অফিসে আসছি । বাসে প্রচন্ড ভিড় । কোথাও তিল ধরনের ঠাই নাই । বসেছে যত দাড়িয়েছে তার চেয়ে ঢের বেশি । মানুষের ঠাসাঠাসি একটা দমবন্ধ করা পরিবেশের সৃষ্টি করেছে ।
গাড়ি শুক্রাবাদ মোড়ে থামতেই দুটি মেয়ে ঠেলে ঠুলে উঠে পরল । তাদের নাকি প্রচন্ড তারা । দাড়িয়ে থাকাটা তাদের জন্য কেমন যেন অস্বস্তিকর মনে হচ্ছিল । দেখে দেখে আমিই হাপিয়ে উঠছিলাম । আমার সমানের সিটে দুই বন্ধু (আন্দাজ করলাম) বসেছিল । ওরা ভদ্্রতা দেখিয়ে উঠে দাড়াল ।
ঃ আপু আপনারা এখানে বসেন ।
মেয়েগুলো ধপ্ করে বসে পরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল ।
বাস এই কাউন্টার সেই কাউন্টার ঘুড়ে তখন মহাখালি এসে থেমেছে । অনেকেই নেমে গেছে । দাড়িয়ে নেই আর কেউ । কয়েকটা সিটও খালি হয়ে গেল । কিছু নতুন যাত্রী উঠল বাসে । সিটগুলো ভরে গেল মুহুর্তের মধ্যেই । শুধু খালি সিট বলতে মেয়ে দুটির পাশে জানালার সাথের তৃতীয় সিটিটি ।
একজন বয়স্ক লোকও উঠেছিলেন । হাপাচ্ছিলেন খানিকটা । অন্যদের সাথে পাল্লাদিয়ে সিট দখল করতে পারেননি । কেউ একজন খালি সিট টা দেখিয়ে দিল । চৈত্রের কাঠ ফাটা রোদ পুবের জানালা দিয়ে আগুন ঝড়াচ্ছিল । স্বভাবতই ভদ্্রলোক সেই সিট টা পছন্দ করলেন না । মেয়েদুটি তখন গল্পে মগ্ন । ভদ্্রলোক নরম স্বরে বললেন, মা তোমরা একটু ঐদিকে সরে বস । মেয়েগুলো তখনও গল্পে মগ্ন । শুধু একজন না তাকিয়েই আঙুলের ইশারায় জানালার পাশের সিট টা দেখিয়ে দিল । তারপর গল্পে ডুবে গেল ।
ভদ্্রলোকের ঠোটে অসহায়ের মত নিসপ্রান হাসি দেখতে পেলাম । জানালার পাশেই বসতে হল তাকে । তিনি অবস্য জানেন না এখন যে মেয়েদুটি মনুষত্বহীনতার পরিচয় দিল কিছুক্ষন আগে দুটি ছেলে তাদেরকেই সিট ছেড়ে দিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছিল ।
***মেয়েদেরকে বাংলাদেশের ছেলেরা এখনও সৌজন্য দেখায় । মেয়েরা বয়স্ক/বয়স্কাদের এমন সৌজন্য দেখিয়েছেন এমন ঘটনা আমার চোঁখে পরেনি । আপনাদের চোঁখে কি পরেছে কখনও ?
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০