একে শুক্রবার তাই আবার ভর দুপুর হেতু রাস্তাঘাট একদমই বলতে গেলে ফাঁকাই ছিলো। মনের আনন্দে গল্প করতে করতে আর রবীন্দ্রসঙ্গীত গুন গুন করতে করতে বইমেলায় পৌছে গেলাম।
ভেবেছিলাম প্রথমেই সাজি আপুর বইটা কিনবো।কাজেই জাগৃতি মাথায় নিয়ে ঘুরতে শুরু করলাম। তার আগেই কিনে ফেললাম ছোটোবেলায় পড়া রুপকথার এক বই।আমার আবার এক ভীষন বদভ্যাস আছে। যত বুড়ী হচ্ছি তত ছোটোবেলার কথা মনে পড়ে। যাইহোক, আ্যানাফ্রাঙ্কের ডায়েরীটা পড়ে ছিলাম কিছু অংশ কোনো এক পত্রিকায়।সেটা পেয়ে কিনলাম। আরো কয়েকটা হাবিজাবি। তারপর "চয়ন" স্টলটা পেরোতে পারলাম না। কবি লিলি হকের ডাকাডাকিতে ঐ স্টলে যেতেই হল আর উনার এত এত সুমিষ্ট প্রশংসা বাণীতে ভুলে একগাদা বই কিনে কাজিনের বকা খেতে হল। ও বলে আমি নাকি অদরকার বেদরকারে কথা বাড়াই। মানুষকে মাথায় উঠাই।
যাইহোক, তারপর গেলাম জাগৃতিতে। সাজি আপুর বইটা চাইলাম। আরো জানতে চেয়েছিলাম আপু আসবে কিনা। ওরা বললো বিকালে আসবেন, বিকালের দিকে ফিরে আসার পথেও দেখলাম আপুটা তখনও আসেনি। একবার ভাবলাম দোকানে বলে যাই, আমি অপসরা, সাজি আপু এলে বলবেন আমি এসেছিলাম ।
তারপর ১৯২ খুজতে খুজতে চলে গেলাম ৩০০ এর দিকের সব স্টল গুলোতে । আমার গজেন্দ্রগামিনী কাজিনের কারণে ১৯২ স্টল শেষমেষ যাও খুজে পেলাম ততক্ষণে উনার নাকি ক্ষীধেয় পেট চো চো করছে।চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিলো। সে আর এক পাও নড়বেনা। ফুচকা, চটপটি এইসবে উদর পূর্তি না করা পর্যন্ত নাকি কোনো কথাই নাই।যাইহোক তড়িঘড়ি ১৯২ তে ঢু দিলাম। দেখলাম ৩টা ছেলে আর একটা মেয়ে । আমাকে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী না কি যেন একটা বই কিনতে অনুরোধ করলো মেয়েটা তবে আমি দেখিয়ে দিলাম আমাদের এই ব্লগের বই অপরবাস্তব। তারপর গণসাক্ষর বুকে নিজের নামটা লিখে দিলাম। ভাসাচিত্র আর পাঠসুত্রের স্টল খুঁজে বের করা হলোনা আমার পাজী কাজিনের জ্বালায়।ভাবলাম ঐটাকে পেটপূজো করিয়ে আবার বইমেলায় ঢু মারবো। কিন্তু গেট থেকে বেরিয়ে দেখলাম ভীড় বেড়ে উঠছে। চটপটি ফুচকা আইসক্রিম, আমড়া খেতে খেতে দেখি চারিদিকে মানুষ থই থই। পুনরায় বইমেলায় ঢুকার আশা বাদ দিয়ে এরপরদিন ভাসাচিত্র আর পাঠসূত্রে মুকুল আর মনজুরুল হক খুঁজতে যাবো এই মনোবাসনায় আবার বাসার পথ ধরলাম।
মনটা একটু খুত খুত করছিলো জাল ছেড়া নদী আর মনজুরুল হকের বই না নিয়ে ফিরতে।তবে আরেকদিন আসা হবে এই উছিলায় এই ভেবে মনকে সান্তনা দিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ১২:২৭