somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রায়োরিটি , প্রাধান্য – দিচ্ছি কি?

২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্কুলে আমাদের সবচেয়ে ত্রাসের রাজত্ত্ব কায়েম করা স্যারের নাম জিগেস করলেই সমসাময়িক সবাই কোন রকম চিন্তা ছাড়াই উত্তর দেবেন “বাবু যোগেন্দ্র চন্দ্র পোদ্দার স্যার’। তাঁর ক্লাস চলাকালীন পাশের কাস থেকে শিলা বৃষ্টির মত বেত্রাঘাতের আওয়াজ পাওয়া যেন। ছাত্র পিটানোয় তাঁর চেয়ে ৩-০ গোলে পিছিয়ে থাকা অনেক শ্রদ্ধেয় শিক্ষকেরাই মাঝে মাঝে উকি দিয়ে দেখতেন আজকের ঘটনা কি একটু বেশী খারাপ নাকি! ( অথবা হয়তো মারের টেকনিক শিখতেন ;) )

যাই হোক, আমরা স্যারকে শ্রদ্ধাবনত মস্তকেই স্বরণ করি , কারণ, স্যারই আমার দেখা একজন মানুষ যিনি “মাইরের উপর ওষুধ নাই” বাক্যটা প্রমান করে আমাদের সমসাময়িক প্রথম সারীর অনেককে সনাতন যুগে ( অব্জেক্টিভ যুগের আগে) ভূগোলের মতো কাঠ –খোট্টা বিষয়ে লেটার মার্ক্স পেতে সক্ষম করেছিলেন। চোখ বন্ধ করে আমরা বাংলাদেশের ম্যাপ, আফ্রিকার ভৌগলিক বিবরণ লিখে ফেলতে পারতাম।

মেয়ে হয়ে জন্মানোর প্রথম সুবিধা স্যারের কাছেই পাওয়া – তিনি স্ত্রী জাতীর গায়ে হাত তুলতেন না।
কিন্তু পড়া না করে আসলে অনেক কষ্টে রাগ সামলাতে ভ্রু কুচকে অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে বলতেন , “ ভাত খাইছিস?”
- জী স্যর।
- কেন? এখন জী স্যার কেন? এখন তো বলিস না – ভাত খাই নাই স্যার। তাইলে পড়া করতে পারিস নাই কেন?
আমরা বেকুব হয়ে ভাবতাম, এইটা কি প্রশ্ন? ভাত খাওয়ার সাথে পড়ার সম্পর্ক কি?
-------------------------------
আজকে অনেক পরিণত বয়সে বুঝি, সম্পর্কটা "priority - প্রাধান্য" দেয়া।

জীবনের সব ক্ষেত্রেই তাই - সে যত ব্যস্ত বা বেকারই কেউ হোক , তাঁর কাছে যেটা প্রাধান্য পায় সেটাই সে করে।
এবং এই priiority কোন কাজের ক্ষেত্রে দিতে হবে সেটা যে বাস্তবতার নীরিখে হিসেব কষে সেইমতো কাজ করতে পারেন তারাই ‘আপাতদৃষ্টিতে’ সফল হোন।
কেউ বাস্তবতার দাবীকে প্রাধান্য দেয়- কেউ দেয় স্বপ্নের দাবী, ভাললাগার দাবী !
যেমন ধরুন, আপনার ইনবক্সে হাজারও মেসেজ পড়ে আছে, ব্যাক্তিগত এমনকি অফিসের মেইলেও জমে আছে অসংখ্য ইমেইল।
উত্তর আপনি তার টাই দেবেন যাকে আপনি প্রধান্য দিচ্ছেন। যার মেইল, মেসেজের আপনি অপেক্ষায় আছেন।

বাকীদের “ অসম্ভব ব্যাস্ত ছিলাম রে ভাই” বলাটা আসলে একটি মধুর মিথ্যা!

না, ব্যাস্ত আপনি অবশ্যই ছিলেন বা আছেন হয়তো, কিন্তু নির্জলা সত্যটা হলো “ তোমার মেইল/ মেসেজ/ মিস কল রিপ্লাই আমার প্রায়োটির মধ্যে ছিল না” । অথবা থাকলেও নীচের দিকে ছিল।

ব্যাক্তিগত ভাবে আমাকেও এই কথাটি কেউ বললে আমিও নির্ভেজাল কষ্টই পাব- কিন্তু সত্য এটাই।
সত্য বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই অসুন্দর এবং তেঁতো। অসুন্দরকে ভালবেসে আলিঙ্গন করা খুব কঠিন।

তাই অনেকেই সত্যটা মনে মনে টের পেয়েও নিজেকেই নিজে বুঝ দিতে চায় “হয়তো মানুষটা সত্যিই খুব ব্যাস্ত ছিল” , কারণ নিজেকে অবহেলিত কেউ ভাবতে চায়না, অবহেলা কোন মানব সন্তানের কাম্য হতেই পারেনা। কারন, মানুষ নিজেকে সবচেয়ে বেশী ভালবাসে।

কিন্তু কোন বিশেষ কারোর অবহেলার ইঙ্গিতটা বুঝে যত কষ্টই হোক সরে আসতে পারাটাই সবচেয়ে সর্বোত্তম যুদ্ধজয়!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৭
৮টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×