ব্লগার আরজু পনির শততম পোস্টে ব্লগারদের প্রকাশিত কিছু বইয়ের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেই তালিকায় “এই শহরে রাজহাঁস নিষিদ্ধ” শিরোনামের একটি বইয়ের মলাটে লেখকের নাম হিসেবে “কালপুরুষ” উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি আমার কাছে “নিক” চুরি বলে মনে হয়েছে এবং এটা এক ধরণের জালিয়াতি বা প্রতারণা। আর এহেন ঘৃণ্য অপকর্মের জন্য আমি একজন ব্লগার হিসেবে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এই পোস্টের মাধ্যমে। আমার জানা মতে সামহয়্যার ইন ব্লগ কর্তৃক বাংলা ব্লগিংয়ের সূচনালগ্ন থেকেই (ডিসেম্ব, ২০০৫) “কালপুরুষ” নিকটি নিবন্ধিত। জনাব “কালপুরুষ” উক্ত নিকেই ব্লগিং ও লেখালিখি করে আসছিলেন দীর্ঘকাল। পুরোনো ব্লগারদের সকলেই তাকে ব্যক্তিগত ভাবে চেনে। এমন কি সামহয়্যার ইন ব্লগ কর্তৃপক্ষের অনেকেই তাঁকে চেনেন। উনি একজন সিনিয়র ও জনপ্রিয় ব্লগার হিসেবে ব্লগ জগতে বিশেষভাবে পরিচিত। ২০১১ সালে “কালপুরুষ” ঘোষণা দিয়ে সামহয়্যার ইন ব্লগ ছেড়ে গেছেন বটে কিন্তু তাঁর নিক ও পোস্টগুলো এখনও ব্লগে রয়ে গেছে।
আমি এটাও জানি সামহয়্যার ইন ব্লগ ছাড়াও অন্যান্য ব্লগেও তিনি “কালপুরুষ” নিকে লিখেন। ওনাকে ব্লগার “কালপুরুষ” হিসেবেই সকলে চেনে ও জানে। “কালপুরুষ” নিকটি অনেক ব্লগেই একটি একক নিবন্ধিত নিক যার কোন ডুপ্লিকেট নেই। একসময় প্রথম আলো ব্লগে “এই শহরে রাজহাঁস নিষিদ্ধ” বইয়ের লেখক “আমি কালপুরুষ” নিকটি নিবন্ধন করার কারণে ব্লগ কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত প্রতিবাদ জানানো হয় এবং কনফিউজিং নিকটি পরিবর্তনের জন্য তাকে নোটিশ করা হয়। উক্ত ব্লগে “কালপুরুষ” নিকটি নিবন্ধিত একটি নিক।
উক্ত বইয়ের যিনি লেখক তিনি ব্লগার “কালপুরুষ” নন। “কালপুরুষ” নিকে তিনি সামহয়্যার ইন ব্লগে নিবন্ধিত নন। তাই একজন নতুন ও অন্য নিকের ব্লগার কিভাবে নির্লজ্জের মতো আরেকজন পুরোনো ব্লগারের নিক ব্যবহার করে, তার জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে বই বের করে এটা ভেবে অবাক হই। আমি এ ব্যাপারে সকল ব্লগারদের জানাচ্ছি উল্লেখিত বইয়ের লেখক ব্লগার “কালপুরুষ” নয় এবং এই নিকটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে ও সস্তা জনপ্রিয়তা পাবার লোভে ব্যবহার করা হয়েছে।
"কালপুরুষ" নিকটি ব্লগে বহুল পরিচিত ও নিবন্ধিত একটি নিক। বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠিত ও পুরোনো সব ব্লগার "কালপুরুষ" বলতে একজনকেই চেনে ও জানে। উল্লেখিত গ্রন্থের লেখক যিনি নিজে "কালপুরুষ" সেজেছেন তিনি ব্লগার "কালপুরুষ" নন, তিনি অন্যকেউ। “কালপুরুষ” নিকের সাথে কিছু বিশেষণ যোগ করে তিনি ব্লগার হয়েছেন বটে তবে বই ছাপানোর সময় কৌশলে সেই বিশেষণ বাদ দিয়ে ব্লগার “কালপুরুষ” সেজেছেন যা রীতিমত প্রতারণা ও জালিয়াতি। নিজেকে "কালপুরুষ" পরিচয় দিয়ে বই বের করা ও অন্যের নিক চুরি করা প্রতারণাই সামিল।
বাংলা ব্লগ জগতে "কালপুরুষ" একজন কিংবদন্তী ব্লগার। ২০১১ সালে সামু ব্লগ ছেড়ে আসার সময় পর্যন্ত তার ৭৮৪ টি পোস্ট ছিল। মন্তব্য ও প্রতি মন্তব্য ছিল যথাক্রমে ২৫ ও ২০ হাজারের উপরে। পোস্ট ও পরিচিতির দিক থেকে “কালপুরুষ” সেরা ১০ দশজন ব্লগারের একজন। সুতরাং সেই "কালপুরুষ"-এর সাথে এই বইয়ের লেখক কালপুরুষের কোন তুলনাই হতে পারেনা। কারণ উনি মোটেও "কালপুরুষ" নন। উনি পাঠকদের সাথে প্রতারণা করছেন। পাঠকদের বিভ্রান্ত করছেন।
যে কেউ সামু ব্লগ ভিজিট করলেই এই সত্যটা জানতে পারবেন। কারো নিক ব্যবহার করা বা নিক চুরি করা একধরণের প্রতারণা ও ক্রিমিনাল অফেন্স। সুতরাং বইয়ের লেখক ব্লগার "কালপুরুষ পোয়েট্রি" তার বইয়ের মলাট থেকে "কালপুরুষ" নামটি প্রত্যাহার করুক এবং এহেন অপকর্মের জন্য লিখিতভাবে ক্ষমা চাওয়া হোক। আশা করি সামহয়্যার ইন ব্লগ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় এনে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। আরজু পনির শততম পোস্টের শিরোনাম এমনটাই প্রমাণ করে – বইয়ের লেখক সামহয়্যার ইন ব্লগ-এর ব্লগার হলেও তিনি আসল “কালপুরুষ” নন।
“শততম পোস্ট! অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৫'তে সামহোয়্যার ইন ব্লগারদের বই: লিখেছেন আরজুপনি, ২১ শে জানুয়ারি,২০১৫ রাত ১২:৫১”
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৩