somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভ্রমন: লাউরের গড়, সুনামগঞ্জ, মটরসাইকেলে

১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা একটু অফরোড মারাতে চান তারা সহজে যেতে পারেন লাউরের গড় এলাকায়। মটরসাইকেল ছাড়া অবশ্য এখানে যাবার একমাত্র উপায় নৌকা। ইন্ডিয়ার বর্ডার ঘেসে পুরো এলাকাটা। নির্ঝন্ঝাট, সুন্দর অপূর্ব। যারা জাফলং গিয়ে এক ঘেয়েমিতে ভুগছেন বা ভোলাগঞ্জ গিয়ে মাজা ব্যথায় আগ্রহ হারিয়েছেন এমন বাইকার ভাইয়েরা অনায়াসে যেতে পারেন এখানে।

এখন আকাশ পরিষ্কার, নদীতে ভয়ঙ্কর স্রোত নেই, তার উপর বৃষ্টিরও ঝামেলা নেই। আর দু.সপ্তাহ পর কুয়াশা পড়বে, তখন ইন্ডিয়ার পাহাড়গুলো তেমন ভাবে দেখা যাবে না। ছবি তুলেও মজা পাওয়া যাবে না।

এই গ্রামের রাস্তার শেষ মাথায় জিন্দাপীর শাহ আরেফিনের (রহ.) আস্তানা। পাশ দিয়ে নদী। আর নদীর পশ্চিম পাড়ে বারেকের টিলা। এখানে হিন্দু ধর্মানুসারীদের একটি তীর্থস্থান আছে। প্রতিবছর চৈত্র মাসে প্রায় একই সময়ে শাহ আরেফিনের (রহ.) আস্তানায় ওরস হয়। তখন মেলা বসে, আর চৈত্রের ৫ তারিখে জাদুকাটা নদীর তীর্থে বসে হিন্দুদের পুণ্যস্নান পনাতীর্থ।

কিছু পুরোন মিথ জরিয়ে আছে লাউরের গড় বাজার সংলগ্ন নদী ঘাট নিয়ে। অনেকেই খুব সকালে বা পড়ন্ত বিকেলে নাকি দেখে থাকে অনেক অনেক নৌকা ঘাটে ভিরছে। কিন্তু নিমিশেই সেগুলো হাওয়া হয়ে যায়। আবার কেউ কেউ দেখে যে, ঘাটের কাছাকাছি পানির নীচ থেকে অনেক নৌকা ভেসে উঠছে। আনেক মানুষের কোলাহল। যেন মনে হয় হাটবার। হাটে হাজার হাজার মানুষ সওদা করতে আসছে। বিশেষ করে শনিবার বা মঙ্গলবার এ ঘটনাগুলো মানুষ প্রত্যাখ্য করত।
আগে নাকি প্রায়ই একটা বিশেষ জায়গা থেকে মানুষ বা ছোট বাচ্চা গোসল করতে গিয়ে মারা পড়ত।

যাই হোক এগুলো প্রবীনরা বেশি জানে। যে যাই জানুক আমি গিয়ে ভীষন আনন্দ পেয়েছি। সিলেট শহর থেকে দিনে গিয়ে দিনেই ফিরেছি।


এরকম একটা ঘাট সুনামগঞ্জ থেকে মটরসাইকেল সহ নৌকায় পার হতে হবে।




নীল সবুজের স্কেচ




আমার প্রিয় মটরসাইকেল শাহ আরেফিনের আস্তানার মাঠে। সামনেই নো ম্যানস জোন। তারপর কাটাতারের বেড়া। ভারতের রাস্তা পাথুরে পাহাড়...



এরকম রোড প্রায় ৩০ কিমি রান করতে হবে। আর খারাপ রোড প্রায় ১০ কিমি



ধুধু বালুরাশির ওপারে গভীর একটু খানি নদী। তারপরেই ইন্ডিয়া। ছবির পেছনে বিজিবি ক্যাম্প।




আমার বাইক। নদীর তীর ঘেসে বেশ খানিকটা ছুটলাম কিছুক্ষণ। তারপর দাড়িয়ে চোখ জুরালাম পড়ন্ত বিকেলে।




হাতে খুব একটা সময় ছিল না, তাই নদীর ওপারে যাওয়া হয়নি। তীরে দাঁড়িয়ে শুধু চারপাশটা স্তব্ধ হয়ে দেখছিলাম।












শাহ আরেফিন (র:) আস্তানা প্রবেশের গেট। এখানে সুন্দর বসার জায়গা আছে। অনেক দুর দুরান্তের থানা থেকে এখানে মানুষ তবারক নিয়ে আসে।



যা না বললেই না: লাউরের গড় এলাকা খুব গ্রাম্য এলাকা। এখানে খাবার কোন ভাল হোটেল নেই। এমন কি দোকানে ড্রিংকিং ওয়াটার নেই, সফট ড্রিংক্স তো দূরের কথা। নদীর ওপার থেকে কয়লা ও পাথর আমদানি করা হয়। শুক্রবার ছাড়া বাকি দিনগুলো জমজমাট থাকে। এখানে স্বাস্হ্য কমপ্লেক্স নেই। এক্সিডেন্ট করলে প্রায় ৫০ কিমি দূরে সুনামগঞ্জ সদরে যেতে হবে। এখানকার বাইকাররা যাদের পেশা মটরসাইকেল যোগে বিভিন্ন জায়গায় মানুষকে পৌঁছে দেয়া, তারা সারা দেশের বিভিন্ন মটরসাইকেল গ্রুপের মেক্সিমার রাইডারের চেয়ে অনেক অনেক ভাল চালায় এবং ভয়ঙ্কর স্পিডে ৩ তেকে ৫ জন পর্যন্ত নিয়ে চালায়।

আশাকরি এই পোষ্ট অনেকের ভাল লাগবে। আমাদের দেশ আসলে অনেক সুন্দর।


১৫টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×