somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘না’ বলার কি অধিকার নেই আমাদের উপমহাদেশের!?!?!

১২ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


উত্তপ্ত অগ্নিগর্ভ ইংল্যান্ডের বড় শহরগুলো। লন্ডনের দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্রই। জ্বলছে বার্মিংহাম। ঐতিহ্যবহুল এই শহরের নিয়ন্ত্রণ লুটেরাদের হাতে। গতকালও এখানে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্য দিয়ে বার্মিংহামের এজবাস্টন স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে বহুল আলোচিত ইংল্যান্ড-ভারতের মধ্যকার চলতি চার টেস্ট সিরিজের তৃতীয় টেস্টের খেলা। মূল শহরে মানুষের আনাগোনা নেই বললেই চলে। হোটেলগুলো খালি। শহরে প্রবেশের মুখে পুলিশি বাধা। গিজগিজ করছে নিরাপত্তাকর্মীরা। কিন্তু থেমে নেই দাঙ্গাবাজদের অপতত্পরতা। তৃতীয় টেস্টের ভেন্যু এজবাস্টন স্টেডিয়ামের কাছাকাছিই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলার ছবিও এসেছে মিডিয়াতে। হোটেলের চার দেয়ালে বন্দি ভারতের সঙ্গে ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররাও। হোটেল রুম থেকে বেরুতে মানা দুদলের ক্রিকেটারদের। এর পরও খেলা মাঠে গড়িয়েছে। কারণ ‘না’ বলার অধিকার উপমহাদেশের ক্রিকেটারদের নেই। সামান্য ছুতো ধরে উপমহাদেশে সফর বাতিল করাটা ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটারদের জন্য একটা নৈমিত্তিক ব্যাপার। উপমহাদেশ থেকে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তারা যে কতবার সফর বাতিল করেছে তা লিখে শেষ করা যাবে না।
কিন্তু জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে থেকেও খেলে যেতে হবে উপমহাদেশের দলগুলোকে। প্রাণের চেয়েও যে উপমহাদেশের মানুষের কাছে ক্রিকেট বড়! আর তাই বোধ করি ক্রিকেটের জন্য যে কোনো ঝুঁকি নেয়াটা উপমহাদেশের মানুষের নৈতিক দায়িত্ব।


এজবাস্টন তথা ইংল্যান্ড জুড়ে যা চলছে তেমনটা যদি উপমহাদেশে ঘটত এবং সফরে যদি থাকত ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া কিংবা নিউজিল্যান্ড তাহলে যা ঘটত তা সহজেই অনুমেয়। সফর বাতিল করে সোজা দেশের পথ ধরত তারা। তাকানো যাক, ২০০৮ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে হোটেল তাজমহল প্যালেস ট্র্যাজেডির দিকে। ওই সময় ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল ছিল ভারত সফরে। মুম্বাইয়ে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টও খেলার কথা ছিল তাদের। ঘটনার পর পরই দেশে ফেরার জন্য অস্থির হয়ে পড়ে ইংলিশ ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটারদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ইংলিশ মিডিয়ার সে কী চিত্কার চেঁচামেচি। ক্রিকেটারদের মৃত্যুর ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়ে ক্রিকেট খেলা হতে পারে না— এ নিয়ে সরব হয়ে ওঠেন ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটাররাও। ওই সময় ইংল্যান্ড অধিনায়ক কেভিন পিটারসেনের মন্তব্যটি উল্লেখ না করলেই নয়। তার ভাষায়, ‘আমরা প্রচণ্ড ঝুঁকির মধ্যে আছি। এ পরিস্থিতিতে ক্রিকেট খেলাটা সম্ভব নয়। আগে দেশে ফিরব। তারপর নিরাপত্তার বিষয়টা নিশ্চিত হয়েই আমরা আবার খেলতে আসব।’ ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়করাও তাদের ক্রিকেটারদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য চাপ দিতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত সফর অসমাপ্ত রেখে দেশে ফিরে যায় ইংল্যান্ড। মাসখানেক পরে তারা সিরিজের বাকি ম্যাচগুলো খেলে।
বোমা বিস্ফোরণের অজুহাতে দু-দুবার পাকিস্তান সফর বাতিল করে দেশে ফিরে গেছে নিউজিল্যান্ড। উপমহাদেশ সফরের আগে প্রতিবারই নিরাপত্তা নিয়ে বিস্তর কথাবার্তা বলে তারা। এ সময়ে শ্রীলঙ্কা সফরে আছে অস্ট্রেলিয়া। এই সফরের আগেও নিরাপত্তা নিয়ে কম চেঁচামেচি করেনি অসিরা। রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরই কেবল তারা উপমহাদেশ সফরে সম্মত হয়। বার্মিংহামে এমন ঘটনার পরও ইংল্যান্ড সফর বাতিল করে ভারতের দেশে ফিরে যাওয়া উচিত— এমন কথা এখন পর্যন্ত বলেনি ভারত তো বটেই, উপমহাদেশের ক্রিকেটার কিংবা ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট কেউই। এ প্রসঙ্গে সাবেক ভারত অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার বলেছেন, ‘বার্মিংহামে যা ঘটছে তা যদি ভারতে ঘটত তাহলে ইংলিশ ক্রিকেটারদের দেশে ফেরার জন্য তোড়জোড় শুরু হয়ে যেত। আর সবাই কথাবার্তাও বলত তাদের দেশে ফেরা নিয়েই।’
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১:২১
২০টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×