কার প্রদান করা হবে কাজের প্রতিদান হিসেবেই। মহান আল্লাহ তাআ'লা ইরশাদ করেন- فَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ - وَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ. অর্থাৎ, অতঃপর কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে। -সূরা যিলযালাহ, আয়াত ৭, ৮

আল্লাহ তাআ'লার প্রতি এবং তাঁর সাথে সাক্ষাতে বিশ্বাস স্থাপনকারী এবং পরকালে অবিশ্বাসীদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে এবং সেই পার্থক্য হচ্ছে, বিশ্বাসীগণ বিশ্বাস করেন যে, প্রতিটি কাজের জন্য আল্লাহ তাআ'লার সামনে জবাবদিহি করতে হবে; কিন্তু অবিশ্বাসীগণ তা বিশ্বাস করেন না। মহান আল্লাহ তাআ'লা বলেন, قَدْ خَسِرَ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِلِقَاءِ اللَّهِ ۖ حَتَّىٰ إِذَا جَاءَتْهُمُ السَّاعَةُ بَغْتَةً قَالُوا يَا حَسْرَتَنَا عَلَىٰ مَا فَرَّطْنَا فِيهَا وَهُمْ يَحْمِلُونَ أَوْزَارَهُمْ عَلَىٰ ظُهُورِهِمْ ۚ أَلَا سَاءَ مَا يَزِرُونَ অর্থাৎ, নিশ্চয় তারা ক্ষতিগ্রস্ত, যারা আল্লাহর সাক্ষাৎকে মিথ্যা মনে করেছে। এমনকি, যখন কিয়ামত তাদের কাছে অকস্মাৎ এসে যাবে, তারা বলবেঃ হায় আফসোস, এর ব্যাপারে আমরা কতই না ক্রটি করেছি। তার স্বীয় বোঝা স্বীয় পৃষ্ঠে বহন করবে। শুনে রাখ, তারা যে বোঝা বহন করবে, তা নিকৃষ্টতর বোঝা। -সূরা আল আনআম, আয়াত ৩১

হে মানবসকল, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা যেদিন দুনিয়াকে ধ্বংসের অনুমতি দিবেন সেটি হবে মহাবিভীষিকাময় খুবই অপ্রত্যাশিত একটি দিন। সমগ্র সৃষ্টিজগত সেদিন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হবে। তিনি ইরশাদ করেন- إِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ অর্থাৎ, যখন সূর্য হয়ে যাবে আলোহীন। -সূরা আত তাকভীর, আয়াত ০১

وَإِذَا النُّجُومُ انكَدَرَتْ অর্থাৎ, যখন নক্ষত্র হয়ে যাবে মলিন ম্লান। -সূরা আত তাকভীর, আয়াত ০২

وَإِذَا الْكَوَاكِبُ انتَثَرَتْ অর্থাৎ, যখন ঝরে পড়বে নক্ষত্রসমূহ। -সূরা আল ইনফিতর, আয়াত ০২

وَإِذَا الْجِبَالُ سُيِّرَتْ অর্থাৎ, যখন পর্বতমালা হবে অপসারিত। -সূরা আত তাকভীর, আয়াত ০৩

وَتَكُونُ الْجِبَالُ كَالْعِهْنِ الْمَنفُوشِ অর্থাৎ, এবং পর্বতমালা হবে ধুনিত রঙ্গীন পশমের মত। -সূরা আল কারিয়াহ, আয়াত ০৫

إِذَا السَّمَاءُ انفَطَرَتْ অর্থাৎ, যখন আকাশ হবে বিদীর্ণ। -সূরা আল ইনফিতর, আয়াত ০১

وَإِذَا السَّمَاءُ كُشِطَتْ অর্থাৎ, যখন আকাশের আবরণ হবে অপসারিত। -সূরা আল আত তাকভীর, আয়াত ১১

يَوْمَ يَكُونُ النَّاسُ كَالْفَرَاشِ الْمَبْثُوثِ অর্থাৎ, যেদিন মানুষ হবে বিক্ষিপ্ত পতংগের মত। -সূরা আল কারিয়াহ, আয়াত ০৪

وَإِذَا الْبِحَارُ سُجِّرَتْ অর্থাৎ, যখন সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে। -সূরা আল আত তাকভীর, আয়াত ০৬

وَإِذَا الْبِحَارُ فُجِّرَتْ অর্থাৎ, যখন সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে। -সূরা আল ইনফিতর, আয়াত ০৩

وَإِذَا الْأَرْضُ مُدَّتْ অর্থাৎ, এবং যখন পৃথিবীকে সম্প্রসারিত করা হবে। -সূরা ইনশিকাক, আয়াত ০৩

وَأَلْقَتْ مَا فِيهَا وَتَخَلَّتْ অর্থাৎ, এবং পৃথিবী তার গর্ভস্থিত সবকিছু বাইরে নিক্ষেপ করবে ও শুন্যগর্ভ হয়ে যাবে। -সূরা আল ইনশিকাক, আয়াত ০৪

وَأَذِنَتْ لِرَبِّهَا وَحُقَّتْ অর্থাৎ, এবং তার পালনকর্তার আদেশ পালন করবে এবং পৃথিবী এরই উপযুক্ত। -সূরা আল ইনশিকাক, আয়াত ০৫

وَإِذَا الْجَحِيمُ سُعِّرَتْ অর্থাৎ, যখন জাহান্নামের অগ্নি প্রজ্বলিত করা হবে। -সূরা আল আত তাকভীর, আয়াত ১২

وَإِذَا الْجَنَّةُ أُزْلِفَتْ অর্থাৎ, এবং যখন জান্নাত সন্নিকটবর্তী হবে। -সূরা আল আত তাকভীর, আয়াত ১৩

يَوْمَ نَطْوِي السَّمَاءَ كَطَيِّ السِّجِلِّ لِلْكُتُبِ ۚ كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِيدُهُ ۚ وَعْدًا عَلَيْنَا ۚ إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ অর্থাৎ, সেদিন আমি আকাশকে গুটিয়ে নেব, যেমন গুটানো হয় লিখিত কাগজপত্র। যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব। আমার ওয়াদা নিশ্চিত, আমাকে তা পূর্ণ করতেই হবে। -সূরা আল আম্বিয়া, আয়াত ১০৪

মহান রবের মহিমান্বিত নির্দেশনা আর অবস্থা বিভীষিকাময় এবং ভয়ঙ্কর। মহান আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمْ ۚ إِنَّ زَلْزَلَةَ السَّاعَةِ شَيْءٌ عَظِيمٌ অর্থাৎ, হে লোক সকল! তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর। নিশ্চয় কেয়ামতের প্রকম্পন একটি ভয়ংকর ব্যাপার। -সূরা আল হাজ্জ, আয়াত ০১

يَوْمَ تَرَوْنَهَا تَذْهَلُ كُلُّ مُرْضِعَةٍ عَمَّا أَرْضَعَتْ وَتَضَعُ كُلُّ ذَاتِ حَمْلٍ حَمْلَهَا وَتَرَى النَّاسَ سُكَارَىٰ وَمَا هُم بِسُكَارَىٰ وَلَـٰكِنَّ عَذَابَ اللَّهِ شَدِيدٌ অর্থাৎ, যেদিন তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে, সেদিন প্রত্যেক স্তন্যধাত্রী তার দুধের শিশুকে বিস্মৃত হবে এবং প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত করবে এবং মানুষকে তুমি দেখবে মাতাল; অথচ তারা মাতাল নয় বস্তুতঃ আল্লাহর আযাব সুকঠিন। -সূরা আল হাজ্জ, আয়াত ০২

প্রিয় বন্ধুগণ, আর যখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা পৃথিবীকে ধ্বংসের অনুমতি দিবেন, তখন তিনি মহা আতঙ্ক ও প্রচন্ড বেগে ধাক্কা দিতে আদেশ দিবেন। এতে সবকিছু নিঃশেষ হয়ে যাবে। মৃত্যুর ভয়ঙ্কর ছোবল এসে সমস্ত প্রাণবান সত্ত্বাকে মুহূর্তেই নিষ্প্রাণ করে দিবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَصَعِقَ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَمَن فِي الْأَرْضِ إِلَّا مَن شَاءَ اللَّهُ ۖ ثُمَّ نُفِخَ فِيهِ أُخْرَىٰ فَإِذَا هُمْ قِيَامٌ يَنظُرُونَ অর্থাৎ, শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, ফলে আসমান ও যমীনে যারা আছে সবাই বেহুঁশ হয়ে যাবে, তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন। অতঃপর আবার শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা দন্ডায়মান হয়ে দেখতে থাকবে। -সূরা যুমার, আয়াত ৬৮

আর শিংগায় ফুঁক দেয়ার এই ভয়ঙ্কর ঘটনা একেবারেই হঠাৎ ঘটে যাবে। মানুষ কল্পনাও করতে পারবে না যে, এমন এক মহাপ্রলয় ঘটতে যাচ্ছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- مَا يَنظُرُونَ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً تَأْخُذُهُمْ وَهُمْ يَخِصِّمُونَ অর্থাৎ, তারা কেবল একটা ভয়াবহ শব্দের অপেক্ষা করছে, যা তাদেরকে আঘাত করবে তাদের পারস্পরিক বাকবিতন্ডাকালে। -সূরা ইয়া সীন, আয়াত ৪৯

فَلَا يَسْتَطِيعُونَ تَوْصِيَةً وَلَا إِلَىٰ أَهْلِهِمْ يَرْجِعُونَ অর্থাৎ, তখন তারা ওছিয়ত করতেও সক্ষম হবে না। এবং তাদের পরিবার-পরিজনের কাছেও ফিরে যেতে পারবে না। -সূরা ইয়া সীন, আয়াত ৫০

এরপরে পুনরুত্থানের জন্য আবার শিংগায় ফুঁক দেয়ার নির্দেশ দেয়া হবে। ইরশাদ করা হয়েছে-

وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَإِذَا هُم مِّنَ الْأَجْدَاثِ إِلَىٰ رَبِّهِمْ يَنسِلُونَ অর্থাৎ, শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, তখনই তারা কবর থেকে তাদের পালনকর্তার দিকে ছুটে চলবে। -সূরা ইয়া সীন, আয়াত ৫১

পৃথিবী থাকবে তখন কম্পমান অবস্থায়। থরথর করে কাঁপতে থাকবে। এবং তার পেটে থাকা সব ভারী বস্তুগুলো সে উগরে উগরে বের করে দিতে থাকবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- وَأَخْرَجَتِ الْأَرْضُ أَثْقَالَهَا অর্থাৎ, যখন সে তার বোঝা বের করে দেবে। -সূরা যিলযালাহ, আয়াত ০২

মানুষ নিজের কৃত আমলের ফলাফল স্পষ্টভাবে তার সামনে দেখতে সক্ষম হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- عَلِمَتْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ وَأَخَّرَتْ অর্থাৎ, তখন প্রত্যেকে জেনে নিবে সে কি অগ্রে প্রেরণ করেছে এবং কি পশ্চাতে ছেড়ে এসেছে। -সূরা আল ইনফিতর, আয়াত ০৫

সেই মহাদিনে আল্লাহ জাল্লা জালালুহু শুরু হতে শেষ পর্যন্তু সকল মানুষকে জড়ো করবেন খালি পায়ে এবং নগ্ন অবস্থায়। কোন বিভেদ থাকবে না সেদিন। কোন উঁচুনিচুর ভেদাভেদও নয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِيدُهُ ۚ وَعْدًا عَلَيْنَا ۚ إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ অর্থাৎ, যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব। আমার ওয়াদা নিশ্চিত, আমাকে তা পূর্ণ করতেই হবে। -সূরা আল আম্বিয়া, আয়াত ১০৪

সেদিন সকল মানুষকে এমন একটি জমায়েতের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হবে যেখানে আল্লাহর সামনে তাদেরকে উপস্থাপন করা হবে এবং হিসাব নেওয়া হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- يَوْمَئِذٍ تُعْرَضُونَ لَا تَخْفَىٰ مِنكُمْ خَافِيَةٌ অর্থাৎ, সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোন কিছু গোপন থাকবে না। -সূরা আল হা-ক্কাহ, আয়াত ১৮

বিচার দিবসের মহাত্রাস ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকবে। প্রচন্ড ভয়, অবর্ণনীয় আতঙ্ক প্রবল হতে প্রবলতর হয়ে উঠবে। কষ্টের তীব্রতা মানুষের সহ্যের সকল সীমাপরিসীমা অতিক্রম করবে। মানুষ অস্থির বেকারার হয়ে পড়বে। দিশেহারা। কান্নাকাটির রোল পড়ে যাবে। কেউ কারও খবর নেওয়া তো দূরের কথা। অপরের দিকে ফিরে তাকাবারও অবস্থা থাকবে না কারও। তখন সিরাত তথা জান্নাত এবং জাহান্নামে গমনের পথ নির্মান করা হবে। দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করা হবে। সাক্ষী উপস্থাপন করে বিচার প্রক্রিয়া সম্পাদন করা হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- وَأَشْرَقَتِ الْأَرْضُ بِنُورِ رَبِّهَا وَوُضِعَ الْكِتَابُ وَجِيءَ بِالنَّبِيِّينَ وَالشُّهَدَاءِ وَقُضِيَ بَيْنَهُم بِالْحَقِّ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ অর্থাৎ, পৃথিবী তার পালনকর্তার নূরে উদ্ভাসিত হবে, আমলনামা স্থাপন করা হবে, পয়গম্বরগণ ও সাক্ষীগণকে আনা হবে এবং সকলের মধ্যে ন্যায় বিচার করা হবে-তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না। -সূরা আল যুমার, আয়াত ৬৯

জান্নাতকে নেককারদের নিকটবর্তী করা হবে। এবং পথভ্রষ্টদের জন্য জাহান্নাম উম্মুক্ত করে দেওয়া হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- وَأُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِينَ غَيْرَ بَعِيدٍ অর্থাৎ, জান্নাতকে উপস্থিত করা হবে খোদাভীরুদের অদূরে। -সূরা ক্কা-ফ, আয়াত ৩১, وَبُرِّزَتِ الْجَحِيمُ لِلْغَاوِينَ অর্থাৎ, এবং বিপথগামীদের সামনে উম্মোচিত করা হবে জাহান্নাম। -সূরা আশ শুআরা, আয়াত ৯১

এরপরে নিজ নিজ আমলের খাতাকে সকলের সামনে পরিদৃশ্যমান করে দেয়া হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- وَوُضِعَ الْكِتَابُ فَتَرَى الْمُجْرِمِينَ مُشْفِقِينَ مِمَّا فِيهِ وَيَقُولُونَ يَا وَيْلَتَنَا مَالِ هَـٰذَا الْكِتَابِ لَا يُغَادِرُ صَغِيرَةً وَلَا كَبِيرَةً إِلَّا أَحْصَاهَا ۚ وَوَجَدُوا مَا عَمِلُوا حَاضِرًا ۗ وَلَا يَظْلِمُ رَبُّكَ أَحَدًا
অর্থাৎ, আর আমলনামা সামনে রাখা হবে। তাতে যা আছে; তার কারণে আপনি অপরাধীদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত দেখবেন। তারা বলবেঃ হায় আফসোস, এ কেমন আমলনামা। এ যে ছোট বড় কোন কিছুই বাদ দেয়নি-সবই এতে রয়েছে। তারা তাদের কৃতকর্মকে সামনে উপস্থিত পাবে। আপনার পালনকর্তা কারও প্রতি জুলুম করবেন না। -সূরা আল কাহাফ, আয়াত ৪৯

فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ অর্থাৎ, যাকে তার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে। -সূরা আল ইনশিকাক, আয়াত ০৭

فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا অর্থাৎ, তার হিসাব-নিকাশ সহজে হয়ে যাবে। -সূরা আল ইনশিকাক, আয়াত ০৮

وَيَنقَلِبُ إِلَىٰ أَهْلِهِ مَسْرُورًا অর্থাৎ, এবং সে তার পরিবার-পরিজনের কাছে হৃষ্টচিত্তে ফিরে যাবে। -সূরা আল ইনশিকাক, আয়াত ০৯

وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ وَرَاءَ ظَهْرِهِ অর্থাৎ, এবং যাকে তার আমলনামা পিঠের পশ্চাদ্দিক থেকে দেয়া হবে। -সূরা আল ইনশিকাক, আয়াত ১০

فَسَوْفَ يَدْعُو ثُبُورًا অর্থাৎ, সে মৃত্যুকে আহবান করবে। -সূরা আল ইনশিকাক, আয়াত ১১

وَيَصْلَىٰ سَعِيرًا অর্থাৎ, এবং জাহান্নামে প্রবেশ করবে। -সূরা আল ইনশিকাক, আয়াত ১২

إِنَّهُ كَانَ فِي أَهْلِهِ مَسْرُورًا অর্থাৎ, সে তার পরিবার-পরিজনের মধ্যে আনন্দিত ছিল। -সূরা আল ইনশিকাক, আয়াত ১৩

إِنَّهُ ظَنَّ أَن لَّن يَحُورَ অর্থাৎ, সে মনে করত যে, সে কখনও ফিরে যাবে না। -সূরা আল ইনশিকাক, আয়াত ১৪

الْمُلْكُ يَوْمَئِذٍ الْحَقُّ لِلرَّحْمَـٰنِ ۚ وَكَانَ يَوْمًا عَلَى الْكَافِرِينَ عَسِيرًا অর্থাৎ, সেদিন সত্যিকার রাজত্ব হবে দয়াময় আল্লাহর এবং কাফেরদের পক্ষে দিনটি হবে কঠিন। -সূরা আল ফুরকান, আয়াত ২৬

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা সেদিন সমস্ত আকাশগুলোকে একটি বইয়ের পৃষ্ঠার মতো ভাঁজ করবেন এবং ভাঁজ করা অবস্থায় সেগুলিকে তাঁর ডান হাতে রাখবেন এবং পৃথিবীকে তাঁর অন্য হাতে রাখবেন। আল্লাহ তাআ'লা বলেন- وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ وَالْأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّمَاوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِ ۚ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ অর্থাৎ, তারা আল্লাহকে যথার্থরূপে বোঝেনি। কেয়ামতের দিন গোটা পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোতে এবং আসমানসমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান হাতে। তিনি পবিত্র। আর এরা যাকে শরীক করে, তা থেকে তিনি অনেক উর্ধ্বে। -সূরা আল যুমার, আয়াত ৬৭

অতঃপর তিনি সাত আসমানকে সাত আসমানের উপর এবং পৃথিবীকে পৃথিবীর উপর পুনরায় স্থাপন করবেন। তিনি জুলজালাল। সকল ক্ষমতার উৎস তাঁরই হাতে। সকল সম্মান, ইজ্জত এবং আস্পর্ধাও তাঁরই। সেদিন তাঁর জালাল প্রকাশ পাবে। তাঁর বড়ত্ব প্রকাশিত হবে। তিনি কেঁপে কেঁপে উঠবেন। ক্রোধে ফেটে পড়বেন এবং ঘোষনা দিবেন, أنا الملك অর্থাৎ, আমিই বাদশাহ। কুরআনে হাকিমে ইরশাদ হয়েছে- لِّمَنِ الْمُلْكُ الْيَوْمَ ۖ لِلَّهِ الْوَاحِدِ الْقَهَّارِ অর্থাৎ, আজ রাজত্ব কার? এক প্রবল পরাক্রান্ত আল্লাহর। -সূরা আল মু'মিন/ গাফির, আয়াত ১৬

الْيَوْمَ تُجْزَىٰ كُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ ۚ لَا ظُلْمَ الْيَوْمَ ۚ إِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ অর্থাৎ, আজ প্রত্যেকেই তার কৃতকর্মের প্রতিদান পাবে। আজ যুলুম নেই। নিশ্চয় আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী। -সূরা আল মু'মিন/ গাফির, আয়াত ১৭

وَأَنذِرْهُمْ يَوْمَ الْآزِفَةِ إِذِ الْقُلُوبُ لَدَى الْحَنَاجِرِ كَاظِمِينَ ۚ مَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ حَمِيمٍ وَلَا شَفِيعٍ يُطَاعُ অর্থাৎ, আপনি তাদেরকে আসন্ন দিন সম্পর্কে সতর্ক করুন, যখন প্রাণ কন্ঠাগত হবে, দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। পাপিষ্ঠদের জন্যে কোন বন্ধু নেই এবং সুপারিশকারীও নেই; যার সুপারিশ গ্রাহ্য হবে। -সূরা আল মু'মিন/ গাফির, আয়াত ১৮

কিয়ামতের সেই ভয়াবহতম দিনটিতে মানুষের দুরবস্থা এতটাই কঠিন হবে যে, তারা আত্মীয়-স্বজনের পরিচয় বিস্মৃত হবে। কুরআনে হাকিমে ইরশাদ হয়েছে- يَوْمَ يَفِرُّ الْمَرْءُ مِنْ أَخِيهِ অর্থাৎ, সেদিন পলায়ন করবে মানুষ তার ভ্রাতার কাছ থেকে। -সূরা আবাসা, আয়াত ৩৪

وَأُمِّهِ وَأَبِيهِ অর্থাৎ, তার মাতা, তার পিতার কাছ থেকে। -সূরা আবাসা, আয়াত ৩৫

وَصَاحِبَتِهِ وَبَنِيهِ অর্থাৎ, তার পত্নী ও তার সন্তানদের কাছ থেকে। -সূরা আবাসা, আয়াত ৩৬

لِكُلِّ امْرِئٍ مِّنْهُمْ يَوْمَئِذٍ شَأْنٌ يُغْنِيهِ অর্থাৎ, সেদিন প্রত্যেকেরই নিজের এক চিন্তা থাকবে, যা তাকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখবে। -সূরা আবাসা, আয়াত ৩৭

শুধু তাই নয়, সে দিন পাপিষ্টরা নিজেকে জাহান্নামের আগুন হতে বাঁচানোর জন্য কোন চেষ্টাই বাকি রাখবে না। এমনকি শেষ পর্যন্তু আত্মীয়-পরিজন সকল কিছুর বিনিময়ে হলেও বেঁচে যেতে চেষ্টা করতেও তারা কার্পন্য করবে না। কুরআনে হাকিমে ইরশাদ হয়েছে- يَوَدُّ الْمُجْرِمُ لَوْ يَفْتَدِي مِنْ عَذَابِ يَوْمِئِذٍ بِبَنِيهِ অর্থাৎ, সেদিন গোনাহগার ব্যক্তি পনস্বরূপ দিতে চাইবে তার সন্তান-সন্ততিকে। -সূরা আল মাআরিজ, আয়াত ১১

وَصَاحِبَتِهِ وَأَخِيهِ অর্থাৎ, তার স্ত্রীকে, তার ভ্রাতাকে। -সূরা আল মাআরিজ, আয়াত ১২

وَفَصِيلَتِهِ الَّتِي تُؤْوِيهِ অর্থাৎ, তার গোষ্ঠীকে, যারা তাকে আশ্রয় দিত। -সূরা আল মাআরিজ, আয়াত ১৩

وَمَن فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا ثُمَّ يُنجِيهِ অর্থাৎ, এবং পৃথিবীর সবকিছুকে, অতঃপর নিজেকে রক্ষা করতে চাইবে। -সূরা আল মাআরিজ, আয়াত ১৪

সে দিন হৃদয়, ঠোঁট, এবং চক্ষুগুলো থাকবে অবনত। প্রত্যেকের অবস্থা ভীতিজনক। বর্ণনাতীতভাবে হৃদয়বিদারক। কুরআনে হাকিমে ইরশাদ হয়েছে- يَوْمَ تَرْجُفُ الرَّاجِفَةُ অর্থাৎ, যেদিন প্রকম্পিত করবে প্রকম্পিতকারী। -সূরা আন নাযিআত, আয়াত ০৬

تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ অর্থাৎ, অতঃপর পশ্চাতে আসবে পশ্চাদগামী। -সূরা আন নাযিআত, আয়াত ০৭

قُلُوبٌ يَوْمَئِذٍ وَاجِفَةٌ অর্থাৎ, সেদিন অনেক হৃদয় ভীত-বিহবল হবে। -সূরা আন নাযিআত, আয়াত ০৮

أَبْصَارُهَا خَاشِعَةٌ অর্থাৎ, তাদের দৃষ্টি নত হবে। -সূরা আন নাযিআত, আয়াত ০৯

يَقُولُونَ أَإِنَّا لَمَرْدُودُونَ فِي الْحَافِرَةِ অর্থাৎ, তারা বলেঃ আমরা কি উলটো পায়ে প্রত্যাবর্তিত হবই? -সূরা আন নাযিআত, আয়াত ১০

أَإِذَا كُنَّا عِظَامًا نَّخِرَةً অর্থাৎ, গলিত অস্থি হয়ে যাওয়ার পরও? -সূরা আন নাযিআত, আয়াত ১১

قَالُوا تِلْكَ إِذًا كَرَّةٌ خَاسِرَةٌ অর্থাৎ, তবে তো এ প্রত্যাবর্তন সর্বনাশা হবে! -সূরা আন নাযিআত, আয়াত ১২

فَإِنَّمَا هِيَ زَجْرَةٌ وَاحِدَةٌ অর্থাৎ, অতএব, এটা তো কেবল এক মহা-নাদ, -সূরা আন নাযিআত, আয়াত ১৩

فَإِذَا هُم بِالسَّاهِرَةِ অর্থাৎ, তখনই তারা ময়দানে আবির্ভূত হবে। -সূরা আন নাযিআত, আয়াত ১৪

মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা তাঁর অন্তহীন দয়া ও করুণা দ্বারা আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন। তিনি আমাদের জীবন পরিচালনার পদ্ধতি ও মূলনীতি দান করে আমাদেরকে ধন্য করেছেন। জীবন জীবিকার প্রয়োজনে আমাদের জন্য বৈচিত্রপূর্ণ পেশা ও কাজের ব্যবস্থা করেছেন এবং সেসব কাজের বিষয়ে সুষ্ঠু নিয়ম নীতি ও বিধি বিধান প্রণয়ন করে সেগুলোর অনুসরণ-অনুকরণ, তত্ত্বাবধান ও নিরীক্ষণ করার সুযোগ রেখেছেন। তাঁর ন্যায়বিচার, প্রজ্ঞা ও দয়ার কারণে আমাদের পার্থিব জীবনের সেই সকল কাজের বিনিময় বা প্রতিদান প্রদানের ব্যবস্থাও তিনি পরকালে রেখে দিয়েছেন আমাদের জন্য। এই কারণে কিয়ামতের কঠিন এবং ভয়াবহ দিনটিকে অভিহিত করা হয়েছে বিচার দিবস বা হিসাবের দিন বলেও। সহিহ বুখারিতে দীর্ঘ এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-

مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا أَبُوْ حَيَّانَ التَّيْمِيُّ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ جَرِيْرٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُتِيَ بِلَحْمٍ فَرُفِعَ إِلَيْهِ الذِّرَاعُ وَكَانَتْ تُعْجِبُهُ فَنَهَشَ مِنْهَا نَهْشَةً ثُمَّ قَالَ أَنَا سَيِّدُ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَهَلْ تَدْرُوْنَ مِمَّ ذَلِكَ يَجْمَعُ اللهُ النَّاسَ الْأَوَّلِيْنَ وَالْآخِرِيْنَ فِيْ صَعِيْدٍ وَاحِدٍ يُسْمِعُهُمْ الدَّاعِيْ وَيَنْفُذُهُمْ الْبَصَرُ وَتَدْنُو الشَّمْسُ فَيَبْلُغُ النَّاسَ مِنَ الْغَمِّ وَالْكَرْبِ مَا لَا يُطِيْقُوْنَ وَلَا يَحْتَمِلُوْنَ فَيَقُوْلُ النَّاسُ أَلَا تَرَوْنَ مَا قَدْ بَلَغَكُمْ أَلَا تَنْظُرُوْنَ مَنْ يَشْفَعُ لَكُمْ إِلَى رَبِّكُمْ فَيَقُوْلُ بَعْضُ النَّاسِ لِبَعْضٍ عَلَيْكُمْ بِآدَمَ فَيَأْتُوْنَ آدَمَ عَلَيْهِ السَّلَام فَيَقُوْلُوْنَ لَهُ أَنْتَ أَبُو الْبَشَرِ خَلَقَكَ اللهُ بِيَدِهِ وَنَفَخَ فِيْكَ مِنْ رُوْحِهِ وَأَمَرَ الْمَلَائِكَةَ فَسَجَدُوْا لَكَ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلَا تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيْهِ أَلَا تَرَى إِلَى مَا قَدْ بَلَغَنَا فَيَقُوْلُ آدَمُ إِنَّ رَبِّيْ قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ وَإِنَّهُ قَدْ نَهَانِيْ عَنْ الشَّجَرَةِ فَعَصَيْتُهُ نَفْسِيْ نَفْسِيْ نَفْسِي اذْهَبُوْا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوْا إِلَى نُوْحٍ

فَيَأْتُوْنَ نُوْحًا فَيَقُوْلُوْنَ يَا نُوْحُ إِنَّكَ أَنْتَ أَوَّلُ الرُّسُلِ إِلَى أَهْلِ الْأَرْضِ وَقَدْ سَمَّاكَ اللهُ عَبْدًا شَكُوْرًا اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلَا تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيْهِ فَيَقُوْلُ إِنَّ رَبِّيْ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ وَإِنَّهُ قَدْ كَانَتْ لِيْ دَعْوَةٌ دَعَوْتُهَا عَلَى قَوْمِيْ نَفْسِيْ نَفْسِيْ نَفْسِي اذْهَبُوْا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوْا إِلَى إِبْرَاهِيْمَ

فَيَأْتُوْنَ إِبْرَاهِيْمَ فَيَقُوْلُوْنَ يَا إِبْرَاهِيْمُ أَنْتَ نَبِيُّ اللهِ وَخَلِيْلُهُ مِنْ أَهْلِ الْأَرْضِ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلَا تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيْهِ فَيَقُوْلُ لَهُمْ إِنَّ رَبِّيْ قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ وَإِنِّيْ قَدْ كُنْتُ كَذَبْتُ ثَلَاثَ كَذِبَاتٍ فَذَكَرَهُنَّ أَبُوْ حَيَّانَ فِي الْحَدِيْثِ نَفْسِيْ نَفْسِيْ نَفْسِي اذْهَبُوْا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوْا إِلَى مُوْسَى

فَيَأْتُوْنَ مُوْسَى فَيَقُوْلُوْنَ يَا مُوْسَى أَنْتَ رَسُوْلُ اللهِ فَضَّلَكَ اللهُ بِرِسَالَتِهِ وَبِكَلَامِهِ عَلَى النَّاسِ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلَا تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيْهِ فَيَقُوْلُ إِنَّ رَبِّيْ قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ وَإِنِّيْ قَدْ قَتَلْتُ نَفْسًا لَمْ أُوْمَرْ بِقَتْلِهَا نَفْسِيْ نَفْسِيْ نَفْسِي اذْهَبُوْا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوْا إِلَى عِيْسَى ابْنِ مَرْيَمَ

فَيَأْتُوْنَ عِيْسَى فَيَقُوْلُوْنَ يَا عِيْسَى أَنْتَ رَسُوْلُ اللهِ وَكَلِمَتُهُ أَلْقَاهَا إِلَى مَرْيَمَ وَرُوْحٌ مِنْهُ وَكَلَّمْتَ النَّاسَ فِي الْمَهْدِ صَبِيًّا اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلَا تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيْهِ فَيَقُوْلُ عِيْسَى إِنَّ رَبِّيْ قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ قَطُّ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ ذَنْبًا نَفْسِيْ نَفْسِيْ نَفْسِي اذْهَبُوْا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوْا إِلَى مُحَمَّدٍ

فَيَأْتُوْنَ مُحَمَّدًا فَيَقُوْلُوْنَ يَا مُحَمَّدُ أَنْتَ رَسُوْلُ اللهِ وَخَاتِمُ الْأَنْبِيَاءِ وَقَدْ غَفَرَ اللهُ لَكَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلَا تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيْهِ فَأَنْطَلِقُ فَآتِيْ تَحْتَ الْعَرْشِ فَأَقَعُ سَاجِدًا لِرَبِّيْ عَزَّ وَجَلَّ ثُمَّ يَفْتَحُ اللهُ عَلَيَّ مِنْ مَحَامِدِهِ وَحُسْنِ الثَّنَاءِ عَلَيْهِ شَيْئًا لَمْ يَفْتَحْهُ عَلَى أَحَدٍ قَبْلِيْ ثُمَّ يُقَالُ يَا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ سَلْ تُعْطَهْ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ

فَأَرْفَعُ رَأْسِيْ فَأَقُوْلُ أُمَّتِيْ يَا رَبِّ أُمَّتِيْ يَا رَبِّ أُمَّتِيْ يَا رَبِّ فَيُقَالُ يَا مُحَمَّدُ أَدْخِلْ مِنْ أُمَّتِكَ مَنْ لَا حِسَابَ عَلَيْهِمْ مِنَ الْبَابِ الْأَيْمَنِ مِنْ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ وَهُمْ شُرَكَاءُ النَّاسِ فِيْمَا سِوَى ذَلِكَ مِنَ الْأَبْوَابِ ثُمَّ قَالَ وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ إِنَّ مَا بَيْنَ الْمِصْرَاعَيْنِ مِنْ مَصَارِيْعِ الْجَنَّةِ كَمَا بَيْنَ مَكَّةَ وَحِمْيَرَ أَوْ كَمَا بَيْنَ مَكَّةَ وَبُصْرَى بَاب :{ذُرِّيَّةَ مَنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوْحٍ إِنَّه” كَانَ عَبْدًا شَكُوْرًا} متفق عليه.

অর্থাৎ, আবূ হুরাইরাহ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত। একদা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে গোস্ত আনা হল এবং তাঁকে সামনের রান পরিবেশন করা হল। তিনি এটা পছন্দ করতেন। তিনি তার থেকে কামড়ে খেলেন। এরপর বললেন, আমি হব কিয়ামতের দিন মানবকুলের নেতা। তোমাদের কি জানা আছে তা কেন? কিয়ামতের দিন আগের ও পরের সকল মানুষ এমন এক ময়দানে জমায়েত হবে, যেখানে একজন আহবানকারীর আহবান সকলে শুনতে পাবে এবং সকলেই একসঙ্গে দৃষ্টিগোচরিভূত হবে। সূর্য নিকটে এসে যাবে। মানুষ এমনই কষ্ট-ক্লেশের সম্মুখীন হবে যা অসহনীয় ও অসহ্যকর হয়ে পড়বে। তখন লোকেরা বলবে, তোমরা কী বিপদের সম্মুখীন হয়েছ, তা কি দেখতে পাচ্ছ না? তোমরা কি এমন কাউকে খুঁজে বের করবে না, যিনি তোমাদের রবের কাছে তোমাদের জন্য সুপারিশকারী হবেন? কেউ কেউ অন্যদের বলবে যে, আদমের কাছে চল। তখন সকলে তার কাছে এসে তাঁকে বলবে, আপনি মানবজাতির আদি পিতা। আল্লাহ্ তা’আলা আপনাকে নিজ হস্ত দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর রূহ আপনার মধ্যে ফুঁকে দিয়েছেন এবং মালায়িকাদের হুকুম দিলে তাঁরা আপনাকে সিজদা করেন। আপনি আপনার রবের নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না যে, আমরা কিসের মধ্যে আছি? আপনি কি দেখছেন না যে, আমরা কী অবস্থায় পৌঁছেছি। তখন আদম আলাইহিস সালাম বলবেন, আজ আমার রব এত রাগান্বিত হয়েছেন যে, এর আগেও কোনদিন এরূপ রাগান্বিত হননি আর পরেও এরূপ রাগান্বিত হবেন না। তিনি আমাকে একটি গাছের নিকট যেতে নিষেধ করেছিলেন, কিন্তু আমি অমান্য করেছি, নাফ্সী, নাফ্সী, নাফ্সী, (আমি নিজেই সুপারিশ প্রার্থী) তোমরা অন্যের কাছে যাও, তোমরা নূহ আলাইহিস সালাম -এর কাছে যাও।

তখন সকলে নূহ্ আলাইহিস সালাম -এর কাছে এসে বলবে, হে নূহ্ আলাইহিস সালাম! নিশ্চয়ই আপনি পৃথিবীর মানুষের প্রতি প্রথম রাসূল। আর আল্লাহ্ তা’আলা আপনাকে পরম কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সুতরাং আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না যে, আমরা কিসের মধ্যে আছি? তিনি বলবেন, আমার রব আজ এত ভীষণ রাগান্বিত যে, আগেও এমন রাগান্বিত হননি আর পরে কখনো এমন রাগান্বিত হবেন না। আমার একটি গ্রহণযোগ্য দু’আ ছিল, যা আমি আমার কওমের ব্যাপারে করে ফেলেছি, (এখন) নাফ্সী, নাফ্সী, নাফ্সী। তোমরা অন্যের কাছে যাও- যাও তোমরা ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম -এর কাছে।

তখন তারা ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম -এর কাছে এসে বলবে, হে ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম! আপনি আল্লাহর নবী এবং পৃথিবীর মানুষের মধ্যে আপনি আল্লাহর বন্ধু। আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন না আমরা কিসের মধ্যে আছি? তিনি তাদের বলবেন, আমার রব আজ ভীষণ রাগান্বিত, যার আগেও কোন দিন এরূপ রাগান্বিত হননি, আর পরেও কোনদিন এরূপ রাগান্বিত হবেন না। আর আমি তো তিনটি মিথ্যা বলে ফেলেছিলাম। রাবী আবূ হাইয়ান তাঁর বর্ণনায় এগুলোর উল্লেখ করেছেন- (এখন) নাফসী, নাফসী, নাফসী, তোমরা অন্যের কাছে যাও- যাও মূসা আলাইহিস সালাম -এর কাছে।

তারা মূসার কাছে এসে বলবে, হে মূসা আলাইহিস সালাম! আপনি আল্লাহর রাসূল। আল্লাহ্ আপনাকে রিসালাতের সম্মান দিয়েছেন এবং আপনার সঙ্গে কথা বলে সমস্ত মানবকূলের উপর মর্যাদা দান করেছেন। আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন না আমরা কিসের মধ্যে আছি? তিনি বললেন, আজ আমার রব ভীষণ রাগান্বিত আছেন, এরূপ রাগান্বিত আগেও হননি এবং পরেও এরূপ রাগান্বিত হবেন না। আর আমি তো এক ব্যক্তিকে হত্যা করে ফেলেছিলাম, যাকে হত্যা করার জন্য আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়নি। এখন নাফ্সী, নাফসী, নাফসী। তোমরা অন্যের কাছে যাও- যাও ঈসা আলাইহিস সালাম -এর কাছে।

তখন তারা ঈসা আলাইহিস সালাম -এর কাছে এসে বলবে, হে ঈসা আলাইহিস সালাম! আপনি আল্লাহর রাসূল এবং কালিমাহ, যা তিনি মারইয়াম আলাইহাস সালাম -এর উপর ঢেলে দিয়েছিলেন। আপনি ’রূহ’। আপনি দোলনায় থেকে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। আজ আপনি আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না, আমরা কিসের মধ্যে আছি? তখন ঈসা আলাইহিস সালাম বলবেন, আজ আমার রব এত রাগান্বিত যে, এর আগে এরূপ রাগান্বিত হননি এবং এর পরেও এরূপ রাগান্বিত হবেন না। তিনি নিজের কোন গুনাহর কথা বলবেন না। নাফসী, নাফসী, নাফসী, তোমরা অন্য কারও কাছে যাও- যাও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে।

তারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলবে, হে মুহাম্মাদ! আপনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ্ তা’আলা আপনার আগের, পরের সকল গুনাহ্ ক্ষমা করে দিয়েছেন। আপনি আমাদের জন্য আপনার রবের কাছে সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না আমরা কিসের মধ্যে আছি? তখন আমি আরশের নিচে এসে আমার রবের সামনে সিজদায় পড়ে যাব। তারপর আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর প্রশংসা ও গুণগানের এমন সুন্দর নিয়ম আমার সামনে খুলে দিবেন, যা এর পূর্বে অন্য কারও জন্য খোলেননি। এরপর বলা হবে, হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তোমার মাথা উঠাও। তুমি যা চাও, তোমাকে দেয়া হবে। তুমি সুপারিশ কর, তোমার সুপারিশ কবূল করা হবে।

এরপর আমি আমার মাথা উঠিয়ে বলব, হে আমার রব! আমার উম্মত। হে আমার রব! আমার উম্মত। হে আমার রব! আমার উম্মত। তখন বলা হবে, হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনার উম্মাতের মধ্যে যাদের কোন হিসাব-নিকাশ হবে না, তাদেরকে জান্নাতের দরজাসমূহের ডান পার্শ্বের দরজা দিয়ে প্রবেশ করিয়ে দিন। এ দরজা ব্যতীত অন্যদের সঙ্গে অন্য দরজায়ও তাদের প্রবেশের অধিকার থাকবে। তারপর তিনি বলবেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, সে সত্তার শপথ! জান্নাতের এক দরজার দুই পার্শ্বের মধ্যবর্তী স্থানের প্রশস্ততা যেমন মক্কা ও হামীরের মধ্যবর্তী দূরত্ব, অথবা মক্কা ও বসরার মাঝে দূরত্বের সমতুল্য। -সহিহ বুখারি, হাদিস (ইফা প্রকাশনী) নং ৪৩৫৩, আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৩৫১, আন্তর্জাতিক নাম্বার ৩৩৪০

প্রিয় বন্ধুগণ, আসুন, বিচার ও পুরষ্কার দিবসের বিষয়ে উদাসীনতা থেকে আমরা সাবধান হই। সতর্ক হই মহান রবের সাথে আমাদের প্রতিশ্রুত সাক্ষাতের বিষয়ে। এই কারণেই বিচার দিবস এবং কিয়ামত সম্পর্কে সচেতনতা আনয়নকারী যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে সেগুলোর প্রতি বিশ্বাসের দৃঢ়তাকেও আরও শানিত করি। আরও পরিশীলিত করি। আর আগ্রহ, আসক্তি এবং হৃদ্যতা বৃদ্ধি করি পরকালীন অন্তহীন জীবনের প্রতি। এতে করেই আমাদের পরকালের অনন্ত জীবনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়ে উঠবে সহজ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা ইরশাদ করেন- يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَلْتَنظُرْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ لِغَدٍ ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ অর্থাৎ, মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ তা’আলাকে ভয় কর। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত, আগামী কালের জন্যে সে কি প্রেরণ করে, তা চিন্তা করা। আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করতে থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা’আলা সে সম্পর্কে খবর রাখেন। -সূরা হাশর, আয়াত ১৮

পরিশেষে মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার নিকট কায়োমনোবাক্যে বিনীত ফরিয়াদ, কঠিন বিভীষিকাময় বিচার দিবসে তিনি যেন আমাদেরকে তাঁর নৈকট্য, নেআমত এবং নিরাপত্তাপ্রাপ্ত হকপন্থীদের অন্তর্ভুক্ত করেন এবং সেই দিনটির সকল ভয়াবহতা হতে আমাদের সুরক্ষা প্রদান করেন। ঘোরতর বিপদের সেই কঠিন দিনটিতে তিনি যেন তাঁর সুমহান আরশের ছায়ায় আমাদের আশ্রয় দান করেন। তাঁর প্রিয়তম হাবিব, রাসূলে আকরাম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বরকতময় হাতে হাওযে কাওসারের পিয়ালা এবং তাঁর শাফায়াতপ্রাপ্তির মাধ্যমে অনন্ত জান্নাতে দাখিলের সুমহান সৌভাগ্যও তিনি যেন আমাদের নসিব করেন। আমিন।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:১৮
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×