আমাদের দেশের জীবিকা নির্বাহের জন্য পুরুষ লোকেরাই শ্রম করে থাকেন । পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য বিভিন্ন কাজ করে থাকেন । একজন পিতা তাঁর ছেলে-মেয়েদের ভরণপোষণের জন্য ঠেলাগাড়ি চালিয়ে তাঁদের সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলানোর চেষ্টা করছে । কিন্তু একসময় দেখা যাচ্ছে সেই ছেলেই সমাজের বড় মাস্তান হিসেবে আখ্যায়িত পাচ্ছে ।
-
একজন ভিখারিনী ভিক্ষা করে তাঁর ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা করাচ্ছে । তাঁর চোখে অনেক স্বপ্ন যে, "তাঁর ছেলে-মেয়ে একদিন পুলিশ হবে, ডাক্তার হবে, আমার নাম উজ্জ্বল করবে" । কিন্তু পরমুহুর্রতে দেখা যাচ্ছে যে, ভিখারিনীর ইচ্ছে পূরণ হচ্ছে ঠিক-ই কিন্তু তারা (ছেলে-মেয়ে) পরিবর্তন হয়ে গেছে । তাদের ব্যবহারে পরিবর্তন আসার কারণটা সেই ভিখারিনীর বুঝতেও সমস্যা হলো না ।
-
ছোট্ট ছেলেটির পিতা মারা গেছে ছোটবেলায়-ই । তার মা তাকে অনেক কষ্টে বড় করেছে এর-ওর বাড়ি কাজ করে । তাকে লেখাপড়া করে যোগ্য মানুষ হিসেবে বিশ্বের কাছে দাঁড় করিয়েছেন তাঁর কিডনী বিক্রি করে । কিন্তু ছেলেটি জানেনা যে, "তার মা কিডনী বিক্রি করে তাকে ডাক্তার বানিয়েছে" ।
মা যখন কিডনী বিক্রি করে একটা হাসপাতালে গিয়ে তখন একজন ডাক্তার তাঁকে (মা'কে) প্রশ্ন করেন সে, - "আপনি কেন কিডনী বিক্রি করছেন । আপন তো একটা কিডনী দ্বারা বেশিদিন বাঁচতে পারবেন না । কয়েকবছর ভালো যাওয়ার পর আপন শরীর ধীরে ধীরে দূর্বল হয়ে পড়বে । কেনোনা আপনার শরীর এখন-ই অনেকটাই দূর্বল" । উত্তর মা বলেছিলেন, - "সমস্যা নেই ডাক্তারবাবু, চিন্তা করবেন না । আমার ছেলেকে আমরা ডাক্তারি লাইনে পড়াচ্ছি । বাবা, একদিম তোমার মতো আমার ছেলে এরকম সাদা পোষাক পড়ে থাকবে । আমার তো গর্বে বুক ভেসে যাবে তখন । ছেলেকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ডাক্তারবাবু । ছেলেকে এখন কিডনী বিক্রি করে ডাক্তার বানাবো, তখন আমার ছেলেটা ডাক্তার হয়ে গেলে সে নিজেই আমাকে একটা কিডনী লাগিয়ে দিবে ডাক্তারবাবু" ।
এখন মা'র ছেলেটি ডাক্তার হয়েছেন । কিন্তু মা আজ মৃত্যুশয্যায় শায়িত । ছেলেটি সেই কবে ডাক্তার হয়েছে, কিন্তু সেই যে শহরে গিয়েছিলো আর ফিরে আসেনি । লোকমুখে শুনেছেন ছেলেটি অনেক বড় হয়েছে । তার অনেক নাম-ডাক-যশ-খ্যাতি ।
-
একটি মেয়ে কষ্ট করে গার্মেন্টসে কাজ করছে জীবিকা নির্বাহ করছে । বাসায় তাঁর বাবা অসুস্থ । মা ও কিছুটা অসুস্থ । ভাই-বোনের লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য গার্মেন্টসে গিয়ে কাজ করছে মেয়েটি । চোখ আর হাত জীর্ণ করে একনাগাড়ে সেলাই করে যাচ্ছে । সে এই কাজের প্রেক্ষিতে কেমন মর্যাদা পেয়ে থাকে জানেন?
মেয়েটি গার্মেন্টসে চাকরী করে, মেয়েটির স্বভাব চরিত্র কখনোই ভালো হতে পারেনা, কারণ মেয়েটি গার্মেন্টসকর্মী ।
-
(লেখাটি এখানেই শেষ করছি । হতে পারে আমার লেখনীতে অনেক ভুল থাকতে পারে । ভুল থাকলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন । আসলে আমি আমার লেখনী দ্বারা এটাই বুঝাতে চেয়েছি যে, আমাদের পিতা-মাতা আমাদের অনেক কষ্টে লালন-পালন করে আমাদের বড় করেছেন । আমরা যেন তাঁদের কষ্টের মূল্য দিই । আমরা অনেকেই সভ্য সমাজে থেকেও টাকার লোভে, খারাপ লোকেদের খপ্পরে পড়ে, খারাপ লোকেদের খারাপ যুক্তি নিয়ে আমাদের মা-বাবাদের ভুলে যাই, ভুলে যাই তাঁদের কষ্টের কথা । একদিন আমাদেরও সন্তান হবে, আমরাও তাদের কষ্ট করে লালন পালন করব । তারাও যে আমাদের এভাবে অবহেলা করবে না তার কি গ্যারান্টি? তাই বলছি কী, নিজের বাবা-মায়ের সাথে যেমন ব্যবহার করবেন, ভবিষ্যতেও আপনিও সেটার ভালোই ফল পাবেন ।)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:৩২