somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মামা এবং তার বান্ধবীরা

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের মামাকে বিশ্বপ্রেমিক বলা যায় না। মোবাইল কোম্পানির কল্যাণে দেশের আনাচে কানাচে তার বিস্তৃত নেটওয়ার্ক। তাই বলে সে ইয়ে মানে প্রেম করে না। মামার ভাষায় জাস্ট ফ্রেন্ডশিপ।মামার এই ফ্রেন্ডশিপ আমাদের জন্য কল্যাণকরই বলতে হবে। মামার এই ফ্রেন্ডশীপের কল্যানেই ঘুরে আসা হলো পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কিভাবে? সেই প্রসঙ্গেই আসছি....

আমার বন্ধু কামরু পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পিএসটিউ) থেকে বহুবার বলেছে দোস্ত আমাদের এখানে আয় একবার। দেখে যা কোন সুরত হালে আছি আমরা। যাব যাব করেও যাওয়া হয়ে ওঠেনি কখনো। আসলে সময় ম্যানেজ করতে পারিনি। আমার সময় হলেও মামা বা ইউনুছ কারও কারও ব্যস্ততা থেকেই যায়। তাই সবাই মিলে একসাথে পিএসটিউ ভ্রমণ শুধু পরিকল্পনায় হয়ে ছিল এতদিন। বাস্তবায়নের মুখ আর দেখেনি হয়তো দেখতেও না কখনও, যদি না পিএসটিউতে মামার বান্ধবীরা না থাকত। আর যাই হোক বান্ধবীদের অনুরোধ তো আর ফেলা যায় না। তাই মামা চুড়ান্ত রকম উদ্যোগী হয়ে উঠল এবং মামার তোড়জোড়ের কারণেই কিনা আমরা একদিন ব্যাগ-বস্তা লইয়া রওনা হলাম পিএসটিউ এর পথে।আমাদের মামা, মামার বান্ধবীর আর পিএসটিউ ভ্রমণ নিয়েই আজকের কচড়া।

রুম নম্বর ২১২। জিয়াউর রহমান হল। আমরা যখন জিয়াউর রহমান হলের ২১২ নম্বর রুমে পা রাখি তখন মধ্য দুপুর। রুমে পৌছাতেই মামা তার পটুয়াখালীর বান্ধবী পুতুলকে ফোন দিয়ে বসল, 'হ্যালো পুতুল। আমি আইসা গেছি। ......তোমাদের হলে আসব? ঠিক আছে আসছি।' কামরু মামাকে নিরস্ত করল, 'না মামা। চল আগে খাওয়া-দাওয়া করে আসি। তারপর আমি তোমার সাথে পুতুলের দেখা করিয়ে দিবোনি।' মামা কামরুর প্রস্তাবে না করল না। আমি দুপুরের খাবারের সন্ধানে বের হলাম।
হলে ফিরতেই আবার পুতুলরে মামার ফোন;'......... তুমি আসছো? নিচে দাড়াচছ.? ঠিক আছে। আমিও নিচে নামছি।' মামা আমারে জিগেয় আমি যাব কিনা। আমি বলি,' না মামা। তুমিই যাও। ওপেনিং করে এসো। তুমিতো একাই দুইশো।' মামাও বিশেষ জোড়াজুড়ি করল না। আমার নতুন কেনা পারফিউমের বোতলের অর্ধেকটা সাবাড় করে ঘরময় গন্ধে মউমউ করে দিয়ে কামরুর গাইডে পুতুলের সন্ধানে বের হয়ে গেল।

দুপুরে ছোটখাটো একটা ঘুম দিয়েছিলাম। ঘুম ভাঙলো কামরুর চেঁচামেচিতে,'মামা এইদিকে এইদিকে। ....আসলে হয়েছি কি মামা আমাদের এই হলটা স্কয়ার আকৃতির। তাই সিড়ি দিয়ে উঠবার সময় সব দিকে একই রকম লাগে। তুমিতো ভুল কইরা উল্টা দিকে চইলা গেছিলা.....।' মামাকে পথ দেখিয়ে ফিরিয়ে আনা হল। নতুন বান্ধবীদের সাক্ষাতে মামা এখন অন্য জগতের বাসিন্দা। এই সময়ে একটু আধটু পথ ভুল হতেই পারে। টেলি বান্ধবীদের সাথে সাক্ষাতে ফুরেফুরে মেজাজে মামা। তাকে যতবারই জিজ্ঞেস করি মামা কেমন দেখলে? কেমন তোমার বান্ধবীরা? কেমন বিকাল কাটালে? মামা রহস্য করে। কেন যেন এড়িয়ে যেতে চায়। ' না মানে এই আরকি?' কি? সেটা আর জানা হয় না। তবে মামার মুখ থেকে শুধু এইটুকুই জানা গেল আগামীকাল সকালের নাস্তা পাঠাবে পুতুল এবং তাদের বান্ধবীরা। কিন্তু এখানেও রহস্য। শুধু কি মামার জন্যই নাস্তা পাঠাবে? না সঙ্গে আমার আর কামরুর ভাগ থাকবে? নাকি ২১২ নম্বর রুমের সবাই মামার সুবাদে পুতুলদের তৈরি সকালের নাস্তা নিমন্ত্রণ তাও মামা ক্লিয়ার করল না।
ইতিমধ্যে সকালের নাস্তা নিয়ে রুমের মধ্যে শুরু হয়েছে যল্পনা-কল্পনা। কি হবে নাস্তার মেনু? পরেটা আর ডিম? খিচুরি? নুডুলস? নাকি চমকপ্রদ কোন আইটেম? সকালের আগ পর্যন্ত রহস্য উদঘাটনের কোন কুল কিনারা পাওয়া গেল না।

রাতের খাবার শেষে সারাদিনের পরিশ্রমে পরিশ্রান্ত মামা বিছানায় ঝাপিয়ে পড়ল। আগামীকাল আন্ত ডিসিপ্লিন ক্রিকেট টুর্নামেন্টের কামরুর দলের প্রথম ম্যাচ। এই প্রথম সে দ্বাদশ খেলোয়ার থেকে পদোন্নতি পেয়ে একাদশে জাযগা করতে পেরেছে। তাই তার জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ টিম মিটিংয়ে যোগ দিতে সে চলে গেল। আমারও চোখ ঘুমে ঢুলুঢুল। আজ এই পর্যন্তই। শুভ রাত্রি। (চলবে)
পুনশ্চ: অনুমতি না পাওয়ায় ছদ্ম নামে মামার বান্ধবীদের উপস্থাপন করা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ ভোর ৬:৪৩
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×