somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধাপরাধী/রাজাকার আর ভারতে'র দালালদের জন্য ১০০ নম্বরে'র হালাল প্রশ্ন?

০৮ ই মে, ২০১৩ সকাল ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার কিছু খোলা-মেলা প্রশ্ন যুদ্ধাপরাধী/রাজাকার আর ভারতে'র দালালদের জন্য। পুর্নমান ১০০, পাস মার্ক ৩৩ ;-)

১) আচ্ছা ভাইজান, কেউ আমারে একটু বুঝান, মাহবুবুল আলম হানিফ বললেন, আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী (পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি) অত্যন্ত সুকৌশলে কোন রকম রক্তপাত এড়িয়ে হেফাজতিদের শাপলা চত্ত্বর থেকে সরে যেতে বাধ্য করেছে। এই বক্তব্য কত % সত্যি?

২) এইবার বলেন, এই সুকৌশলটা রাত ২:৩০ এর পরে করতে হইল কেন? দিনে কিংবা অন্তত সন্ধা রাতে করা যাইত কি না? নাকি রাত বাড়লে যেমন আমাদের মেশিন গরম হয় তেমনি আমাদের নেতাদের মাথা গরম হয় আর সুকৌশল বাইর হইতে থাকে?

৩) তারপর বলেন বাতি সব নিভাইয়া দেয়ার দরকার পরল কেন? সাংবাদপত্র এবং টিভি মিডিয়া'র লোকজন সরাইয়া দেয়া হইল কেন?
দুইটা টিভি চ্যানেল বন্ধ করা হইল কেন?
তাহলে কি ধরে নিব যা ঘটছে তাকে হালাল করার জন্যই এটা করা হইছে?হালাল করতে যেয়ে হারাম হয়ে গেল না তো?
আর যদি রক্তপাত এড়িয়ে হেফাজতিদের সরানই হয়ে থাকে তাহলে কি মিডিয়া'কে সাথে রাখাই উচিৎ ছিল না যাতে গোটা দেশ এবং গোটা বিশ্ব স্বচোক্ষে সেই সুকৌশল দেখতে পায় এবং বুঝতে পারে কোন গনহত্যা হয়নি সেখানে। শুধু ছর্রাগুলি, টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড আর রাবার বুলেট মেরে ভয় দেখিয়েই সরিয়ে দেয়া হয়েছে হেফাজতিদের? (যারা বলবেন নিরাপত্বার কারনে সাংবাদপত্র এবং টিভি মিডিয়া'র লোকজন'কে সরাইয়া দেয়া হইছিল তাদের বলি, দিনের আলোতে কোনও নিরাপত্বা বিঘ্নিত হলনা যেখানে দিনেই ৩ জন মারা গেল সেখানে রাতের রক্তপাতহীন অভিজানে নিরাপত্বার প্রশ্ন কেন?)

৪) এখন বলেন, হেফাজতের প্রথম সমাবেশে কোনও ঝামেলা হইল না অথচ কালকে বিনা উস্কানিতে সারাদিন মারামারি আর আগুন জ্বালান চলল। কোনও খটকা লাগেনা? প্রথম আলোর ৫ মে অনলাইন সংস্করন যদি কেউ পড়ে থাকেন তাহলে দেখবেন সেখানে পরিস্কার সুদ্ধ বাংলায় লেখা আছে ছাত্রলীগে'র সোনার ছেলেরা (সোহেল রানা'র তার ছোটো ভাইয়ের গ্রুপের ছেলেরা হয়ত) প্রথমে হেফাজতিদের উপরে হামলা চালায়। হেফাজতিরা তখন পাল্টা হামলা চালায় ছাত্রলীগের উপরে। পুলিস এসে হেফাজতিদের উপরে টিয়ার সেল নিক্ষেপ করা সুরু করে। তখন হেফাজতিরা বিভিন্ন গলিতে ঢুকে যায় এবং পুলিশের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা শুরু করে। এর জবাবে পুলিশ হেফাজতিদের উপরে বৃষ্টির মত টিয়ার সেল নিক্ষেপ করা সুরু করে। বিনা বাতাসে গাছের পাতা নরে কি?

৫) এবার আসেন পবিত্র কোরআন শরিফে আগুন দেয়ার প্রসঙ্গে। আমরা জানি যে হেফাজতিরা পবিত্র কোরআন শরিফে আগুন দিয়েছে। কে কে বিশ্বাস করেন? যারা বিশ্বাস করেন না তারা কেন করেন না। আর যারা বিশ্বাস করেন তারাই বা কেন করেন। টিভি দেখে নাকি সংবাদপত্র পড়ে? ভুলে যাবেন না আমরা কিন্তু ডিজিটাল বাংলাদেশে বাস করি। ব্লগার রাজীব খুন হওয়ার সাথে সথে আমাদের প্রধানমন্ত্রী তার বাসায় ছুটে গিয়েছেন। তার পরিবার কে বুকে টেনে নিয়েছেন এবং বলেছেন রাজীব বাংলাদেশের দ্বীতিয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ। যদিও তিনি নাড়ায়নগন্জের ত্বকি হত্যার পরে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তাই আজও ঐ প্রসঙ্গে কোনও কথা বলেন নি। লোকে বলে ত্বকি হত্যা নাকি মেয়র নির্বাচনে আওয়ামিলীগে'র সুযোগ্য প্রার্থী শামিম ওসমানের কাজ। যদিও আমরা বিশ্বাস করিনা। শামিম ওসমানে'র মত একজন সৎ, নিষ্ঠাবান, দেশ প্রেমিক লোককে লোকে কিনা আন্ডার গ্রউন্ডের গডফাদার বলে কুৎসা ছড়ায়। ছি! তার পক্ষে এসব করা সম্ভব?
তাহলে খুন করল কে? আর কেই বা দিল পবিত্র কোরআন শরিফে আগুন?
মিলিয়ে দেই? আচ্ছা এত বই থাকতে পবিত্র কোরআন শরিফেই আগুন দেয়ার দরকার পরল কেন? হেফাজতিরা কি ভেবেছিল যে তারা পবিত্র কোরআন শরিফে আগুন দিলে মুসলিম অদ্ধুসিত বাংলার জনগন তাদের প্রচুর বাহবা দিবে? (মুর্খ ছেলের দল, হয়ত তাই ভেবেছিল)। নাকি তারা চাচ্ছিল পবিত্র কোরআন শরিফে আগুন দিয়ে গোটা দেশকে বুঝিয়ে দিতে যে তারা আসলে একটি জঙ্গী দল, তাদের সুকৌশলে তাড়িয়ে দেয়াই সঠিক সিদ্ধান্ত? (খাটের তলায় কে রে, আমি কলা খাই না ;-)

৬) এরপরে আসেন হেফাজতের সমাবেশ প্রসঙ্গে। ৬ই মে দেশে বিএনপি এবং আওয়ামিলীগ দুই দল সামাবেশ ডাকল। পুলিস দিল ১৪৪ ধারা। পরিনতি দুই দলেরই সমাবেশ মুলতবি। কেন দেয়া হইল এই ১৪৪ ধারা? সম্ভাব্য সংঘাত এড়াতে। তো এই ১৪৪ ধারা ৪মে এবং ৫মে দিলে সম্ভাব্য সংঘাত এড়ান যেত কি না? না কি সংঘাতই চাইছিল সরকার?

৭) হেফাজতে ইসলামের প্রথম ঢাকা সমাবেশের আগে সরকার সারাদেশ থেকে ঢাকামুখি দুরপাল্লার গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিলেন। এবারের সমাবেশ সম্পর্কে হেফাজতিরা তাদের প্রথম সমাবেশেই বলেছিল যে ১৩ দফা না মানা পর্যন্ত তারা ঢাকা অবরোধ করে রাখবে। এটা যেনেও সরকার তাদের সঙ্গবদ্ধ হতে দিল কেন? উৎস স্থলেই তাদের ছত্রভঙ্গ (সুকৌশলে ;-)) করে দেয়া যেত কি না? ঢাকামুখি দুরপাল্লার গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়া যেত কি না? তাদের জোনাল নেতাদের গ্রেফতার করে অবরোধের প্রক্রিয়ার মুল গোড়াতেই উৎপাটন করা যেত কি না? নাকি তখন রাতে তারা সুকৌশলের চিন্তা না করে গড়ম মেশিনে পরটা ভেজেছেন আর নাকে খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে ঘুমিয়েছেন?

৮) ৫মে হেফাজতিরা ৬টি পয়েন্টে ঢাকা অবরোধ করল। সেদিন ছিল সপ্তাহের প্রথম কর্ম দিবস (রবিবার)। এমন একটা দিনে সরকার ঢাকা শহরের প্রানকেন্দ্র শাপলা চত্বরে হেফাজতিদের বেলা ৩টা থেকে বিশাল সমাবেশ করার অনুমুতি দিলেন। অফিস-আদালত সব চালু অথচ লাখ লাখ লোক শাপলা চত্বর'কে কেন্দ্র করে বন্যার জলের মত সারা দেশ থেকে ধেয়ে আসছে! মানা যায়? অফিস-আদালতে'র অসংক্ষ কর্মকর্তা - কর্মচারি কি করে বাসায় ফিরবে সেটা ভাবার কি কোনও প্রয়োজন ছিলনা? হেফাজতিরা সমাবেশ করলেন, শাপলা চত্বর হল রনক্ষেত্র, আর সাধারন মানুষ পরল অফিসে আটকা। তাদের পরিবার সম্ভাব্য বিপদের ভয়ে কুকরে রইল। হেফাজতি আর প্রতিরক্ষা বাহিনি ছাড়া যেসব সাধারন মানুষ নিহত হয়েছে তার দায় তাহলে কার?

৯) হেফাজতিদের ঢাকায় প্রবেশ তাদের অবরোধকৃত ৬টি পয়েন্টেই থামিয়ে দেয়া যেত কি না। সুকৌশলে (ছর্রাগুলি, টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড আর রাবার বুলেট মেরে) ৬টি পয়েন্টেই তাদের নিস্কৃয় করা যেত কি না? আর তাতে করে এত ধংসযগ্য এড়ান যেত কি না? না কি ধংসযগ্য হোক এটাই ছিল আসল পরিকল্পনা মানে সুকৌশলের মুল অংশ। মুরগি ধরার ফাঁদ পাতা হল, সেই ফাঁদে বোকা মুরগিগুল পা ফেলতেই খপ করে ধরে জবাই করে হাড়িতে তুলে দেয়া হল ;-)
কিন্তু এই সুকৌশল আরও দু-একদিন পরে চালান যেত কি না? হেফাজতি নেতাদের সাথে আরো নেগসিয়েশান করার চিষ্টা করা যেত কি না? যে কয়জন মানুষই মরেছে তার সংক্ষা আরও কমিয়ে আনার জন্য সরকার শেষ চেষ্টা করতে পারত কি না? এ বিষয়ে সরকার আদৌ আন্তরিক ছিল কি না?

১০) এবার আসি শেষ প্রশ্নে। সাভার ট্রাজিডি আর শাপলা চত্বর ট্রাজিডি'র মধ্যে কেউ কি কোনও মিল খুজে পান? রানা প্লাজায় ফাটল দেখা দিল। প্রশাসন থেকে সবাইকে সতর্ক করা হল ঐ ভবনে প্রবেশ না করতে। তবুও রানা সাহেব (উনি আওয়ামিলীগ বা যুবলীগ বা ছাত্রলীগের কেউ না। খোদার কছম ;-)) আর তার লোকেরা মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে গার্মেন্টস কর্মীদের কাজ যোগদিতে অনুপ্রনিত করলেন। অথচ বিএনপি'র গুন্ডারা পিলারগুলো নারাচার করে বিল্ডিংটা ধসিয়ে দিল (রেফারেন্স ম খা আলমগীর, ২৪ এপ্রিল, বিবিসি)। মারা পড়ল এখন পর্যন্ত পাওয়া সরকারি তথ্যমতে +৭৫০।
অন্যদিকে হেফাজতিরা ঢাকা অবোধ করবে এটা তারা তাদের প্রথম সমাবেশে জানিয়েছিল। সরকারকে বলা হল ১৩ দফা মেনে নিন নয়ত অবরোধ চলবে। অথচ সরকার তাদের শাপলা চত্বরে সমাবেশের অনুমুতি দিল মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে। হেফাজতিরা পবিত্র কোরআন শরিফে আগুন দিয়ে সব লন্ডভন্ড করে দিল ;-) (রেফারেন্স সকল দৈনিক সংবাদপত্র এবং দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি ব্যাতিত সকল টিভি মিডিয়া )। মারা পড়ল এখন পর্যন্ত পাওয়া সরকারি তথ্যমতে .....। কত জন?

শেষ হইয়াও হইল না শেষ। আচ্ছা সরকার হঠাৎ গন জাগরন মন্চ্ঞটা বন্ধ করল কেন? এখন ডাক্তার সাহেব কি আবার নিজ পেশায় ফিরা যাবেন? না কি অপেক্ষায় থাকবেন কবে আবার আলু পুড়বে আর উনি লবন দিয়ে পোড়া আলু খাবেন ;-) যুদ্ধাপরাধিদের বিচার চাইতে আইসা উনি বিশাল নেতা হইছেন। যারা মন্চ্ঞ'র জন্ম দিল তারা বেশিরভাগই অবশ্য শেষ পর্যন্ত নেতা হতে পারেন নাই। ডাক্তার সাহেব নিজ যোগ্যতা বলে মুখপাত্র হয়ে প্রমান করে দিয়েছেন যোগ্যতা থাকলে সব সম্ভব ;-)

জয় বাংলা................
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×