৭০ দশকের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশের মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধান । যুদ্ধ পরবর্তী ক্ষতির অবস্থা কাটিয়ে উঠে অনুন্নত স্বল্প-উন্নত মারিয়ে উন্নয়নশীল দেশ পেরিয়ে যেই না আমরা সামনের দিকে যাবার কথা ভাবছি সেই সময় এমন একটা অসুভ হাত আমাদের জাতির উপর ভর করেছে তা হলো কোটা ব্যবস্থা। দেশের উন্নতির অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এ ব্যবস্থা । মেধাবীদের অবজ্ঞা করে একটা জাতি কখনই উন্নতি করতে পারেনা। মেধাবিদের শক্তিকে কাজে লাগাতে পারলেই একটা জাতি উন্নতির শিখরে আরহন করতে পারে। ১৯৭২ সালে সরকার চাকরির ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থার প্রবর্তন করে। ক্রমান্বয়ে এই কোটার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে ৫৬ শতাংশ কোটার আওতায় রয়েছে। বাকি ৪৪% কোটার বাইরে। ৫৬% মাঝে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান নাতি পুতিদের জন্য ৩০% , নারিদের জন্য ১০% , ২১ টি বিশেষ জেলার জন্য ১০% , খুদ্র নৃগোষ্ঠি বা আদিবাসিদের জন্য ৫% , প্রতিবদ্ধিদের জন্য ১% ।
কোটা নামের এক যাঁতাকলে আজ দেশের মেধাবীরা জর্জরিত। শিক্ষা জীবনে যে ছেলেটি প্রতিটি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ সেই ছেলেটি আজ অনুত্তীর্ণ কোটার কারনে। যে ছেলেটি দেশকে তার সেরাটা দেয়ার বুকভরা আশা নিয়ে দিন রাত পার করেছে তার আশা কোটার আচরে ক্ষতবিক্ষত। পরিবার, পাড়া প্রতিবেশি, সমাজে যে ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছে সেই ছেলেটির আজ আড়ালে লুকিয়ে গুমরে কান্না করা ছাড়া অবশিষ্টটি নেই এই কোটার কারনে।
দেশ করুন পরিনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে এই কোটার কারনে। দেশের গুরুত্তপূর্ণ জায়গা গুলোতে যেখানে মেধাবীদের থাকার কথা কিন্তু সেখানে আসন পেতে বসে আছে মেধাহীন অদক্ষ ব্যক্তি । তাদের দ্বারা দেশ রসাতলে যাচ্ছে বৈকি সুফল পাচ্ছে না। কোটার কারনে শিক্ষার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। যেই দেশে শিক্ষার প্রতি অনুরাগিতা হারাচ্ছে সেই দেশ কতটুকু হুমকির মুখে আছে তা সহজেই অনুমেয়। কোটার কারনে মেধাবীরা আজ অবহেলিত যে কারনে অনেক মেধাবীরা চাকরির পরীক্ষা দিতে রাজী হয় না। ৫৬% কোটা ব্যাবস্থার প্রাচিরের মধ্যেই মেধাবীরা সীমাবদ্ধ নয় আছে মামা , চাচা, খালুদের ক্ষমতার জোরের অলিখিত কোটা । এটুকুতেই ক্ষান্ত নয় ৫-১২ লাখের ঘুষ বানিজ্যে নামক কোটায় মেধাবীরা দিশেহারা।
আমি মনে করি এ কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করা অতীব জরুরী। তা না হলে দেশকে বড় খেশারত দিতে হবে। কোটার বিরুধ্যে সংস্কার আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে নাতি পুতি কোটা বাতিল ও এ কোটা ব্যবস্তা ১০% বেশি নয় ।
উল্লেখ্যঃ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ১৯ (১), ২৯ (১) ও ২৯ (২) অনুচ্ছেদ সমূহে চাকুরির ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের সমান সুযোগের কথা বলা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৯:২৬