somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলার দার্জেলিং খ্যাত নীলগিরি সম্পর্কিত তথ্য।

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র বাংলাদেশের বান্দরবান জেলায় নীলগিরি পাহাড়চূড়ায় অবস্থিত একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অতি উচ্চে অবস্থানের কারণে এই স্থানটি সর্বদা মেঘমণ্ডিত আর এটাই এই পর্যটন কেন্দ্রের বিশেষ আকর্ষণ। একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে নীলগিরি ধীরে ধীরে দেশব্যাপী মানুষের কাছে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত লাভ করতে শুরু করে।

অবস্থান :
সেনানিয়ন্ত্রিত নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় তিন হাজার ২০০ ফুট। নীলগিরি এখন পর্যটকদের কাছে মায়াবি এক আকর্ষণ। জেলা সদর থেকে পাহাড়ি আকাঁবাঁকা সড়কে ৪৭ কিলোমিটার দূরে নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রের অবস্থান। আর বাংলার দার্জিলিং খ্যাত চিম্বুক পাহাড় থেকে থানছি উপজেলা সড়কপথে আরও ২৬ কিলোমিটার যেতে হয় নীলগিরি পৌছাতে। যাওয়ার পথে চারপাশের দৃশ্যগুলো খুবই চমৎকার। সেনাবাহিনীর বান্দরবান ৬৯ পদাতিক সেনা রিজিয়নের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে নীলগিরি পর্যটন স্পটটি। এখানে রাত্রিযাপনসহ থাকা-খাওয়ার সু-ব্যবস্থাও রয়েছে। সেনা নিয়ন্ত্রিত নীলগিরি পর্যটন স্পটে গড়ে তোলা কটেজগুলোও দেখতে বেশ আকর্ষণীয়। চারদিকে শুধু পাহাড় আর পাহাড়। দু চোখ যেদিকে যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। এ যেন অন্যরকম অনুভূতি। যদি মেঘ ছুয়ে দেখতে চান তবে এখনি ছুটে যান প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবান।

কটেজ সংক্রান্ত তথ্য :
সেনানিয়ন্ত্রিত নীলগিরি রিসোর্টে ছয়টি কটেজ রয়েছে। নামগুলো হচ্ছে আকাশনীলা, মেঘদূত, নীলাঙ্গনা, হেতকরা রাইচা এবং মারমারাইচা। কটেজগুলো থাকতে হলে পর্যটকদের গুণতে হবে ৪ হাজার থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। আর নীলগিরি রেস্টুরেন্টে দশ জনের অধিক খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে বিলের সঙ্গে অতিরিক্ত এক থেকে দেড় হাজার টাকা চার্জ নেয়ার নিয়ম রয়েছে বলে জানা গেছে। নীলগিরি’তে রাত্রিযাপনে কটেজের রুম বুকিং এবং রেস্টুরেন্টে খেতে প্রায় দেড় মাস আগে বুকিং দিতে হয়। বুকিংয়ের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর অফিসার পর্যায়ের একজন কর্মকর্তার রেফারেন্স অবশ্যই লাগবে। রেফারেন্স ছাড়া কোনো বুকিং নেয়ার নিয়ম নেই নীলগিরি রিসোর্টে। তবে পর্যটকদের ঘুরে বেড়াতে কোনো রেফারেন্স লাগে না, সেক্ষেত্রে নীলগিরি পর্যটন স্পটটি ঘুরে বেড়াতে পর্যটকদের জনপ্রতি ৫০ টাকা এবং গাড়ির জন্য আলাদা ৩০০ টাকা অতিরিক্ত ফি নেয়ার নিয়ম চালু রয়েছে।

কীভাবে যাবেন :
চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট থেকে পূরবী-পূর্বানী ননএসি এবং কদমতলি থেকে বিআরটি এসি বাস সার্ভিস চালু রয়েছে বান্দরবান। বান্দরবান-চট্টগ্রাম বাস ভাড়া ননএসি ১১০ টাকা এবং এসি ১২০ টাকা। এছাড়াও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের কেরানীহাট স্টেশন থেকেও বান্দরবান-কেরানীহাট বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। যেভাবে খুশি সেভাবেই বান্দরবান যেতে পারেন। নীলগিরিসহ বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে বেড়াতে ভাড়ায় চালিত বিভিন্ন রকমের গাড়ি পাওয়া যায়। তবে দু’একজনের জন্য জিপ, ল্যান্ড ক্রুজার, পাইপডোরসহ রিজার্ভ গাড়িগুলোর ভাড়া অনেকটা বেশি। তবে বিকল্প ব্যবস্থাও রয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে এবং দলবেঁধে একসঙ্গে নীলগিরি ঘুরে বেড়াতে পারলে খরচ অনেকটা কম হয়। সিএনজি এবং মহেন্দ্র গাড়িতে করেও নীলগিরি যাওয়া যায়। এছাড়াও বান্দরবান-থানছি উপজেলা সড়কে চলাচলকারী যাত্রীবাহী বাস সার্ভিসগুলোতে করেও নীলগিরি যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে সময় অপচয় হলেও খরচ কমবে।

কোথায় থাকবেন :
বান্দরবানে অসংখ্য রিসোর্ট, হোটেল, মোটল এবং রেস্টহাউজ রয়েছে। যেখানে ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় রাত্রিযাপন করতে পারবেন। যেগুলোতে থেকে ভাড়ায় এবং নিজস্ব গাড়িতে করে সপরিবারে নীলগিরি ঘুরে আসতে পারবেন। এছাড়াও নীলগিরি রিসোর্টে থাকা-খাওয়ার সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে। সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর অফিসার পর্যায়ের একজন কর্মকর্তার রেফারেন্স লাগবে। কারণ রেফারেন্স ছাড়া কোনো বুকিং নেয়ার নিময় নেই নীলগিরি রিসোর্টে। অন্যান্যগুলো হচ্ছে-

হলিডে ইন রিসোর্ট : মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের বিপরীতে ছোট্ট পাহাড়ের চূড়ায় হলিডে ইন রিসোর্ট। এখানে ছোটছোট অনেকগুলো কটেজ রয়েছে। ফোন-০৩৬১-৬২৮৯৬।

হিলসাইড রিসোর্ট : বান্দরবান-চিম্বুক সড়কের ৫ কিলোমিটার নামকস্থানে অবস্থিত মিলনছড়ি। এখানে রয়েছে উন্নত পরিবেশে রাত্রি যাপনের সু-ব্যাবস্থা। মোবাইল-১৫৫৬৫৩৯০২২।

হোটেল ফোর স্টার : বান্দরবান শহরে অবস্থিত হোটেল ফোরস্টার। এখানে এসি এবং নন এসি দু রকমের রুম রয়েছে। হোটেলের প্রতিটি কক্ষে রয়েছে টেলিভিশন। ফোন-০৩৬১-৬২৪৬৬।

হোটেল থ্রি স্টার : বান্দরবান পৌর শহরে অবস্থিত হোটেল থ্রি স্টার। এখানে সপরিবারে রাত্রি যাপনের সু-ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এখানে রুম নয়, ফ্ল্যাট ভাড়া দেয়া হয়। প্রতিটি ফ্ল্যাটে ৮ থেকে ১৫ জন পর্যন্ত থাকার সুযোগ রয়েছে। নিজেরা রান্না করে খাওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। মোবাইল-০১৮১৩২৭৮৭৩১।।

হোটেল রিভার ভিউ : জেলা শহরের মধ্যে সাঙ্গু নদীর পাশ্ববর্তী প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে উঠেছে হোটেল রিভার ভিউ। এখানে নিজস্ব রেস্টুরেন্টও রয়েছে। ফোন-০৩৬১-৬২৭০৭।

৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×