somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার লাঙ্কাউই ভ্রমণের গল্প (পর্ব-২)

১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছোটবেলায় নয়নাভিরাম প্রাকৃতিকদৃশ্য সম্বলিত ভিউকার্ড কিনতাম। এখন আমি নিজেই ভিউকার্ডের সেই দৃশ্যের সামনে বসে সকালের নাস্তা করছি। আগেই বলেছি বেলভিস্টা হোটেলটা আন্দামান সমুদ্রের একদম তীর ঘেসে অবস্থিত। এর খাবারের জায়গাটা একদম খোলামেলা। মাথার উপরে নীল আকাশ, সামনে নীল সমুদ্র। শান্তস্নিগ্ধ সকালের আন্দামান সাগরের নরম হাওয়া মন জুড়িয়ে দেয়, নীল সমুদ্র, সমুদ্রের বুকে ভেসে থাকা সাদা ইয়ট, অদূরে সাগরের বুক ফুড়ে মাথা উচু করে থাকা সবুজ পাহাড়, নীলের উপর সাদা পেজাতুলার মেঘ চোখ জুড়িয়ে দেয়। সকালের বুফে খাবারের আয়োজনটা এককথায় অসাধারণ। একেই বলে “শুভ সকাল”। রাজসিক নাস্তা, রাজসিক পরিবেশ-প্রকৃতি। চোখ, মন, পেট এর পরিপূর্ণ পরিতিপ্তি নিয়েই আমাদের নির্দিষ্ট ট্যুর বাসে উঠলাম। আজকের দিনটাই লাঙ্কাউইতে আছি। দিনটা তাই কর্মসূচীতে ঠাসা।


[লাঙ্কাউই স্পিডবোট স্টেশন]
লাইফ জ্যাকেট গা জড়িয়ে স্পিডবোটে বসলাম। গুনে গুনে দশজন। আন্দামান সাগরের বুকে চিরে স্পিডবোট ছুটছে, আর আমাদের বুকের ভিতরের রক্ত চনমনিয়ে উঠছে। একটু নড়াচড়া করলেই স্পিডবোটের চালক ধমকে উঠে। কিন্তু কতক্ষণ আর চুপচাপ বসে থাকা যায়। প্রতিটা মুহুর্ত ক্যামেরা বন্দি করতে ছেলেরা কত না কসরত করছে। একদম বুকটানটান করে বসে শুধু মাথা ঘুরিয়ে ছবি তোলা কী যাই তাই কর্ম!


এইতো সেই পাহাড়, ছোটবেলায় সিন্দাবাদ সিরিয়ালে টিভির পর্দায় যে পাহাড়ের দৃশ্য দেখেছি, এইতো সেই দ্বীপ যে দ্বীপে বলিউডের নায়িকারা নাচানাচি করে। টিভি পর্দায় পাহাড়-সমুদ্র-বেলাভুমির সুন্দর দৃশ্য দেখতে দেখতে ক্লান্ত আমি এখন সেই সব পাহাড়-সমুদ্রকে জীবন্ত উপভোগ করছি। একেকটা দ্বীপ, পাহাড় কী অদ্ভুতভাবে সাগরের উপরে ভেসে আছে। একেকটার বৈশিষ্ট্য আবার একেক রকম।






পাথুরে পাহাড়, আমাজন জঙ্গলের মতো ঘন বনের পাহাড়, ন্যাড়া পাহাড়, সবুজ পাহাড়, ছোট পাহাড়, বড় পাহাড় আর আছে পেগন্যান্ট পাহাড়। আমাদের ট্যুর গাইড সেই সকাল থেকেই গান শুরু করেছিল, আজ আমরা যাব পেগন্যান্ট পাহাড় দেখতে। কী সেই পেগন্যান্ট পাহাড়? কেমন তার রুপ? পেগন্যান্ট পাহাড়ের সম্মুখিন হয়ে তার রহস্য উন্মোচিত হলো। সাগরের বুকে তিনটা পাহাড় পাশাপাশি দাড়ানো। আমাদের স্পিডবোট চালক পেগন্যান্ট পাহাড় চিনিয়েই খালাস। কেন নাম পেগন্যান্ট পাহাড়? নামকরণের শানে নজুল সে তার মালয় ভাষায় হড়বড়িয়ে কী বলল আমরা এক বর্ণ কিছুই বুঝলাম না। আমরা অনেক গবেষণা করেও বের করতে পারলাম না। এই ধরণের পাহাড় তো আমরা পিছনে ফেলে এসেছি। অনেক ভাবনাচিন্তা শেষেও পেগন্যান্ট পাহাড়ের বিশেষ কোন বৈশিষ্ট্য বের করতে পারলাম না। কিছুক্ষণ বাদে ট্যুর গাইড মহাশয় আসলেন। তার ভাঙা ইংরেজি বর্ণনায় বুঝতে পারলাম, ‘পেগন্যান্ট পাহাড়’ আসলে এক ইতিহাসের জন্মদাত্রী। এই পাহাড়ের উপর থেকেই এক পেগন্যান্ট প্রেমিকা প্রেমিকের ভালোবাসায় প্রতারিত হয়ে অভিমানে সাগরে ঝাপ দিয়ে আত্মাহুতি দেয়। সেই থেকে নামহীন পাহাড়ের নাম পেগন্যান্ট! শুধু প্রকৃতি নয়, মালয়েশিয়ানদের কাছে ইতিহাসটাও গুরুত্বপর্ণ।


[সেই বিখ্যান পেগন্যান্ট পাহাড়। ভালোবাসা ও নিষ্ঠুরতার সাক্ষী হয়ে আন্দামানের বুকে দাড়িয়ে আছে]
আধাঘন্টা সমুদ্রযাত্রার পরে আমাদেরকে একটা দ্বীপে নামিয়ে দেওয়া হলো। দ্বীপটার নাম হোপিঙ আইল্যান্ড। সামনের দিক থেকে দেখে দ্বীপটা ছোটই বলে মনে হলো। কিন্তু আসলে ছোট নয়। ছোট্ট বেলাভুমি পরেই সবুজাভ পাহাড় মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে। তবে এই দ্বীপের মূল আকর্ষণ বানর! দ্বীপে প্রচুর বানর ঘুরে বেড়াচ্ছে। ট্যুর গাইড নামার সময় সাবধান করে দিয়েছে। ‘যারা যারা পানিতে নামবেন, তারা তারা কাপড়-চোপড় বানর থেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখবেন। নইলে গোসল শেষে উঠে এসে দেখবেন আপনার ব্যাগ মাফিয়া বানরের দখলে’। গাইডের কথার প্রমাণও মিলল দ্রুতই। আমাদের দলের একজন, বাচ্চাকে খাওয়ানোর জন্য সঙ্গে খাবার এনেছিল। খাবারের বক্সটা একটু পিছনে রাখতেই ছো মেরে বানর খাবার নিয়ে লাপাত্তা। তবে শিক্ষিত বানর! খাবার খাওয়া শেষে খালি বক্সটা ফেরত দিয়ে গেছে।


[লাঙ্কাউই এর বানর]
সমুদ্রের সম্মোহনী ক্ষমতা আছে। বারবার সে আহবান করে। তাই বানরের ভাবনা দূরে সরে রেখে ঝটপট সাগরে ঝাপ দিলাম। আহা কী ঠান্ডা জল! আন্দামান সমুদ্রের পানির রঙ নীল হলেও এখানকার পানি অনেকটা সাদাটে ধরণের এবং স্বচ্ছ। গোসলের জন্য নিরাপত্তা বেষ্টনি দেওয়া আছে, যাতে কেউ আনন্দ করতে এসে ডুবে না মরে। ডুবে না মরলেও ডুব সাতার দিলাম। চোখে চোখ রেখে আগত মালয় মেয়েদের সাথে ভাব জমানোর চেষ্টা করলাম! কিন্তু জমলো না! ভাব জমানোর মানুষের সংখ্যাও অবশ্য কম ছিল। দ্বীপটা ছোট। সকাল গড়িয়ে এখনও দুপুর হয়নি। তাই পর্যটকদের সংখ্যা হাতেগোনা। পর্যটকদের গোটা ছয়-সাত পশ্চিমাধাচের আর বাকিরা মালয় (চেহারা দেখে যতটুকু ধারণা করা যায়)।







[হোপিঙ আইল্যান্ডের কিছু চিত্র]
শেষ হয়েও হইলো না শেষ। অর্ধেক গোসল করেই উঠে এলাম। ট্যুর গাইড বর্ণনা মতে গোসলের আরও আকর্ষনীয় ব্যবস্থা আছে। তাই ভেজা কাপড়েই স্পিডবোটে উঠলাম। স্পিডবোট নিয়ে গেল ঈগলফিডিং স্পটে। মাথার উপরে ঝাকে ঝাকে ঈগল উড়ছে। যাকে বলে এই দ্বীপটা ঈগলদের অভয়াশ্রম। একসঙ্গে এত ঈগল আগে কখনই দেখা হয়নি।




ঈগলফিডিং হয়ে আমরা চলে এলাম ডায়াঙ জিওপার্কে।



জিওপার্কে ছোটখাটো হাইকিংও হয়ে গেল। পাহাড় বেয়ে পাহাড়ের মাথায় চড়লাম। পর্যটকদের সুবিধার জন্য পাহাড় কেটে রাস্তা করা করা হয়েছে। রাস্তার দু’পাশে বন। কিছুদূর পরপরই বিশ্রামের ব্যবস্থা আর বিনোদনের ব্যবস্থা আছে।



[ডায়াঙ জিওপার্কের ভিতরে পাহাড় কেটে পায়ে হাটা পথ]
আমরা একটুও না বসে এক নাগাড়ে হেটে একদম পাহাড়ের মাথায় উঠলাম এবং বিস্মিত হলাম। পাহাড়ের মাঝখানে লেক। ব্যাপারটা বেশ মজার। সমুদ্রের মাঝে পাহাড়, পাহাড়ের মাঝে মিঠা পানির লেক। লেকে নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। সেই নৌকার নিজেই মাঝি। ঘন্টা হিসাবে ভাড়া নৌকায় লেকের এমাথা ওমাথা ঘুরে আসা যায়। আর গোসল করা তো যায়ই। লেকের পানির রঙ সবুজ। যথেষ্ট গভীর। লেকের একপাশে সুন্দর করে বড় আকারে কাঠের মাচা তৈরি করা হয়েছে। চাইলে লেকের জলে পা ভিজিয়ে অলস রোদ্দুর পোহানো যায়, চাইলে লাফ দিয়ে লেকের উপর আছড়ে পড়া যায়। আমরা দ্বিতীয়টায় করলাম। কেউ কেউ ডাইভের প্রতিযোগিতায় মাতলো। সাতরে লেকের মাঝ বরাবর গেলেও ফিরে আসলো। এতবড় লেক চট করে সাতরে পাড়ি দেওয়ার দুসাহস না দেখানোই বুদ্ধিমানের কাজ।



[পাহাড়ের বুকের ভিতর বাসা বেধেছে মিঠা পানির লেক]
দুই রিঙিটে লিচুর শরবত খেতে খেতে আবারও স্পিডবোটে চড়লাম। জায়গাটা একদম হলিউড ঘরানার। স্পিডবোট যেখানে বাধা আছে তার চারিদিকে পাথুরে পাহাড় বেস্টনি করে দাড়িয়ে আছে। একটা পাহাড়ে তো গুহামুখও আবিস্কার করা গেল। আমরা সৌখিন পর্যটক। গুহার রহস্য উন্মোচনের শ্রম ও সময় কোনটায় পর্যাপ্ত নাই। তাই পাহাড়গুলোকে পাশ কাটিয়ে বিশাল সাগরে স্পিডবোট আবারও ফিরে এলো। ফিরে যাচ্ছি যেখান থেকে এসেছিলাম। তবে ফিরবার আগে 'ঈগলস্কয়ার' ছুয়ে গেলাম।


[লাঙ্কাউই এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থাপত্য 'ঈগলস্কয়ার']
এই সেই ঈগলস্কলার। গুগলে যার ছবি দেখতে দেখতে ক্লান্ত। যেদিন থেকে নিশ্চিত হয়েছি যে, লাঙ্কাউই যাচ্ছি সেদিন থেকে লাঙ্কাউইয়ের দর্শণীয় স্থান লিখে গুগলে সার্চ দিলেই সবার আগে ‘ঈগলস্কয়ার’ এসে হাজির থাকত। সেই ‘ঈগলস্কয়ার’ এখন আমার সামনে। পাথুরে মুর্তির বিশাল ঈগল দুইপাশে পাখা মেলে লাঙ্কাউইতে আগতদের স্বাগতম জানাচ্ছে। ঈগলের পাথুরে মুর্তির উপরে দুপুরে সূর্যের আলো চিকচিক করছে। ক্যামেরার শাটারে তখন ঝড়ের বেগে টিপ পড়ছে। লাঙ্কাউই নামটার অর্থ লালচে বাদামী রঙয়ের ঈগল। ঈগল তাই লাঙ্কাউইয়ের প্রতীক। লাঙ্কাউইতে আসলে তাই 'ঈগল'এর সাথে স্মৃতিচিহ্ন না থাকলে কী চলে? তাই ক্যামেরায় ক্লিক ক্লিক চলছেই। আধুনিক, সৃজনশীল, বৈশিষ্ট্যমন্ডিত এক স্থাপত্য এই ‘ঈগলস্কয়ার’। (চলবে..)
আমার লাঙ্কাউই ভ্রমণের গল্প (পর্ব-১)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৬
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিসের সনদের মান নির্ধারণ করা শয়তানী কাজ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪০



সূরাঃ ৯ তাওবা, ১০১ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০১। মরুবাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশেপাশে আছে তাদের কেউ কেউ মুনাফিক। মদীনাবাসীদের মধ্যেও কেউ কেউ মোনাফেকী রোগে আক্রান্ত। তুমি তাদের সম্পর্কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×